নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আগঢুম

অতি সাধারন

ইমরুল ওয়ার্সী

অতি সাধারন

ইমরুল ওয়ার্সী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাইকিং নিয়ে কিছু কথা

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০১

প্রকৃতির মাঝে হেঁটে বেড়ানো শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে অবগাহন, নির্মল বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস, পাখ পাখালির গান আর ফুলের সুবাস নেবার সুযোগই সৃষ্টি করে না আমাদের শারিরিক মানসিক আর আত্নিক সাস্থেরও উন্নয়ন ঘটায়।
আজকের লেখায় আলোচনা করব হাইকিং আমাদের কি কি উপকার করে সে সব নিয়ে; সেই সাথে থাকছে এই বিষয়ে কয়েকটি ট্রিক্স এবং টিপস
হাইকিং এর উপকারিতা
. হাইকিং হৃদ রোগের ঝুকি কমায়। হাটার সময় হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ফলে হার্টের রক্তনালিতে জমা হওয়া চর্বি বার্ন হয়। এতে করনারি হার্ট ডিজিজের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
· ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখে ফলে স্ট্রোকের ঝুকি কমে যায়।
· ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে এবং ডায়াবেটিস(টাইপ ২) হবার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
· হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে হাড়কে মজবুত করে।
. হাইকিং এর সময় সূর্যালোকের প্রভাবে শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি উৎপাদিত হয়ে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়ামের অভাব দূর করে ।
· ইন্টেস্টাইন এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুকি কমিয়ে দেয়।
· শরীরের মাসল এর শক্তি বাড়ায়। বিশেষ করে গ্লুটিয়াস, কুয়াড্রেসিফ, হেমিস্ট্রিং এবং পায়ের নিচের অংশের মাসল গুলির।
· শরীরের ভারসম্য রক্ষার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে নিজের শরিরের ভারসাম্য রক্ষা করে ইনজুরি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
· শরীরের ওজন এবং শেপ নিয়ন্ত্রন করে।ফলে শারীরিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
· নিদ্রাহীনতা দূর করে। ফলে আমাদের শরীরের জীব তাত্বিক ঘড়ি( biological clock) সঠিক ভাবে কাজ করে। এতে আমাদের শরীর এবং মন চাংগা হয়।
· মনের ভাবকে বুস্ট করে। একটি গবেষণায় দেখা যায় যারা হাইকিং করে তারা মানসিক অবসাদ এবং দুশ্চিন্তায় কম আক্রান্ত হন এবং এ ধরনের সমস্যার বিরুদ্ধে দ্রুত এবং সহজে আরগ্য লাভ করে।
. প্রাকৃতিক পরিবেশে হাইকিং মানুষকে নেতিবাচক চিন্তাধারা থেকে মুক্ত করে। ফলে একই সময়ে আন্যদের চাইতে একজন হাইকার অনেক বেশী কার্যক্ষম হয়।
. যন্ত্র নির্ভরশীলতা কম থাকায় একজন হাইকার যে কোন জটিলতা সৃজনশীল উপায়ে সমাধানের যোগ্যতা অর্জন করে।
. প্রকৃতিতে হাইকিং এর সময় প্রকৃতির রুপ রস গন্ধ এবং শব্দ পর্যবেক্ষণ করার চর্চার ফলে যে কোন বিষয়ের বহুমাত্রিকতা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা সহজ হয়। ফলে ব্যাক্তি / পারিবারিক/ সামাজিক জীবনে অন্যের সাথে ভালো বোঝাপড়া হয়।
. প্রকৃতির মাঝে হাইকিং শিশুদের ADHD( Attention Deficit Hyperactivity Disorder) নিরাময়ে কাজ করে। আজকাল অনেক শিশুরই এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তারা ভীষণ চঞ্চল কিন্তু কোন একটা বিষয়ে তারা মনোনিবেশ করতে পারে না। ফলে তারা স্কুলে খুব খারাপ রেজাল্ট করে যদিও আপাত ভাবে তারা যথেষ্ট মেধাবী এবং শুক্ষ বুদ্ধি সম্পন্ন দেখা যায়।

এবারে আসুন জেনে নেই সেই কৌশলগুলি যেগুলো অবলম্বন করলে হাইকিং এর সুফল আরও বাড়ানো যায়।

· হাতে লাঠি বহন করুনঃ হাইকিং এর সময় লাঠিতে ভর দিয়ে হাতের চাপ দিয়ে শরীর টেনে নিয়ে যাবার অভ্যাস করুন এতে শরীরের উপরের অংশের এক্সারসাইজ বেড়ে যায় ফলে হাইকিং এর শারিরিক সুফল বেড়ে যায়।
· পাহাড়ি/উচু নিচু পথে হাটুনঃ
এমন কি ছোট্ট পাহাড়ি পথে অল্প হাটলেও হৃদ স্পন্দন সমতল পথে হাটার চাইতে অনেক বেশী বৃদ্ধি পায় এবং অনেক ক্যালরি খরচ হয়। সমতল থেকে মাত্র ৫% থেকে ১০% উন্ননি(ঢাল)৩০%-৪০% অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ বাড়ায়।
· বেয়ে ওঠা এবং লাফ দেয়াঃ মাঝে সাঝে খাঁড়া উপরে লাফ দেয়া বা খাঁড়া কিছু বেয়ে ওঠা হাইকিং এর এক্সারসাইজ অনেক গুনে বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরের ভারসাম্য এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করে।
· কিছুটা ওজন বহন করাঃ হাইকিং ব্যাকপ্যাকে ১০ থেকে ১৫ পাউন্ড ওজন বহন করলে ১০%-১৫% অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ হয়।
· জোরে হাটাঃ এতে অতিরিক্ত ক্যালরি খরচ হয়।

হাইকিং(হাটাহাটি) এর বিষয়ে কয়েকটি জরুরী টিপস


· ধীরে ধীরে উন্নতি করুনঃ
নতুনদের জন্য প্রথমেই বড় হাইকিং এ না গিয়ে আগে নিজেদের এলাকার পরিচিত পায়ে হাটা পথে হাইকিং শুরু করা ভালো। এরপর ধীরে ধীরে পাহাড়ি উচুনিচু পথে হাইকিং করা যেতে পারে।

· আপনার সাথে সঙ্গি নিনঃ
একা একা হাইকিং না করাই ভালো বিশেষ করে অচেনা দূরবর্তী পথে। একজন সাথি কিংবা একটা দলে গেলে অনেক সুবিধা হয়। আপনার পথ খুঁজে পেতে অথবা দুর্ঘটনায় তারা হতে পারে আপনার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।

·পথটাকে জেনে নিন পথে বেরনোর আগেইঃ
আপনি যেদিকটায় হাইকিং করতে যাচ্ছেন সেই এলাকাটা সম্পর্কে যতদূর সম্ভব খোঁজ খবর নিন। প্রয়োজনে গুগল ম্যাপের সহযোগিতা নিন। আপনার অর্জিত তথ্য অনুযায়ী পোশাক পরিচ্ছেদ এবং ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে নিন।

· হাইকিং এর মাঝে বিশ্রাম নিনঃ
এই সময় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুন এতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে অন্তরঙ্গতা বৃদ্ধি পায়। এতে মানুষিক সাস্থের উপর ইতিবাচক প্রভাব পরে।

· প্রকৃতিকে অনুভব করুনঃ
প্রকৃতির সাথে নিজের নৈকট্য (কানেকশন) অনুভব করতে পারলে আপনার হাইকিং হয়ে উঠবে ক্লান্তিহীন এবং আনন্দময়।

· আপনার স্পটের আবহাওয়ার অবস্থা জেনে নিনঃ
ঝড়/অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে হাইকিং এর আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন।

· পথটিকে চিনে চিনে আগানঃ
চিহ্নিত পায়ে হাটা পথ অনুসরণ করুন এবং প্রতিটা বাকে পিছন ফিরে ভালো ভাবে দেখুন যেন ফেরার পথে বাক গুলো চিনে নিতে সমস্যা না হয়।

. প্রচুর পানি খানঃ
হাইকিং এর শুরুতে এবং শেষে প্রচুর পানি এবং খাবার স্যালাইন খাবেন, ডাবের পানিও খুব উপকারি। আপনার ভ্রমন পথ হিসেব করে পানি এবং ORS সাথে নিন। হাইকিং এর সময় ঘাম এবং শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। সেই ঘাটতি পুরন করতে হবে। হাইকিং এর সময় অল্প অল্প করে পানি খাবেন।
হাইকিং এর সময় খাবারঃ
খনিজ লবন সমৃদ্ধ টাটকা ফল ( যেমন- কলা, আনারস), এবং বৃক্ষ জাত প্রটিন সমৃদ্ধ হালকা খাবার (বাদাম) হাইকিং এর সময়ের আদর্শ খাবার।
আসুন সবাই মিলে একটা সুস্থ জাতি গড়ে তুলি । আমাদের আশেপাশেই প্রতিদিন কিছু না কিছু হাইকিং করি। আমাদের পরিবারের শিশুদেরকেও আমাদের সাথে নেই। ওরাই তো গড়বে আমাদের ভবিষ্যৎ। ওদের সুস্থতা আমাদের জন্যই অনেক জরুরী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.