নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিভৃতচারী, ঘুরে বেড়াই পথে-প্রান্তরে।।

জমীরউদ্দীন মোল্লা

ওরে ও তরুণ ঈশান! বাজা তোর প্রলয়-বিষাণ। ধ্বংস-নিশান উঠুক প্রাচী-র প্রাচীর ভেদি’॥

জমীরউদ্দীন মোল্লা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রইসউদ্দিন আরিফের ‘আত্মবিস্মৃত বাঙালী’— ঘটি বুদ্ধিজীবীদের গালে চটকনা (পর্ব-১)

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৫৮




মূল বাঙলার (বাংলাদেশের) মুসলিম বাঙালীরা দুশ' বছর ধরে ভাগ্যাহত, পঙ্গু, নির্বীজ। এই বাঙালী এক আত্মবিস্মৃত জাতি। বাঙালী মুসলমানের দুর্ভাগ্য- 'মাতৃভাষা'র জন্য সে অকাতরে বুকের রক্ত দেয়, অথচ সে জানেই না যে, আপন ভাষা সে দুশ' বছর আগে হারিয়ে ফেলেছে। বাঙালী মুসলমান বাঙালা-ভাষা ও সাহিত্যের জন্মদাতা, সেই ইতিহাসও সে বিস্মৃত হয়েছে।


বাঙালী মুসলমানের আরও দুর্ভাগ্য- তার আপন বাসভূমি বঙ্গাল দেশ হাজার হাজার বছর আগে উন্নত সভ্যতা ও সংস্কৃতির লীলাভূমি ছিল, দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীনতম সভ্য দেশ ছিল, সে ইতিহাসের তত্ত্ব-তালাশ না করে- তার দেশ 'ম্লেচ্ছ, পাণ্ডববর্জিত, পরিত্যক্ত, বর্বর দেশ' ছিল, সেই মিথ্যা ইতিহাস পাঠ করে সে দুশ' বছর যাবত হীনমন্যতার রোগে আক্রান্ত হয়ে ঝিমোয়।

কলকাতা- কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গ- যার আদি নাম ছিল গৌড়বঙ্গ, জাতির নাম ছিল গৌড়ীয়, ভাষা ছিল গৌড়ীয়-ভাষা- তারা তো বাঙালী হয়েছিলেন মাত্র চৌদ্দ-পনেরো শতকে, মুসলিম সুলতানদের বদৌলতে। তার আগে 'বাঙলা', 'বাঙালী', 'বাংলাদেশ', 'বাঙালাভাষা'- এই শব্দগুলো মুখে উচ্চারণ করলেও মহাপাতকের কাজ বলে গণ্য করতেন যাঁরা- তারাই তো সুলতানি আমলের বাঙালী-পরিচয় মুছে দিয়ে গৌড়বাসীদেরকে বৃটিশ-বাঙলার 'বাঙালী' বানালেন। সেটাই তো ছিল বাঙালী জাতির প্রকৃত আত্মহনন। কিন্তু নীরদ চৌধুরীদের কাছে সেটি আত্মহনন নয়, নবজন্ম। তাঁদের কাছে বাঙালীর আত্মহননের অর্থ অন্য কিছু।

আমরা বাংলাদেশের মানুষেরা বৃটিশ আমলে তৈরি 'নব্য-বাঙালীর' উল্টো রথের চাকার তলায় পিষ্ঠ হওয়াকে আত্মহনন বলি না। আমরা ওটাকে বলি হত্যা। বাঙালী জাতির ভাষা, লিপি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে সেদিন হত্যা করা হয়েছিল। কারা আমাদের আত্মপরিচয় হত্যা করেছিল, কীভাবে করেছিল এবং পরে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আপন ইতিহাস আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিল- সেই বিষয় নিয়েই লেখা আমার বর্তমান বই।

বঙ্গালের' সন্তান দীনেশচন্দ্র সেন অনার্স পাশ করে তরুণ বয়সে কলকাতার মেট্রোপলিটান স্কুলে দরখাস্ত করে চাকরি পাননি। দীনেশচন্দ্রের মুখে এ খবর শুনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বলেছিলেন- 'তাই তো, তুই যে বাঙ্গাল। এখানকার ছাত্ররা তোর টিপরা জেলার ভিক্টোরিয়া স্কুলের ছাত্র নয় যে, তুই অনার্স পাশ শুনিয়া চমকিয়া উঠিবে। তোকে তো একদিন পাগল করিয়া ছাড়িবে।'

আজকের একুশ শতকেও আধুনিক কলকাতার প্রগতিশীল বাবুরা নাটক-নভেল-টিভি সিরিয়ালে, বাংলাদেশের মুসলমান 'বাঙ্গাল' চরিত্র বানিয়ে তাকে কলকাতার রাস্তার মাস্তান ছোকড়াদের মুখ দিয়ে বাঙ্গালের জবানে 'পুঙ্গির পুত' বলে ঠাট্টা-মস্করা করে আমোদ পান।

ভারত ও ভারতীয় বাঙলার ব্রাহ্মণ্য ভাবধারার উচ্চবর্ণীয়রা (বর্ণহিন্দুরা) প্রাচীনকাল থেকেই বঙ্গাল-দেশের (বাংলাদেশের) জনগোষ্ঠীকে যে, 'বাঙ্গাল' বলেন- এই বাঙ্গাল শব্দটি তারা বাঙালী অর্থে বলেন না, বলেন পাণ্ডববর্জিত দেশের ম্লেচ্ছ-যবন অর্থে (হাল আমলে 'মৌলবাদী', 'সাম্প্রদায়িক', 'জঙ্গী', 'সন্ত্রাসী' অর্থে)। অথচ বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস একেবারেই তার উল্টো। সেই ইতিহাসটা আমাদের সকলের জানা দরকার।

চলবে....।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:২০

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সাথে আছি।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:২২

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: ধন্যবাদ। দারুণ তথ্য আছে

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:৪৯

জমীরউদ্দীন মোল্লা বলেছেন: পর্ব ২ দিয়েছি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.