![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অগোছালো মানুষ এক। মেয়ে অন্বেষা ও ছেলে রিশাদের প্রিয় বাবা এবং প্রিয়তমা স্ত্রীর ’অপদার্থ’ স্বামী। ;)
“আমার ‘স্ত্রী‘ হারাইয়া গেছে, খুঁজে পাইতেছি না, ভাই আপনার ঘরে ‘স্ত্রী‘ আছে? আমাকে দিবেন? দুইটা ‘ডলা‘ দিয়া ফেরত দিবো।“
দুপুরে খেয়েদেয়ে ভাত ঘুম দিচ্ছিলাম। এমন সময় কোন বেয়াক্কেল ডোর বেল টিপে ঘুমের বারটা বাজিয়ে দিলেন। দরজা খুলে দেখি তিনতলায় চলতি মাসে আসা নতুন ভাড়াটে। আমাকে দেখে ভদ্রলোক উপরের কথা গুলো দ্রুত উগরে দিলেন। প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকালাম। মনে মনে রেগে গেলাম, বলে কি হারামজাদা!
আমার রাগী চোখ দেখে ভদ্রলোক নিরীহ কন্ঠে বলেন, “ভাই বিকেলে আমার একটা পার্টি আছে। স্যুটটা এক্ষুনি ‘স্ত্রী‘ করতে হবে, কিন্তু এই সময় লন্ড্রি খোলা থাকে না, তাই আপনার কাছে আসছি। দিবেন একটু স্ত্রী‘টা?“
ভদ্রলোকের কথা এতোক্ষণে বোধগম্য হলো, তিনি ইস্তিরিকে ‘স্ত্রী‘ উচ্চারণ করাতেই যতো বিভ্রান্তি।
না, আমার ঘরে ‘স্ত্রী‘ কিংবা ‘ইস্তিরি‘ এই মুহূর্তে কোনটাই নেই, তাই ভদ্রলোককে হতাশ করতে হলো। পোলাপানের পরীক্ষা শেষ, তাই স্ত্রী গেছেন বাপের বাড়ি। আর কাপড়-চোপড় কষ্ট করে নিজেরা ইস্তিরি করার বদলে আমরা লন্ড্রীতেই দিতে অভ্যস্ত।
বিয়ে করেছি প্রায় দেড় দশক। বিয়ের পর এক চিলেকোঠায় থাক্তাম। বাসাটা তেমন ভালো ছিল না, কিন্তু আমাদের মধ্যে ভালোবাসা ছিল প্রচুর। এখন আমরা ভালো বাসায় থাকি কিন্তু ভালোবাসার তীব্র অভাব। আমরা একই ছাদের নীচে আছি কিন্তু এখন আমাদের মধ্যে দূরত্ব অনেক। অথচ এক সময় আমাদের মধ্যে কি রোমান্টিক সম্পর্কই না ছিল !
মনে পড়ে বিয়ের পর এক রাতে শহরের রাস্তায় দুজনে হাঁটছি। সে রাতে আকাশে পূর্ণদশী‘র চাঁদ ছিল। চুল ওড়া বাতাস ছিল। আমরা দুজন নিবিষ্ট মনে কথা বলতে বলতে পথ চলছি। এমন সময় হঠাত মাঝ রাস্তায় উদয় হলো এক ছিনতাই কারী। হাতে লম্বা করে ধরা ছুরি। আমি বুক পেতে দিয়ে তার সামনে দাঁড়ালাম। আমার স্ত্রী প্রচণ্ড ভয় পেয়ে আমার পিছনে গিয়ে মুখ লুকালো। ছিনতাইকারীদের উদ্দেশ্যে আমি বিনীত কণ্ঠে বললাম, “তুই যা বলার আমাকে বল, যাকিছু নেয়ার আমার কাছ থেকে নে, কিন্তু খবরদার আমার স্ত্রী‘কে বিরক্ত করবি না।“
আমার মারমুখি ভাব দেখে ছিনতাইকারীরা আর কথা বাড়ায় না। আমার মানিব্যাগ, ঘড়ি, আংটি নিয়ে ভদ্রলোকের মতো চলে যায়।
ঠিক পনের বছর পর সেদিন একই সিচুয়েশন এসে উপস্থিত হলো। সেই রাতেও দুজনে পথ চলছিলাম। আকাশে কোন চাঁদ ছিল না। ছিল লাইট পোস্ট বিহীন অন্ধকার রাস্তা। এবার আর পাশাপাশি নয়, সে আগে আগে আর আমি তার একটু পিছনে। এমন সময় এক ছিনতাইকারী যেন মাটি ফুড়ে উদয় হয়। আমি এবার ছিনতাইকারীর উদ্ধত ছুরির সামনে বুক পেতে না দাঁড়িয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে স্ত্রীর পিছনে গিয়ে তার চওড়া দেহের আড়ালে দ্রুত গা ঢাকা দেই। ভাবখানা এই, মারলে ওরে আগে মার।
স্ত্রী ছিনতাইকারীর উদ্দেশ্যে তার স্বভাবসুলভ বাজখাঁই গলায় হুঙ্কার দিয়ে ওঠে,
“খবরদার ! অর এঁক কদমভি আগে মাত বাড়না, তুজে পাতা নেহি আমি কোন হু? আমার স্ত্রী ইদানীং রেগে গেলে ‘বান্দী‘ (বাংলা+ হিন্দী) ভাষায় কথা বলা শুরু করে, এইটা বোধহয় বেশী বেশী হিন্দি সিরিয়াল দেখার সাইড ইফেক্ট।
রণরঙ্গিনী স্ত্রী‘র মুখে এমন রণ হুঙ্কার শুনে মুহূর্তেই যেন ছিনতাইকারীর জানপাখি খাঁচা ছাড়ার উপক্রম। হঠাত চমকে উঠায় তার হাতধরা ছুরিটা রাস্তার ওপর সশব্দে ছিঁটকে পড়ে। সেই ছুরি কুড়িয়ে নিয়ে আমার স্ত্রী আরো দ্বিগুন জোরে চেঁচিয়ে উঠলো, “গাটার কা কিড়ে ! তোর পাতা নেহী হ্যায়, ম্যারা মামা খিলগাঁও থানার ওসি?“
ছিনতাইকারী এবার ভয় পেয়ে উল্টো দিকে ভোঁ দৌড়। তারপর শুরু হয় স্ত্রীর কথার তুবড়ি। আমার উদ্দেশ্যে তিনি শুরু করেন তার স্বভাব সুলভ রণ সঙ্গীত...“ভীরু, ইতর, কাপুরুষ, না-মর্দ, ডরপোক, ভিগি বিল্লি।“
আমি নিরীহ কন্ঠে জিজ্ঞেস করি, “ভিগি বিল্লি‘টা আবার কি?“
“এইটা বুঝো নাই ! না বুঝারই কথা।“ স্ত্রী‘র কণ্ঠে প্রকট তাচ্ছিল্য। “সারাদিনতো থাকো ক্রিকেট নিয়া। হিন্দী বুঝবা কিভাবে? ‘ভিগি বিল্লি‘ মানে হইলো ভিজা বিলাই।“
“ও। আচ্ছা তোমার কোন মামা যে খিলগাঁও থানার ওসি, এটাতো আগে কখনো শুনি নাই!“ স্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে মুখ ঝাপটা দিয়ে বলে, “আজব, তুমি শুনবা কিভাবে? আমার মামা সত্যি সত্যি খিলগাঁও থানার ওসি হলে তোমার হাত-পা এতোদিন আস্তো থাক্তো“ !?
কথা শেষ করে তিনি গর্বিত ভঙ্গিতে আবার হাঁটতে শুরু করেন।
আমি আর কথা বাড়াই না, ধীরে ধীরে তার পিছনে হাঁটতে থাকি আর তার উপস্থিত বুদ্ধির তারিফ করি এবং তার কোন জ্ঞাতি মামা যে সত্যি সত্যি খিলগাঁও থানার ওসি না, সেই জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করি।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৪
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৩
জ্যাকেল বলেছেন: রম্য ভাল হইয়াছে।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৫
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: মন্তব্যে প্রীত হলাম। ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২০
রাজীব নুর বলেছেন: স্ত্রী হারিয়ে গেছে নিয়ে একটা কৌতুক আছে।
একলোক পোষ্ট অফিসে গিয়ে বলছে, ভাই ভাই আমার স্ত্রী হারিয়ে গেছে। পোষ্ট অফিসের লোকজন অবাক হয়ে বলল, আপনি থানায় যাবেন। পোষ্ট অফিসে এসেছেন কেন??!!!
ভদ্রলোক বলল, আসলে খূশীতে মাথা আউলায়ে গেছে।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৮
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: হা হা হা...। কৌতুক পড়ে এক চোট হেসে নিলাম। অনেক ধন্যবাদ।
৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: খুব একটা জমলো না।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:১৪
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: জমানোর চেষ্টা করেছিলাম। ধন্যবাদ।
৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫৭
প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:১৫
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।
৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৩:১১
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: স্ত্রীর সাথে প্রেম কমে ক্যামনে?
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:১৭
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: সময়ের ব্যবধানে প্রেম কমে আবার বাড়ে, এটাই স্বাভাবিক। তবে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে আদৌ প্রেম হয় কিনা, আমারতো সেখানেও সন্দেহ।
৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২২
নীল আকাশ বলেছেন: প্রতিটা কৌতুক আলাদা আলাদা হেডিং দিয়ে দিতেন। সব এক জায়গায় গুলিয়ে গেছে।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩১
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: সব মিলিয়ে লেখা কিন্তু একটি। ধন্যবাদ।
৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩২
জুল ভার্ন বলেছেন: মোটামুটি ভালই হয়েছে।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩২
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বড়ো ভাই।
৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:২১
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: রম্য ভালোই মজারু হয়েছে।
প্রথম অংশে "স্ত্রী" নিয়ে কৌতুক, মধ্যোংশের বর্ননায় রোমান্টিকতা, শেষাংশে পুরুষ নিষ্পেষিত তিক্ত বাস্তবতা...
লাইক, প্লাস সাথে শুভেচ্ছা রইলো...
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা রইলো। ভালো থাকবেন।
১০| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০০
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার স্ত্রী হারিয়ে গেছে ??
পার্টি দেন !!!!
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: বাস্তবে স্ত্রী ছাড়া বিবাহিতদের জীবন অন্ধকার।
১১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৮
মিরোরডডল বলেছেন:
চেষ্টা করেছি হাসতে ......কিন্তু
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫২
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: আপনাকে হাসাতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
১২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: রম্য হলেও বাস্তবতা তুলে ধরেছেন বেশ ভালো লাগলো।++
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৩
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে প্রাণিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ।
১৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: হা হা হা...। কৌতুক পড়ে এক চোট হেসে নিলাম। অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকুন। গেছো দাদা নামে একজন ব্লগার আছেন। উনি বেশ রম্য লিখতেন। ইদানিং উনি ধর্ম নিয়ে লিখেন।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৮
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: এখুনি আমি ব্লগে 'গেছো দাদা'কে খুঁজবো। অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
মোটামুটি চলে