নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আশর্ফুল ফ্যান

হোসাঈন সুমন

আশরাফুল ফ্যান

হোসাঈন সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'আশার-ফুল\' আশরাফুল

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৫২

৬ সেপ্টেম্বর ২০০১, শ্রীলংকার কলম্বো শহর।
এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। স্বাগতিক লংকার
প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। একাদশে আশরাফুল নামে এক
বালকের অভিষেক। প্রথম ইনিংসটায় ২৬ রানে ফিরে
আসলেন সাজঘরে। ছিল চার চারটি চারের মার।
দর্শনীয় এসব শটে মনে হল ছেলেটার প্রতিভা
আছে।
দ্বিতীয় ইনিংস আশরাফুলকে
বানিয়ে দিল রেকর্ডবয়। ক্রিজে থাকলেন চার
ঘন্টা। মুরালি-ভাস-পুষ্পকুমারা-সামারাবিরাদের ২১২টি বল
খেলে ফেললেন অনায়াসে। হাঁকালেন
সেঞ্চুরি। করে ফেললেন রেকর্ড।
সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে
অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরিয়ান। সেদিন 'যুগান্তর'-
এ ছাপানো রিপোর্টে শিরোনাম দেওয়া হল
‘আশার ফুল আশরাফুল’। সাড়া জাগানো এই শিরোনামটি
আশরাফুলের ব্যাট জ্বলে উঠলেই অন্যসব
সহযোগি দৈনিকে ব্যবহার হতো অনিয়মিতভাবে।
ক্রিকইনফোর হিসেবে অভিষেক টেস্টে
সেঞ্চুরি হাঁকানো সবচেয়ে কনিষ্ঠ ক্রিকেটার
হলেন আশরাফুল। উপস্থাপক বললেনও তাই। যদিও
পাসপোর্ট জানান দিচ্ছিল, আশরাফুলের জন্মদিন ৯
সেপ্টেম্বর। কিন্তু উপস্থাপকের হ্যাপি বার্ড ডে
সম্ভাষণে আশরাফুল জবাব দিলেন, 'থ্যাকংস' বলে।
ব্যাস... হয়ে গেল রেকর্ড।
৮ সেপ্টেম্বর ২০০১। ইনিংস ও ১৩৭ রানে দল
হারলেও রেকর্ড করা সেঞ্চুরি হাঁকানোর কারণে
১০ উইকেট পাওয়া মুরালিধরনের ম্যাচ সেরা সম্মানে
ভাগ বসালেন আশরাফুল। বিপত্তিটা ওখানেই।
পুরস্কারবিতরণী অনুষ্ঠানে কী বলবেন তাই
বুঝে উঠতে পারছেন না আশরাফুল, সেটিও আবার
বলতে হবে ভিনদেশী ভাষায়। যা হোক, মাঠের
ক্রিকইনফোর হিসেবে অভিষেক
টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানো সবচেয়ে কনিষ্ঠ
ক্রিকেটার হলেন আশরাফুল। উপস্থাপক বললেনও
তাই। যদিও পাসপোর্ট জানান দিচ্ছিল, আশরাফুলের
জন্মদিন ৯ সেপ্টেম্বর। কিন্তু উপস্থাপকের হ্যাপি
বার্ড ডে সম্ভাষণে আশরাফুল জবাব দিলেন,
'থ্যাকংস' বলে। ব্যাস... হয়ে গেল রেকর্ড।
রাস্তার ওপারেই তাজ সমুদ্র। টিম হোটেল। হাতের
কাজ সেরে তাজ সমুদ্রের লবিতে। সঙ্গে নিলাম
বড়সর একটি কেক। লবিতে আসলেন
ক্রিকেটাররা। টেবিলে রাখা কেক কাটার
আয়োজন করা হলো। সবাইকে জানালাম, কেক
কাটা এক ঢিলে দুই কাক তাড়ানোর মতো।
আশরাফুলের স্মরণীয় রেকর্ড, সেই সঙ্গে
আমার একমাত্র ছেলে প্রাপ্যর প্রথম জন্মদিন।
সবাই একটু বেশিই আনন্দিত হলো বিষয়টিতে।
বালক আশরাফুল যেন একটু বেশিই বিস্মিত হলেন।
এরপর থেকেই আশরাফুলের সঙ্গে আমার
পুরো পরিবারের একটি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে
উঠল। আর কীভাবে সেটি তৈরি হলো তা বলতে
পারব না। আমার ছেলের ঘরে দেওয়ালে একটাই
ছবি আছে, বালক আশরাফুল আর পিচ্চি প্রাপ্য।
সম্পর্কটা শুধু ছবিতেই ছিল না। নানা উৎসবে আনন্দ
ভাগাভাগিতে আশরাফুল-আমরা থাকতাম একসঙ্গে।
আশরাফুলের ক্যারিয়ারে উত্থানেও ছিলাম, পতনেও
পাশে ছিলাম সবসময়। ছিলাম সাম্প্রতিক দুঃসময়েও।
কোনো পুঁথিগত বা আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার
বাইরে থেকে উঠে আসা আশরাফুল বাংলাদেশের
আধুনিক ক্রিকেটের ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। ভুল
করেছেন, স্বীকার করেছেন, ক্ষমা
চেয়েছেন। শাস্তি মেনে নেওয়ার মানসিক
প্রস্তুতিও নিয়েছেন। বিরল এই কাজগুলো
দেশের তাবৎ 'ভালো' লোকগুলোর কে
কবে করেছেন?
ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ স্বীকার করে
নেওয়ার পর প্রায় প্রকাশ্যে আশরাফুলের পক্ষ
নেওয়ায় আমার ওপর অনেকে ক্ষিপ্ত।
দায়িত্বশীল একটি অবস্থানে থাকার পর কেন
প্রকাশ্যে এমনভাবে আশরাফুলের পক্ষ নেওয়া,
অনেকেই বিষয়টি আমার নজরে আনার চেষ্টা
করেছেন। বিরক্তও হয়তো হয়েছেন। তাতে
কী। কে কী মনে করল, কে কী ভাববে
আর তা ভেবে এই অর্ধশত বছর বয়সে কিছু করা
থেকে নিজেকে কখনও কোনো কাজে
বিরত রাখিনি। আশরাফুলের ক্ষেত্রে তো প্রশ্নই
উঠে না।
কোনো পুঁথিগত বা আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার
বাইরে থেকে উঠে আসা আশরাফুল বাংলাদেশের
আধুনিক ক্রিকেটের ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। ভুল
করেছেন, স্বীকার করেছেন, ক্ষমা
চেয়েছেন। শাস্তি মেনে নেওয়ার মানসিক
প্রস্তুতিও নিয়েছেন। বিরল এই কাজগুলো
দেশের তাবৎ 'ভালো' লোকগুলোর কে
কবে করেছেন?
এখনকার আশরাফুলের বিরুদ্ধবাদীদের কেউ
কী এমন কোনো উদাহরণ দিতে পারবেন?
পারবেন না। কারণ তারা মনে করেন, তারা সবাই
ভালো আর সৎ মানুষ দ্বারা পরিবেষ্টিত। আমি ভাই
ওসব ভাওতাবাজীর মধ্যে নেই। আশেপাশে
প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণ ঘটে যাওয়া নানা অসভ্যতা,
অন্যায়, অবৈধ কাজকর্মে লিপ্ত মানুষদের মাঝে
থাকা আমার কাছে আশরাফুল এখনও নায়ক।
সেই নায়ক জানিয়েছেন, আবারও ক্রিজে
ফিরবেন তিনি। অপেক্ষায় থাকলাম। ২২ গজের
পিচে আশরাফুলকে না দেখা পর্যন্ত ছেলের
ঘরের দেওয়াল থেকে ছবিটি নামাবো না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.