নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মঃ- ৩১ ডিসেম্বরঃ মৃত্যুঃ- ২০....

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

ভাস্কর চৌধুরী

ভাবনার গতি আর জীবনের গতি এক সমতলে থাকে না। বদল হয় জীবনের গতিপথ। নেশা হলো কলম সৈনিক হবো। পেশা বেছে নিলাম সাংবাদিকতা। মানুষ আর প্রকৃতির মাঝে খুঁজে বেড়িয়েছি নানা উপকরণ। তত্ব আর তথ্যের যেখানে সমন্বয় আমি সেখানেই খুঁজেছি সংবাদ- আমার পরিতৃপ্তি। [email protected] ০১৭১২-৫২৯৫৬৭ ০১৯১৪৭১২৪০২

ভাস্কর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চীরঘুমে ৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকল্যানমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩২

৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকল্যানমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী বাংলাদেশের রাজনীতির একটি চেয়ার ফাঁকা করে পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে।দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে গত দুদিন ধরে অনেকটাই সুস্থ ছিলেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়েই ফিরতে উৎগ্রীব ছিলেন প্রিয় ঠিকানা মৌলভীবাজারে। অনেকটা সুস্থ অবস্থাতেই হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৮টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান তিনি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দেশ আর দেশের মানুষকে অনেক দিয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ গঠনে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রচুর কাজ করেছেন। মঙ্গলবার ঢাকায় জানাজা শেষে বুধবার ফিরবেন তিনি মৌলভীবাজারে। কিন্তু তার এমন ফেরা বড় বেদনার মৌলভীবাজারবাসীর জন্য।



সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এম,পির মৃত্যুতে মৌলভীবাজারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দলীয় নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ ভীড় করছেন মন্ত্রীর মৌলভীবাজারের বাড়ীতে। মৃর্ত্যুও খবর জেলায় জানাজানি হলে শোকের ছায়া নেমে আসে। দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ ভীড় করছেন মন্ত্রীর মৌলভীবাজারের ৩৬, শ্রীমঙ্গল রোড বেড়ীর পারের বাড়ীতে। এদিকে মৃতের আত্মার শান্তি কামনায় সকাল থেকে বাড়ীতে কোরআন তেলাওয়াত চলছে।



ব্রিটিশ কাউন্সিলর ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এমএ রহিম সিআইপি বলেন, সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুতে জাতি একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও সূর্য সন্তানকে হারালো। তার মৃত্যুতে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে, যা কোনদিন পূরণ হবার নয়। সৎ , সজ্জ্ন হিসেবে একাত্তরের রণাঙ্গনে তার সাহসী ভূমিকা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।

সংসদ সদস্য হওয়ার আগে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পরপর ৩ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন মহসিন আলী। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি বিএনপি নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে বিপুল ভোটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তখন কোনো মন্ত্রীত্ব পাননি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আবার বিজয়ী হবার পর তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৃণমূলের এই নেতা সম্মানিত হন তার কাজের জন্য।



সৈয়দ মহসিন আলীর বাবার নাম শরাফ আলী। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। সৈয়দ মহসিন আলীর মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। মৌলভীবাজার থেকে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি কলকাতা চলে যান। কলকাতার আলীপুরে ছিলো তার বিশাল বাড়ি। আলীপুরের সেই বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১২ই ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ৬ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। বৈবাহিক জীবনে তিনি ৩ কন্যাসন্তানের জনক।

সৈয়দ মহসিন আলীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় কলকাতায়। তিনি কলকাতার সেন্টজেবিয়ার্স স্কুলে জুনিয়র কেম্রিজ ও সিনিয়র কেম্রিজ পাস করেন। পরবর্তীকালে আবার বাংলাদেশে এসে বাংলা মাধ্যমে কিছুদিন পড়াশুনা করেন। তবে আবারও তিনি কলকাতা থেকে ম্যানেজমেন্টে ডিপ্লোমা করেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। দেশমাতৃকার প্রতি তার মমত্ববোধের কারণে স্বতস্ফূর্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখসমরে যুদ্ধচলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সিলেট বিভাগে সিএনসি স্পেশাল ব্যাচের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কাজ করেছেন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ গঠনেও। তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। মৌলভীবাজার মুহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীকালে টানা ১২ বছর জেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতাত্তোরকালে তিনিই একমাত্র জননেতা যিনি পৌরসভায় পর পর ৩বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে।



২০১৪ সালের ১২ই জানুয়ারি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজকল্যাণমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলোকে ঢেলে সাজিয়েছেন। সেখানে এখন বহুমুখী বাস্তবসম্মতপ্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি ভারতের নেহেরু সাম্য সম্মাননা ও আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন সম্মাননা স্বর্ণপদক লাভ করেন।



সাহিত্য ও সাংবাদিকতা ছিলো তার পছন্দের বিষয়। অবসরে তিনি বই পড়তে ভালবাসতেন। কবি-লেখকদের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা দিতেন। দেশের বড় বড় সাংবাদিকদের অনেকেই ছিলেন তার ব্যক্তিগত বন্ধু। তিনি এক সময় বাংলাদেশ টাইমসের প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।



সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের হুইপ ও বড়লেখা-জুড়ী আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি, ব্রিটিশ কাউন্সিলর ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এমএ রহিম সিআইপি গভীর শোক জানিয়েছেন।

মৌলভীবাজার শহরের শাহ মোস্তফা মাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর দাফন হবে বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।



গান তার প্রিয় একটি বিষয়। ধ্রুপদী, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরণের গানই তার মুখস্ত ছিলো। তার স্মৃতিতে প্রায় ৫ হাজার গানের সংগ্রহ ছিলো। সমাজকল্যাণে তার প্রিয় সংগীত ছিলো ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’। সমাজকল্যাণে তিনি এভাবেই তার নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

হতাস৮৮ বলেছেন: ভাই এতদিন আপনারা কোথায় ছিলেন?? যখন সংবাদ মাধ্যমগুলো এই ভদ্রলোককে নানাভাবে অপদস্ত করেছে। আর এখন ইন্তেকালের পর তার ইতিহাস নিয়ে কথা বলছেন।

আমরা কী আমাদের এই হীনমন্যতা থেকে বের হতে পারব না। আর এই রীতিটা দেখি আমাদের দেশেই বেশি। কেন?? সেটা ব্যক্তি বা জাতীয় পর্যায়ে, সব জায়গায় একই অবস্থা। ইন্তেকালের পরে শুরু হয় তাকে নিয়ে টানাটানি। এই পুরষ্কার, ঐ পুরষ্কার। অথচ জীবিত অবস্থায়, যে যার মনের মত করে অপদস্ত করতে ব্যস্ত।

অথচ এতদিন, লোকটাকে নিয়ে আমরা কি না করেছি, বলেছি?? কেউ কোন উচ্চবাচ্য করি নি। যারা তাঁর সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতেন তারাও এগিয়ে আসেন নি।

আর এখন মারা গেছেন, এখন শুরু হয়েছে।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭

সনেট কবি বলেছেন: আল্লাহ তাঁর আত্মার শান্তি করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.