![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেও আমায় ফিরিয়ে দিয়েছে বলে গোটা দুনিয়াটাকে খুব আপন মনে হয়। অভিমান আমার উষ্ঠে এনে দেয় স্মিত হাস্য । আমি এমন ভাবে পা ফেলি যেন মাটির বুকেও আঘাত না লাগে ।আমার তো কারুকে দুঃখ দেবার কথা নয়।
আমার মতে টিউশনির সঙ্গা হচ্ছঃ-
প্রতিদিন একই জায়গায়, এক জনের কাছে, একই উদ্দেশ্যে, একই সময়, বারবার যাওয়া ।
এই কোলাহল আর ব্যস্ত নগরীতে যখন পা রাখি, পড়াশুনা করে মানুষ হওয়ার জন্য ( যদিও তা হইতে পারিনাই),
বেচে থাকার সেই লড়াইয়ে শুধু টিকে থাকার জন্যই এই টিউশনি ই আমার সব চেয়ে বড় ঢাল হয়ে সামনে এসে দারালো ।
আমিও বাধ্য হলাম বাসায় বাসায় ঘুরে টিউশনি করতে।
জীবনের প্রথম যে কয়টা টিউশনি পাই তাদের একটা ছিলো এই বংশাল এলাকায় ।
অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র আমি, টাকা পয়াসার খুব বেশি প্রয়োজন,
এই দিকে সময়ের খুব টানা টানি,তারপরেও এই টিউশনিটা নিলাম ।
প্রথম দিন খুব ভালো লাগে বাসার বড়দের অতিথিপনায়। কিছুক্ষন পর আসলো বহুল আলোচিত, আকাংক্ষিত ও প্রত্যাশিত আমার ছাত্রী। এতো গুলো শব্দ ব্যাবহারের করার করার কারণ হচ্ছে, এটাই ছিলো আমার জীবনে প্রথম ছাত্রী পড়ানোর অভিজ্ঞতা।
ছাত্রী আমার ক্লাশ এইটে পড়ে, আগে থেকে যতটুকু খোজ খবর জেনেছিলাম, যথেষ্ঠ মেধাবী এবং সুন্দর ও বটে,
চেহারার মধ্যেও মেধাবী মেধাবী একটা ভাব আছে বলা যায় ।
প্রথম দিন পড়াশুনা খুব একটা হলনা জাস্ট পরিচয় পর্ব আর টুকটাক কথা বার্তা।
না না রকম কথা বার্তা বলার পিছনে কারণ হচ্ছে স্টুডেন্ট এর ধরনটা বুঝতে পারা।
যতো টুকু বুঝলাম, খুব ঠান্ডা, শান্ত, শিষ্ঠ, মেজাজের মেয়ে। মুটামুটি ভালোই দিন কাটতেছিলো আমার ।
অল্প দিনেই মিতুর সাথে খুব সাভাবিক হয়ে উঠা। খুব আসতে আসতে একটা একটা শব্দ প্রয়গ করে কথা বলতো।
তার চেহারার সাথে আমার কলিজার টুকরা ছোট বোনের অনেক মিল থাকায়, নিজের ছোট বোনের মতোই আদর করতাম, যে কোন উপলক্ষ থাকলে চকলেট থেকে শুরু করে ওর পছন্দের অনেক কিছুই গিফট দেতাম।
ওদের বাসার ঠিক দোতালায় থাকতো মিতুর আরেকটা ক্লাশ ফ্রেন্ড, খুব ভালো বান্ধবী ছিলো তারা, মিতুর মুখ থেকে অনেক বার আমি তার বান্ধবীর গল্প শুনেছি ।
প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হল মিতুকে পড়াচ্ছি, এর মধ্যে তাদের একটা পরিক্ষার রেজাল্ট দিলো। যদিও আমার তেমন কোন অবদান ছিলোনা তার পরও মিতুর রেজাল্টের পুরো ক্রেডিট টা আমার কপালেই জুটলো ।
একদিন মিতুকে পড়ানোর সময় মিতুর বান্ধবীর মা আসলো আমার কাছে, তার মেয়েকেও পরানোর জন্য। আমার এমনিতেই সময়ের টানাটানি ক্যামিস্ট্রী ক্লাশ, নিজের কোচিং, পড়াশুনা, এর উপর অন্য টিউশনি গুলো ঠিক রাখতে গিয়ে পুরো হাপিয়ে ঊঠেছিলাম ।
খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলাম আমার হাতে সময় নেই। উনিও চলে গেলেন।তার পরদিন মিতুর আম্মুও আমাকে রিকুইস্ট করলো মিতুর বান্ধবিকে পড়ানোর জন্য, ঐদিন প্রথম দেখলাম শান্ত, নম্র, ভদ্র স্বভাবের মেয়েটাকে রাগি ভাষায় কথা বলতে। নিচু স্বরে কথা বলা মেয়েটা প্রায় চিৎকার করেই বলে উঠলোঃ-
"আম্মু তুমি বুঝোনা স্যারের সময় নাই "
কিঞ্চিৎ অবাক না হয়ে পারিনি সেদিন। আমার সময়ের বেপারে আমার চেয়ে তাকেই বেশি চিন্তিত মনে হচ্ছিলো ।
আরো বেশি অবাক হয়েছিলাম,
যেদিন মিতু খুব আস্তে আস্তে বলছিলো স্যার আপনি আমার চেয়ে তরুকে বেশি সময় দেন, (তরু মিতুর বান্ধবি)
আমাকে কম পড়ান তরুকে বেশি পড়ান। কথা গুলো খুব সাভাবিক ভাবেই যে কাওকে বলা যায়।
কিন্তু ওর সেদিনের কান্না করার কারন আজো আমায় ভাবিয়ে তোলে।
সে কি কান্না,খাতা বই ভিজিয়ে ফেলার মতো অবস্থা। এই কথা বলতে আবার কান্না করা লাগে ?
পাগল একটা ।
আজ সাহাবাগে দেখা আমার সেই ছাত্রীটার সাথে,
সালাম দিয়ে সামনে এসে দাড়ালো প্রথম তো চিন্তেই পারিনাই, কতো বড় হয়ে গেছে, সিটি কলেজে পড়ে এখন ।
কথার ফাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি কি এখনো আগের মতোই কান্না করো,
কথাটা শুনে বান্ধবীদের সামনে একটু লজ্জাই পেলো মনে হয়, হেসে ফেল্লো খুব জোরে ।
এই পরিবর্তনশীল সমাজে প্রত্যেকটা মুহুর্তেই আমরা পরিবর্তিত হই ,
শুধু আমাদের হাসি আর কান্না গুলোর ধরনটা অপরিবর্তিতই থেকে যায় ।
ভালো থাকুক মেয়েটা । অনেক সুন্দর হয়েছে আগের থেকে ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭
হিতোংকর সাহেব বলেছেন: মাথা ঠান্ডা রাইখেন কিন্তু ।
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯
পীরবাবা বলেছেন:
৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯
প্রামানিক বলেছেন: ছাত্রীকে ছাত্রী হিসাবে দেখার জন্য ধন্যবাদ।
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৮
হিতোংকর সাহেব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫
ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ মাধব বলেছেন: আহা,আমিও মেবি সেম কেইসে ফাইসা যাইতেছি
আমারটা ৫/৬ মাস,ক্লাস নাইন,আগে কথা বলত কম,এখন টুকটাক, বান্ধবীকে পড়ানোর প্রস্তাব দিছে মাত্র। 