নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে কোথাও আছি বসে...

অপেক্ষায় আছি সেই পলিনেশিয়ান তরুণীর যার বাম কানে সাঁজানো লাল জবা...

জীবনানন্দদাশের ছায়া

the be_st...

জীবনানন্দদাশের ছায়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার রবীন্দ্রনাথঃ রবি বাবুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিলম্বিত নৈবেদ্য

২১ শে মে, ২০১১ রাত ৯:৩০

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ওরফে রবি বাবুর সাথে আমার সামনা সামনি কথা হয়নি কখনো; সেই সুযোগ ছিলনা আর আমি বা ঠাকুর বাবু অবসরও করে উঠতে পারিনি কারণ আমরা দু'জনেই ভিষণ ব্যস্ত।



মুখোমুখি কখনো কথা না হলেও ঠাকুর বাবুর রচনার ভক্ত আমি ছেলেবেলা থেকেই। সেই এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছের আকাশে উঁকিঝুকি মারা থেকে শুরু করে তরুণ বয়সে ক্যামেলিয়ার কাছ থেকে প্রত্যাখান হওয়া সহ অনেক কিছুই আমার জানাশোনার মাঝে রয়েছে।



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন সম্পর্কে একটা বোধগম্য ধারণা দেবার জন্য শ্রি সুনীল গংগোপাধ্যায় কাছেও আমি ঋণী। প্রথম আলো পরেই প্রথম ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথকে জানার সুযোগ হয়েছিল আর তুমি কি কেবলই ছবি শুধু পটে আঁকা (অথবা লেখা সঠিক মনে করতে পারছিনা) গানটির পেছনের গল্প বুঝতে পেরেছিলাম ওখান থেকেই। ঠাকুর বাবুর অসংখ্য বই কেন তোমাকে উৎসর্গ করা সেই রহস্যের সমাধানও হয়েছিল প্রথম আলো থেকেই।



ছোটবেলায়; তখন আমি সম্ভবত ক্লাস ফাইভে উঠেছি, ছোটকাকার গলায় একরাতে শুনেছিলাম যখন পরবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়, কাঁটালতা উঠবে ঘরের... তখন কে বলেগো সেই প্রভাতে নেই আমি...। জন্ম-মৃ্ত্যু অথবা এই গমনাগমন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না থাকলেও সেই কথা আর সুর কেন আমার চোখে জল নিয়ে এসেছিল জানিনা। ১০ কি ১১ বছরের বালক মৃত্যু বিষয়ক গানে চোখ ভেঁজাবে কেন!!



কলেজে থাকতে পড়েছিলাম মেমসাহেব, নিমাইয়ের ভট্টাচার্যের প্রেমের-বিরহের উপন্যাস। চোখে জল এসেছিল আর হৃদয়ে গেঁথে গিয়েছিল উপন্যাসে ব্যবহৃত কবিতার লাইন-



প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস, তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ...



খুঁজে পেতে জানা গেল ওটা ঠাকুর বাবুর লেখা।



আমি মুলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আর গানের ভক্ত। আমার কম পয়সার মোবাইলটিতে গান শোনার সুবিধা রয়েছে। মোবাইলে নিয়মিত গান শোনাও হয়। নিয়মিত শোনা গানের মাঝে রয়েছে-



● আলো আমার আলো ওগো...

● আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান...

● আমি তোমারও সঙে বেঁধেছি আমারও প্রাণ...

● চাঁদের আলো বাঁধ ভেঙেছে...

● আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে...



রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসংখ্য কবিতার মাঝে মাঝে মাঝে অজান্তে অথবা বই থেকে বেশি পড়া হয়-



● কিন্তু আমার ভাগ্যটা যেন ঘোলা জলের ডোবা,

বড়রকম ইতিহাস ধরে না তার মধ্যে,

নিরীহ দিনগুলো ব্যাঙের মতো একঘেয়ে ডাকে-

না সেখানে হাঙর-কুমিরের নিমন্ত্রন না রাজঁহাসের...



ক্যামেলিয়াঃ পুনশ্চ



● কাহারে জড়াতে চাহে দুটি বাহুলতা-

কাহারে কাঁদিয়া বলে, 'যেও না, যেও না!'

কেমনে প্রকাশ করে ব্যাকুল বাসনা,

কে শুনেছে বাহুর নীরব আকুলতা!



বাহুঃ কড়ি ও কোমল



● এ মোহ ক'দিন থাকে, এ মায়া মিলায়,

কিছুতে পারে না আর বাঁধিয়া রাখিতে-

কোমল বাহুর ডোর ছিন্ন হয়ে যায়,

মদিরা উথলে নাকো মদির আঁখিতে।



মোহঃ কড়ি ও কোমল



● বৃথা এ ক্রন্দন।

হায়রে দুরাশা-

এ রহস্য, এ আনন্দ তোর তরে নয়।

যাহা পাস তাই ভালো-

হাসিটুকু, কথাটুকু,

নয়নের দৃষ্টিটুকু, প্রেমের আভাস।

সমগ্র মানব তুই পেতে চাস,

এ কী দুঃসাহস!

কী আছে বা তোর!

কী পারিবি দিতে!

আছে কি অনন্ত প্রেম?



নিস্ফল কামনাঃ মানসী



● হেথাও ওঠে চাঁদ ছাদের পারে,

প্রবেশ মাগে আলো ঘরের দ্বারে।

আমারে খুঁজিতে সে ফিরিছে দেশে দেশে,

যেন সে ভালোবেসে চাহে আমারে।



বধূঃ মানসী



● যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে

সে কথা আজি যেন বলা যায়

এমন ঘনঘোর বরিষায়।



বর্ষার দিনেঃ মানসী



● এতকাল নদীকূলে যাহা লয়ে ছিনু ভুলে

সকলই দিলাম তুলে থরে বিথরে-

এখন আমারে লহ করুণা করে।



সোনার তরীঃ সোনার তরী



● নাই বা বুঝিলে তুমি মোরে।

---------------------------

বুঝা যায় আধো প্রেম, আধখানা মন-

সমস্ত কে বুঝেছে কখন্‌।



দুর্বোধঃ সোনার তরী



● কৃষ্নকলি আমি তারেই বলি,

আর যা বলে বলুক অন্য লোক।

দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে

কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।



কৃষ্নকলিঃ ক্ষণিকা



● যে জন আজিকে ছেড়ে চলে গেল খুলি দ্বার

সেই বলে গেল ডাকি,

'মোছ আঁখিজল, আরেক অতিথি আসিবার

এখনো রয়েছে বাকি।'



অতিথিঃ স্মরণ



● তোমার মনে থাকার মত করেছি কোন কাজ!

তোমায় দিতে পেরেছিলেম একটু তৃষার জল

এই কথাটি আমার মনে রহিল সম্বল।

কুয়ার ধারে দুপুরবেলা তেমনি ডাকে পাখি,

তেমনি কাঁপে নিমের পাতা- আমি বসেই থাকি।



কুয়ার ধারেঃ খেয়া



● আকাশে তো আমি রাখি নাই, মোর

উড়িবার ইতিহাস

তবু উড়েছিনু এই মোর উল্লাস।



লেখনঃ ১৬ লেখন



● মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,

আমি তোমাদরই লোক,

আর কিছু নয়-

এই হোক শেষ পরিচয়।



পরিচয়ঃ সেঁজুতি



... ... এবং আরো, আরো...



উৎসর্গঃ ব্লগার শায়মা ও চানাচুর

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মে, ২০১১ রাত ৯:৪৯

তাসনিয়া বলেছেন: রবি ঠাকুরের জীবন সম্পর্কে জানা যাবে কি কি বই পরলে?
প্রথম আলো পাঠ শেষ। আর কি এবং কার লেখা পরলে জানা যাবে?

২১ শে মে, ২০১১ রাত ১০:০৩

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথকে জানতে কি বই পড়া যায়...?? এই প্রশ্নের উত্তর আমিও আপনার সাথে সাথে জানতে চাইছি। আপনি ব্লগার শায়মাকে প্রশ্ন করতে পারেন, তার ব্লগ লিংক http://www.somewhereinblog.net/blog/saimahq

আমাকেও জানাবেন :)

২| ২১ শে মে, ২০১১ রাত ১০:১২

অনিক আহসান বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের "ছিন্নপত্র" পড়েন অনেক কিছু জানতে পারবেন...

২২ শে মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩৬

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
:)

৩| ২২ শে মে, ২০১১ রাত ১২:০৬

সায়েম মুন বলেছেন: রবি বাবুর সাথে ছায়া বাবুর সাক্ষাতকারের মূল অংশটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

২২ শে মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩৮

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
রবি বাবু ওপারে ব্যস্ত। আর এদিকে এপারে আমিও সময় করে উঠতে পারছিনা। এপার-ওপার এক না হলে দেখা হবে কি করে :(

৪| ২২ শে মে, ২০১১ বিকাল ৫:৪৫

লেখোয়াড় বলেছেন: রবি আমাদের রবিবাবু।
আমাদের সকলের আপনজন।
আমদের সবার হৃদয়গাঁথা।

২২ শে মে, ২০১১ বিকাল ৫:৫৫

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
ধন্যবাদ লেখোয়াড় :) ভাল থাকবেন নিরন্তর।

৫| ২২ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৮

জিসান শা ইকরাম বলেছেন:
ভালো লাগলো বেশ।
বেশি ভালো লাগলো , আপনি আবার নিয়মিত হয়েছেন দেখে :)

২৩ শে মে, ২০১১ বিকাল ৪:০৯

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
ধন্যবাদ জিশান দা।

আপনি আমাকে সম্ভব হলে তুমি করে বলতে পারেন :) আপনি সম্বোধনে আমি ঠিক সাবলীল বোধ করিনা। :(

৬| ৩১ শে মে, ২০১১ রাত ৯:৪৮

চানাচুর বলেছেন: কাছে ছিলে দূর গেলে
দূর হতে এসো কাছে...ছায়াদা বসে আছে বসে আছে... রবীদা তুমি কি শুনে পাও?:-/

০১ লা জুন, ২০১১ রাত ৯:৫২

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:
হা হা।

প্রিয় চানাচুর রবীদাকে চিঠি লিখেই যাচ্ছে, লিখেই যাচ্ছে। কোন জবাব নেই :(

৭| ২২ শে জুলাই, ২০১১ ভোর ৫:০২

আদ্রিতা বলেছেন: আজ আপনার বেয়ারিং সবক'টা চিঠি পড়ে ফেললাম। গাছের ধাঁধায় এসে আটকে গ্যালাম। অংক-টংকো আমার পছন্দ না। ধাঁধা-তো কোনোদিনও না। কিন্তু পোকার মতো ঢুকে গ্যাছে গাছের ধাঁধাটা। ধাঁধা সলিউশানের পর যে আনন্দ পাওয়া যায়, এবং সেই আনন্দটা যে কতোটা অসাধারণ এবং অতুলনীয়, আজকে আমি তা বুঝতে পেরেছি ! গড !! আমি তো ত্রিভূজ চর্তুভূজ দিয়ে পুরো ত্রিকোণোমিতি মাথায় তুলে ফেলেছিলাম। হিহি।

বিঃ দ্রঃ অপ্রাসংগিক মন্তব্যের জন্যে দুঃখিত।

২৩ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৩৪

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:

হা হা হা। ছোট বেলায় তাঁরা আকার অভ্যেস ছিল বলে আমি খুব সহজেই সমাধান করতে পেরেছিলাম। :)

দুঃখিত হবার কি আছে! বরং ছোট আদ্রিতাকে ব্লগে পেয়ে ভালো লাগলো। ভাল থাকুন।

৮| ২৩ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১০:২৩

করবি বলেছেন: রবি বাবুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে বিলম্বিত নৈবেদ্য পড়তেও বিলম্ব করে ফেললাম।


এক রাশ ভালো লাগা নৈবেদ্যে।

০৫ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:০১

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:

বিলম্বে হোক তবু যেন একেবারেই অধরা, না বলা না থাকে। (বাপরে বেটার লেট দ্যান নেভারের বাংলা করতে গিয়ে কি লিখে ফেললাম)।

ধন্যবাদ করবি। :)

৯| ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪১

শায়মা বলেছেন: এই পোস্ট আমি তখন দেখিনি অনেক অনেকদিন পরে দেখেছিলাম ভাইয়া!!!!!!!!!!


থ্যাংকস আ লট!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!:)

১০ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫২

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন:

হা হা। :)

১০| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


পোস্টে একরাশ মুগ্ধতা।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২৩

জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: ধন্যবাদ কান্ডারী :) এখানকার সবগুলো লাইনই আমার প্রিয়। তবু সম্ভবত এই লাইনগুলো একটু আলাদা-

আকাশে তো আমি রাখি নাই, মোর
উড়িবার ইতিহাস
তবু উড়েছিনু এই মোর উল্লাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.