![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বোধ
জাহাঙ্গীর ফিরোজ
বেদনার মর্মে তুমি বসে আছো
আনন্দের মর্মে ও তুমি বসে আছো
আনন্দ-বেদনা
আমার চোখের জলে প্রবাহিত হয় প্রতিদিন
আমি স্বপ্নের মাঝে বসবাস করেছি একাকী
আমাকে ভেতর থেকে জাগালো বেদনা
আমাকে ভেতর থেকে জাগালো প্রজ্ঞা
আমাকে প্রশ্ন করে আমার জিজ্ঞাসা
প্রশ্নাতীত অনুভূতি আমার চোখের জল
প্রশান্তির অতলে ডুবেছে
তবু বোধ বোধীকে খুঁজেছে প্রতিদিন
প্রতি সেজদায় বোধী তোমাকে চেয়েছি
আমার চোখের জল তোমাকে কি স্পর্শ করে না ?
আমার চোখের জলে যে-টুকু প্রশান্তি
সেই পথটুকু পার হয়ে যাই প্রতিদিন
ভবনদী গহন গম্ভীর
এখানেই নিজেকে খুঁজি
আমার ভেতরে খুঁজি সারাক্ষ
..........................................
একবিংশের ভোর রাতে তার চোখ খোলাছিল
জাহাঙ্গীর ফিরোজ
আকাশকে ছুঁতে চেয়ে তালতরু উঠে যায় সোজা
তবু তার পাখা ভেঙেপড়ে ধূলায় মাটিতে;দূরে
দৃষ্টির আড়ালে ওই শটিবনে ফুল ফোটে আজো;
ধুন্দুল মাঁচা ছেড়ে উঠে যায় নিকটের মগডালে
কচি ফল বুড়ো হয় ঝুনঝুনি হয়
কুমারীর মাজনের মাঝে বীজাগার নিয়ে চুপে;
তবুও সে ঝুমঝুম বেজে ওঠে রাতের বাতাসে।
ওদিকে সাহেব আর গেছোআলু আকাশ-পাতালে বেড়ে ওঠে;
দিনশেষে ধলাবক এসে রসুইঘরের পিছে বাঁশঝাড়ে
হল্লা করে রোজ। রাত এলে ঝিঁঝিঁপোকা
মরার খুলির চোখে বসে বসে গান করে সুখে
চাঁদ একা ভেসে যায় মেঘের নদীতে।
পাকা কাঁঠালের ঘ্রাণে গন্ধগোকুলের চোখ জ্বলে
অন্ধকার ঝুলে থাকা ডালে।
বাদুরের বিষম কামড়ে ঝরে রঙিন সুপারি,
যজ্ঞডুমুর আম,তিতিজাম; খালের পানিতে
হিজলের পড়ে গোটা টুব—যেন মাছ ঘুলি দিয়ে চুপ
দূরে একা ঘুরে এসে ফেউ ডাকে সড়কের মোড়ে
এমন ডাকের টানে সহসা চমকে ওঠে রাত
গুবাকতরুর ডানা খসে পড়ে;শিহরিত অন্ধকারে কেন
বধূটীর দেহের কলস ভরে ওঠে ডর ও শরমে?
তবুও যে লাজ ভেঙে আলিঙ্গনে বাঁধে সে তাহারে।
কোমরের ব্যথা নিয়ে ওসারায় বসে রাত জাগে
বৃদ্ধ এক, ঘুমহীন;বিড়ি ফুঁকে সুদূর অতীতে
ভেসে ভেসে।হায়! এখন হুকোর চল উঠে গেছে
আইলাও নিভে গেছে সেই কবে—মনেও পড়ে না;
তবু আবছা আবছা মনেপড়ে সেই-সব মুখ
খুব ভোরে,খাঁখাঁ জ্যোৎস্নায়,কুপির আলোতে একা…
উঠান কে ঝাড়ু দেয়?ক্যাডা রে?ক্যাডা রে? হাক ছাড়ে-
ভাঙা গলা, খনখনে, কাশি ওঠে নাভিমূল থেকে।
উনিশ শতক গেলো,বিশও শেষ—একবিংশের ভোর রাতে
তার চোখ খোলা ছিলো তারাভরা আকাশের দিকে।
©somewhere in net ltd.