নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ (!)। তাই মানবতার প্রাধান্য সবার আগে। তারপর না হয় জাতি-গোষ্ঠীর প্রাধান্য। -- [email protected]

হাবিব ইমরান

পড়তে, ভাবতে এবং স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোয় দারুণ পছন্দ। ধার্মিকতা আর বকধার্মিকতার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি বিলকুল অপছন্দ।

হাবিব ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবহন ধর্মঘট : একটি লজ্জাজনক অধ্যায়

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:০৩



কিছুদিন পর পর মালিক-শ্রমিকরা মিলে ধর্মঘট দিয়ে দেশটাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে যায়। জিম্মি করে রাখে পুরো দেশটাকে। জনগণের টাকায় খায়, জনগণের টাকায় চলে, আবার তারাই জনগণের উপর পোদ্দারি করে। পান থেকে চুন খসার আগেই ধর্মঘট দিয়ে বসে থাকে। জনগণকে তারা খেলার পুতুল পেয়েছে, চাইলে খেললাম না চাইলে ফেলে রাখলাম। জনগণের ঠেকা আরকি।
যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারছে তাতে তাদের কোন দোষ নেই। তাদের প্রতিরোধ করার সড়ক আইনও কি তাদের মন মত হতে হবে নাকি?

ঘরে চাল নেই, চুলো নেই, কিন্তু রাজপথে তারা আন্দোলন করে, জনগণকে জিম্মি করে দাবী আদায় করে। গণতান্ত্রিকপন্থায় নিজেদের অধিকার আদায় করে নেয়। কিন্তু তা কতটুকু বৈধ এবং কতটুকু অনৈতিক তা বুঝার জন্য সৃষ্টিকর্তা কি তাদের চিন্তাশক্তি দেয়নি? যত অপরাধ সব কি জনগণের? আশ্চর্য।
ছোটবেলা থেকে একটা ব্যাপার বারবার দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। তাই বলে কি এর কোন সমাধান নেই? সমাধান হবে না?



মানছি, দেশটা গরিব। চাইলেই ব্যবস্থা নিতে পারে না।
কিন্তু বিদেশি ঋণ নিয়েই তো কত আজেবাজে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়, পরিবহন খাতে সাহস করে সুনজর দিলেই তো এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
দেশের পরিবহন সমস্যার মূল কারণ হলো ব্যক্তিমালিকানাধীন পরিবহন ব্যবস্থা। ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসার কারণে তাদের স্বাধীনতা রয়েছে। তারা চাইলেই অঘটন-দুর্ঘটন ঘটাতে পারে। দুষ্টুচক্রের হাতে দেশ আজ জিম্মি।

যাকে তাকে লাইসেন্স দিয়ে দেয়া অন্যতম প্রধান সমস্যা। বাঙালির অনেক কিছু পাওয়ার অধিকার থাকা উচিৎ নয়। অধিকার কি তা এ জাতি জানেই না। কিভাবে নিজেদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হয়, ব্যবহার করতে হয় তাও জানে না। নিজেদের নষ্টামির জন্য দেশটাকে জাহান্নাম বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

সরকারের যা করা দরকারঃ
এদের শায়েস্তা করতে হলে সরকারকে শায়েস্তা খান'কে কবর থেকে তুলে আনতে হবে না। শুধু প্রয়োজন একটুখানি সদিচ্ছা আর কঠোর মনোভাব।

১. পরিবহন সেক্টর হবে পুরোপুরি সরকারি। এতে ভোগান্তি কমবে, নিয়ন্ত্রণ থাকবে। বাড়বে কর্ম সংস্থান। জনগণের অর্থ সরাসরি সরকারি কোষাগারে যাবে। সব জায়গায়, সব রুটে, সব জেলায় সরকারি বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বাড়াতে পারে। যা সরাসরি সরকারিভাবে পরিচালিত হবে। ভাড়ার টাকা সরকার নিবে, সার্ভিস দিবে। জনগণ ভাড়া দিতে প্রস্তুত, সরকার দিবে সার্ভিস। যা সব জেলা, উপজেলা শহরের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করবে।

২. ঢাকা - চট্টগ্রাম সিটিতে বা সব ব্যস্ত সিটি কর্পোরেশন এরিয়াতে অভ্যন্তরীণভাবে চক্রাকারে চালানোর জন্য প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিআরটিসি বাস নামিয়ে দিয়ে ফিটনেসবিহীন কোম্পানির বাসগুলা তুলে দিতে পারে। ফলে কমবে যানজট, দুর্ঘটনা।

৩. যেসব কোম্পানি নিজেদের ফায়দা লুটানোর জন্য কিছুদিন পর পর ধর্মঘট দিয়ে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে পারে। আজীবনের জন্য তাদের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করে তাদের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে বসিয়ে দিতে পারে। নিজের স্বার্থে রাষ্ট্রকে জিম্মি করা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।

৪. যে কোম্পানি ধর্মঘট দিবে, আর যে মানবে তাদের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করে সাথে সাথে সেই রুটে সরকারি পরিবহন নামিয়ে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে শিক্ষা দিতে পারে।

হয়তো যা ভাবছি তা ভুল, এ দেশে এসব সম্ভব নাঃ

এদেশ গরিব, এদেশের এতো টাকা নেই। এ দেশে নুন আনতে পান্তা পুরায়।
অথচ এদেশে সরকারিভাবে প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তার বেতন ডাবল করে দেয়া হয়, এদেশে সরকারি টাকায় সরকারি কর্মকর্তাদের বিলাসবহুল গাড়ী দেয়া হয়। তাদের বউ বাচ্চা পালনের জন্য মাসে মাসে ভাতা দেয়া হয়। টেলিফোন বিল দেয়া হয়। এন্ড্রোয়েড হ্যান্ডসেট দেয়া হয়। বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়। বছরে কয়েক দফায় তাদের উৎসব ভাতা - বোনাস দেয়া হয়। তাদের প্রটোকল বা নিরাপত্তার জন্য পুরো দেশে প্রায় কয়েকহাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়। আরো হাজারো প্রকল্পে হাজারো তরীকায় অর্থ অপচয় হয়। কিন্তু তবুও এদেশ গরিব। এদেশে এই বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

এদেশ গরিব থাকবে না তো আমেরিকা গরিব থাকবে?

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৪

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: সময়োপযোগী পোস্ট। ভালো লাগলো।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫

হাবিব ইমরান বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালোবাসা জানবেন।

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২১

রাজীব নুর বলেছেন: সঠিক নিয়মে আমাদের দেশে কিচ্ছু হয় না।
তাই ধর্মঘট করতে হয়, আন্দোলন করতে হয় এমনকি মানবন্ধন পর্যন্ত করতে হয়।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪

হাবিব ইমরান বলেছেন: হুম, ঠিক।
আমাদের সবকিছুই নষ্টদের দখলে চলে গেছে। তাই দেশের এই অবস্থা। এদেশের কেউই ভালো না। দেশের প্রতি কারো মায়া নেই।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৩

আরোগ্য বলেছেন: বিলাপ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই কারণ সরকার সব মুখ বুজে সহ্য করে।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৭

হাবিব ইমরান বলেছেন: ধৈর্যশীল সরকার। সবুরের মেওয়া খাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে। :D

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: পরিবহন জাতীয়করন কোন সমাধান না ।
বিআরটিসি - গুড়ের লাভ পিপড়ায় খাবে ।।গাড়ির আকৃতি থাকবে ,গাড়ি আর চলবেনা ।

তবে কীভাবে আমরা এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি -

আইনের বিধি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত -তবে বিড়ালের গলায় কে ঘণ্টাটি বাধবে ?
- পুলিশ, প্রশাসন বা অন্য কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা ?? তবে তারা নিজেরাই কেউ নিয়ম অনুসরণ করে না,সুতরাং, তারা কীভাবে অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ।
- স্বদেশপ্রেম,ধর্মের নিয়মাবলী অনুসরণ এবং সব ক্ষেত্রে সমস্ত ভাল জিনিস অনুসরণ করা তবেই হয়ত আমরা এসব থেকে
রক্ষা পেতে পারি ।
- প্রথমে, আমাদের সমস্ত শাসক, নেতাদের সৎ হওয়া এবং আইনকানুন মেনে চলা উচিত ।তাহলে বাকী সব ঠিক হয়ে যাবে ।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২৪

হাবিব ইমরান বলেছেন:

ভাইজান, আপনি যা বলছেন তা হয়তো কিছুটা ঠিক।
কিন্তু এটা বাংলাদেশ। আপনি যা বলেছেন তা বাংলাদেশের মত দেশে বড্ড বেমানান। নীতিবাক্য এদেশের সাথে একেবারেই যায় না। বিষয়টা ‘চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী’র মত। এদেশের মানুষকে ভালোবেসে অনেকেই আশার বাণী শুনিয়ে গেছেন। কিন্তু শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাস্তবতা অনুযায়ী মন্তব্য করে গেছেন। ‘সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি’। কিন্তু সে সংখ্যা এখন বেড়ে আঠারো কোটিতে পৌঁছেছে। কিন্তু পাল্টায়নি কিছুই।

‘যেমন কুকুর, তেমন মুগুর’ স্টাইলে থেরাপি না দিলে বাঙালি সোজা হবে না।
দুদিন পরপর দেশকে জিম্মি করে ধর্ষণ করলে দেশেরই তো বদনাম হয়, এটা তারা কেন বুঝেনা?

৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাবিব ইমরান,




পরিবহন শ্রমিক নামের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে সৃষ্টিকর্তা অশিক্ষিত আর মূর্খ করেই বানিয়েছেন। তাদের নিজেদের জ্ঞানবুদ্ধি নেই মোটেও, চলে মালিক সমিতির বুদ্ধিতে। মালিক সমিতি তাদের যা উল্টোপাল্টা বোঝায় তারা তাইই বোঝে।
আর এই অনাচার আর অরাজকতা জিইয়ে রাখা হয় এরা বিশাল একটা ভোট ব্যাংক বলে।

আপনি যে চারটি উপায়ের কথা বলেছেন তা ১০০ ভাগ সঠিক। সাথে পরিবহন খাতে সব ইউনিয়ন নিষিদ্ধ করতে হবে।

২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৩৫

হাবিব ইমরান বলেছেন:

আহ, এই শ্রমিকদের নিয়েও রাজনীতি!

এরা দেশটাকে শেষ না করে মরবে না বলে প্রতিজ্ঞা করেছে কিনা জানে!
ভয় হয় খুব, ভয় হয়।
‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা যে কঠিন - তা এই অসভ্য বেনিয়াগুলা প্রমান করে দিয়েছে’। পুরো একটা দেশ আজ স্বাধীন হয়ে গুটিকয়েকের কাছে পরাধীন। লজ্জা।
আহ, আমরা আবার বাংলাদেশকে বিভিন্ন জায়গায় রোল মডেল বলে গলা ফাটাই।

ছিঃ, আবারো ছিঃ।

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১৮

করুণাধারা বলেছেন: হয়তো যা ভাবছি তা ভুল, এ দেশে এসব সম্ভব নাঃ

এদেশ গরিব, এদেশের এতো টাকা নেই। এ দেশে নুন আনতে পান্তা পুরায়।
অথচ এদেশে সরকারিভাবে প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তার বেতন ডাবল করে দেয়া হয়, এদেশে সরকারি টাকায় সরকারি কর্মকর্তাদের বিলাসবহুল গাড়ী দেয়া হয়। তাদের বউ বাচ্চা পালনের জন্য মাসে মাসে ভাতা দেয়া হয়। টেলিফোন বিল দেয়া হয়। এন্ড্রোয়েড হ্যান্ডসেট দেয়া হয়। বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়। বছরে কয়েক দফায় তাদের উৎসব ভাতা - বোনাস দেয়া হয়। তাদের প্রটোকল বা নিরাপত্তার জন্য পুরো দেশে প্রায় কয়েকহাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়। আরো হাজারো প্রকল্পে হাজারো তরীকায় অর্থ অপচয়
হয়। কিন্তু তবুও এদেশ গরিব। এদেশে এই বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।


আপনার ভাবনা মোটেও ভুল নয়, কিন্তু এদেশে কেন তা সম্ভব নয় সেটা আপনি পরের অনুচ্ছেদে বলে দিয়েছেন। এদেশে সরকারি কর্মচারী আর ক্ষমতার কাছাকাছি লোকজন প্রথম শ্রেণীর নাগরিকের মর্যাদা ভোগ করেন, আর আমরা বাকি সবাই তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক! না হলে পরিবহন অচল করে দেয়ায় আমাদের যে প্রচন্ড কষ্ট হয়, কেউ তার তোয়াক্কা করে না কেন??

চমৎকার লিখেছেন, লাইক।

৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৪

হাসান নাফি বলেছেন: খেলাটা রাজনীতির। শ্রমিকেরা সংখ্যায় বেশি, গরীব মানুষ, এদের দিয়ে রাজনীতি করানোটা সহজ।

দেশের পরিবহন খাতকে ঠিক করতে হলে সরকারকে দুটো পথে যেতে হবেঃ
১। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে কাজ করা; অথবা,
২। শ্রমিকদের আন্দোলনে কর্ণপাত না করা; এতে তারা দুদিন পর ঠিকই গাড়ি চালাবে—এটা তাদের পেশা ভাই, নেশা না। তবে, এক্ষেত্রে সরকারকে খুব কঠিন একটা সময় পার করতে হবে, জনগণের গালমন্দ খেতে হবে, দেশ কিছু সময়ের জন্য অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে, জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে—খুব কঠিন কিছু মূহুর্ত পার করবে দেশ।

দেশের অবস্থা এখন এতোটাই খারাপ, হয় জনগণকে ধুকে ধুকে মরতে হবে, নইলে অশুভ শক্তিকে গুলি খেয়ে মরতে হবে—এছাড়া আর কোন পথ নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.