![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। আমি একজন সাধারন ছেলে। আমার বিশেষ কোন বৈশিষ্ট নেই।
বারমুডা ট্রাইএংগেলের পুরো এরিয়াটাই সমুদ্রে। যা আটলান্টিক সাগরে অবস্থিত। সুতরাং চিন্তার বিষয়- চারিদিকে পানি আর পানি, এখানে এংগেল বা ত্রিভুজের আকৃতি কি করে সম্ভব??!! সুতরাং প্রথমেই জানতে হবে যে, এংগেল বাস্তব নয়; বরং এটি একটি বিশেষ এলাকার নাম যেখানে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম হয়। ওই এলাকাকে ট্রাইএংগেল হিসেবে সাধারণ নাম দেওয়া হয়েছে। এ নামের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ আছে যে, ১৯৪৫ সালে ওই এলাকায় একসাথে কয়েকটি বিমান গায়েব হওয়ার পর এক প্রেস কনফারেন্সে সর্বপ্রথম এই নাম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা খুবই রহস্যপূর্ণ যে, নামটি কেন ট্রাইএংগেল রাখা হল।
ওই দুর্ঘটনার পূর্বেও ওখানে বহু ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু তখন ওই এলাকাকে বারমুডা ট্রাইএংগেলের পরিবর্তে শয়তানের দ্বীপ হিসেবে চেনা হত। "ক্রিস্টোফার কলম্বাস(১৪৫১-১৫০৬)" সামুদ্রিক ভ্রমণের সময় যখন ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেও ওখানে কিছু অচীন ও আশ্চর্য বিষয় প্রত্যক্ষ করেছিল। যেমনঃ আগুনের গোলা সমুদ্রের ভিতরে প্রবেশ করা, ওই সীমানায় প্রবেশ করলেই কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত কারন ছাড়াই কম্পাস খারাপ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
কলম্বাসের আমেরিকা ভ্রমণ পাঁচ শতাব্দী পার হয়ে গেল। কিন্তু এ প্রশ্ন আজও বাকী রয়ে গেছে যে- ওখানকার পানির গভীরে বা পানির উপরিভাগে-আকাশপথে কি এমন রহস্যময় বিষয় গোপন রয়েছে, যার ব্যাখ্যা বর্তমান অত্যাধুনিক স্যাটেলাইটের যুগেও খুজে বের করা সম্ভব হচ্ছেনা। ১৮৫৪ সালের পূর্বে আরব বনিকেরাও ওই এলাকা দিয়ে আসা-যাওয়া করত, কিন্তু তাদের জাহাজ তো কখনো দুর্ঘটনা বা কোন অস্বাভাবিক রহস্যের কবলে পড়েনি। অথচ এরকম ঘটনা ওখানে ১৮৫৪ সালের পূর্বেও বহুবার ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
জাহাজের কবরস্থান..... বারমুডা ট্রাইএংগেল।
১৮১৩ সালে আমেরিকার তৃতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট "এরন বার(Aaron Burr)" এর কন্যা "থিউডোসিয়া(Theodosia)" (দক্ষিন কেরোলিনা রাজ্যের গভর্নর জোসেফ এস্টোনের স্ত্রী, খুবই বুদ্ধিমতী এবং সুন্দরী কন্যা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল) বারমুডার ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। থিউডোসিয়া তার পিতার সাক্ষাতের জন্য তখনকার সর্বাধুনিক জাহাজ পেট্রিয়াটে করে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। পেট্রিয়াটের ক্যাপ্টেন তখনকার সুদক্ষ নাবিক হিসেবে আমেরিকায় প্রসিদ্ধ ছিল। সাথে তার ব্যক্তিগত ডাক্তার এবং আরো কিছু ঘনিষ্ঠজনও ছিল। কিন্তু তারা কখনোই নিউইয়র্কে পৌছতে পারেনি। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে "এরন বার" তার কন্যাকে খুজে পাওয়ার জন্য তখন সাধ্যমত অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু না পাওয়া গেছে কন্যার খবর, না জাহাজের কোন হদিস।
১৮১৪ সালে আমেরিকার প্রসিদ্ধ সামুদ্রিক জাহাজ Wasp কেও বারমুডা গিলে ফেলেছে। জাহাজের ক্যাপ্টেন কোন সাধারন মানের ক্যাপ্টেন ছিলনা; মার্কিন জনসাধারণের কাছে নায়ক হিসেবে পরিচিত "জনষ্টন ব্লেকলে"।সে ব্রিটিশ শক্তিশালী সামুদ্রিক জাহাজ "Reindeer" কে স্বীয় দক্ষতা দিয়ে মাত্র ২৭ মিনিটেই পরাজিত করেছিল। এরপর আর কেউ জানতে পারেনি যে- ব্লেকলে তার ষ্টাফ এবং জাহাজ নিয়ে কোন জগতে গিয়ে পৌছেছে। না মার্কিন সরকার, না মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম। অথচ তখনকার মার্কিন সামুদ্রিক গবেষক টিম পানির গভীর পর্যন্ত এত ভাল করে চিনত, যেমননাকি পাড়ার অলি-গলিকে মানুষ চেনে। কিন্তু অত্যাধিক খোঁজাখুঁজির পরও কোনই নাম-নিশানা কি তারা পায়নি?!! তাহলে কি বারমুডার ট্রাইএংগেল তাদের গিলে ফেলেছে? নাকি ব্লেকলের অত্যাধিক যোগ্যতা দেখে "গোপন শক্তি" তাকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সময় মার্চ ১৯১৮ তে মার্কিন সামুদ্রিক জাহাজ সাইক্লোপস(USS Cyclops) ওই এলাকায় গায়েব হয়েছে। যাতে যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য সাড়ে চৌদ্দহাজার টন মাল মজুদ ছিল। তাছাড়া তিনশত কর্মীও তাতে কর্মরত ছিল। এরও কোন নাম-নিশানা পাওয়া যায়নি।
জশোয়াস্লোকাম(Joshua Slocum) এমন এক ক্যাপ্টেন, শুধু মার্কিন ইতিহাসেই নয়; সামুদ্রিক বিষয়ে সে সারাবিশ্বজুড়ে সুনাম অর্জন করেছিল। বাল্যকাল থেকেই পানির ঢেউয়ের সাথে খেলে বেড়ে ওঠা এক যুবক। সেই সর্বপ্রথম সমুদ্র পথে সারাবিশ্ব ভ্রমণ করেছিল। সর্বদা সামুদ্রিক ঝড় আর তুফান মোকাবেলা করাই যার অভ্যাস ছিল। ১৯০৯ সালে Spray নামক নিজস্ব জাহাজে করে রওয়ানা হয়েছিল। অতঃপর বারমুডার ওই ভয়ানক এলাকায় সে তার জাহাজসহ চিরদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়। গায়েব হয়ে যাওয়া জাহাজের তালিকায় নাম যোগ হওয়া ছাড়া আর কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
©somewhere in net ltd.