নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হৃদয়ের স্পন্দন

হৃদয় এর স্পন্দন

সুখে থাকার অভিনয়

হৃদয় এর স্পন্দন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিদ্ধার্থ

১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৮

ভোর ৫ টা বেজে কুড়ি মিনিট, প্রতিদিন এ সময় ঘুম ভেঙ্গে যায় সিদ্ধার্থ এর, তাও আবার সপ্তাহের ৬ দিন, যখন তার ঔষধের তিব্রতা কমতে থাকে তখন সে জেগে উঠে, একজন নার্স এক গ্লাস পানি দেয় তাকে, সে পানি খাবার পর ই তার ওয়াশরুমে যাবার প্রয়োজন পড়ে, ওয়াশরুম থেকে ফিরেই তাকে বেডে যেতে হয়, নার্স এসে একটা ইনজেকশন দেয় তাকে আবার ঘুমিয়ে পড়ে সে। বিগত পাচ বছর এইভাবেই চলছে তার দিন, দিনের শুধু মাত্র এই একটা বার সিদ্ধার্থ এক মিনিটের সময় পায় আর সেটা শুধু এক গ্লাস পানি আর ওয়াশরুম পর্যন্ত এর বাহিরে কিছুই করতে পারেনা সে। তাকে শুধু প্রসাব করতে দেওয়া হয়, কিন্তু তাকে তার জৈব নির্গমন করতে দেওয়া হয়না, যদিও তার দরকার পরেনা সিদ্ধার্থ জৈব নির্গমন না করেই বেচে আছে এতো দিন, তাকে ইনজেকশন দিবার পর একটি বেডে শুয়ানো হয় সেখানে সে পা দিয়ে হ্যান্ডেল ঘুরাতে থাকে অচেতন অবস্থায়, এতে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তা দিয়ে চলে গোটা বাড়ি। সে ভোর হবার একটু আগে বুঝতে পারে আর কিছুক্ষন পর সে চোখ মেলবে, একজন সাদা পোশাকধারিনি এক গ্লাস পানি হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে, তাকে খেয়ে সোজা ওয়াশরুমে যেতে হবে, সেইখান থেকে বিছানা, আবার কিছু নলে, কিছু পাইপে জরিয়ে যাবে তার দেহো , আচ্ছা সাদা পোষাক পরিহিত মানুষ টি কি ছেলে না মেয়ে? তার সাথে কোনোদিন কথা হয়নি তার শুধু একদিন একটা কলম আর সাদা কাগজ চেয়েছিলো রোহিত, মানুষ টি কোনো কথা বলেনি, ইশারায় দেখিয়েছিলো টেবিলের উপর আছে, রোহিত খুব কম সময় পায়, প্রথমদিন সে কলম টি নিয়েছে আজ সে কাগজ নিয়ে গিয়েছে ওয়াশরুমে, তাকে তার জীবন কাহিনি বর্ণনা করতে হবে, কিন্তু সে প্রতিদিন মাত্র একটি শব্দ লিখতে পারবে। তাকে অন্তত ৫০০ শব্দ লিখতে হবে, সে হিসেবে তার পুরু গল্প লিখতে লাগবে একদিন এ একটি শব্দ, মাসে ৩০ দিন, ৪ দিন তাকে জাগানো হয়না, মানে মাসে ২৬ শব্দ, সে হিসেবে বারো মাসে ৩১২ শব্দ, দাড়ি কমার ব্যাপার টা নিলে আরো নিখুত হিসেব করতে হবে, কিন্তু এখন সে সময় নেই, রোহিতের প্রায় দু বছর লেগে যাবে, তবু তাকে লিখতে হবে। সিদ্ধার্থ আর সামিয়া খেলার সাথি , সামিয়ার মা বাবা নাই, সামিয়া তার খালামনির কাছে থাকে, এই মানুষ টাকে সিদ্ধার্থ এর কাছে কেমন যেনো বেখাপ্পা লাগে, তাছাড়া সিদ্ধার্থ এর মা সিদ্ধার্থ কে সামিয়ার বাসায় যাবার জন্য বকা দিতো যেতে না করতো তবু যেতো সিদ্ধার্থ, মাঝে মাঝে সামিয়াও পাগলের মতো আচরন করে, বিড়বিড় করে কার সাথে যেনো কথা বলে, এমন এক বিকালে সিদ্ধার্থ খেলতে যায় সামিয়ার সাথে, সামিয়া তখন মাথায় একটি হেলমেট পরে ঘুরছিলো, আমিও পরব বলেই অন্য একটি হেলমেট মাথায় পরে সিদ্ধার্থ । কে যেন তাকে ধরে ফেলে, সিদ্ধার্থ বুঝতে পারে তার মাথার ভিতর কি যেন ঢুকে যাচ্ছে একটা একটা করে ৮ টা ঘনল সিদ্ধার্থ তার মনে পরে গেল হেলমেট এর উপর নয় টা স্ক্রুপ দেখেছিল সে, সে সামিয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলো এগুলা কি? সামিয়া শুধুই হেসেছিলো কোনো উত্তর দেয়নি সামিয়া, শেষ একটা স্ক্রু তার মাথার ভিতর ডুকে গেল আর কিছু মনে নেই তার। এভাবেই চলছে অনেক অনেক দিন যা হিসেব করা হয়না, যদিও তার দরকার নেই, সিদ্ধার্থ কখনই এর থেকে বের হতে পারবেনা, তাই তার হিসাব করা হয়ে উঠেনা। সকাল টা আজ অন্যরকম ভাবেই শুরু হল , ঘুম থেকে উঠল সিদ্ধার্থ কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে আজ নার্স টি কে দেখা গেলনা সিদ্ধার্থ চাচ্ছে পালাতে কিন্তু সেই শক্তি টুকু নেই তার, সিদ্ধার্থ বুঝতে পারছে তার মাথার ভিতর কে যেন কথা বলছে‍ বুঝতে পারছেনা সে, সিদ্ধার্থ এইদিকে সিদ্ধার্থ এইদিকে করে পাগল করে দিচ্ছে তাকে . কিছু মানুষের পদধ্বনি পাচ্ছে সে সিদ্ধার্থ সিদ্ধার্থ চিৎকার চেচামেচিতে সিদ্ধার্থ অচেতন হয়ে পড়েছে। আবার ঘুম ভাঙ্গলো কিন্তু সে মানুষটির আজো দেখা পেলোনা সিদ্ধার্থ, বরং মাথার ভিতর সিদ্ধার্থ নাম ধরে কেউ ডাকাতেই সিদ্ধার্থ ঘুম থেকে জেগেছে, কিন্তু সিদ্ধার্থ আজ তার শক্তি হাড়িয়েছে, সে কিছুই করতে পারছেনা, সম্ভবত সেই নার্সের সাদা পানি টা খুব দরকার, সেটাই হয়তো তার চালিকা শক্তি। সিদ্ধার্থ হাতের ডানে সিদ্ধার্থ হাতের ডানে যাও, সিদ্ধার্থ বুঝতে পারেনা তার কি করা দরকার তবু সে সেই পথে পা বাড়ায় । একটু সামনে একটা বস্তু দেখতে পায় সে, সে এই জিনিস টা এর আগে কই যেনো দেখেছিলো, কিন্তু মনে পড়ছে না তার, সিদ্ধার্থ এটা খোলো হাতল ধরে টান দাও, সিদ্ধার্থ সবুজ হাতল ধরে টান দাও, ওটা খোল............ ওটা খোল ............ ওটা খোল .................. নিদারুণ যন্ত্রনায় পাগল সিদ্ধার্থ হেচকা টান দেয় সে সবুজ হাতল ধরে, ভিতর থেকে একটা ঠান্ডা হাওয়া আসে , সাথে উৎকট একটা গন্ধ, সিদ্ধার্থ একটু একটু করে মনে পরে হ্যা এই জিনিস্টা এর আগেও দেখেছে সে, ভিতর থেকে এক ধরনের ঠান্ডা হাওয়া প্রবাহিত হয় সে জানে, হ্যা এর নাম ফ্রিজ, এইখানে ফল মুল রাখা হয়, তা ভালো থাকে, কিন্তু এটা কি করে সম্ভব সিদ্ধার্থ তার নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছেনা যদিও তার বিশ্বাস অবিশ্বাস বোধ নেই, সব কিছুই কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছে, আপেল খাও সিদ্ধার্থ আপেল খাও মাথার ভিতর বাজতে থাকা কথাটায় একটা আপেল হাতে নেয় সিদ্ধার্থ, খেতে যাবে সিদ্ধার্থ এমন সময় আবারো মাথার ভিতর সেই নারিকন্ঠ বাজতে থাকে এখন না, বিছানায় যাও ঘুমুবে না শুধু চোখ বন্ধ করে থাকবে, যাও বিছানায় যাও, সিদ্ধার্থ সময় খুব কম, বিছানায় যাও সিদ্ধার্থ, কারো পায়ের আওয়াজ পাচ্ছে সিদ্ধার্থ, বিছানায় গেল সিদ্ধার্থ তার চোখে মুখে প্রচন্ড ঘুম কিন্তু মাথার ভিতর বাজতে থাকা সে নারি কন্ঠের ভুত তাকে ঘুমুতে দিচ্ছেনা, অসহ্য যন্ত্রনা করছে, কেউ একজন দরজা খুলল প্রথমেই কপালে হাত দিল তারপর হটাৎ পা গুলু বেধে ফেলল লোকটি। সিদ্ধার্থ কিছুই করতে পারছেনা কেউ যেন তাকে ইঞ্জেকশন পুশ করল সিদ্ধার্থ ঘুমের ঘোরে অচেতন। সিদ্ধার্থ সিদ্ধার্থ এই সিদ্ধার্থ উঠ, আজ হটাৎ সে নারিশব্ধ পরিচিত মনে হতে লাগল তার।

আপেল খাও, সিদ্ধার্থ পকেটে হাত দিয়ে আপেল বের করে নিল কিন্তু সে মুখে দিবার আগেই নারি কন্ঠ টি চিৎকার করে উঠল এইদিক দিয়ে না এইখানে বিষ মিশ্রিত, আপেল টি ঘুড়াও, অর্ধেক খাবে ঠিক অর্ধেক, দরকার হলে কম, কিন্তু বেশি না সিদ্ধার্থ , দরকারে ছুড়ি দিয়ে কেটে নাও, কিন্তু ছুড়ি কই পাবো কথাটা সিদ্ধার্থ জিজ্ঞাসা করার আগেই তার উত্তর পেয়ে যায় সিদ্ধার্থ তোমার বালিশের নিচে ছুড়ি আছে নয়ত খুজে নাও সময় বেশি নেই সিদ্ধার্থ, সিদ্ধার্থ বুঝতে পারলোনা কি করে নারি টি তার ছুড়ির চাহিদা বুঝে ফেলল

চলবে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:

মেট্রিক্সের মত লাগতাছে । ভালো ভালো । লিখে যা ।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫২

হৃদয় এর স্পন্দন বলেছেন: ধন্যবাদ তোকে চেষ্টায় আছি অচিরেই শেষ করবো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.