নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবাসী মন!
আমার একসময় ধারণা ছিল, সাহরী মানে আলাদা ধরনের কোনো খাবারের আইটেম। ভোররাতে সবাই উঠে একই রকম খাবার খায় বলে নাম রাখা হয়েছে সাহরী। ছোটবেলায় আমাদের এলাকার মসজিদ থেকে সাইরেন বাজাত। আমি ধরেই নিয়েছিলাম কেউ একজন সাহরী সবার বাসায় বাসায় দিয়ে যায়। এটা সাহরীর কলবেল! একদিন ব্যাপক কান্নাকাটি জুড়ে দিলাম সাহরী খাব বলে। বাধ্য হয়ে আমাকেও সাহরী খাওয়াতে বসানো হলো। খেতে বসে আমি হতাশ। এর নাম সাহরী?
কই, সেই একই রকম ভাত-ডাল-তরকারিই তো! কয়েক দিন টানা খাওয়ার পর আমি মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেলাম সাহরী মানে বোয়াল মাছ দিয়ে মটরশুঁটি রান্না। আমার ছোটবেলায় রোজা পড়ত শীতকালে। আমরা সব ভাইবোন এই একটা মাছই খেতাম। তার ওপর রান্নাটাও বেশ সহজ বলে মা যে রোজই এই খাবার চালিয়ে দিতেন, সেটা আমি ধরতেই পারিনি। ঘটনা বুঝতে পারলাম ঈদে। আমরা গ্রামের মানুষ। ঘরের পাশেই বিল। মাঝরাতে ঘরের দরজা খুললে ঠান্ডা বাতাসে কাঁপুনি ধরানোর পাশাপাশি একটা সুন্দর গন্ধ নাকে এসে ধাক্কা দেয়। ঘ্রাণটা সরষে ফুলের। এমনকি লাউপাতা, কুমড়াপাতারও যে একটা নিজস্ব ঘ্রাণ আছে, সেটা আমাদের পাশের লোক ভালো করেই জানে।
তো, রাতে খেতে বসে দেখি, বাকি সব মোটামুটি ঠিক আছে। শুধু মটরশুঁটি-বোয়ালের সেই খাবারটা নেই। উল্টো লাউপাতা দিয়ে কই মাছ টাইপের একটা তরকারি বড়রা খুব প্রশংসা করতে করতে খাচ্ছেন। একে তো শীতে ঠকঠক করে কাঁপছি, তার ওপর সাহরী নেই। আমার রীতিমতো কান্না পেতে শুরু করল। ভোরের দিকে সবাই যখন ঘুমাতে যাবে, তখন আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে বুক ভাসিয়ে ফেলেছি এই জন্য যে মা আমাদের সাহরী খেতে দেননি। অনেক দিন পর্যন্ত আমার বিশ্বাস ছিল যে লোকটা কলবেল বাজিয়ে সাহরী দিয়ে যেত, তাকে ঠিকানা দিলে সে হয়তো এখানেও বোয়াল মাছ আর মটরশুঁটি পৌঁছে দিত। কেন কাঁদছি, এ ধরনের প্রশ্নে বাবাকে ঘটনা বুঝিয়ে বলতে তিনি প্রথমে একচোট হেসে নিলেন। এরপর মাকে ডাকলেন। মা বড় আপু আর ছোট আপুকে ডাকলেন। একে একে বাড়ির সবাই এল। হাসির রোল উঠে গেল
২| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৪৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা
স্বর্গীয় সূখের অবোধ সোনালী শৈশব!!!!
একবার চৈত্রমাসে রোজা পড়ল! গরমে হাসফাস! রোজা থাকতেই হবে। অথচ গলা শুকিয়ে কাঠ!
দুই/তিনবার পুকুরে ডুব সাতার! এর মাঝে পুকুরে নেমেও গলা তেষ্ট কমে না!
কি করি কি করি!
ডুব দিয়ে নীচে গিয়ে- ব্যাস বেশি না এক ঢোক!
উঠেই চারিদিেক তাকালাম। না কেউ নেই!
আহ কি শান্তি! - কেউ দেখেনি!!
আল্লাহও নিশ্চয়ই পানির নীচে দেখেন নাই!! মনে প্রশান্তি নিয়ে
আবার চান্স নেব কিনা ভাবার সেই সময়গুলো - অসলেই অমূল্য।
৩| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:০৯
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহাহা হিহিহি! ভীষনভাবে হেসে ফেললাম আপনার শৈশবের লেখাটি পড়ে। নিজের মনেও ভাবছিলাম ছোটবেলায় আমারো অনেক ধরণের ভুল ধারনা ছিল! যেগুলো মনে পড়লে এখন হাসি পায়!
আপনারটা পড়ে হাসি থামেনি তখন বিদ্রোহী ভৃগুর কমেন্টটি চোখে পরল। হাসতে হাসতে আরোই শেষ!
আল্লাহও নিশ্চয়ই পানির নীচে দেখেন নাই!!
হাহা!
আপনার পোষ্টটি অনেককেই নিজের শৈশবের নানা স্মৃতি মনে করিয়ে দেবে।
এজন্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকুন!
৪| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:২০
ফকির আবদুল মালেক বলেছেন: সহরীর এই পোষ্ট অনেক স্মৃতিই জাগিয়ে তোলে।
ছোট বেলায় আমাদের বাসায় সেহেরিতে প্রতিদিন দই থাকত। ঐ দই এর লোভে আমরা দুইভাই প্রতিদিন উঠে বসে থাকতাম।
পোষ্টের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল।
৫| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:২১
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভাল লাগল আপনার স্মৃতিচারন।
৬| ০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৬
মানবী বলেছেন: লেখাটির সারল্য আর নির্মলতার কারণেই হয়তো "লাউপাতা দিয়ে কই মাছ টাইপের" খাবারটার রেসিপি জানতে ইচ্ছে করছে।
সেহরী নিয়ে সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
৭| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮
নতুন নকিব বলেছেন:
সুন্দর স্মৃতি!
৮| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬
আলভী রহমান শোভন বলেছেন: হা হা হা ! মজার স্মৃতিকথন।
৯| ০৬ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৪৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: সেই পিচ্চিবেলায় কাঁদতাম সেহরী খাবার জন্য।। শীতের রাতে ঠকঠক করে কাপতে কাপতেও উঠেছি।।
স্মৃতিচারন মনেে করিয়ে দিল অনেককিছু।।।
১০| ০৬ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৬:০৬
বিলুনী বলেছেন: লিখা পাঠে ভাল লাগল ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৭:৩৬
ওমেরা বলেছেন: আমি ও সেহেরী খেতে চাই ।