![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।
স্যোশাল মিডিয়া এবং বাংলাদেশের অনেক সংবাদপত্রেও প্রচার চালানো হচ্ছে অভিজিত রায় ইসলাম এবং তার নবীকে নিয়ে অনেক কটুক্তি এবং ব্যাঙ্গোক্তি করেছে। তার সাপোর্টে সদালাপে রায়হান বলে আমাদের পরিচিত এক ইসলামিস্ট লেখকের লিংক (Click This Link) সর্বত্র ছড়ানো হচ্ছে যেখানে হাদিস থেকে মহম্মদের জীবনী নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনা দুটোই আছে। কিন্ত লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সেই লিংকেও অভিজিত রায় এবং মুক্তমনারা শুধুই প্রমান্য হাদিস থেকে লেখা তুলে দিয়েছেন। নিজেরা কিছু লেখেন নি। সেই সব হাদিস পড়ে যদি মুসলমানদের ভাবাবেগে, ধর্মানুভুতিতে আঘাত লেগে থাকে, তাহলে প্রথমেই প্রশ্ন উঠবে- আপনারা মুক্তমনা লেখকদের পেছনে কেন? সেই সব হাদিসের লেখকদের ধরুন। মুক্তমনার লেখকরা সেই হাদিস লেখেনি। তারা হাদিস থেকে কোট করেছে। নিজেদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে যদি আপনাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগে, তাহলেই বুঝুন আপনারা কোন ধর্মের অনুসারী!! আপনারা পড়াশোনা করেন না বলে মুক্তমনারা শুধু আপনাদের চোখ খুলে দেখিয়ে দিচ্ছে।
আমি নিজে হাদিস, কোরান বেদ নিয়ে বেশী লেখালেখি করি না কারন এসব ধর্মগ্রন্থ মার্কা উইক টেক্সটে কি লেখা আছে সেই নিয়ে বিতর্ক করার ইচ্ছা আমার নেই । যেহেতু সেসব করে কোন লাভ নেই । কারন ধর্মগ্রন্থের একই বানী দুভাবে ব্যখ্যা দিয়ে-ভাল এবং খারাপ বানানো যায়। সুতরাং ধর্মগ্রন্থের ওপর বিতর্ক সম্পূর্ন অর্থহীন-এটা নিয়ে মুক্তমনাতেই আমরা আলোচনা করেছি ( এখানে দেখুন ঃ https://blog.mukto-mona.com/?p=2313 ) এবং এই প্রবন্ধের কমেন্টগুলো থেকেই বুঝতে পারবেন, অনেক মুক্তমনারা একমত ধর্মগ্রন্থ নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন-যেহেতু কি লিখেছে, কেন লিখেছে, তার নানা মুনির নানা মত। ইসলামের মধ্যেই হাজার হাজার সেক্ট। দল উপদল । এই ব্যখ্যা নিয়ে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্ঠান ধর্মেও তাই । বরং মুক্তমনারা সব সময় স্বীকার করেছে ধর্মের সমালোচনা করার থেকে বিজ্ঞান চর্চা করা অনেক বেশী দরকার। ব্যক্তি ও দেশের জন্য। বিজ্ঞানে সঠিক ধারনা এলে একজন তার সঠিক জীবনদর্শন খুঁজে নেবে। এটাই অধিকাংশ মুক্তমনারা লিখে এসেছে। অভিজিত এবং বন্যার সাথে একাধিবার এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাবলিক ফোরামে এবং ব্যক্তিগত ভাবেও। বন্যা এই ব্যাপারে সব থেকে অগ্রনী ছিল যে মুক্তমনাকে বিজ্ঞান চর্চার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। ধর্মের মতন এমন এক হজপজ জিনিস যা নিয়ে নানামুনির নানান মত, তা নিয়ে আলোচনা বিতর্ক সবটাই সময় নষ্ট। এই অবস্থান নিয়ে মুক্তমনার অনেক পুরাতন সদস্য যারা কোরানের আয়াত তুলে ইসলাম সমালোচনা করতে ভালবাসেন, তারা মুক্তমনা ছেড়ে চলে গিয়েছিল!
অভিজিতের ভাষায়
“— আর মুক্তমনা নিয়ে যা বলেছেন তা ওই একই গতানুগতিক কথাবার্তা। আমরা ইসলামের নামে লিখছি, ইসলাম ধবংস করতে চাই, বাংলাদেশের লোকজন নাকি খুব ধর্মসহিষ্ণু, আমরা নাকি ধর্মকে আক্রমন করে বিভক্তি ছড়াচ্ছি – ইতাদি ইত্যাদি। মুফাসিল ইসলাম যদি সত্যই মনে করেন আমাদের একটু টোকাতেই ইসলামের বারোটা বেজে যাবে, তা হলে সত্যই চিন্তার কথা। আর তাছাড়া ধর্ম যদি এতোই ‘সহিষ্ণু’ হয় গুটি কয় লোকের ধর্মের সমালোচনাকে সহজ ভাবেই নেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সামান্য বিরুদ্ধ মত প্রকাশের জন্য হুমায়ুন আজাদের মত ব্যক্তিত্বকে চাপাতির আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে প্রলম্বিত মৃত্যু দিকে চলে যেতে হয়েছে, নির্যাতিত হতে হয়েছে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী মানুষজনকে যুগে যুগে…” – অভিজিতের কমেন্ট [ https://blog.mukto-mona.com/?p=2133&cpage=2]
আমি আগেও লিখেছি অনেকবার- প্রফেট মহম্মদের জীবনীর অধিকাংশ রূপকথা এটা একাধিক ঐতিহাসিক লিখে গেছেন ( বিস্তারিত ঃ Click This Link )। সপ্তম শতাব্দীতে আর্মেনিয়ান পন্ডিত সেবেসের লেখা ছাড়া আর কোন সমসাময়িক লেখাতে প্রফেটের অস্তিত্ব নেই “সুর্নিদিষ্ট” ভাবে। সুতরাং হজরত মহম্মদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব আদৌ ছিল কি না -সেটাই যখন ঐতিহাসিকদের প্রশ্নের মুখে ,প্রফেটের জীবন নিয়ে বিতর্ক করার কোন যৌত্বিক এবং বৌদ্ধিক কারন আমি দেখি না । আগে মুসলমানরা উনার ঐতিহাসিক অস্তিত্ব প্রমান করুন -তারপরে উনি কি করেছেন, তাই নিয়ে ভাবব। এটাও আমি মুক্তমনাতেই লিখেছিলাম আগেই যে আগে প্রফেটের অস্তিত্ব প্রমান হৌক, তারপরে তার জীবন নিয়ে আলোচনা করা অর্থপূর্ন হবে (https://blog.mukto-mona.com/?p=36539 )। প্রফেটের মৃত্যুর দুশো বছর বাদে তার জীবনী লেখা হয় তার সম্মন্ধে চালু গল্পগুলি নিয়ে। তার কোনটা ঠিক কোনটা ভুল সেটা কি এখন কেও বলতে পারবে? সুতরাং এইসব অর্থহীন ব্যপারে বিতর্ক না করে বিজ্ঞান সাহিত্য চর্চা করাই ত ভাল ।
হজরত মহম্মদের অস্তিত্ব সমস্যা নিয়ে তথ্য উউকি সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনা পত্রে পাবেন। উইকিতেই লিংকগুলো আছে। এবার বলুন উইকিপেডিয়া তুলে দেওয়া হৌক কারন তা হজরত মহম্মদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করছে!! উইকির প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস ইসলামিক ভাবাবেগ, ধর্মীয় অনুভুতিকে আঘাত করছে!!
সমস্যা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদি এবং ইসলামিস্ট দুদলের কাছেই প্রফেট মহম্মদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব, তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ন। হিন্দু, খ্রীষ্ঠানরা স্যোশাল মিডিয়াতে পাতার পাতা লিখে যাচ্ছে হজরত মহম্মদ কত বাজে ছিল, খুন খারাপি করত, যৌনদাসী রাখত, নিজের পালিত পুত্রের বধূকে বিয়ে করেছিল, নাবালিকা আয়েশাকে বিয়ে করেছিল ইত্যাদি। অন্যদিকে ইসলামিস্টরা দিনরাত এর বিরুদ্ধে জিহাদ করে যাচ্ছে -দেখাচ্ছে হজরত মহম্মদ কত দয়ালু ক্ষমাশীল দানবীর ইত্যাদি ছিলেন। কেও একবার ও প্রশ্ন করছে না হজরত মহম্মদ সম্মন্ধে যে তথ্যগুলি পাওয়া যায় তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য বা ঐতিহাসিক ভাবে নির্ভরযোগ্য? হাওয়ার ওপর ভেসে হাওয়া যুদ্ধ ছায়া যুদ্ধ চলছে।
আমি আরো মৌলিক প্রশ্ন করছি। আপনারা বলতে চাইছেন ধর্ম নিয়ে কোন আলোচনা করা আমাদের উচিত না ? কিন্ত রাজনীতির আলোচনাতে কি করে ধর্মকে বাইরে রাখবেন বিশেষত ভারতে বা বাংলাদেশে? ভারতে হিন্দুত্বের কার্ড খেলে একটা দল মসনদে এল। বাংলাদেশে এক কাজ করে বিম্পি এবং জামাত। আসল উদ্দেশ্যটা কি? খুব সহজ। এই ধর্মীয় ভাবাবেগ কাজে লাগিয়ে একদল রাজনৈতিক দুবৃত্ত ক্ষমতায় এসে দেশগুলোকে লুঠপাঠ করবে। ভারত বা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এত দুর্নীতি কেন? এর মূল কারন রাজনৈতিক নেতারা কোন না কোন ভাবাবেগ কাজে লাগাচ্ছে ক্ষমতায় আসার জন্য-সেটা ইসলাম, হিন্দু, বাঙালী জাতিয়তাবাদ, জাতপাত-অনেক কিছু হতে পারে। সুতরাং আপনার ধর্মীয় ভাবাবেগ আজ এই উপমহাদেশটাকে ভাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষোলআনা দায়ী। হ্যা বলতেই পারেন, আপনাদের আমেরিকা এই ভাবাবেগ কাজে লাগিয়ে তালিবান বানিয়েছে। আমি মেনে নেব। সে ভুল আমেরিকার হয়েছে। ৯/১১ দিয়ে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ও করেছে আমেরিকা। কিন্ত এই ধর্মীয় ভাবাবেগ যার জন্য গোটা উপমহাদেশের আজ করুন রাজনৈতিক অবস্থা-তার সমালোচনা না করলে আপনি কোনদিন উজ্জ্বল বাংলাদেশ বা ভারতবর্ষ পাবেন না । ওই ভাবাবেগের টুপি পড়িয়ে সুবিধাবাদি রাজনৈতিকরা দেশগুলোকে ধর্ষন করবে।
ফারাবির মতন এইসব মৌলবাদিদের পৃষ্ঠপোষক কারা? ধর্মীয় মৌলবাদি দলগুলো। কেন? কারন ক্ষমতায় গেলে তারা ক্ষীর খাবে। কোটি কোটি টাকা কামাবে।ফারাবীরাত জাস্ট পুতুল নাচের পুতুল। সুতোগুলো আমেরিকা ইংল্যান্ডে বসে থাকা জামাতিদের হাতে। আমি দেখলাম আমাদের দিকের হিন্দুগুলো আঁতকে উঠেছে– ইসলামিস্টরা খুনী ফারাবীর সমর্থনে ফেসবুকে আন্দোলন শুরু করেছে! ভাবা যায়!! আমি অবাক হই নি। মহত্মাগান্ধীর হত্যাকারী নথুরাম গডসের মূর্তি বসেছে গুজরাতে। এটাও কি কোনদিন ভাবতে পেরেছিলাম। মহত্মা গান্ধীর হত্যাকারীকে পূজো করছে হিন্দুত্ববাদিরা। ভারতে হিন্দুত্ববাদিদের হাতে জাতির জনক গান্ধীর যদি এই দশা হয়, মৌলবাদের অন্ধকারে ডুবে থাকা বাংলাদেশে ফারাবিকে হিরো বানানোর লোকের অভাব হবে না এটা বুঝতে কষ্ট হওয়া উচিত না ।
হিংসা, অজ্ঞতা, খুন, নৃশংস খুন পৃথিবীতে বরাবর ছিল। খুন এবং খুনীদের সমর্থনে ধর্মান্ধদের অভাব এই পৃথিবীতে কোনদিন হয় নি। অভাব ছিল গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং, অভিজিত রায়ের মতন লোকেদের যারা এই পৃথিবীকে অন্ধত্ব , হিংসা থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। এবং হ্যাঁ গান্ধী হত্যার পরে হিন্দুত্ববাদিরা বলেছে গান্ধী আসলে মুসলমানদের চর ! তাই খুন হওয়াটা যৌত্বিক। মার্টিন লুথার কিং এর খুনে কজন শেতাঙ্গ উল্লাস করেন নি? সুতরাং অভিজিত রায়ের মৃত্যুতে মুসলমানদের একটা বড় অংশ উল্লাস করবে-এটাই ইতিহাসের নিয়তি। যার হাত থেকে গান্ধী বা কিং-কেওই রেহাই পান নি। কিন্ত হিংসা ঘৃণা মিথ্যাচার ধর্মান্ধতা দিয়ে আপনারা ইতিহাস লিখতে পারবেন না । ইতিহাস লেখা হবে মহত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং বা অভিজিত রায়দের নামে।
©somewhere in net ltd.