নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেউ আমায় ফিরিয়ে দিয়েছে বলে গোটা পৃথিবীটাকে আমার আপন মনে হয়। অভিমান আমার ওষ্ঠে এনে দেয় স্মিথ হাস্য ।আমি এমন ভাবে পা ফেলি যেন মাটির বুকেও আঘাত না লাগে ।আমার তো কারুকে দুক্ষ দেবার কথা নয় ।

হিতোংকর সাহেব

কেও আমায় ফিরিয়ে দিয়েছে বলে গোটা দুনিয়াটাকে খুব আপন মনে হয়। অভিমান আমার উষ্ঠে এনে দেয় স্মিত হাস্য । আমি এমন ভাবে পা ফেলি যেন মাটির বুকেও আঘাত না লাগে ।আমার তো কারুকে দুঃখ দেবার কথা নয়।

হিতোংকর সাহেব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সামঞ্জস্যহীন সম্পর্ক ও পারিবারিক অশান্তি ।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

বেশ কিছুদিন আগের কথা,

রাত ১০টার দিকে একা একা বসে আছি রাস্তার পাশে, আইলেন্ডের সামনে এসে কোন গাড়ি কিভাবে স্লো হয় সেটাই খেয়াল করতেছিলাম খুব গভির ভাবে। হঠাত কিছু কথার আওয়াজ শুনতে পেলাম কথা গুলো ছিলো এই রকমঃ-

আমি আমার সারাটা জীবন এই ফ্যামিলীর ঘানী টানতে টানতে শেষ করে দিলাম। কখোনো নিজের চিন্তা করে কিছু করি নাই,যা করেছি পোলাপানের শুখের জন্য। ঢাকা শহরে আমার দুইটা বাড়ি, এই গুলো গুলো কি আমার জন্য করেছি ?? দয়া করে তোমার মেয়েকে বুঝাও। এই ঘটনা যদি হয় আমি কি করে মানুষের সামনে মুখ দেখাবো ?

এক মুরুব্বি বয়স ষাট উর্ধ হবে। আমার কাছ থেকে তার দুরুত্ব এক হাতের বেশিনা। তিনিও বসে আছেন। ফোনে কথা বলছেন আর তার দু চোখ বেয়ে পানি ঝরছে, অঝর ধারায়। যতটুকু শুনলাম বুঝতে পারলাম তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতেছেন ফোনে, ফ্যামিলিগত কোন সমস্যা নিয়ে।
সমস্যার কারণ তার কইন্যা।

কথা বন্ধ করে চোখ মুছলেন, আমি এমন ভাবে আইলেন্ডের উপর দিয়ে যাওয়া গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছি যাতে তিনি বুঝতে না পারেন আমি তার দিকে মন সংজোগ করেছি। মানুষিক সমস্যার কাছে হার মানা মানূষ গুলো সবসময়ই নিজেক খুব অসহায় ভাবে। এবং তার আসেপাশে থাকা মানুষ গুলোর সাথে কথা বলার জন্য মুখিয়ে থাকে, নিজেকে একটু হালকা করার জন্য। তিনিও চরম মানুষিক জন্ত্রনায় থাকায় তার দৃস্টি আকর্ষন করার চেস্টা করলাম। তিনি তাকালেন,

জিজ্ঞেস করলেন তুমি কি এই এলাকায় থাকো।
হুম।
কি করো ?
কিছুইনা।
বাড়ি কই ?
জায়গার নাম বললাম।
এইভাবে অনেক কথা জিজ্ঞেস করলো, আমিও তার সব গুলো কথার উত্তর দিলাম। যাতে আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যেতে না পারেন। তার জানার পার্ট শেষ চুপ করে বসে আছেন।

এইবার আমি জিজ্ঞেস করলাম।
আঙ্কেল কি কোন রকম সমস্যায় আছেন? চোখ মুখ কেমন শুকনা লাগতেছে ।
বাবা অনেক সমস্যায় আছি।
কি সমস্যা, বলা যাবে ? না গেলে বলার দরকার নাই ।

এবার উনি বলা শুরু করলেন, আমি ওয়াসাতে চাকরী করেছি, মীরপুরে আমার দুই দুইটা বাড়ি। আমার দুই ছেলে অস্ট্রেলীয়াতে থাকে।
দুই মেয়েকে বিয়ে দিছি, মেয়ের জামাই দুই জনই আর্মীর মেজর। (এইটুকু বলে থামলেন)

আমি বললাম তাহলে তো আপনার কোন সমস্যা থাকার কথাও না। কি এমন সমস্যায় পড়লেন।

আবার বলা শুরু করলেন, বাবা আমার ছোট মেয়ে খুব মেধাবী গ্রীন উনিভার্সিটিতে পড়ে,
(এইটূকু শুনে আগ্রহ আরো বাড়লো আমার, সেই বালিকা কেন্দ্রিক ঘটনা)
ফ্যামিলীর সবাই খুব আদর করে। যা চেয়েছে কোন দিন অপুর্ন রাখি নাই। কিন্তু ....। (আবার থামলেন)

কিন্তু কি আঙ্কেল ?

মেয়েটা একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জরাইছে। (আবার থামলেন)

বললাম, এখনকার সময়ে এটা তো স্বাভাবিক, এতো টেনশনের কি আছে ?

ও যদি ওর সমপর্জায়ের একটা ছেলের সাথে প্রেম করতো, আমার এটা নিয়ে কোন মাথা বেথা ছিলো না। ও যে উনিভার্সিটিতে পড়ে সেই ইউনিভার্সিটির একটা ছেলেকে পছন্দ করতো, গরিব হলেও সমস্যা ছিলো না, আমি টাকা পয়সা দিয়ে ঊঠায়া দিতাম। যদি শিক্ষিত একটা ছেলে হত আমার কোন বক্তব্য ছিলো না।

বাবা, বলতে কস্ট লাগে আমার মেয়ে সম্পর্ক করেছে, একটা অশিক্ষিত পোলার লগে। যে পোলা এস এস সি ও পাশ করে নাই। ডিশের ব্যাবসা্র নামে সাইন বোর্ড ঝুলাইছে, কিন্তু করে ইয়াবার ব্যাবসা। এর আগে পুলিশ দুইবার তারে এরেস্ট করেছে। এলাকার সবাই তারে বাজে ছেলে হিসেবে চিনে। আমার মেয়েটারে অনেক বুঝাইছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

মেয়েটার দিকে তাকালে মায়া লাগে, সে আবার নেশার মধ্যে পড়ে গেলো কিনা। কারণ তার মধ্যে অনেক কিছুর হঠাত পরিবর্তন হয়ে গেছে। গত মাসে তার ভাইয়ার কাছ থেকে অনেক গুলো টাকা চেয়ে নিয়েছিলো, আমি জানতে পেরে জিজ্ঞেস করি টাকা কি করেছো, পড়ে চাপে সিকার করে ওই ছেলেকে দিয়ছে ব্যাবসা করার জন্য। (এই বলে মুরুব্বি আবার থামলেন)

আমিও চুপচাপ। কিছুক্ষন পর জিজ্ঞেস করলাম তো এখন আপনার পরিকল্পনা কি?? উনি বললেন, আমার যা করার ছিলো করেছি কিছুই হয় নাই, কিছুদিন ওই পোলার থেকে দূরে ছিলো এখন আবার ওই ছেলের সাথে মিশা শুরু করেছে। আমার কোন কিছুই মাথায় ধরে না। তুমিই বল আমি কি করতে পারি ?

কিছুক্ষন পর চুপ করে থেকে বললাম, কাকা আপনের সমস্যার একটা সমাধান আছে, তবে কিছুটা সময় লাগবে। যদি সঠিক ভাবে করতে পারেন তাহলে সমস্যা মিটে যাবে গ্যারান্টি। গ্যারান্টি বলায় কিছুটা আগ্রহ নিয়েই এগিয়ে এলো, সব পথ শেষ ভেবে যারা বসে পড়েন, এইরকম মানুষদের কিছু বলতে গেলে গ্যারান্টি কথাটা বলতে হয়, তা না হলে তাদের কিছু করার আগ্রহ জন্মায় না।
এই জন্যই গ্যরান্টি শব্দটা ব্যাবহার করলাম। কথা শুনে এবার আমার কাছে এগিয়ে এলো লোকটা।

বল কি সমাধান।

যেহেতু সে এই রকম একটা ছেলের সাথে রিলেশনে জরাইছে, আমি এইটুকু বলা যায় সে তার ভার্সিটির কোন ফ্রেন্ড এর সাথে এটা শেয়ার করতে পারবেনা। কারণ ওই সব ছেলে মেয়েদের মেন্টালিটি এতটা নিচু মানের নয়।

আপনি একটা কাজ করতে পারেন, যে কোন একটা উপলক্ষ কেন্দ্র করে ওর ভার্সিটির সকল ফ্রেন্ডদের দাওয়াত করেন। সবাই বাসায় আসলে সবার সাথে আন্তরিক ভাবে মিসেন। তাদের কন্টাক নাম্বার নেন। এতটা সুক্ষ ভাবে করবেন যাতে আপনার মেয়ে টের না পায়।
পরবর্তিতে তাদের সাথে অন্য কোন এক জায়গায় দেখা করেন, পুরো ঘটনা খুলে বলেন তাদের। তাদের হেল্প চান।বাবা হয়ে অন্য ছেলে মেয়ে গুলোর কাছে হেল্প চাইলে তারা আপনাকে হতাশ করবে না।

এই সময়ের ছেলে মেয়েরা সব চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয় তার বন্ধু বান্ধবিদের। তারা ওর বিষয় টা বের করবে এবং ওরাই আপনার মেয়েকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিবে সে যা করছে সেটা পুরপুরি ভুল। এই ভাবে কন্টিনিউ চলতে থাকলে এক সময় আপনার মেয়ে তার ভুল বুঝতে পারবে। তার বন্ধুরা যদি এই দায়ীত্ব নেয় তাহলে আপনার মেয়ে পুরোপুরি লাইনে চলে আসবে।

তবে কাকা আর একটা কথা, ওয়াসার অনেক সিনিয়র একটা কর্মচারীর সারা জীবনের বেতন থেকে খেয়ে পড়ে যা থাকে, তা দিয়ে মীর পুরে এক টুকরা জায়াগা কিনতে হিমশিম খেতে হবে আর আপনি সামান্য কর্মচারী হয়ে ২টা বাড়ি করে ফেলেছেন। অবশ্যই সেটা ভুল রাস্তায় করেছেন। কতো মানূষের হক নস্ট করেছেন। তাদের বদদোয়া কামাইছেন, কস্ট তো একটু সহ্য করতেই হবে।

আমার কথা খুব মনজোগ দিয়ে শুনেছিলেন তখন, এর পর উঠে গেলেন তার চোখে মুখে কেমন উজ্যল্য দেখতে পেয়েছিলাম। যাওয়ার সময় আমার ফোন নাম্বার নিয়ে গিয়েছিলেন।

এতো দিন পর জানলাম তার মেয়ের পরিবর্তন হয়েছে, তার বন্ধুরা নাকি অনেক হেল্প করেছে।
আজ মুরুব্বি আমায় জানালেন। খুব সস্তি নিয়েই জানালেন। দাওয়াত দিলেন তার বাসায় যেতে। অনুরোধ করলেন যেন শুক্রবাড়ে মিস না হয়। অবস্যই যেন যাই, তার মেয়ের বন্ধুরাও নাকি আসবে।

আচ্ছা যাওয়াটা কি ঠিক হবে ???

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.