নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাভদ

আমি সেই দিন হব শান্ত...

নাভদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ায় কানাডা'য় নাইকো কোম্পানির জরিমানা

২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৩৮

















------------------



নাইকোকে সহযোগিতার দায় অস্বীকার করেছে কানাডার সিনেটর ম্যাক হার্ব

জুন ২৭, ২০১১, সোমবার : আষাঢ় ১২, ১৪১৮ । আপডেট বাংলাদেশ সময় রাত ১২:০০

আমাদের সময়



সঞ্চিতা সীতু: জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার কাজে নাইকোকে সহযোগিতার সব দায় অস্বীকার করেছেন কানাডার সিনেটর ম্যাক হার্ব । তিনি তদন্ত সংস্থা আরসিএমপি (রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ) ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য নাইকোর পক্ষে কোনও অবৈধ কাজ করিনি।



গত শনিবার সিনেটর ম্যাক হার্ব আরো বলেন, ওই সফরে আমি কানাডা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করিনি। একই সঙ্গে আমার সরকারি পদমর্যাদা ব্যবহার করে ব্যক্তিগত বা নাইকোর পক্ষে কোনও ফায়দা নিতে চেষ্টা করিনি। তিনি বলেন, নাইকোর সঙ্গে আমার যাবতীয় কর্মকাণ্ডের বিষয়াদি সিনেটের নৈতিকতা বিষয়ক কর্মকর্তাদের কাছে প্রকাশ করেছি। বিষয়টি আমার জন্য বিরাট উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা করেছি আমি। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত যে আমার বিরুদ্ধে অন্যায় কাজের কোনো প্রমাণ নেই।



তবে কানাডা পুলিশ সিনেটর হার্বের ওই সময়ে বাংলাদেশ সফরকে ‘জনস্বার্থের বাইরে অন্য উদ্দেশ্যে’ বলে চিহ্নিত করেছে।



গত শুক্রবার কানাডার আলাবামার একটি আদালত বাংলাদেশের সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেয়ার অপরাধে নাইকোকে ৯৫ লাখ কানাডিয় ডলার জরিমানা করে। আদালতে নাইকো জানায়, ওই সময়ে মোশাররফকে ঘুষ দিতে গিয়ে তাদের কাজ হাসিল করাতে সিনেটর হার্বকে ৬৫ হাজার ডলার দেয়া হয়েছিল। তিনি তার সিনেটর পাসপোর্ট ব্যবহার করে ২০০৫ এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৬ এর জুলাই পর্যন্ত একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৪১

নাভদ বলেছেন: জনকন্ঠ
মূল পাতা » পুরাতন সংখ্যা » ২৬ জুন ২০১১ » প্রথম পাতা » বিস্তারিত


নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার তথ্য সংগ্রহ করবে দুদক

রশিদ মামুন ॥ আন্তর্জাতিক তেল গ্যাস কোম্পানি নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চলতি সপ্তাহ থেকে এই অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাইকো রিসোর্সেস লিঃ কে গ্যাস ৰেত্র ইজারা দেয়ার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা পৃথক আরেকটি মামলা সচল করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ওই মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান গোলাম রহমান শনিবার জনকণ্ঠকে বলেন, কানাডার আদালতের রায়ের বিষয়ে দুদক অবগত হয়েছে। দুদক চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে। দুদকের আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি দুর্নীতি করেছে কিনা সে বিষয়ে আগে অনুসন্ধান করতে হয়। এৰেত্রেও অনুসন্ধান করে দেখা হবে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এর সঙ্গে জড়িত কিনা? নাইকো কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রীর বিরম্নদ্ধে দুদকের আরও মামলা রয়েছে। ওই সব মামলায় টেংরাটিলার বিষয়টি অনত্মভর্ুক্ত হলে নতুন করে কিছু করার প্রয়োজন হবে না। পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাইকোকে গ্যাস ৰেত্র ইজারা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক অন্য একটি মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোলাম রহমান বলেন, আমরা মামলাটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আইনজীবীসহ সংশিস্নষ্টদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছি।
বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কোকোর সাজা হওয়ার পর পরই প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করল কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেড। নাইকোর স্বীকারোক্তির প্রেৰিতে শুক্রবার কানাডার ক্যালগারির আদালত নাইকোকে ৯৫ দশমিক পাঁচ লাখ ডলার জরিমানা করেছে। জরিমানার অর্থ ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। রায় অনুযায়ী, জরিমানার ১৫ শতাংশ অর্থ পাবে ক্ষতিগ্রসত্ম পক্ষ।
আদালতে নাইকো স্বীকার করেছে, ২০০৫ সালের মে মাসে মোশাররফকে প্রায় দুই লাখ ডলার দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার সিগন্যাস-২০০৫ বিলাসবহুল গাড়ি উপঢৌকন দেয় তারা। এরপর বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বাবদ আরও পাঁচ হাজার ডলার দেয়া হয়। ওই বছর ক্যালগারিতে এক জ্বালানি সম্মেলনে অংশ নেয়ার সময় মোশাররফ এবং নাইকোর মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়। ওই সময় মোশাররফ সপরিবারে নাইকোর টাকায় নিউইয়র্ক ভ্রমণ করেন।
নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। একই বছরের ১৮ জুন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মোশাররফ। সংশিস্নষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশীয় স্বার্থ রৰার বদলে ঘুষ গ্রহণ করার বিষয়টি সরকারের শীর্ষ মহলে জানাজানি হলে তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হয়।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর শনিবার জনকণ্ঠকে বলেন, নাইকো পেট্রোবাংলার বিরম্নদ্ধে দুটি পৃথক মামলা করেছে। তার একটি টেংরাটিলার ৰতিপূরণসংশিস্নষ্ট। অন্যটি ফেনী ৰেত্রের গ্যাসের দাম পরিশোধ না করা সংক্রানত্ম। নাইকো টেংরাটিলার ৰতিপূরণের অর্থ না দেয়ার কারণেই ফেনীর গ্যাসের দাম পরিশোধ করা থেকে পেট্রোবাংলা বিরত রয়েছে। সাবেক জোট সরকারকে ঘুষ দিয়ে ৰতি কম দেখানোর বিষয়টি নাইকো নিজেরাই স্বীকার করায় আমাদের জন্য ভাল হয়েছে উলেস্নখ করে হোসেন মনসুর বলেন, আনত্মর্জাতিক আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য বিষয়টি সহায়ক হবে।
এদিকে কানাডার সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। ওই সব সংবাদ মাধ্যম রায়ের বরাত দিয়ে বলছে, বিদেশী সরকারকে ঘুষ দেয়ার এ ঘটনা কানাডার জ্বালানি রাজধানী বলে খ্যাত ক্যালগারির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ঘুষের ওই ঘটনা নিয়ে ঢাকায় তখনকার কানাডার রাষ্ট্রদূত ডেভিড স্প্রাউল নাইকো বাংলাদেশের ওই সময়কার প্রেসিডেন্ট কাশিম শরিফের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখন কাশিম রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন এ ধরনের উপহার দেয়া স্বাভাবিক ঘটনা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে (গ্যাস কূপে বিস্ফোরণ) তা দেয়া হয়ে থাকে। ওই ঘটনার পর ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে কাশিমকেও তাঁর পদ ছাড়তে হয়েছিল। শুধু জরিমানাই নয়, নাইকোর কর্মকা- আগামী তিন বছর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়। নাইকো পর্যবেৰণের বিষয়টি মেনে নিয়েছে।
রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি স্টিভেন জনস্টোন সনত্মোষ প্রকাশ করলেও একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, পুঁজিবাজারে যেখানে নাইকোর তিন বিলিয়ন ডলারের শেয়ার রয়েছে, সেখানে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা বেশি কিছু নয়। স্টিভেন বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ী মহলে একটা বার্তা পেঁৗছানো যাচ্ছে যে আইন কাউকে ছাড় দেবে না।
এদিকে নাইকোর আইনজীবী ক্রিস্টিন রবিডয়াঙ্ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, এ সাজা প্রতিষ্ঠানটির ওপর একটি বড় ধরনের আঘাত। আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কানাডার প্রেসিডেন্ট জেমস কট্্জ সাংবাদিকদের বলেন, অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে, এমন ধারণা এখন আর কোম্পানিগুলো করতে পারবে না।
জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন কানাডার আদালতের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনকণ্ঠকে বলেন, মামলায় আমাকে যেহেতু একটি পৰ করা হয়েছে তাই কানাডার আদালতের উচিত ছিল আমার জবানবন্দী নেয়া। তিনি নাইকোর কাছ থেকে গাড়ি বা অর্থ কোনটিই ঘুষ নেননি বলে দাবি করেন। সে সময় পরিবহনপুল গাড়ি দিতে না পারায় তিনি বাপেঙ্রে কাছে একটি গাড়ি চান। বাপেঙ্রে কর্মকর্তারা নাইকোর একটি গাড়ি নিয়ে এলে তিনি তা রাখেননি। সে সময় বিদেশ ভ্রমণ বাবদ নাইকোর কাছ থেকে কোন অর্থ নেয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি কারও কাছ থেকে কোন ঘুষ নেইনি। আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী পদৰেপ নেবেন বলে জানান তিনি।
সংশিস্নষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০০৫ সালে টেংরাটিলা বিস্ফোরণের পর দেশীয় অর্থনীতিবিদ এবং ভূতত্ত্ববিদরা দাবি করেন এই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার ৰতি হয়েছে। কিন্তু নাইকো সরকারকে ম্যানেজ করে ৰতিপূরণের পরিমাণ কমিয়ে দেখায়। মূলত নাইকোর অদৰতার কারণেই সুনামগঞ্জের টেংরাটিলায় গ্যাসের বিশাল মজুদ পুড়ে যায়। একই সময়ে আশপাশের দু'তিন কিলোমিটার এলাকার ফসলী জমি এবং গালপালা পুড়ে বিনষ্ট হয়।
নাইকোর কাছে ৰতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশ ৭৪৬ কোটি টাকা দাবি করে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করে। বাংলাদেশের ৰতিপূরণ আদায়ের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে নাইকো জেনেভাভিত্তিক আনত্মর্জাতিক সালিশী আদালত ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটে (আইসিএসআইডি) মামলা করে। অন্যদিকে টেংরাটিলার ৰতিপূরণ না পাওয়া পর্যনত্ম উচ্চ আদালতের নির্দেশে পেট্রোবাংলা ফেনী গ্যাস ৰেত্র থেকে নাইকো উত্তোলিত গ্যাসের দাম দেয়া থেকে বিরত রয়েছে। নাইকোর প্রতিনিধিরা সম্প্রতি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হক এবং জ্বালানি সচিব মেজবাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে আদালতের বাইরে বিষয়টি সুরাহার প্রসত্মাব দিয়েছে।
অন্যদিকে ৰমতার অপব্যবহার করে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে নাইকোকে তিনটি গ্যাস ৰেত্র ইজারা দেয়ায় রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ ৰতির অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামি করে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পৃথক আরও একটি মামলা করে দুদক। মামলাটিতে একেএম মোশাররফ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির বিচারকাজ স্থগিত রয়েছে।

২| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৪৩

নাভদ বলেছেন: Click This Link

৩| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৪৯

নাভদ বলেছেন: মোশাররফকে ঘুষ দিয়ে জরিমানা গুনছে নাইকো

ঢাকা, জুন ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- গ্যাসকূপে বিস্ফোরণের পর ক্ষতিপূরণ এড়াতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করায় নাইকোকে প্রায় কোটি ডলার জরিমানা করেছে কানাডার একটি আদালত।

শুক্রবার কানাডার ক্যালগারির আদালত এ সাজা দেয় বলে কানাডার বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ হয়েছে।

রায়ে নাইকোকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বিচারক স্কট ব্র"কার বলেছেন, ঘুষের এ বিষয়টি কানাডাবাসীর জন্য লজ্জাজনক।

রায়ের পর কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এড সিম্পসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, "তখন যা হয়েছিলো (ঘুষ দেওয়া), তা ভুল হয়েছিলো। আমরা তা স্বীকার করছি।"

আদালতে নাইকো স্বীকার করেছে, ২০০৫ সালের মে মাসে মোশাররফকে প্রায় ২ লাখ ডলার দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুইজার উপঢৌকন দেয় তারা। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বাবদ ৫ হাজার ডলার দেওয়া হয় তাকে। ওই সময় ক্যালগারিতে এক জ্বালানি সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন মোশাররফ। ওই সময় লেনদেন হয়।

নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় ওই সময় পদত্যাগ করেছিলেন মোশাররফ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এমআই/১১২০ ঘ.

৪| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৫২

নাভদ বলেছেন: মোশাররফের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে দুদক

ঢাকা, ২৬ জুন (শীর্ষ নিউজ ডটকম): সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে নাইকোর ঘুষ দেয়া ও এ নিয়ে সম্প্রতি নাইকোকে জরিমানা করার পর এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আর এ ঘটনায় এবার মামলার প্রস্তুতি চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনে। এ নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত সময় কাটছে দুদক কর্মকর্তাদের।
আগামী দু'একদিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন দুদক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন। আজ রোববার বিকেলে তার কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে শীর্ষ নিউজ ডটকমকে এ কথা জানান। তিনি জানান, মোশাররফের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে ৪টি মামলা রয়েছে। তবে সম্প্রতি নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়টি অনেক বেশি প্রচার পেয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, কমিশন তার বিধি অনুযায়ী স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে চায়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ফাইল ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্ট (এফআইআর), তদন্ত ও পরে চার্জশিট দেয়া হবে।
তবে কতদিন লাগতে পারে এ প্রশ্নে তিনি নির্ধারিত সময় উল্লেখ না করে বলেন, প্রত্যেকটি কাজের জন্য কমিশনের বিধিতে সময় নির্ধারণ করা আছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান বিচারিক আদালতে এ মুহূর্তে সারাদেশে প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি মামলা রয়েছে এবং প্রতিমাসেই ৮-১০টি মামলার রায় হচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, 'অপরাধী কে বা কারা এটা কমিশনের কাছে বড় নয় অপরাধই মূল বিষয়'।
এদিকে কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে ইতিমধ্যে ৫ জনের একটি নামের তালিকা চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে তালিকায় কাদের নাম রয়েছে তা প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করে সূত্রটি।
(শীর্ষ নিউজ ডটকম/এমইউএস/সস/১৬.৫০ঘ.)

৫| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৫৩

নাভদ বলেছেন: মোশাররফকে ঘুষ দেয়ায় নাইকোকে ৭১ কোটি টাকা জরিমানা

ঢাকা, ২৫ জুন (শীর্ষ নিউজ ডেস্ক): সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেয়ার অপরাধে কানাডাভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডকে ৭১ কোটি টাকা (৯.৫ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করা হয়েছে। কানাডার একটি আদালত শুক্রবার নাইকোকে এ অর্থ জরিমানা করে। কানাডার সিবিসি নিউজ-এ এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। নাইকোকে এ জরিমানার পর থেকে টরেন্টো স্টক এঙ্চেঞ্জে নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের শেয়ারের দরে ধস নেমেছে।
সিবিসি নিউজ-এ বলা হয়, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালে টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডে বিস্ফোরণের ক্ষতিপূরণ ফাঁকি দিতে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকে এক কোটি টাকা ঘুষ দেয়ার অভিযোগ উঠে নাইকোর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ এড়াতে নগদ অর্থের পাশাপাশি একটি বিলাসবহুল গাড়িও (টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার-সিগন্যাস-২০০৫) উপহার হিসেবে দিয়েছিলো নাইকো। সব কিছু লেনদেন হয়েছিলো ক্যালগরিতে এক জ্বালানি সম্মেলনে মোশাররফের যোগ দেয়া কালে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কানাডার আদালত নাইকোকে এ অর্থ জরিমানা করলো।
নাইকোর ঘুষ দেয়ার বিষয়টি তখন বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের জন্ম দেয়। ওই ঘটনায় তৎকালীন কানাডিয়ান হাইকমিশনার ডেভিড স্প্রোউলি বাংলাদেশে নাইকোর প্রেসিডেন্ট কাশিম শরিফের সাথে দেখা করেন। অবস্থার শিকার হয়ে মোশাররফকে ঘুষ দেয়া হয়েছিলো বলে স্প্রোউলিকে জানান শরিফ। এ অভিযোগে সরকারের ভেতর ও বাইরের চাপে অবশেষে ২০০৫ সালের ১৮ জুন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মোশাররফ পদত্যাগ করেন।
(শীষ নিউজ ডটকম/ সুম/ এআই/ ১২.৩০ঘ)

৬| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১২:৫৬

নাভদ বলেছেন:


মোশাররফকে ঘুষ দিয়ে জরিমানা গুনল নাইকোনাম এল মোরশেদেরও নিজস্ব প্রতিবেদক


বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দিয়েছিল সুনামগঞ্জের টেংরাটিলায় গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা কানাডীয় কম্পানি নাইকো রিসোর্সেস। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের পর যাতে ক্ষতিপূরণ দিতে না হয়, সে জন্য এ ঘুষ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার কানাডার ক্যালগারির একটি আদালতে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নাইকো কর্তৃপক্ষ। এ অপরাধে আদালত নাইকোকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করেছেন।
ক্যালগারির আদালত নাইকোকে জরিমানার অর্থ রায় দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে বলেছেন। রায় অনুযায়ী, জরিমানার ১৫ শতাংশ অর্থ পাবে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ। আদালত একই সঙ্গে আগামী তিন বছর নাইকোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
কানাডার পুলিশ আরো একটি বিষয় তদন্ত করছে। দেশটির প্রভাবশালী সিনেটর ম্যাক হার্ব ওই সময় বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন নেতা, কূটনীতিক ও মন্ত্রীর কাছে তদবির করেন। এর মধ্যে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের নামও রয়েছে। কানাডার গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকার শনিবারের সংখ্যায় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নাইকোর হয়ে তদবিরের জন্য সিনেটর ম্যাক হার্ব কমপক্ষে চারবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি চারদলীয় জোট সরকারের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। কানাডার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশে নিযুক্ত তখনকার রাষ্ট্রদূত ডেভিড স্প্রাউল এ কথা জানিয়েছেন।
আদালতে নাইকো স্বীকার করে, ২০০৫ সালের মে মাসে তখনকার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফকে প্রায় দুই লাখ ডলার দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বাবদ প্রতিমন্ত্রীকে আরো পাঁচ হাজার ডলার দেওয়া হয়। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ সে সময় সপরিবারে ক্যালগারিতে যান। সেখানে তিনি এক জ্বালানি সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময়ই লেনদেনের বিষয়ে রফা হয়। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রী নাইকোর খরচে সপরিবারে নিউ ইয়র্কও ভ্রমণ করেন।
ক্যালগারির আদালতের বিচারক স্কট ব্রুকার বলেন, 'ঘুষের বিষয়টি কম্পানির অংশীদারদের জন্য যেমন অবমাননাকর, তেমনি কানাডাবাসীর জন্যও বিব্রতকর।' আদালতের রায়ে আরো বলা হয়, বিদেশি সরকারকে ঘুষ দেওয়ার এ ঘটনা কানাডার জ্বালানি রাজধানী খ্যাত ক্যালগারির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়।
ঘুষের কথা স্বীকার করে নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এড স্যাম্পসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'তখন যা হয়েছিল (ঘুষ দেওয়া), তা ভুল ছিল। আমরা তা স্বীকার করছি।' নাইকোর বিরুদ্ধে দেওয়া এই রায়ে হতাশ কম্পানির আইনজীবী ক্রিস্টিন রবিডুয়াঙ্। কানাডার সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, 'এ সাজা প্রতিষ্ঠানটির ওপর একটি বড় ধরনের আঘাত।'
রায় সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি স্টিভেন জনস্টোন বলেন, পুঁজিবাজারে যেখানে নাইকোর ৩০০ কোটি ডলারের শেয়ার রয়েছে, সেখানে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা বেশি কিছু নয়। আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কানাডার প্রেসিডেন্ট জেমস কটজ সাংবাদিকদের বলেন, 'অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে_এমন ধারণা এখন আর কম্পানিগুলো করতে পারবে না।'
এ ব্যাপারে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি কোনো টাকা পাইনি। আমি তাদের গাড়িও ব্যবহার করিনি। আমি পেট্রোবাংলার গাড়ি ব্যবহার করতাম। কানাডার পত্রিকার সংবাদটি যেভাবে এসেছে তা হলো, ঘুষ হিসেবে গাড়ি ও টাকা দেওয়ার অভিযোগে কানাডিয়ান আদালত নাইকোকে আর্থিক জরিমানা করেছে। সেখানে আমার ব্যাপারে কিছু নেই।' তিনি আরো বলেন, 'নাইকোর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ২০০০ সালে। তখন তো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল না, ছিল আওয়ামী লীগ। ফলে আমার ঘুষ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি যদি কানাডার আদালতে আসামি হতাম, তাহলে তারা আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিত। কিন্তু কানাডিয়ান আদালত তা করেনি। আসলে কানাডার আদালত যা করল, তা হলো তাদের কম্পানিকে আর্থিক জরিমানা করে রক্ষা করল।'
এদিকে সিনেটর ম্যাক হার্বের বাংলাদেশ সফরের ঘটনার তদন্তে নেমে কানাডার পুলিশ দেখতে পেয়েছে, নাইকোর ব্যাপারে তদবির করতে হার্ব ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে অন্তত চারবার ঢাকায় এসেছিলেন। নাইকোর সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। নাইকো তাদের হয়ে কাজ করার জন্য সিনেটর হার্বকে বিপুল অর্থ দিয়েছে। নাইকো কর্তৃপক্ষ ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৬ সালের জুলাই পর্যন্ত হার্বকে ৬৫ হাজার ডলার দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে।
কানাডার সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, নাইকোর এই ঘুষ কেলেঙ্কারির বিষয়টি ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার তৎকালীন রাষ্ট্রদূত ডেভিড স্প্রাউল জানতেন। তদন্তদলকে ডেভিড স্প্রাউল জানান, সিনেটর হার্ব তাঁর সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে বাংলাদেশের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের সঙ্গে তাঁর বাসায় গিয়ে বৈঠক করেন।
স্প্রাউল দাবি করেন, সিনেটর হার্বের সঙ্গে ওই সময় হোটেলে তাঁর তর্ক হয়েছিল। তিনি বলেন, 'হার্ব প্রকৃতপক্ষে রাতের বেলায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বাসায় বৈঠক করেছিলেন। তিনি আমাকে সঙ্গে নেননি। বৈঠক সম্পর্কে আমাকে তিনি কোনো কিছু অবহিতও করেননি।'
এ ব্যাপারে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেভিড স্প্রাউল ঘুষ লেনদেনের ব্যাপারে নাইকো বাংলাদেশ-এর ওই সময়কার প্রেসিডেন্ট কাশিম শরিফের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কাশিম ঘুষ দেওয়া সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, 'এ ধরনের উপহার দেওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে (গ্যাসকূপে বিস্ফোরণ) তা দেওয়া হয়ে থাকে।' ঘুষ কেলেঙ্কারির পর ২০০৫ সালের অক্টোবরে কাশিমকে তাঁর পদ ছাড়তে হয়েছিল।
নাইকোকে আদালত জরিমানা করার খবরে গতকাল টরন্টো স্টক এঙ্চেঞ্জে কম্পানির শেয়ারের দাম ৩.২ শতাংশ পড়ে যায়। ২০০৯ সালের মে মাসের পর এটাই নাইকোর শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম।
কানাডার অখ্যাত কম্পানি নাইকোর অদক্ষতার কারণে ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর শুরু হয় নাইকোকে বাঁচানোর নানা তৎপরতা। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমালোচনার মুখে একই বছরের ১৮ জুন মোশাররফ হোসেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দেন

৭| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১:০১

নাভদ বলেছেন: আদালতে ৯৪ লাখ ৯৯ হাজার কানাডীয় ডলার জরিমানামোশাররফকে ঘুষ দিয়ে কানাডায় দণ্ডিত নাইকো

বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ২৬-০৬-২০১১



সাবেক বিএনপি সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে ২০০৫ সালে একটি দামি গাড়ি ও ভ্রমণব্যয়ের পাঁচ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়ায় স্বদেশে দণ্ডিত হয়েছে কানাডীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস।
বাণিজ্যিক স্বার্থে বিদেশে ঘুষ দেওয়া প্রতিরোধসংক্রান্ত কানাডার আইনে সে দেশের একটি আদালতে ২০০৯ সাল থেকে এ মামলা চলছিল। নাইকো দোষ স্বীকার করায় গত শুক্রবার ওই আদালত দণ্ড হিসেবে ৯৪ লাখ ৯৯ হাজার কানাডীয় ডলার (৯৭ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৪ মার্কিন ডলার) জরিমানার আদেশ দেন। ৩০ দিনের মধ্যে এ জরিমানা পরিশোধ করতে হবে।
ইন্টারনেটে কানাডীয় ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, আদালত আগামী তিন বছর নাইকোর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবেন বলেও আদেশে বলা হয়েছে। তবে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন আগের মতোই গতকালও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গতকাল শনিবার মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। কানাডার আদালতে মামলার ব্যাপারেও আমি কিছু জানি না। নাইকোকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে তো বর্তমান ও সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকের বিরুদ্ধে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলা হয়েছিল। তাতে তো তাঁরা দোষী বলে প্রমাণ হয় না।’
২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে ছাতকের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের পর, বাপেক্সের মাধ্যমে মোশাররফ হোসেনের জন্য তখনকার দামে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার সিগনাস (২০০৫ মডেল) গাড়ি পাঠায় নাইকো। গাড়িটি ২৩ মে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বাসায় আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়।
প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে গাড়িটি গ্রহণ করার সময় এ-সংক্রান্ত নাইকোর দাপ্তরিক নথিতে লেখা হয়, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের বাসভবনে প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাশে বর্ণিত জিনিসপত্র নাইকোর প্রতিনিধির নিকট হতে বুঝিয়া পাইলাম’। গাড়ি ছাড়াও নথিতে পাশে বর্ণিত জিনিসপত্র হচ্ছে, গাড়ির অস্থায়ী ব্লু বুক, ফিটনেস সার্টিফিকেট, মূল বিমা সার্টিফিকেট, টুলবক্স, একটি অতিরিক্ত চাকা, একটি বিকল্প চাবি, অপারেটরস ম্যানুয়াল প্রভৃতি।
এ ব্যাপারে ২০০৫ সালের ১৪ জুন প্রথম আলোতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তখন মোশাররফ হোসেন প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন। খবরটি প্রকাশের সময় প্রতিমন্ত্রী কানাডা ও আমেরিকা সফরে ছিলেন। ওই সফরের ব্যয়ভারও নাইকো বহন করেছে বলে কানাডীয় আদালতে বলা হয়েছে। কিন্তু তখন নাইকোর পক্ষ থেকে ঘুষ দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলা হয়েছিল, যৌথ অংশীদার হিসেবে বাপেক্সকে গাড়িটি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রথম আলোর খবরের প্রতিবাদ পাঠিয়েছিল নাইকো। কানাডার গণমাধ্যমের কাছেও নাইকোর তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা ঘুষ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী সফর থেকে ১৮ জুন (২০০৫) শনিবার ভোরে দেশে ফিরে ওই দিন সকালে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ঘুষ নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি কোনো অন্যায় করেননি। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায়ই তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। অবিলম্বে তা গৃহীতও হয়।
ওই বছরই নাইকো গাড়িটি ফিরিয়ে নেয়। ফলে তখনই প্রমাণ হয়ে যায়, গাড়িটি বাপেক্সকে দেওয়া হয়নি। যৌথ অংশীদার হিসেবে বাপেক্সের ব্যবহারের জন্য দিলে সেটি আর ফিরিয়ে নেওয়া হতো না। তা ছাড়া টেংরাটিলা, ফেনী ও কামতা গ্যাসক্ষেত্রের যৌথ অংশীদারি চুক্তির কোনো শর্তেই বাপেক্সকে নাইকোর গাড়ি দিতে হবে এমন শর্ত ছিল না।
এ প্রেক্ষাপটে কানাডীয় আদালতের রায়ের পর সে দেশের ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট জেমস কট্জ গণমাধ্যমকে বলেন, আদালতের এ রায়ের পর কোম্পানিগুলো এখন আর এমনটি ভাববে না যে, অপরাধ করেও পার পাওয়া যাবে।
আদালতে নাইকোর পক্ষের আইনজীবী বলেন, নাইকোর মতো কোম্পানির পক্ষে প্রায় ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা দেওয়া কোনো বড় বিষয় নয়। তবে আদালতের দণ্ডাদেশ কোম্পানিটির ভাবমূর্তির ওপর এক বড় আঘাত।
এদিকে, টেংরাটিলা বিস্ফোরণের জন্য নাইকোর কাছে দাবি করা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক আদালতে আছে। নাইকো যখন ক্ষতিগ্রস্ত গ্যাস কাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি করছিল, তখন বিগত সরকারের আমলে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলার রায়ে আদালত সরকারকে বলেছিলেন, ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত নাইকোকে ফেনী ক্ষেত্র তোলা ও সরবরাহ করা গ্যাসের দাম পরিশোধ করা যাবে না।
এরপর নাইকো ফেনী থেকে গ্যাস সরবরাহ করলেও দাম পরিশোধ করা হচ্ছিল না। একপর্যায়ে তারা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলে ক্ষতিপূরণ আদায় ও গ্যাস সরবরাহ শুরু করার ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছার। কিন্তু তা হচ্ছিল না। এরপর নাইকো বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

৮| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১:০১

নাভদ বলেছেন: ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে সম্পদ ধ্বংসের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় হয়নিপ্রতিমন্ত্রীর জন্য নাইকোর কোটি টাকা দামের গাড়ি

টিপু সুলতান | তারিখ: ২৬-০৬-২০১১


সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে দেওয়া সেই গাড়ি। পরে নাইকোকে গাড়িটি ফেরত দেওয়া হয়

ফাইল ছবি

বিদেশি তেল কোম্পানি নাইকোর কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা দামের গাড়ি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে। প্রথম আলোর অনুসন্ধানকালে নথিতে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
সিলেটের ছাতক (টেংরাটিলা) গ্যাসক্ষেত্র খননকালে অগ্নিকাণ্ড, বিপুল অঙ্কের জাতীয় সম্পদ ধ্বংস এবং এর জন্য নাইকোকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর ওই কোম্পানির কাছ থেকে গাড়ি নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ডের পর গত মাসে নাইকো টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার সিগনাস (২০০৫ মডেলের) গাড়িটি বাপেক্সের মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীকে দিয়েছে। জানা গেছে, নাইকোর প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে এডলফ ২০০৫ সালের ১৬ মে এ ব্যাপারে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে একটি দাপ্তরিক চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে বলা হয়, নাইকো ইতিমধ্যে গাড়িটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছে।
নাইকোর কাছ থেকে গাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয় ২০০৫ সালের ২৩ মে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বাসায়। প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে লিখিতভাবে গ্রহণ করার সময় এ-সংক্রান্ত নাইকোর দাপ্তরিক নথিতে লেখা হয়, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের বাসভবনে প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাশে বর্ণিত জিনিসপত্র নাইকোর প্রতিনিধির নিকট হইতে বুঝিয়া পাইলাম।’ গাড়ি ছাড়াও নথিতে পাশে বর্ণিত জিনিসপত্র হচ্ছে, গাড়ির অস্থায়ী ব্লু বুক, ফিটনেস সার্টিফিকেট, অরিজিনাল ইনস্যুরেন্স সার্টিফিকেট, টুল বক্স, একটি অতিরিক্ত চাকা, একটি বিকল্প চাবি, অপারেটরস ম্যানুয়াল।
মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১১-৬২১৩) ব্যবহারের জন্য পাঠানোর কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দেন। তবে ১২ মে (২০০৫) পেট্রোবাংলার এক অফিস আদেশে বলা হয়, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) চালক আবদুল বারী ওই গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করবেন।
ঢাকার একাধিক গাড়ি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উল্লিখিত মডেলের গাড়ির দাম ৮৫ লাখ টাকার বেশি।
বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে প্রতিমন্ত্রীর ব্যবহারের জন্য গাড়ি চাওয়া যায় কি না, প্রশ্নের জবাবে বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গত বৃহস্পতিবার এ পদ থেকে তাঁকে ওএসডি করা হয়) এম এ বাসেত বলেন, এ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান (তৎকালীন) এস আর ওসমানী প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রতিমন্ত্রীর ব্যবহারের জন্য পেট্রোবাংলার অধীন কোম্পানি জিটিসিএল একটি গাড়ি দিয়েছিল, কিন্তু সেটি পুরোনো। তাই নাইকোকে অনুরোধ করে প্রতিমন্ত্রীর জন্য এ গাড়িটি নেওয়া হয়। তিনি মনে করেন, এতে কোনো অনিয়ম হয়নি। কারণ, বিদেশি কোম্পানির সব গাড়ি, কার্যালয় ও আসবাবের মালিক সরকার। তারা কাজ শেষ করে চলে যাওয়ার সময় এগুলো সরকারকে দিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে, গাড়িটি নতুন এবং আগে দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে নাইকো বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাশেম শরীফ বলেন, প্রতিমন্ত্রীকে নাইকো কোনো গাড়ি দেয়নি, বাপেক্সকে একটি গাড়ি দিয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, বাপেক্সের সঙ্গে তাঁদের চুক্তিতে গাড়ি দেওয়ার কথা নেই। কিন্তু বাপেক্স চাইলে চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রপাতি (ইকুইপমেন্ট) দিতে নাইকো বাধ্য, সে হিসেবে গাড়িটি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোজে নিবন্ধিত কানাডার তেল-গ্যাস কোম্পানি নাইকো যৌথ উদ্যোগে বাপেক্সের সঙ্গে তিনটি (ছাতক, ফেনী ও কামতা) ‘পরিত্যক্ত’ গ্যাসক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও উৎপাদনের জন্য চুক্তিবদ্ধ। বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় তিন হাজার ৮০০ কোটি টাকা দামের উত্তোলনযোগ্য গ্যাস থাকা সত্ত্বেও ছাতক (পশ্চিম) ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্র দুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বেশির ভাগই মনে করেন, এই গ্যাসক্ষেত্র দুটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই। পেট্রোবাংলা নিজে এখনো ছাতক ও ফেনী গ্যাসক্ষেত্রকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেনি। কারণ, এখানে নিশ্চিতভাবেই উত্তোলনযোগ্য গ্যাস রয়েছে। এ বিষয়ে ২০০৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে গত ৭ জানুয়ারি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পেট্রোবাংলা এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একাধিক তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য নাইকোর আগ্রাসী খননকে দায়ী করা হয়। কিন্তু নাইকো থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যাপারে সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। উল্টো নাইকো ১ জুন (২০০৫) থেকে পুনরায় সেখানে খননকাজ শুরু করেছে। এ-সংক্রান্ত প্রথম আলোয় গত ১ জুন (২০০৫) সংবাদ প্রকাশের পর জ্বালানি মন্ত্রণালয় নাইকোর সাফাই গেয়ে ব্যাখ্যা পাঠায়।
এ অবস্থায় প্রতিমন্ত্রীকে সর্বশেষ মডেলের দামি গাড়ি পাঠিয়ে নাইকো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে চাচ্ছে কি না, এ প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তাঁর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তিনি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে এ কে এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে কর্ণফুলী সার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) অন্যতম শেয়ারমালিক জাপানি শিল্পগোষ্ঠী মারুবেনি করপোরেশনের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের শাসনামলের শেষ দিকে (১৯৯০) বিতর্কিত কাফকো চুক্তির মাধ্যমে বিদেশি কোম্পানির কাছে বাংলাদেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছিল। আর এসব বিদেশি কোম্পানির স্বার্থের অনুকূলে বাজারমূল্যের চেয়ে কমে গ্যাস সরবরাহসহ একাধিক চুক্তির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছিলেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও শিল্পসচিব হিসেবে এ কে এম মোশাররফ হোসেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর বিএনপিতে যোগ দিয়েও মারুবেনির কাছ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের মে মাসে লন্ডন ও হংকং সফরকালে মারুবেনি মোশাররফ হোসেনের হোটেল ও যানবাহন খরচ বহন করে। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই এ ব্যাপারে প্রথম আলোয় বিস্তারিত খবর বেরিয়েছিল।
এ ব্যাপারে তখন মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মারুবেনির কাছ থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা তিনি নেননি। বিদেশ সফরকালে হোটেল বিল তিনি নিজে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ’৯০-এর ঘটনাবলির পর (এরশাদের পতন এবং মোশাররফ হোসেনের গ্রেপ্তার) তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে যাননি। তাই তিনি মারুবেনির তাকাশি কুনিমুরাকে হোটেল বুকিং ও যানবাহনের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন।
তবে মারুবেনির কাছ থেকে পাওয়া কাগজপত্রে দেখা গিয়েছিল, তারাই হোটেল বিলসহ মোশাররফ হোসেনের খরচ বহন করেছিল।

৯| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১:০২

নাভদ বলেছেন: বিবিসিকে দুদক চেয়ারম্যানসাবেক প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে

| তারিখ: ২৬-০৬-২০১১


সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার দায়ে কানাডীয় আদালতে সে দেশের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোর দণ্ডাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান।
সাবেক ওই জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে একটি দামি গাড়ি ও ভ্রমণব্যয় বাবদ কিছু অর্থ ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে কানাডার একটি আদালত নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডকে ৯৭ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি জরিমানা করে। গাড়ি ও উত্তর আমেরিকা ভ্রমণের খরচ দেওয়ার কথা আদালতে স্বীকার করেছে নাইকো। তবে মোশাররফ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কানাডার ওই আদালতে বলা হয়, সিলেটের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের পর প্রতিমন্ত্রীকে ওই ঘুষ দেওয়া হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে মোশাররফ হোসেন গতকাল শনিবার বিবিসিকে বলেন, ‘হয়তোবা যেহেতু আমি মন্ত্রী ছিলাম, তাই আমার নাম দিয়ে দিয়েছে। এই চুক্তিটা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। আমাদের আমলে আমরা কন্টিনিউশন করিনি এ প্রসঙ্গে।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গাড়ি আমাকে নাইকো দেয়নি। এটা নিয়ে নিউজ হয়েছিল বাংলাদেশের নিউজ পেপারে, আমি রিজাইন দিয়েছিলাম। এইটা একটা মিথ্যা নিউজ আমার বিরুদ্ধে বানানো হয়েছে। সরকারের গাড়ি না দেওয়াতে পেট্রোবাংলা করপোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করেছি। কিন্তু এই ব্যাপারে তো আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসে নাই। জয়েন্টভেঞ্চার কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ি। এ গাড়ি এখনো সম্ভবত পেট্রোবাংলাতে আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রী থাকাকালে গভর্নমেন্ট থেকে গাড়ি দেয় নাই।...আমি করপোরেশনকে বলি একটা গাড়ি দেওয়ার জন্য। তারা নাইকো কোম্পানির একটি গাড়ি আমার বাসায় নিয়ে এসেছিল, আমি সেটি নেই নাই।...আমি সফরে গেছি সরকারি টাকায়।’
দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের যে আইনানুগ প্রক্রিয়া, অনুসন্ধান করে এফআইআর করা, তদন্ত করা, চার্জশিট দেওয়া...ওইটা আমরা করব। এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’

১০| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ১:০৪

নাভদ বলেছেন: সমকাল (২৬/৬/২০১১)

৯৫ লাখ ডলার জরিমানা
নাইকো সাবেক মন্ত্রী মোশাররফকে ঘুষ দিয়েছিল
নাইকোর দেওয়া ঘুষের সেই গাড়ি ফাইল ফটো
সমকাল প্রতিবেদক


জোট সরকারের সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করায় নাইকোকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করেছেন কানাডার একটি আদালত। শুক্রবার কানাডার ক্যালগারির আদালতে এ অর্থ জরিমানা করা হয়। সে সঙ্গে নাইকোর আগামী তিন বছরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ জরিমানার ঘটনায় টরন্টো স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য পড়ে যায়। কানাডার আদালতের এ আদেশ গতকাল
বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।
সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে অগি্নকাণ্ডের ক্ষতিপূরণ এড়াতে ঘুষ হিসেবে বিএনপির সাবেক ওই প্রতিমন্ত্রীকে একটি দামি গাড়ি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য নগদ অর্থ দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে নাইকোর গাড়ি কেলেঙ্কারির ঘটনা এদেশের পত্রিকার মাধ্যমে ফাঁস হলেও সে সময় নাইকো অভিযোগটি স্বীকার করেনি। তৎকালীন জোট সরকার এ অভিযোগের কারণে প্রতিমন্ত্রী মোশাররফকে অব্যাহতি দেয়। অবশেষে ৬ বছরের পুরনো ওই অভিযোগ নাইকো কানাডার আদালতে স্বীকার করে নিল। গতকাল কানাডার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশ হয়। নাইকো কানাডার একটি তেল-গ্যাস কোম্পানি।
পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্র দেখিয়ে ফেনী ও টেংরাটিলায় নাইকোকে অপারেটর নিয়োগ করার ঘটনা নিয়ে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এদেশের আদালতে দুটি মামলা করে দুদক। এর একটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ কয়েকজন এবং অন্যদিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। উভয় মামলায় আসামি হন নাইকোর তখনকার বাংলাদেশ প্রধান এবং বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর ভাগ্নে কাশেম শরীফ। ড. তৌফিক ও ব্যারিস্টার মওদুদ আপন ভায়রা। মামলা দুটির মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা গত বছর ১১ মার্চ হাইকোর্টে বাতিল হয়। খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি এখনও চলছে।
রায়ে যা বলা হয়েছে :ঘুষ দেওয়ার জন্য শুক্রবার কানাডার ক্যালগারির আদালত নাইকোকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করেন। জরিমানার এ অর্থ ৩০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। রায় অনুযায়ী, জরিমানার ১৫ শতাংশ অর্থ পাবে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ। শুধু জরিমানাই নয়, আদালত নাইকোর কর্মকা আগামী তিন বছর পর্যবেক্ষণে রাখবে। যা প্রতিষ্ঠানটি মেনেও নিয়েছে।
রায়ে বিচারক স্কট ব্র'কার বলেছেন, বিদেশি সরকারকে ঘুষ দেওয়ার এ ঘটনা কানাডার জ্বালানি রাজধানী বলে খ্যাত ক্যালগারির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ঘুষের এ বিষয়টি কোম্পানির অংশীদারদের জন্য যেমন অবমাননাকর, তেমনি কানাডাবাসীর জন্য বিব্রতকর।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও এ জরিমানা বেশি নয় বলে মন্তব্য করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি স্টিভেন জনস্টোন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পুঁজিবাজারে যেখানে নাইকোর ৩০০ কোটি টাকার শেয়ার রয়েছে, সেখানে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা বেশি কিছু নয়। তবে এর মধ্য দিয়ে আইন যে কাউকে ছাড় দেয় না সে বিষয়ে ব্যবসায়ী মহল একটা বার্তা পাবে।
রায়ের পর কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকো রিসোর্সেস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাড স্যাম্পসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, তখন যা হয়েছিল (ঘুষ দেওয়া), তা ভুল হয়েছিল। আমরা তা স্বীকার করছি। আদালতেও বিষয়টি স্বীকার করে নাইকো বলেছে, ২০০৫ সালের মে মাসে একেএম মোশাররফকে প্রায় ২ লাখ ডলার দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ত্রুক্রজার উপঢৌকন দেয় তারা। এরপর তাকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বাবদ ৫ হাজার ডলার দেওয়া হয়। ওই সময় ক্যালগারিতে এক জ্বালানি সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন মোশাররফ হোসেন। সে সময়ই এ অর্থ লেনদেন হয়।
ওয়েবভিত্তিক কানাডার একটি পত্রিকা জানায়, অবৈধ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে নাইকোর পক্ষ থেকে একেএম মোশাররফ হোসেন একটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং নাইকোর খরচায় কানাডার ক্যালগারি ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রমোদ ভ্রমণের সুবিধা নেন।
গত প্রায় ৪ বছর ধরে রয়াল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের একটি বিশেষ দল বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে তদন্ত করে একেএম মোশাররফকে নাইকোর ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। আর তাকে ঘুষ দেওয়ার কাজটি সম্পাদনে জড়িত থাকার কারণে ফেঁসে গেছেন কানাডিয়ান সিনেটর ম্যাক হার্ব। তিনি তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে একাধিকবার সফর করেন। যা কানাডা সরকারের বিশ্বাস ভঙ্গ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত। সিনেটর হার্ব আইন পরিষদের সদস্য পরিচয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নাইকোর পক্ষে কাজ করেছেন যা ওই সময়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন কানাডিয়ান হাইকমিশনারকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। হাইকমিশনার ওই সময়ে হার্বের হোটেল কামরায় গিয়ে তার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তদন্ত সংস্থাকে তিনি জানান, 'হার্ব আমাকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় মিটিং করেন। তিনি আমাকে মিটিং সম্পর্কেও কিছু জানাননি।' কানাডা পুলিশ সিনেটর হার্বের ওই সময়ে বাংলাদেশ সফরকে 'জনস্বার্থের বাইরে অন্য উদ্দেশ্যে' বলে উল্লেখ করেন।
আদালতে দেওয়া এক বিবৃতিতে নাইকো জানিয়েছে, ২০০৫-এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৬ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে মোশাররফকে ঘুষ দেওয়া বাবদ তাদের কাজ হাসিল করাতে সিনেটর হার্বকে ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হয়েছিল।
নাইকোর আইনজীবী ক্রিস্টিন রবিডুয়াক্স রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, এ সাজা প্রতিষ্ঠানটির ওপর একটি বড় ধরনের আঘাত। আদালতের এ রায়কে স্বাগত জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কানাডার প্রেসিডেন্ট জেমস কটজ সাংবাদিকদের বলেন, অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে, এমন ধারণা এখন আর কোম্পানিগুলো করতে পারবে না।
অভিযোগ অস্বীকার মোশাররফের :কানাডার আদালতে নাইকোর স্বীকারোক্তি এবং জরিমানার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বর্তমানে ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন নাইকোর কাছ থেকে কোনো ধরনের সুবিধা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, স্বচ্ছতার সঙ্গেই তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। জেভিএ অনুযায়ী গাড়িটি বাপেক্সকে কিনে দেওয়া হয়েছিল। তাকে শুধু সরকারিভাবে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল। এ সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে ব্যবহারের জন্য একটি পুরনো গাড়ি দেওয়া হয়। এজন্য তিনি বাপেক্সের কাছে ব্যবহারের জন্য একটি নতুন গাড়ি চান। গ্যাসক্ষেত্র দুটিতে বাপেক্স নাইকোর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে। এজন্য বাপেক্স নাইকোর কাছ থেকে নতুন গাড়িটি নিয়ে দিলেও আমি তা ফিরিয়ে দিই। একইভাবে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি কানাডার আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ওই আদালতই দুর্নীতিগ্রস্ত। এজন্য তাদের দেশের কোম্পানির কাছ থেকে জরিমানা নিয়ে তাদের বাঁচিয়ে দিচ্ছে। আইন অনুযায়ী নাইকো যদি ঘুষই দিয়ে থাকবে তাহলে তো তাদের জেল দেওয়ার কথা। তাছাড়া কানাডা থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলেও তিনি জানান। কানাডার আদালতের রায়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইনগতভাবে কিছু করা যায় কি-না তা জানতে আইনজীবীর সঙ্গে তিনি আলাপ করবেন।
ঘুষ গ্রহণ নিয়ে আলাদা মামলা করতে পারে দুদক : এর আগে একেএম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেটি ফেনী ও টেংরাটিলাকে পরিত্যক্ত (প্রান্তিক) গ্যাসক্ষেত্র দেখিয়ে নাইকোকে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হয়। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দায়ের করা ওই মামলায় দেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনে বিদেশি কোম্পানি নাইকোকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে রাষ্ট্রের ১০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে ওই মামলাটি করে দুদক। তবে কানাডার আদালতে নাইকোর স্বীকারোক্তির পর একেএম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে আরও মামলা করতে পারে দুদুক। কানাডার আদালতের রায়ের সূত্র ধরে এ মামলা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান গতকাল সমকালকে বলেন, নাইকো নিয়ে তার (একেএম মোশাররফ হোসেন) বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলা রয়েছে। কানাডার আদালতে নাইকো যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এজন্য নতুন করে আইনগতভাবে কী করা যায় তা দেখে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেছন ফিরে দেখা :২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর বাপেক্সের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্টের (জেভিএ) মাধ্যমে নাইকো রিসোর্সেস ফেনী ও ছাতক (টেংরাটিলা) গ্যাসক্ষেত্র দুটিতে অপারেটরের দায়িত্ব পায়। এদিকে গ্যাসের দাম ঠিক না হলেও ২০০৪ সালের শেষ দিকে ফেনী ক্ষেত্র থেকে সরকার গ্যাস কেনা শুরু করে। পেট্রোবাংলা প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের মূল্য ২ দশমিক ১০ ডলার দিতে চাইলেও নাইকো ২ দশমিক ৩৫ ডলার দাবি করে। এ অবস্থার মধ্যে ২০০৫ সালের প্রথম দিকে টেংরাটিলায় কূপ খননের সময় অগি্নকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের দাবি করা ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার কৌশল হিসেবে সে সময় তখনকার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দেয় নাইকো। এ খবর তখন সমকালসহ অন্য পত্রিকায় ছাপা হয়। তখন তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। এর আগে কানাডাও সফর করেন তিনি। ২০০৫ সালের ১৭ জুন একেএম মোশাররফকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে নাইকোর কার্যক্রম : এদেশ থেকে এখনও কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়নি নাইকো। ঢাকায় তাদের অফিসও রয়েছে। গ্যাসের মূল্য প্রদান বন্ধ থাকায় ফেনী ক্ষেত্রে তারা নিজে থেকেই উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। শেষ দিকে ওই ক্ষেত্র থেকে দৈনিক চার-পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হতো। আর ক্ষতিপূরণ মামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত ইকসিডে মামলা হওয়ায় টেংরাটিলায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ওই ক্ষেত্রে কূপ খনন করতে গিয়ে নাইকো দুই দফা অগি্নকাণ্ড ঘটায়।
নাইকোর ঢাকা অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, ইকসিডের মামলার রায়ের দিকে তারা তাকিয়ে রয়েছেন। এদেশে আপাতত তাদের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের জন্য আলাদা কান্ট্রি ম্যানেজার নেই। কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ম্যানেজার ল্যারি ফিশার ভারতের গুজরাট থেকে এদেশের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একাধারে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের দায়িত্বে রয়েছেন বলে তিনি জানান।

১১| ২৭ শে জুন, ২০১১ রাত ৮:১৩

নাভদ বলেছেন:
মোশাররফকে নাইকোর ঘুষ অনুসন্ধানে দুদক



ঢাকা, জুন ২৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নাইকোর কাছ থেকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাইদুর রহমানকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনা অনুসন্ধান করতে ১৫ কার্যদিবস সময় পাবেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান সোমবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নাইকোর কাছ থেকে এ কে এম মোশাররফ হোসেন ঘুষ নিয়েছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে সাইদুর রহমানকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।"

ঘটনাটি অনুসন্ধান করতে নিয়ম অনুযায়ী ১৫ কার্য দিবস সময় দেওয়া হয়েছে- জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, "তবে এই সময়ে না হলে আরো ১৫ কার্য দিবস সময় পাবেন তিনি।"

বাংলাদেশে গ্যাসকূপে বিস্ফোরণের পর ক্ষতিপূরণ এড়াতে মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করায় ২৪ জুন নাইকোকে ৯৫ লাখ ডলার জরিমানা করে কানাডার একটি আদালত।

২০০৫ এর জানুয়ারিতে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের পর মোশাররফ নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে ওই বছরের ১৮ জুন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়েছিলেন মোশাররফ।

আদালতে নাইকো স্বীকার করে, ২০০৫ সালের মে মাসে মোশাররফকে প্রায় ২ লাখ ডলার দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার উপঢৌকন দেয় তারা। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বাবদ ৫ হাজার ডলার দেওয়া হয় তাকে। ওই সময় ক্যালগারিতে এক জ্বালানি সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন মোশাররফ। তখনই লেনদেন হয়।

রায়ের পর কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এড স্যাম্পসন বলেন, "তখন যা হয়েছিলো (ঘুষ দেওয়া), তা ভুল হয়েছিলো। আমরা তা স্বীকার করছি।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিসি/আরএ/পিডি/১৮২৯ ঘ.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.