নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তন্দ্রাকুমারী একটি কাল্পনিক চরিত্র যার সন্ধানে আছি নিশিদিন!!
আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। আট-দশটা মানুষের মতো আমারও কিছু দূর্বলতা আছে, কিছু ভাল দিক আছে। লজ্জা আছে, ভয় আছে, আছে প্রেম ও করুণা; ভরসা করার মতো কিছু যোগ্যতা। আমার বাল্য কাল আর কৈশরকালে সামাজিক বিভিন্ন নিয়মের প্রতি অশ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, ধর্ম-অধর্ম এবং এ জাতীয় নানান বৈষম্য আমাকে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ফেলে দিয়েছিল। আজ ভাবি, আমার মা-বাবা যদি আমার মা-বাবা না হতো তবে কেমন হতো?
যদি আমার জন্ম হতো সোনার চামচ মুখে দিয়ে! না চাইতেই পেয়ে যেতাম সব ধরণের বিলাসীতার উপকরণ। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তাম। সূর্যের মতো চকচকে শরীর হতো। সমুদ্রের জলতরঙ্গের মতো উদ্যামতা থাকতো প্রতি অঙ্গের খাঁজে খাঁজে। বিপরীত লিঙ্গকে আকৃষ্ট করতে পারতাম কোন রকম চেষ্টা ছাড়াই। তবে কেমন হতো? আমি সুখের সাগরে ভাসতে ভাসতে আছড়ে পড়তাম কোন এক মালবাহী জাহাজের বুকে? কিংবা হাঙ্গরের পালগুলোকে এলামেলো করে দিতাম এক পলকে? আমি হয়তো কোন আবদার করতাম, আর তা বাস্তবায়ন হতো কোন এক মুহূর্তের পিছুটান ছাড়াই। আমার বাবার বিশাল এক বাহিনী থাকতো, আমার নিরাপত্তার দিকটি দেখার জন্য। সব ধরণনের প্রসাধনী আর পোশাকের বাহারে আমার বেডরুম থাকতো সর্বদাই পূর্ণাঙ্গ। আমর ভ্রমণগলো হতো ইচ্ছেমতো, এখানে ওখানে দু’চোখ ভাসিয়ে কাঁদতে হতো না। মনটা কখনো বিষন্ন হতো না কোন কিছু না পাবার জন্য!
বরং, আমি যদি হতাম কোন কৃষকের সন্তান। ছোটবেলায় চাষবাস শিখে সারাদিন মাঠে-হাটে দিনরাত থেকে থেকে ক্ষুদ্র ঋণ কিংবা বৃহৎ ঋণের দায়ে বারবার জর্জরিত হতাম। স্ত্রী সন্তানদের ঠিকমতো দেখভাল করতে পারতাম না। তারা দিনের পর দিন কোন না কোন অজুহাতে মুখ ভার করে রাখতো আর মনে মনে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আমাকে অভিসম্পাত করতো। আমি হয়তো পাক্কা মুসল্লী হয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুধু প্রর্থনা করতাম, আমাকে ভাল রাখো, আমার স্ত্রী সন্তানদের ভালো রাখো হে স্রষ্টা, হে পরম করুণাময়। আর স্রষ্টা আমার মেয়ের অসুখ, ছেলের মৃত্যু, স্ত্রীর কঠিন ব্যামো বাধিয়ে দিতো। আমি তবুও হয়তো নতুন করে বেঁচে ওঠার স্বপ্ন দেখতাম।
আমি যদি হতাম কোন একটি দেশের সেনা প্রধানের সন্তান। ধরা যাক, ইউরোপের কোন এক দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে যদি আমি বেড়ে ওঠতাম! আমার মা-বাবা নিবিড় মমতায় আমাকে বড় করে তুলতো। পুষ্টিকর খাদ্য, আরামদায়ক বাসস্থান, পরিমিত প্রমোদ ভ্রমণ, শারিরীক ও মানসিক পরিপূর্ণতায় আমি বেড়ে ওঠতাম। আমার আচার-আচরণ হতো ভদ্র, নম্র, মিষ্টি কথায় পরিপূর্ণ, বীরোচিত চাহনী, জ্ঞান গরীমায় অতুলনীয়। হয়তো হলিউডের কোন সিনেমায় আমি অভিনয় করতাম। সুনিশ্চিতভাবেই আমার থাকতো অনেক ফ্যান-ফলোয়ার। অনেক মেয়ে আমার ক্রাশ খেতো। কোন মেয়ে অথর্ব বা অকেজো না ভেবে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরতো আমাকে। আমিও হয়তো জীবনের রং-রস-স্বাদ আস্বাদান করতে পারতাম তবে!
হতাম যদি আমি কোন পয়গম্বর বা নবী রাসূলের সন্তান। পবিত্র আত্মার পথে আমি ছুটে চলতাম। মহানুভবতা আর ঐশ্বরিক বাণীর পথ আমাকে ডাকতো সকালে ও সন্ধ্যায়। সামাজিক সংস্কার আর মুক্তির আন্দোলনে আমি হতাম এক অগ্র পথিক। আমি আত্মিকভাবে থাকতাম বিশুদ্ধতম এবং প্রশান্ত। আমার প্রধান শত্রু হতো পাপ আর পাপাত্মা শয়তান। আমি নিজেকে বার বার আবিষ্কার করতে পারতাম নতুন কোন ইতিহাসে, নতুন যুগের স্বাক্ষী হতে পারতাম যুগ যুগ ব্যাপী।
নিজের অবস্থান ছেড়ে নেমে এসে মানুষের ভীড়ে নিজেকে দেখবার এই যে বিপদ সংকুল পথ; আমাকে ঠিকই মানবিক সত্যের দিকে নিয়ে যায়!
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:২১
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: সাখাওয়াত
২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: ঘুম কুমারীর ঘুম কি ভাঙ্গল? স্যরি তন্দ্রাকুমারী হবে।
মানুষের পরিচয় তার কর্মে। আপনি কৃষকের সন্তান না ধনীর সন্তান সেটা বড় কথা নয়। আপনি মানুষ এটাই আপনার বড় পরিচয়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:২৬
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আপনি সঠিক বলেছেন।
৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: আপনি যদি।হিন্দুর ঘরে জন্ম নিতেন তবে মুসলমান হতেন।আপনি অনেকের ঘরেই জন্ম নেয়ার কথা বলেছেন তাই এই প্রশ্ন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:২৮
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: হয়তো হতাম। কিন্তু জার্নিটা সহজ হতো না হয়তো।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার 'তন্দ্রাকুমারী' নিক নেবার পেছনের রহস্যটা বলেন?
এস্কিমোর প্রধান, জুলু সর্দার এইসব বাদ গেল কেন?
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আমি একটা কবিতার বইয়ের নাম হিসেবে তন্দ্রাকুমারী সিলেক্ট করেছিলাম। সে হিসেবেই এই ব্লগের আইডির নাম দেই। এখন চেঞ্জ করা যাবে কিনা জানি না। চেঞ্জ করতে হবে। মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।
৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬
শায়মা বলেছেন: রবিঠাকুরের একটা কবিতা আছে-
অন্য মা
আমার মা না হয়ে তুমি
আর কারো মা হলে
ভাবছ তোমায় চিনতেম না,
যেতেম না ঐ কোলে?
মজা আরো হত ভারি,
দুই জায়গায় থাকত বাড়ি,
আমি থাকতেম এই গাঁয়েতে,
তুমি পারের গাঁয়ে।
এইখানেতে দিনের বেলা
যা-কিছু সব হত খেলা
দিন ফুরোলেই তোমার কাছে
পেরিয়ে যেতেম নায়ে।
হঠাৎ এসে পিছন দিকে
আমি বলতেম, "বল্ দেখি কে?"
তুমি ভাবতে, চেনার মতো
চিনি নে তো তবু।
তখন কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে
আমি বলতেম গলা ধরে--
"আমায় তোমার চিনতে হবেই,
আমি তোমার অবু!"
ঐ পারেতে যখন তুমি
আনতে যেতে জল,--
এই পারেতে তখন ঘাটে
বল্ দেখি কে বল্?
কাগজ-গড়া নৌকোটিকে
ভাসিয়ে দিতেম তোমার দিকে,
যদি গিয়ে পৌঁছত সে
বুঝতে কি, সে কার?
সাঁতার আমি শিখিনি যে
নইলে আমি যেতেম নিজে,
আমার পারের থেকে আমি
যেতেম তোমার পার।
মায়ের পারে অবুর পারে
থাকত তফাত, কেউ তো কারে
ধরতে গিয়ে পেত নাকো,
রইত না একসাথে।
দিনের বেলায় ঘুরে ঘুরে
দেখা-দেখি দূরে দূরে,--
সন্ধ্যেবেলায় মিলে যেত
অবুতে আর মা-তে।
কিন্তু হঠাৎ কোনোদিনে
যদি বিপিন মাঝি
পার করতে তোমার পারে
নাই হত মা রাজি।
ঘরে তোমার প্রদীপ জ্বেলে
ছাতের 'পরে মাদুর মেলে
বসতে তুমি, পায়ের কাছে
বসত ক্ষান্ত বুড়ী,
উঠত তারা সাত ভায়েতে,
ডাকত শেয়াল ধানের খেতে,
উড়ো ছায়ার মতো বাদুড়
কোথায় যেত উড়ি।
তখন কি মা, দেরি দেখে
ভয় হত না থেকে থেকে,
পার হয়ে, মা, আসতে হতই
অবু যেথায় আছে।
তখন কি আর ছাড়া পেতে?
দিতেম কি আর ফিরে যেতে?
ধরা পড়ত মায়ের ওপার
অবুর পারের কাছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০১
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: যদির উপর কত কিছু নির্ভর করে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০১
অতন্দ্র সাখাওয়াত বলেছেন: আসলেই!
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:১৪
কামাল১৮ বলেছেন: এখন যে আপনি কোনটা সেটাইতো বোঝতে পারছিনা।তন্দ্রাকুমারী নাকি সাখাওয়াত