নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি মোহাম্মদপুর থেকে এক ১১ বছরের শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এটি প্রেমঘটিত একটি বিষয়ে জড়িত ছিল, যা অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। এই ঘটনার তদন্তের সাথে প্রশাসনিকভাবে সংশ্লিষ্ট এক বন্ধুর কাছে এই কথা শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম - এত কম বয়সী একটি শিশুর প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক কীভাবে গড়ে ওঠে?
তবে বিস্ময় কাটিয়ে ওঠার পর আমি উপলব্ধি করলাম, হয়তো আমরা আমাদের সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। বর্তমান প্রজন্মের আবেগ ও মানসিক বিকাশের গতি আমাদের চেয়ে ভিন্ন। কেবল কড়া শাসন বা দোষারোপ করে এই পরিবর্তনকে দমন করা সম্ভব নয়; বরং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রথমত, আমি অনুরোধ করব যে, এই শিশুটিকে সামাজিকভাবে হেয় বা বিচার করা থেকে বিরত থাকুন। একে নিজের সন্তান, ছোট বোন বা পরিবারের সদস্য হিসেবে ভাবলে দেখবেন, আপনি তার প্রতি আরও সংবেদনশীল হতে পারবেন। এই মুহূর্তে শিশুটির পরিবার মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে, তাই তাদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের তথাকথিত সুডো 'রক্ষণশীল' সমাজ ইতোমধ্যেই নানা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
সন্তান পালন এখন আর আগের মতো সহজ নয়। অতীতে আমাদের পরিবার ও সমাজ ছিল সম্পর্কের বহুস্তর বিশিষ্ট, যেখানে আত্মিক সংযোগ ছিল গভীর। কিন্তু আধুনিক সময়ে আমরা সবাই ব্যক্তিগতভাবে আলাদা লেয়ারে বাস করছি, যা আমাদের সন্তানদের সামাজিক বিকাশকে সংকুচিত করছে। এই শূন্যতা পূরণ করতে তারা প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছে, যেখানে সঠিক মনিটরিং না থাকলে ভুল হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
আমার মনে হয় আমাদের সকলের কিছু কাজ করা উচিত।
১। সন্তানকে সময় দিন ও মনিটর করুন - সন্তানের জীবনযাত্রা ও অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং তাকে সম্মানজনকভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। তবে এটি যেন তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে অবমূল্যায়ন না করে।
২। প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য - শিশুদের বোঝাতে হবে যে, তারা এখনও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা পাওয়ার উপযুক্ত হয়নি। তাদের প্রাইভেসি থাকবে শেয়ার্ড এবং নিয়ন্ত্রিত।
৩. সাহিত্য ও জ্ঞান চর্চা - সন্তানদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করুন। ভালো বই পড়ার সুযোগ করে দিন, যা তাদের মানসিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যদিও দেশে বই পড়ার অভ্যাস আশংকাজনকভাবে কমে যাচ্ছে।
৪. স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ- নুন্যতম ১৫-১৬ বছরের আগে স্মার্টফোন ব্যবহার না দেওয়া এবং অন্তত ১৮ বছর হওয়ার আগে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা স্ন্যাপচ্যাটের মতো অ্যাপ ব্যবহারে বিধিনিষেধ রাখা উচিত।
একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া আপনার দায়িত্ব। শুধু শাসন নয়, তাদের আবেগ-অনুভূতি ও পছন্দ-অপছন্দেরও মূল্যায়ন করা দরকার। অভিভাবকত্ব কেবল জন্মদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সঠিক দিকনির্দেশনা ও মানসিক সমর্থন দেওয়াটাই আসল চ্যালেঞ্জ। যদি আমরা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে না পারি, তবে এর নেতিবাচক প্রভাব আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরই পড়বে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:১৯
জাদিদ বলেছেন: নিঃসন্দেহে অভিভাবকদের জন্যে এখন খুবই কঠিন সময়। সামাজিক মব জাস্টিস মেয়ে এবং তার পরিবারকে জীবিত থাকতেই নরকের যন্ত্রনা দিবে।
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২
খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
১১ থেকে ১৮ বছরের বাচ্চাদের সাথে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের আরও বেশি বেশি করে কথা বলা উচিত, তাদেরকে সময় দেয়া উচিত।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:৩৭
জাদিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় খায়রুল আহসান ভাই। আপনি অত্যন্ত সঠিক বলেছেন। আমি নিজে ইদানিং খুব অপরাধবোধ করি যে - আমার সন্তানকে আমি অনেক সময় ঠিকভাবে সময় দিতে পারি না। বিশেষ করে নিজের কাজ এবং সামাজিক মাধ্যমে যুক্ত থাকার কারনে অনেক সময় পরিবারের সময় অনলাইনে দিতে হয় - যার আদতে কোন মুল্য নেই নিজের সর্বনাশ ছাড়া।
আমাদের শৈশবে আমরা যেভাবে সকলের আদর স্নেহ শাসন পেয়েছি - আমাদের সন্তানরা সেই সব থেকে বঞ্চিত।
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৭
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: আমাদের সবাই কে সচেতনা হওয়া একান্ত দরকার
আমরা সচেতনা না হলে সবকিছুই বিফলে যাবে-
লাল স্যালুট জানাই ভাই ভাল থাকবেন
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:৩৮
জাদিদ বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এই বয়সে মেয়ে নয় অনেক ছেলেও অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে যেতে পারে। অনেক আবেগ, বন্ধুদের দেখাদেখি অনেক ভুল কাজ করে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:৩৯
জাদিদ বলেছেন: ১৪/১৫ বছর পর্যন্ত মুলত ক্লিব জেন্ডার হওয়াই উচিত অর্থাৎ এদের কোন নারী পুরুষ নাই। সকল শিশুদের সমানভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮
শায়মা বলেছেন: আহারে অবুঝ বাচ্চাটা!!!!
সেই ছেলের বয়সও কত দেখার বিষয়!!
অনেকেই বলছে মাই গড!!! মাত্র ১১ বছরের মেয়ে!!! হয়ত শরীরে সে ১১ বছর কিন্তু তার মানসিক বয়স নিশ্চয় ১১ না। মেয়েটাকে দেখে ১১ বছরের মেয়েও মনে হয়না। সে যাইহোক এই শাররিক বয়স ও মানসিক বয়সের পার্থক্য আমরা অনেকেই বুঝিনা। না বুঝে অনেক কিছু বলে ফেলি......
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫৮
জাদিদ বলেছেন: হ্যা, অনেক কিছুই হতে পারে। বাবা মা কে অনেক আধুনিক হতে হবে ছেলে মেয়ে পালন করার ব্যাপারে আপু। নইলে বিপদ।
৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:০৭
কামাল১৮ বলেছেন: শ্রীকান্ত রাজলক্ষ্মীর প্রেম।
৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:১৪
কামাল১৮ বলেছেন: এটা অপরাধ না, এটা এডভেঞ্চার।সংশোধন দরকার বুঝিয় সুঝিয়ে।
৮| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার নিজের মেয়ে আছে।
মেয়ে যত বড় হচ্ছে ভয় তত বাড়ছে।
৯| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৩৪
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ছেলে মেয়ের সংগে বন্ধুত্বমূলক আচরণ করতে হবে।
১০| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১১
নজসু বলেছেন:
১১ বছরের বাচ্চা ফেসবুক ব্যবহার করে। এর চেয়ে আফসোসের আর কী হতে পারে?
দোষটা অভিভাবকের। কিছুদিন আগে ক্লাশ এইটের যে মেয়েটাকে পাঁচজন মিলে নির্মমভাবে খুন করলো তার দায়ভার অন্য কারো নয়। এজন্য দায়ী শুধু তার মা বাবা। তারা মেয়েটাকে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছেন। মেয়েটা একা একা কেনাকাটা করতে যেতে চাইলো আর অমনি তার বাপ মা তাকে যেতে দিলো। কেন দিল?
ছেলে মেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে, কি করছে সব খোঁজ রাখার দায়িত্ব অভিভাবকের।
সমাজের দোষ দিয়ে লাভ নাই। ঘটনাগুলো দুঃখজনক। তবুও বলবো এসব ঘটনার জন্য ভিকটিমও অর্ধেক দায়ী। খোঁজ নিলে দেখা যাবে ভিকটিমেরও সমর্থন ছিলো।
১১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২২
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
সবাই দেখছি শিশু মেয়েটিকে নিয়ে মেতে আছে। মা বাবাকে পর্যন্ত দুষছে।
অতচ ছেলেটিকে কেউ কিছু বলছে না। আশ্চর্য।
অনেক খুজেপেতে দেখলাম কথিত প্রেমিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ। আইনের চোখে সে একমাত্র দোষী। কিন্তু তাকে কেউ খুজছে না, তার নাম বা ছবিও পাইনি। অতচ শিশু মেয়েটির ছবি দৃশ্বমান।
উন্নত বিশ্বে এমনটা হলে মেয়েটির নাম স্কুলের নাম পারিবারিক পরিচয় ও ছবি কোন মিডিয়া প্রকাশ করত না,
প্রকাশ করলে শাস্তি আছে।
শুধু ছেলেটির নাম ও ছবি দিয়ে 'এম্বার এলার্ট' হুলিয়া জারি করত পুলিশ। অপ্রাপ্ত বয়েসি শিশু ভাগিয়ে নেয়ার অপরাধে কমপক্ষে ৫-১০ বছর জেল নিশ্চিত ছিল।
সেচ্চায় পালিয়ে গেছে অযুহাত আইনে গ্রহনযোগ্য নয়। ১৮ বছরে্র নিচে কোন বাচ্চা নিজের কনসেন্ট বা সম্মতি দিতে পারে না, বাংলাদেশের আইনেও না।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: এই একই ধরণের ঘটনায় কয়েকদিন আগে একটা মেয়ে মারা গেল। এই মেয়েটার ভাগ্য ভালো। অভিভাবকদের জন্যে এখন খুবই কঠিন সময়।