![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(১ম পর্ব)
আজ পিয়াতাদের ক্লাসে অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটে গেছে।
হঠাৎ পিয়াতাদের ক্লাসের ছেলে মেয়েরা সবাই জেনে গেলো যে পিয়াতা একটা ভূত পুষে।
ভূত বলাটা ঠিক হবে না।
এটা নাকি ভূতের বাচ্চা।
নাম পিংকুলু ফুরফুরি কটকাস।
ডাক নাম পিংকু।
পিংকুর বাবার নাম শুঁটকি রজ্জক।
শুঁটকি রজ্জক আবার ভূত সমাজের রাজা। তিনি তার ছেলেকে পিয়াতার কাছে দিয়ে গেছেন "ভূতের মতো ভূত" করার জন্য।
পিংকু নাকি ভূত সমাজের নিয়ম কানুন মেনে চলেনা। কোনো ভূত শিক্ষকরাই নাকি পিংকু কে ভূতদের নিয়ম শিখাতে পারে নাই।
এদিকে শুঁটকি রজ্জক আবার সেইরকম জ্ঞানী ভূত।তিনি ভেবে চিন্তে বের করেছেন,মানুষদের মধ্যে যারা অনেক বড় বড় ক্রাইম করে তারা নাকি ভূতদের জন্য অনেক উচুঁমানের শিক্ষক হোন।
তাই একপ্রকার জোর করেই পিংকু কে শুঁটকি রজ্জক ভূতেব (ভূত সমাজে সম্মানিত ভূতদের ভূতেব বলে ডাকা হয়,যেমনটা মানুষদের বেলায় সাহেব বলে সম্মোদন করা হয়) পিয়াতার কাছে ধরে এনেছেন।
প্রায় চার মাস হলো পিংকু পিয়াতার কাছে শিক্ষা নিচ্ছে,কিভাবে ভবিষ্যতে ''ভূতের মতো ভূত'' হতে পারবে। আর অন্যদিকে পিংকুর মা কুটকিরি রিন্নি ভূতেবা ( ভূত সমাজে সম্মানিত মহিলা ভূতদের ভূতেবা বলে সম্মোদন করা হয়) পিংকুর জন্য কেদেঁকুটে এক প্রকার আরেকবার জন্মানোর দশায় চলে গেছেন ( ভূতদের মৃত্যু নেই,ভূতরা মারা যায় না,এরা আবার নতুন ভাবে মানুষ হয়ে জন্মায়।এটা ভূতদের জগতে প্রত্যেকটা ভূত্য পরিবারের জন্য সবথেকে দুঃখজনক ঘটনা)।
রিন্নি ভূতেবা কে ভূতদের চিকিৎসালয়ে গত দুমাস ধরে কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে রাখা হয়েছে। ভূতরা কিন্তু কার্বন-ডাই অক্সাইড শ্বাসের সাথে গ্রহন করে।
যাই হোক,শুঁটকি রজ্জক ভূতেব এর এই দিকে একটুও গুরুত্ব নেই।তিনি তার ছেলেকে ভূতের মতো ভূত বানাবেনই।যেভাবেই হোক,এতে তার যতো ক্ষতি হয়ে যাক না কেনো।এমনকি রিন্নি ভূতেবা মানুষ হয়ে জন্মালেও।তিনিই থুরাই কেয়ার করেন নাহ।
পিংকুকে নিয়ে যখন সারা ভূত সমাজ চিন্তিত, তখন শুঁটকি রজ্জক ভূতেব তার বিশাল ভূতের রাজ্যে নোটিশ পাঠিয়ে দিলেন যে এমন একজন মানুষকে খুঁজে বের করতে হবে যার কিনা অপরাধ লেভেল ১০ এ ১০।
সকল জ্ঞানীগুনি ভূত ভূতেবরা টানা এক বছর খুঁজে খুঁজে শেষে এই পিয়াতাকে খুঁজে পেল।
যেদিন পিয়াতাকে ভূতসমাজ খুজেঁ পেলো,সেদিন রাতের বেলা পিয়াতা বারান্দায় বসে বসে মুখ চেপে কাঁদছিলো। শুঁটকি রজ্জক ভূতেবের ছোট বোন পিংটিনি টাকিলি সেই মূহূর্তে পিয়াতার জানালার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো। সে পিয়াতাকে দেখে সাথে সাথে পিয়াতার ক্রাইম লেভেল মাপা শুরু করে দিলো।
ওমা! পিয়াতার ক্রাইম লেভেল দেখে টাকিলি ভূতেবার হার্ট জোড়া লাগার জোগার হলো ( ভূতদের হার্ট টুকরো টুকরো করা থাকে,ভূতদের হার্ট একবার জোড়া লেগে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে,তারা আবার মানুষ হয়ে যাবে)।
পিয়াতার ক্রাইম লেভেল ১০ এ ১০ দেখে টাকিলি ভূতেবা সঙ্গে সঙ্গে ভূতরাজ্যে গিয়ে শুঁটকি রজ্জক ভূতেব কে পিয়াতার খবরটা দিলেন।
এরপরদিনই শুঁটকি রজ্জক পিয়াতাকে দেখতে আসলেন।পিয়াতা সেইদিনও বারান্দায় চেয়ারে বসে মোবাইল এর স্কিনের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কাঁদছিলো।
শুঁটকি রজ্জক ভূতেব পিয়াতাকে দেখে মাটি থেকে আকাশে পড়লেন।রজ্জক ভূতেবের আনন্দ সেদিন দেখে কে!
তিনি ভূতরাজ্যে তিনদিনের আনন্দ উৎসবের নোটিশ দিলেন।
তিনদিন তিনরাত ভূতরাজ্যে চললো সর্বকালের সেরা আনন্দ উৎসব। সেই উৎসবে দুনিয়ার সকল ভূত আনন্দে আত্মহারা,অথচ বেচারা পিংকুর মন ভীষন খারাপ। সে তার মা রিন্নি ভূতেবার শাঁড়ির আচঁলের নিচে বসে টানা তিনদিন,তিনরাত কাঁদলো।
তিনদিন শেষে এক ভোর সকালে পিংকু কে একা একা পাঠিয়ে দেওয়া হলো পিয়াতার বাসায়।
সেদিন পিংকু পিয়াতার বারান্দার দরজা দিয়ে ঢুকে পিয়াতার পড়ার টেবিলের উপর একটা বইয়ের ভিতর লুকিয়ে পড়লো।পিয়াতা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
পিংকু কিছুই বুঝছিলোনা,কিভাবে কি শুরু করবে।তখন সে তার বাবা শুঁটকি রজ্জক কে মোবাইলে কল দিলো(ভূত সমাজ এখন অনেক ডিজিটাল,তারা ঝিঝি পোকার পিচ্চি পিচ্চি বাচ্চাগুলো কে এখন মোবাইল হিসেবে ব্যবহার করে।এই মোবাইল ফোন ভূত সমাজে এই যাবৎকালের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার)।
-হ্যালো,বাবা আমিতো পৌছিয়ে গেছি,কিন্তু পিয়াতা তো এখনো ঘুমায়।এখন কি করবো?
-চুপচাপ বসে থাক।দেখ কখন উঠে।
এই বলেই রজ্জক ভূতেব ফোন কেটে দিলেন।আর পিংকু অবাক হয়ে ফোনটার দিকে তাকিয়ে রইলো।
পিংকুর এখন খুব কান্না পাচ্ছে।
সে মূহূর্তেই কেদেঁ দিলো।
পিংকুর কান্না তখন চিঁচিঁ শব্দের মতো পিয়াতার সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়লো।
পিয়াতা এই ক্ষীন চিকন বাঁশির শব্দে জেগে উঠে বিছানায় বসলো।
পিয়াতার উঠে বসা দেখে পিংকু ধপ করে কান্না থামিয়ে দিলো।
পিয়াতা অবাক চোখে সারা ঘরের দিকে তাকিয়ে কি যেনো খুঁজতে লাগল।হঠাৎ পিয়াতার চোখ গিয়ে পড়লো টেবিলের উপর রাখা ইকোনোমিক্স বইটার উপর যেটার ভিতর এতোক্ষন ধরে পিংকু বসে আছে।
পিয়াতা লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে টেবিলের উপর থেকে বইটা টান দিয়ে নিলো।
পিংকু তখন ভয়ের চোটে গরম হয়ে গিয়েছে।
পিয়াতা যখন বইটা খুললো,তখন দেখলো একটা তেলাপোকা তার বইয়ের ভিতর বসে আছে।
পিয়াতা চিৎকার দিয়ে বইটা নিচে ফেলে দিলো।তেলাপোকাটা তখন খাটের নিচে ঢুকে গেলো।
পিয়াতা বইটা তুলে একটা হাঁফ ছেড়ে বইটা পড়া শুরু করলো।সেদিন পিয়াতার ইকোনোমিক্স পরীক্ষা ছিলো।
আর এইদিকে পিংকু খাটের নিচে তেলাপোকার রূপে বসে বসে হাপাঁতে লাগলো।ভাগ্যিস সে হঠাৎ ভূত থেকে তেলাপোকা হয়ে যাওয়ার মন্ত্র টা শিখেছিলো।।।।।
.....
.........
চলবে........(এরপর আগামী পর্বে চোখ রাখুন, ধন্যবাদ)
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৩৮
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমিতো বড় হয়ে গেছি তাই ভূতের উপর আগ্রহ কম।