নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ওরে ও তরুণ ঈশান! বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ। ধ্বংস-নিশান উঠুক প্রাচী-র প্রাচীর ভেদি’॥
[ভূষণছড়া বাজারে রাতের দৃশ্য]
মিডিয়া প্রোপ্যাগান্ডা যে কত ভয়ঙ্কর তা আমরা কমবেশি সবাই জানি। এই মিডিয়া চাইলে দিনকে রাত রাত কে দিনে পরিণত করতে পারে। গতকালই এক লেখায় গাজার বাসিন্দাদের কথা বলেছি যে কীভাবে তারা গণহত্যার ও স্বীকার হল আবার মিডিয়ার কল্যাণে সন্ত্রাসী তকমা ও পেলো। তেমন এক নজির আমাদের দেশেও আছে।
আমরা যারা সমতলে থাকি মিডিয়ার মিথ্যা প্রোপ্যাগান্ডা দেখে পাহাড়িদের জন্য মায়া কান্না করি। ভাবি আহা বাঙালিরা কত খারাপ। ব্লাডি সেটলারস! কিন্তু বাস্তবে কেউ পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালিদের সাথে না মিশলে বুঝতেই পারবে না, পাহাড়ি সন্ত্রাসী শান্তি বাহিনী কি নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে। তেমন এক নির্মম গণহত্যার ঘটনা ঘটে ১৯৮৪ সালে।
সেদিন ছিল ১৯৮৪ সালের ৩০শে মে। হিজরী ১৪০৪ সালের ১লা রমজান। রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার বাঙালি মুসলিমরা সেহরি শেষ করেছেন। ফজর সালাত কেউ আদায় করেছেন, কেউ বা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন সময় গোলাগুলির অভ্রভেদী শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সমগ্র এলাকা।
.
আনুমানিক ৪টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০মিনিট পর্যন্ত চলতে থাকে নিরস্ত্র আদম সন্তানদের উপর বীভৎস গণহত্যা। চার ঘণ্টার মধ্যে নৃশংসভাবে নিহত হন নারী-শিশুসহ ৪১৭ জন মুসলিম। সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনী মণিভূষণ দেওয়ান এর নেতৃত্বে এই কাজ সংঘটিত হয়।
.
লোকদের হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে, বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচানোসহ নানা পদ্ধতিতে হত্যা করা হয়। মেয়ে শিশু, কিশোরী ও তরুণীদের ওপর চালানো হয় গণধর্ষণ। গর্ভবতী নারীদের পেট কেটে অনাগত সন্তানদের বের করে দেওয়া হয়। প্রতিটি লাশকে বিভিন্ন উপায়ে বিকৃত করা হয়।
.
শতাধিক পরিবারের একটি জনপদ পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সেখানে একজন ব্যক্তিও জীবীত ছিলেন না। সকল বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গবাদি পশা-পাখিগুলোকে নির্মমভাবে শিকার করা হয়। পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো হতে আরও ১৬০০ লোক প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা অজানাই রয়ে গেছে।
.
এই গণহত্যার কোনো তদন্ত বা বিচার হয়নি। পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকেরা মামলা করতে বরকল থানায় গিয়েছিল, কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে জিডি নিয়েছিল। আর, গণহত্যার পর শান্তিবাহিনীর সদস্যরা যারা বন্ধুদেশে পালিয়ে গিয়েছিল, সরকার তাদের ফিরিয়ে এনে জমি, রেশন, ঘরবাড়ি, চাকরি ও ব্যাংক ঋণের সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসন করেছে।
.
ভূষণছড়া হচ্ছে রাঙামাটি জেলা থেকে প্রায় ৫৫.৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এক দুর্গম জনপদ। জেলাসদর থেকে নৌকায় ৭৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছোট হরিণা যেতে হয়। সেখান থেকে আরও ৫ কিমি ভেতরে অবস্থিত ভূষণছড়া। এলাকাটি বন্ধুদেশের সীমান্তবর্তী হওয়ায় সন্ত্রাসীরা সেদেশে পালিয়ে যেতে পারত।
.
সত্তরের দশকের শেষদিকে জনসংখ্যার সুষম বণ্টন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দরিদ্র ও ভূমিহীন মানুষদের চট্টগ্রামের সরকারি খাস জমিতে পুনর্বাসন করে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (ও তার সামরিক শাখা শান্তিবাহিনী) এটা মেনে নেয়নি।
কিছুদিন আগে এই ভূষণছড়াতে এক সপ্তাহ ছিলাম। নিজ চোখে দেখেছি বাঙালিরা কীভাবে আতংক নিয়ে বসবাস করে। এরপরও পাহাড়িরা নিরীহ আর বাঙালিরা সন্ত্রাসী!
[এই লেখার লেখার উপাদান এক বড় ভাইয়ের থেকে কিছুটা ধার করা।]
০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৩
জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: আমি এই দেশের নাগরিক। আমি পঞ্চগড় থাকবো না বান্দরবন থাকবো সেটা আমার সিদ্ধান্ত।
২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৮
আমি নই বলেছেন: অজানা একটা ইতিহাস জানলাম, ধন্যবাদ।
কামাল১৮ বলেছেন: হাজার হাজার বাংগালীক্ পাহাড়ে নিয়ে স্থায়ী করা ঠিক হয় নাই।এটা ছিলো একটা ভুল পদক্ষেপ।
পাহাড়িরা সমতলের যেকোনো জায়গায় থাকতে পারলে বাংগালীরা পাহাড়ে থাকতে পারবেনা কেন?
২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৩৯
জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: এই উপজাতিরা দেশটাকে রাম রাজত্ব পাইছে। যা খুশি করবে কিচ্ছু বলা যাবে না।
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: একদিন আমি পাহাড়ে চলে যাবো।
২১ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৪০
জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: পাহাড় সুন্দর। যেতে পারেন
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪১
কামাল১৮ বলেছেন: হাজার হাজার বাংগালীক্ পাহাড়ে নিয়ে স্থায়ী করা ঠিক হয় নাই।এটা ছিলো একটা ভুল পদক্ষেপ।