নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কর্ম দিয়ে পৃথিবী জয় করা যায়।

ইসতিয়াক ইসতি

শেখ ইসতিয়াক আহমেদ

ইসতিয়াক ইসতি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের অপরাজনীতির উপহার ‘জলাবদ্ধ ঢাকা’

০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৮



জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিবছর থাকছে সরকারের মোটা অঙ্কের বাজেট এবং কাগজে কলমে তা থাকলেও বাস্তবে কোন ধরণের হচ্ছে কার্যক্রমের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না মাঠ পর্যায়ে অর্থাৎ বাস্তবচিত্র পুরোই উল্টো।মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বৃষ্টিতে পানিবন্ধী হয়ে পড়ছে ঢাকার বাসিন্দারা। আর বর্ষার সময় এই দূর্ভোগ মাত্রা ছাড়িয়ে ঢাকা হয়ে উঠে জলজটের শহর। সাধারণ মানুষ বলছে খাতা কলমে ও নেতাদের পকেটে আটকে আছে উন্নয়ন।ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশন একে অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলে দোষারোপ করছে, মিলছে না সমাধান ।ধীরে ধীরে নিষিদ্ধ নগরীর তালিকার র্শীষে উঠেই চলেছে প্রাণের শহর ঢাকা।

ডেমরা,যাত্রাবাড়ি,কদমতলি এলাকাগুলোর সাধারণ মানুষের কাছে স্থায়ী সমস্যার নাম জলাবদ্ধতা । বছর প্রায় ৬ থেকে ৭ মাস পানি থাকছে এই অঞ্চলের বেশি ভাগ মহল্লায়।অল্প বৃষ্টিতে আরও ভংকর রূপ ধারণ করে। নগরবিদরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অথচ চিহ্নিত পরিকল্পিত এলাকা ধানমন্ডি, গুলশান,বনানী,উত্তরা,মোহাম্মদপুরের বাসিন্দারাও ২০১৭ সালে এসে অল্প বৃষ্টি পানিবন্ধী হয়ে পড়ছে।যেখানে এসব অঞ্চল হওয়ার কথা ছিল উন্নয়নের রোল মডেল ।

তাহলে একটি সাধারণ প্রশ্ন তৈরি হয় ‘ঢাকাকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখার জন্য কি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন নগর পরিচালনার দায়িত্বে থাকার কর্তৃপক্ষ’ ?

গুনশান,বনানী,ধানমন্ডির,ঝিগাতলা,মোঃপুর,আদাবর, ফার্মাগেট,মগবাজারসহ পরিকল্পিত ভাবে গড়ে এলাকাগুলোতে অল্প বৃষ্টিতে পানি বন্দী হয়ে পড়ছে ভ্রাম্যমাণ পথচারী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।

ধানমন্ডি ১৯ নাম্বারের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক(৫৯) বলেন, বৃষ্টি পানিতে এখন বন্ধী হয়ে থাকা এখন আমাদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এখানের জন্ম থেকে। আমাদের সব কিছু এখানে তাই আমরা অন্য কোথাও যেতে পারছি না। কিন্তু যারা ভাড়াটিয়া ঠিকই অন্য কোথায় ভাড়া চলে যাচ্ছে। প্রতিমাসে আমাদের বাসা ফাঁকা যাচ্ছে। এতে করে আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা বাড়ির মালিকরা। কারণ অনেক মালিক আমার মত ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করেছে।একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কিস্তি প্রতি মাসে আমাদের জমা দিতে হয়।১০ তারিখের মাঝে টাকা দিতে হবেই,ব্যাংক কোনো কিছু বুঝে না।

বেসকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আব্দুল আউয়াল আব্দুল।সন্তানের স্কুল নুরজানাহ রোডে হওয়াতে ভাড়া থাকেন মোঃপুর বাঁশবাড়ি এলাকাতে। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয় আমাদের। কিন্তু আমাদের কি বৃষ্টি হলে অতিরিক্ত বেতন দেয় অফিস? মাসের মাস এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে গেলেও এর সমাধান পাচ্ছি না। উল্টো দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করেই চলছে।

নিউ ইস্কাটন রোডের বাসিন্দা আতিক উদ্দিন মোল্লা বলেন, খাতা কলমে ও নেতাদের পকেটে আটকে আছে উন্নয়ন। আমরা সাধারণ জনগণ কিভাবে কি করছি তাদের কারো কিছু যায় আসে না। সামনে বছর নির্বাচন আছে না,তখন আবার আমাদের দাম বাড়বে। এর আগে আমরা তো নগরবাসি নর্দমার কীট ছাড়া কিছু না সরকারের কাছে।

নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সবার আগে এর মাঝ থাকা খাল গুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং এগুলোকে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।আর এখানের মূল সমস্যা।

সেটি হল ৮০ দশকে ঢাকার আধুনিক নগরে রূপ দেওয়ার জন্য একটি বড় ফান্ড এসেছিল। তখন ওয়াসা এই ফান্ডটি নেওয়ার জন্য জরুরী ভিত্তিতে একটা ড্রেনেজ প্রকল্প হাতে নেয় এবং এই প্রকল্পের আন্ডারে ঢাকার অনেক খালকে তারা বক্স কালভার্ট রূপ দেয়। এর ফলে তারা ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে নিল। এতে করে সিটি কর্পোরেশন ধরে নেয় এখন থেকে ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্ব এখন থেকে তাদের আর থাকছে না। অন্য দিকে ওয়াসা বলছে সিটি কর্পোরেশনের কার্যাবলীতে পয়ঃনিষ্কাশন উল্লেখ করা আছে।আমাদের কার্যাবলীতে এমন কিছু বলা নেই।

তিনি আরও বলেন, ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের মাঝে চলা এই অপরাজনীতির ফলেই ঢাকাবাসি এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।

ইকবাল হাবিব এই সমস্যা থেকে উত্তলনের জন্য জানিয়ে দেন, প্রথমত সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। দ্বিতীয় সময় নির্ভর কর্মসূচি নিতে হবে। তৃতীয় জনগণের সম্পৃক্ত নিশ্চিত করতে হবে।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায় ঢাকার অধিকাংশ খালগুলো ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুত আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। আর এর পেছনে নেতৃত্ব দিচ্ছে সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতারা।যাতে করে কেউ কিছু বলতে পারছে না।

ঢাকার ড্রেনেজগুলো কেন সঠিক সময় পরিষ্কার করা হয় না এবং খাল উপরে তৈরি বক্স কালভার্ট রক্ষনাবেক্ষনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে জানার জন্য কাওরান বাজারের ওয়াসা ভবনে গেলে কথা হয়, এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকমিক এ খানের সাথে। তিনি বলেন, প্রথমত ঢাকা শহরে কোনো জলাবদ্ধতা হয় না। আর যেটা হয় বা হচ্ছে সেটি হচ্ছে জলজট। উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই জলজট হয়ে থাকে। আর পানি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নাই। এটা নেমে যাবেই।

তাকমিক খানের কাছে ঢাকার ড্রেনেজগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য ওয়াসা কি কার্যক্রম গ্রাহণ করছে জানতে চাওয়া হলে এব্যপারে কিছু বলতে পারেননি। উল্টো এই কিছু সমাধানের তত্ত্ব জানিয়ে কথা শেষ করে দেন।

কথা বলার জন্য দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ফরাজী শাহাবউদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে শুরূ হয় এক কর্মকতা থেকে অন্য কর্মকতার কাছে পাঠানোর প্রতিযোগিতা। তার পার্সোনাল সেক্রেটারি জানা তার সাথে কথা বলতে হলে আগে যোগাযোগ করতে হবে সহকারী প্রকৌশলী মোঃহারুনূর রশিদের সাথে । তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি যোগাযোগ করতে বলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিল্লাল থেকে অনুমতি গ্রহণ আনতে বলে । প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কি কি কার্যক্রম গ্রহণ করছেন, এ বছরের মোট বাজেট কত,আগস্ট মাস পর্যন্ত কত খরচ হয়েছে,কোনো কোনো এলাকাতে নতুন কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এই বিষয় কথা বলার জন্য অতিরিক্ত প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মেয়রের নির্দেশ ছাড়া কোনো তথ্য দিতে পারবে না তিনি।

মেয়রের সাথে কথা বলার জন্য ঘণ্টা দুই অপেক্ষা করেও তার সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে দুপুর ২টার দিকে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অফিসে গিয়ে কোন কর্মকতার দেখা পাওয়া যাইনি।আর মেয়র আনিসুল হক কাজে থাকার কারণে সময় দেওয়ার ব্যাপারে অপারগতা জানান।
(http://www.bdmorning.com/big-slide/211806)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫২

ঢাকার লোক বলেছেন: আল্লাহ প্রদত্ত মধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে পানি একসময় সরে যাবেই, খামাকা ওদের কাছে ঘুরাঘুরি না করে বরং বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে চেষ্টা করুন !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.