![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১) গর্ত
আমি একটি গর্তের ভেতর ঢুকে পড়েছি। অফিস থেকে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় ফিরছিলাম। আমি ঠিক বলতে পারবোনা কয়টা সিঁড়ির ধাপ অতিক্রম করে প্রতিদিন আমাকে তিনতলার ফ্ল্যাটে উঠতে হয়। তবে এটুকু বলতে পারি আমি গর্তটাতে ডুকে পড়ার আগে সেখানে কোন গর্ত ছিলনা।
গর্তের ভেতরটা বেশ আলোকিত সব কিছু স্পষ্টত দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। একটা চায়ের কেতলি, দুটো পাতিল, একটা আয়নার টুকরো, ভাঙ্গা চেয়ার এবং একটা বালিশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। একটু এগুতে কতগুলি পায়ের ছাপ চোখে পড়লো। সম্ভবত আমার আগেও এখানে কেউ এসেছিল।
এভাবে এক ঘন্টা পেরিয়ে গ্যালো। গর্তের ভেতর থেকে আকাশ দেখা যাচ্ছিল কিন্তু এর গভীরতা এত বেশি ছিল যে আমি এখান থেকে বেরুনোর কোন রাস্তাই খুঁজে দেখতে সাহস করে উঠতে পারলাম না। যেকোন সুস্থ মস্তিষ্ক বলবে যে এখান থেকে বেরুতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম উড়তে শিখতে হবে। আমি যেহেতু উড়তে জানিনা কাজেই বেরুনোর চিন্তা করা সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্যদিকে সময়ের অপচয় করা ছাড়া এখানে বিশেষ কিছু আর কোরবারও নেই। প্রথমবার আমার মনে হলো মানুষ উড়োজাহাজ আবিষ্কার করলেও এখনো উড়তে শিখেনি। তারা আসলে কখনো উড়তেও চায় না, ছেলেমানুষ ভেবে কেউ তাদের হাতে উড়োজাহাজ নামের একটা খেলনা গুঁজে দিয়েছে আর তাতেই তারা উড়তে শিখার আগ্রহটাও হারিয়ে ফেলেছে।
মাটিতে রাখা বালিশে মাথা রেখে, টুকরো আয়নায় নিজেকে দেখে, ভাঙ্গা চেয়ারে হেলান দিয়ে, শূণ্য কেতলি আর পাতিলে চোখ রেখে একটি রাত শেষে গর্তে আরেকটি সকাল এলো। এবার আমাকে অফিসে ছুটতে হবে যেন ফিরতি পথে ফের ঠিকঠাক এই গভীরতম গর্তে ঢুকে যেতে পারি হাঁটতে হাঁটতে।
২) কয়েকটা কেঁচো
গ্রীষ্মের এক অন্ধকারতম রাত্রিতে আমাদের একমাত্র রেডিওটা চুরি হয়ে গিয়েছিল। সবাই রেডিও শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সে রাতে। সকালে উঠে দেখলাম রেডিওটা নেই। আর আমাদের ঘরের পশ্চীম দক্ষিণ কোণে খুঁড়ে রাখা গর্ত থেকে সকালের তীক্ষ্ম সূর্যের আলো আমাদের মুখ ভেদ করে পা পর্যন্ত চলে গেছে। সেই প্রথম জেনেছিলাম আলোতেও বিষ থাকে।
বর্ষাকাল শেষ হলে রেডিওটার দেখা মিলেছিল আমাদের ফসলের মাঠে। ফসল কাটতে গিয়ে বাবার চোখেই প্রথম পড়েছিল। মাটির ভেতর গেঁথে আছে। যেন একটি ধান বীজ, অঙ্কুরোদগমের অপেক্ষায়। আমি দেখে চেঁচিয়ে উঠেছিলাম,
-আরে আমাদের রেডিওটা! চোরটা নিতে পারেনি!
আমি নিশ্চিত জানতাম বাবা চাইলেই ওটাকে ফের ভালো করতে পারবেন। অথচ তিনি কেন জানি মাঠ থেকে রেডিওটাকে তুললেন না সেদিন। আমাকে বললেন,
-রেডিওটার যত্ন নিস, তুলিস না।
এরপর আমরা প্রতিদিন পালা করে রেডিওটার গোড়ায় জল দিতাম। মরে যাওয়ার আগের দিন পর্যন্ত বাবা বিশ্বাস করতেন আমাদের মাঠটা একদিন সবুজ সবুজ রেডিওতে ভরে উঠবে। কিন্তু আমি একদিন রেডিওটার ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখেছিলাম বাবার বিশ্বাস মিথ্যে প্রমাণিত করে সেখানে বেড়ে উঠছে কয়েকটা কেঁচো।
৩) মানুষ পোষার শখ
মানুষের পাখি পোষার শখ প্রাচীনতম। আমারো ছিল ঘুঘু পোষার শখ। বাড়ির বিস্তৃত উঠোনে ঝিঙে মাচা করেছিলাম। ঝিঙে ধরেনি একটিও। তবে একটি ঘুঘু বাসা বেঁধেছিল সেখানে।
পাখিদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় থাকে কিনা জানা নেই। ঘুঘুটির ছিল। কেননা যতবারই নিঃশব্দে তার বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, উড়ে গিয়ে বাড়ির পশ্চিম কোণের নিম গাছটিতে গিয়ে বসেছে সে। তারপর বিপদ কেটে গেলে আবার ফিরে গেছে নিজের বাসস্থানে।
অবশেষে আমিই জিতলাম। একদিন ধরে ফেললাম ঘুঘুটিকে। অবশ্য ঘুঘুটিকে ধরতে পারিনি, ধরেছিলাম তার লেজ। আশ্চর্য হয়ে দেখলাম এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে নিল সে। শুধু লেজটি ছাড়িয়ে নিতে পারলো না, ওটা আমার হাতেই রয়ে গেল।
লেজবিহীন ঘুঘুটি নিম গাছে গিয়ে বসলো। লেজছাড়া তাকে দেখতে এতটা বিশ্রি লাগলো যে, আমার ঘুঘু পোষার শখ নিমিষেই উবে গেল। সিদ্ধান্ত নিলাম যে করেই হোক লেজটা ফেরত দেব তাকে। আমি কিছুতেই চাইনা মানুষের পাখি পোষার শখ এইভাবে নষ্ট হয়ে যাক।
পরের দিন ঘুঘুটিকে আর দেখতে পেলাম না। এবং কি তারপরের দিনও। এভাবে তিনমাস কেটে গেল ঘুঘুটি আর এলোনা। মানুষের শখ নষ্ট হয়ে যাবার চিন্তায় আমার ঘুম চলে গেল। আমার চুলগুলো আস্তে আস্তে পালকে রূপান্তরিত হলো। যথাক্রমে আমার হাত, আমার পা, হয়ে গেল ঘুঘুর ডানা, হয়ে গেল ঘুঘুর পা। আমার ঠোঁট হয়ে গেল ঘুঘুর ঠোঁট। এবং এক সময় আমি একটি পূর্ণাঙ্গ ঘুঘুতে পরিণত হলাম। শূণ্যে উড়ে যাবার আগে দেখলাম ফ্রিজে রাখা ছেড়া লেজটি বেড়িয়ে এসে মানুষের প্রাচীনতম শখের উপর চেপে বসল। তারপর ক্ষীণকন্ঠে বলল,
-মানুষবিহীন ঘুঘু দেখতে এত বিশ্রী লাগে যে, আমার মানুষ পোষার শখটাই উবে গেল।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: এইতো ভাই। আপনি কেমন?
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭
জুলকারনাইন নাঈম বলেছেন: লেখাগুলো কেমন যেন প্রিটেনশাস লাগছিলো। প্রতিটা গল্পেই খুব শ্যালোভাবে লেখক ঢুকেছেন, কিন্তু প্রতি গল্পেরই গভীরে গিয়ে আরো কিছু কথা বলবার স্কোপ ছিল, এমন মনে হচ্ছিল। আশা করি, তিনটা গল্পই অসম্পূর্ণ ধরে লেখক সেগুলোকে পূর্ণতা দেবার চেষ্টা করবেন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য। ভেবে দেখবো।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: মোটামোটি হয়েছে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৩০
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: কঠিন কল্পনাশক্তি!
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: কেমন আছো হে ভূত?
৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২০
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: কি হয়েছে হাতুরের লেখকের? গল্পের রস শুকনা শুকনা কেনো!
প্রথমটি আপনার লিখনশৈলীর ছাপ পুরোই পেলাম পরের দুইটি কোথাও যেনো ট্টুটি চেপে ধরার মতো।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: হ্যাঁ প্রথমটা নিয়ে আমার কোন আফসোস নেই। ধন্যবাদ সুজন ভাই।
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: ভূতেরা কি কখনো খারাপ থাকে?
আপনার কি খবর?
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২০
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: চলছে! মেলায় এসো। দেখা হবে।
৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩
জুন বলেছেন: টুকরো টুকরো গল্পে ভালোলাগা রইলো হাতুড়ে লেখক ।
+
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২১
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ জুন আপু।
৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬
জুন বলেছেন: টুকরো টুকরো গল্পে ভালোলাগা রইলো হাতুড়ে লেখক ।
+
৯| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: মেলায় আসা হবে কিনা জানি না, তবে অপার্থিবের জন্য শুভকামনা।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: তোমার জন্যও শুভকামনা।
১০| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: তিনটা গল্পই সুন্দর।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব নুর ভাই।
১১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
বেয়াদপ কাক বলেছেন: কেমন যেন শূন্যতা অনুভব হয়, যেন অপ্রাপ্তি সাথে দু চামচ আক্ষেপ।কেউ যেন খুব করে কিছু চাইতে গিয়েও বাস্তবতায় ধাক্কা খেয়ে ফিরে ফিরে আসে এমন মনে হোল লেখাগুলি পড়ে।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১১
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
১২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: হাতুড়ে লেখক ,
গর্তের ভেতর যে ফসলের মাঠ ছিলো , যেখানে মাটিতে গেঁথে ছিলো রেডিওটা আর তাতে ছিলো কিছু কেঁচো ; সেই কেঁচো খেতে ঘুঘু ঢুকেছিলো সেখানে
১৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: হাতুড়ে লেখক ,
ভুলে চাপ পড়ায় অসমাপ্ত মন্তব্যটি চলে এসেছে ।
এটা পূর্ণাঙ্গ -----
গর্তের ভেতর যে ফসলের মাঠ ছিলো , যেখানে মাটিতে গেঁথে ছিলো রেডিওটা আর তাতে ছিলো কিছু কেঁচো ; সেই কেঁচো খেতে ঘুঘু ঢুকেছিলো সেখানে । আর অফিস ফেরৎ কেউ একজন বালিশে মাথা রেখে শুন্য চোখ মেলে এসব দেখে ভাবলো , এই সব অবাস্তব কিছু যারা উড়তে জানে তাদের না পুষে মানুষ পুষলে কেমন হয় ? মানুষ তো উড়তে পারেনা , গর্ত ছেড়ে পালিয়ে যাবে কোথায় ?
গর্তে কেঁচোর মতো ক্লদাক্ত মানুষ পোষার শখ আর কি .........................
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১১
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: মন্দ না
১৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সুগভীর!
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১০
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: সুগভীর মন্তব্য!
১৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
গব্বু বলেছেন: মাঝেরটা বেশি মজার। হাঃ হাঃ হাঃ
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: মজার?
১৬| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫
শামচুল হক বলেছেন: গর্ত থেকে বেরোনের রাস্তা নাই আপনি অফিস যাবেন কিভাবে?
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: প্রতিদিন যেভাবে যাই। তিনতলার ফ্ল্যাটটার সাথে গর্তের কোন ফারাক খুঁজে পেয়েছেন আপনি?
১৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৪২
ড্রিমায়ন বলেছেন: মানুষ পোষার শখ ব্যাপারটা সত্যি ই দারুন ব্যাপার ছিল! ✌ আর বাকিগুলো ভাল ছিল! ☺
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১০
হাতুড়ে লেখক বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ। শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রথমটি বেশি ভাল লেগেছে।
আপনি ভাল আছেন?