নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টুকরো কথা

হিসলা সিবা

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ট্রাকের চাকার নিচে ফেটে যাওয়া দিপালী সাহার হৃদপিন্ডকে যারা ভ্যালেন্টাইন-বেলুন বানিয়ে বেচে দ্যায়, অথবা যাদের শুধুমাত্র শরৎবাবুই কাঁদাতে পারেন, একমাত্র গোপাল ভাঁড়ই হাসাতে পারে- সেই নিথর স্বাভাবিকতায় মৃত মানুষদের ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক নীল ক্লিনিকে।

হিসলা সিবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামাতের ভণ্ডামির চালচিত্র পর্ব-১ গুলাম আজম ভাষা সৈনিক !!!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

কাল একুশে ফেব্রুয়ারি, আমাদের পোড়া জাতির কয়েকজন তরুণ ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সারিবদ্ধ হয়ে মিছিল বের করেন। মিছিলের অগ্রভাগে ছাত্রীরা। সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা মিছিল-মিটিংয়ে মেডিক্যাল কলেজের চারপাশ মাতিয়ে রাখেন। দাবি একটাই— ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও এর আশপাশের এলাকায় দিনভর দারুণ উত্তেজনা, স্লোগান, পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি। বেলা ৩টার দিকে হঠাৎ গুলির শব্দ।

১৯৫২ সালের এই দিনটাতে মেডিকেলের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন কয়েকজন স্বপ্নবাজ তরুণ . . .

কি দাবী ছিল তাদের ?

বিশ্ববাসী অবাক হয়ে যায় শুধু মায়ের ভাষায় কথা বলতে চাওয়ার অপরাধে এই তরুণদের মেরে ফেলে হায়না গুলো,

সেই বাংলা ভাষার পথ ধরে একটা সংগ্রাম ৭১রে “বাংলা” নামের একটা দেশ নিয়ে আসল, পৃথিবীর একমাত্র দেশ যে দেশের নাম ঐ দেশের মানুষদের মুখের ভাষার নামে। সেই দেশটা পাওয়ার পথ সহজ ছিল না

পৃথিবীর কম সময়ে বৃহত্তম গণহত্যা, সবচেয়ে বেশী ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে আমাদের এই ভাষা দেশ।



যে দেশটার মূলই ভাষা সে দেশের বিরোধিতা যারা করেছিল আমরা ধরেই নেই তারা ভাষাটার ও বিরোধিতা করবে সেটাই তো স্বাভাবিক তাইনা ?



জী ভাই আমি রাজাকার গোলাম আজমের কথাই বলছি



কয়েক বছর ধরে রোল উঠেছে গোলাম আজম নাকি ভাষা সৈনিক

যে লোকটা মুক্তিবাহিনীকে শত্রুবাহিনী আখ্যায়িত করে বলেছিল “জামায়াত কর্মীরা রাজাকারে ভর্তি হয়ে দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য। কেননা তারা জানে 'বাংলা দেশে' ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কোন স্থান হতে পারে না। জামায়াত কর্মীরা শহীদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না। (দৈনিক সংগ্রাম, ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)



আর সহ্য হয় না যে লোকটা দেশকে অস্বীকার করল মানুষ মারল আবার সেই নিজেকে ভাষা সৈনিক দাবী করে বসল !



ঘেঁটে দেখা দরকার দাবী গুলো কি কি



খোঁজ পাওয়া গেল একটা সুত্রঃ

“১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে গোলাম আযম রাষ্ট্রভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের সামগ্রিক দাবী সম্বলিত ঐতিহাসিক ‘অভ্যর্থনা স্মারকলিপি’ প্রদান করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ঢাকসু) জি.এস. ছিল

গোলাম”



'৫২ সালের তমুদ্দুন মজলিসের ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকে তিনি না কি এই কাজ সম্পাদন করেছেন.. এমন কি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তিনিই প্রথম স্মারক লিপি দিয়েছেন বলে তার দাবি.. একই সাথে সেই সময়কার ডাকসু নেতা হিসেবেও নিজেকে পরিচয় দিতে পিছপা হন না তিনি . .



এই বিষয়ে ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন বলেছেন, জামাতের সাবেক আমীর গোলাম আযম ভাষা সৈনিক ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন উর্দুর পক্ষে। আবদুল মতিন বলেন, পাকিস্তানের একজন রাষ্ট্রনেতার উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা দিয়েছেন, ভাষার দাবি সম্বলিত মানপত্র পাঠ করেছেন বলে অনেকে মনে করেন গোলাম আযম ভাষা সৈনিক। আবদুল মতিনের মতে, সে বক্তৃতা গোলাম আযম নিজের ইচ্ছায় বাংলাতে দেননি, ডাকসু নেতা হিসেবে কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠের যে সিদ্ধান্ত ছিল তা বাস্তবায়ন করেছেন মাত্র। তিনি প্রশ্ন রাখেন, আরে ভাই যিনি পাকিস্তানের পক্ষে থাকেন, তিনি কিভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলার পক্ষে থাকেন? তিনি কিভাবে উর্দুর বিরোধিতা করেন? তাকে যারা ভাষা সৈনিক বলেন, তারা এটা ভাবলেই পারেন।



"পশ্চিম পাকিস্তানের শুক্কুরে ১৮ই জুন (১৯৭০) এক সংবর্ধনা সভায় জামায়াত নেতা গোলাম আযম বলেন, উর্দু পাক ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদের সাধারন ভাষা। তিনি বলেন, ৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় আমি তাতে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু তা ভুল হয়েছিল।"

(দৈনিক পাকিস্থানের ১৯শে জুন প্রকাশিত সংখ্যা)







তখনকার পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) বাংলা ভাষাকে সংগ্রাম আর রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি আদায়ের পরও যে লোক উর্দুকে তার ভাষা মনে করে - তাকে ভাষা সৈনিক হিসাবে প্রচার সত্যই কৌতুকের জন্ম দেয়।



আশা করি এই লেখা সব বিভ্রান্তি দূর করবে

যে লোক সরাসরি বলে

“উর্দু পাক ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদের সাধারন ভাষা”

যে লোক সরাসরি বলে

“"কেবলমাত্র দেশপ্রেমিক জনগনের সাহায্যে দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহত করা যেতে পারে।”

যে লোক সরাসরি শ্লোগান দেয়

"দুষ্কৃতিকারীরা দূর হও" "মুসলিম জাহান এক হও" "পাকিস্তানকে রক্ষা কর"। "পাকিস্তান জিন্দাবাদ, কায়েদে আযম জিন্দাবাদ।" "পাকিস্তানের উৎস কি- লাইলাহা ইল্লাল্লাহ।" "মিথ্যা প্রচার বন্ধ কর।" "ব্রাক্ষ্মবাদ নিন্দাবাদ, সাম্রায্যবাদ মূর্দাবা”।

সে আর যাই হোক ভাষা সৈনিক হতে পারে না



দেশে আজ এক গণআন্দোলন চলছে। রাজাকার জামাত শিবিরের বিচারের দাবীতে গণ আন্দোলন,

চলছে আন্দোলন বিরোধী অপপ্রচার

জানুন দেশের ইতিহাস

ভেঙে দিন ভুল গুলো

তথ্যই হোক মুক্তির পথ



আসুন একবার সমস্বরে বলি



গ – তে গোলাম আজম

তুই রাজাকার, তুই রাজাকার



দীর্ঘ লেখাটা শেষ করব হুমায়ূন আজাদ স্যারের একটা কবিতা দিয়ে





বাঙলা ভাষা – হুমায়ুন আজাদ



শেকলে বাঁধা শ্যামল রূপসী, তুমি-আমি, দুর্বিনীত দাসদাসী-

একই শেকলে বাঁধা প’ড়ে আছি শতাব্দীর পর শতাব্দী।

আমাদের ঘিরে শাঁইশাঁই চাবুকের শব্দ, স্তরে স্তরে শেকলের ঝংকার।

তুমি আর আমি সে-গোত্রের যারা চিরদিন উৎপীড়নের মধ্যে গান গায়-

হাহাকার রূপান্তরিত হয় সঙ্গীতে-শোভায়।



লকলকে চাবুকের আক্রোশ আর অজগরের মতো অন্ধ শেকলের

মুখোমুখি আমরা তুলে ধরি আমাদের উদ্ধত দর্পিত সৌন্দর্য:

আদিম ঝরনার মতো অজস্র ধারায় ফিনকি দেয়া টকটকে লাল রক্ত,

চাবুকের থাবায় সুর্যের টুকরোর মতো ছেঁড়া মাংস

আর আকাশের দিকে হাতুড়ির মতো উদ্যত মুষ্টি।



শাঁইশাঁই চাবুকে আমার মিশ্র মাংসপেশি পাথরের চেয়ে শক্ত হয়ে ওঠে

তুমি হয়ে ওঠো তপ্ত কাঞ্চনের চেয়েও সুন্দর।

সভ্যতার সমস্ত শিল্পকলার চেয়ে রহস্যময় তোমার দু-চোখ

যেখানে তাকাও সেখানেই ফুটে ওঠে কুমুদকহ্লার

হরিণের দ্রুত ধাবমান গতির চেয়ে সুন্দর ওই ভ্রূযুগল

তোমার পিঠে চাবুকের দাগ চুনির জড়োয়ার চেয়েও দামি আর রঙিন

তোমার দুই স্তন ঘিরে ঘাতকের কামড়ের দাগ মুক্তোমালার চেয়েও ঝলোমলো

তোমার ‘অ, আ’ –চিৎকার সমস্ত আর্যশ্লোকের চেয়েও পবিত্র অজর



তোমার দীর্ঘশ্বাসের নাম চন্ডীদাস

শতাব্দী কাঁপানো উল্লাসের নাম মধুসূদন

তোমার থরোথরো প্রেমের নাম রবীন্দ্রনাথ

বিজন অশ্রুবিন্দুর নাম জীবনানন্দ

তোমার বিদ্রোহের নাম নজরুল ইসলাম



শাঁইশাঁই চাবুকের আক্রোশে যখন তুমি আর আমি

আকাশের দিকে ছুঁড়ি আমাদের উদ্ধত সুন্দর বাহু, রক্তাক্ত আঙুল,

তখনি সৃষ্টি হয় নাচের নতুন মুদ্রা;

ফিনকি দেয়া লাল রক্ত সমস্ত শরীরে মেখে যখন আমরা গড়িয়ে পড়ি

ধূসর মাটিতে এবং আবার দাঁড়াই পৃথিবীর সমস্ত চাবুকের মুখোমুখি,

তখনি জন্ম নেয় অভাবিত সৌন্দর্যমন্ডিত বিশুদ্ধ নাচ;

এবং যখন শেকলের পর শেকল চুরমার ক’রে ঝনঝন ক’রে বেজে উঠি

আমরা দুজন, তখনি প্রথম জন্মে গভীর-ব্যাপক-শিল্পসম্মত ঐকতান-

আমাদের আদিগন্ত আর্তনাদ বিশশতকের দ্বিতীয়ার্ধের

একমাত্র গান।







void(1);

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৫৫

বিডি বন্ড বলেছেন: কদিন আগে আমার দেশ পত্রিকায় ভেতরের পাতায় ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন কে চরম ভাবে অপমান করে একটি লেখা প্রকাশিত হয়। লেখাটির শিরনাম এরকম " ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের গ্রামের বাড়িতে কলা গাছের শহীদ মিনার"। কি বিকৃত রুচির এই পত্রিকা আর তার সম্পাদক মাহমুইদ্দা।

অনেক ভাল লিখেছেন। প্রিয়তে নিলাম। লিখে যান। একেবারে সময়উপযোগী লেখা। এদের মুখোশ খুলে দিন।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৩

হাতীর ডিম বলেছেন: এদের মুখোশ খোলার জন্য ধন্যবাদ। আমরা আছি থাকবো যুগযুগান্তর লড়বো। জয় বাংলা।
জয় বঙ্গবন্ধু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.