নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

...

পাখির মতো মন

...

পাখির মতো মন › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুই ধর্মের এক বিয়ে!

১৩ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪৪

দুই ধর্মের এক বিয়ে!



প্রেম কোন বাঁধা মানে না! না ধর্ম, না বর্ণ, না কোন জাতি-কুল! এক পলকের একটু দেখা এলোমেলো করে দেয় সবকিছু। ‘তাকে আমার জীবনে প্রয়োজন’ এ অনুভূতি চাপ দেয় মন নামক এক বস্তুতে। তাই সবকিছু ছাপিয়ে সামনে চলে আসে ‘প্রেম’। ধর্মও সেখানে বাধা হয়ে দাড়ায় না। এমন ঘটনা যেমন সাধারণের মধ্যে হরহামেশাই ঘটে। তেমনি মিডিয়াতে ঘটনা। দুই ধর্মের দুই বাসিন্দা এসে একত্রিত হয়েছেন। পার করছেন জীবন। জীবনসঙ্গী হয়ে মিশে আছেন একজন আরেকজনের সাথে। মিডিয়ার এমন দুই ধর্মের বিয়ে নিয়ে আমাদের এবারের ফিচার। উল্লেখ্য, এই ফিচারটি কাউকে হেয়পতিপন্ন বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য করা হয়নি।



বন্ধু যখন শত্র“

বৃন্দাবন-খুশি

খুশির বড় ভাই বজলুল করিম আফসার ছিলেন বৃন্দাবন দাসের বন্ধু। সেই সুবাদে খুশিদের বাড়িতে বৃন্দাবনের যাওয়া-আসা। তখন বৃন্দাবন কলেজে পড়তেন আর খুশি স্কুলে। বন্ধুর ছোট বোনকে ভালো লাগে বলেই বেশি বেশি আসতেন বন্ধুর বাড়িতে। এদিকে খুশিরও একই অবস্থা। যা কিছু তাঁর ভালো লাগে, সব গুণই আছে বড় ভাইয়ের বন্ধু বৃন্দাবনের মধ্যে। স্কুলবালিকার মন, মানে না বারণ!

খুশির ভাষ্য, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি! এভাবে নয়, ভালোবাসা শুরু হলো অন্যভাবে। এই অন্যভাবেটা যে কেমন, তা এখন বলে বোঝাতে পারব না।’

বৃন্দাবন কথার প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘একটা সময় এসে দুজনই অনুভব করলাম, আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি। ব্যস, শুরু হলো প্রেম।’ এরপর কেটে গেছে বেশ কয়েকটি বছর। বৃন্দাবন উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় আসেন। খুশি স্কুল পাস করে ভর্তি হন কলেজে। এর মধ্যে তাঁদের ভালোবাসার কথা জেনে যান দুই পরিবারের সদস্যরা। পারিবারিকভাবে শুরু হলো খুশির বিয়ের তোড়জোড়। কিন্তু তিনি বৃন্দাবনকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে রাজি নন। তাই একদিন কলেজ পড়–য়া খুশি পরিবারের সবাইকে ছেড়ে রওনা দেন ঢাকায় বৃন্দাবনের কাছে। দিনটি ছিল ১৯ জানুয়ারি ১৯৯৪। সেদিন জার্মান কালচারাল সেন্টারে বৃন্দাবনের ‘আদিম’ নাটকটির মঞ্চায়ন ছিল। বৃন্দাবন বলেন, ‘সেখানে এসে ও পৌঁছাল বিকেলে।’ মামুনুর রশীদ আরণ্যকের কার্যালয়ে নিয়ে আমাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। শুরু হলো আমাদের সংসার।’ দুই পরিবারের কেউ মেনে নিলেন না তাঁদের বিয়ে। অনেক বাধা বিপত্তির মাঝে চলতে থাকে তাঁদের সংসার। আরণ্যক, নাটক আর কাজবিহীন সংসার। সঙ্গে যোগ হয়েছে পরিবার থেকে বিভিন্ন ধরনের চাপাচাপি। খুশি বলেন, ‘দুঃসময়ে অভিভাবক ছাড়া চলা খুব কঠিন কাজ। চরম দুঃখ পেলেও মনের সে কথা বলার কেউ নেই। ভেবেছিলাম জীবনযুদ্ধে বোধ হয় হেরেই যাব। কিন্তু না, বৃন্দাবনের ভালোবাসা আমাকে বারবার সাহস দিয়েছে। নতুন করে সব কিছু শুরু করেছি।’ দীর্ঘ ১৬ বছর তাঁরা কেউ একবারের জন্যও গ্রামে যাননি। এই ১৬ বছরে একে অন্যকে ছাড়া থাকেননি একটি রাতও।

সব কিছু মেনে নিয়ে দুজন এখন সুখেই আছেন। দিব্য জ্যোতি ও সৌম্য জ্যোতি নামের দুই যমজ সন্তান নিয়ে তাঁদের সংসার। সব মিলিয়ে তারা নিজেকে সফল দম্পতিই মনে করেন।





ভালোবাসি ভালোবাসি এই সুরে...

চাঁদনী- বাপ্পা মজুমদার

‘প্রেম তো কোন বাঁধা মানে না...!’ সুর করে বললেন বাপ্পা মজুমদার। এরপর হেসে ফেল্লেন। বলেন, ‘কার যে কখন কি ভাবে প্রেম হয়ে যায় তা বলা মুসকিল। আর সেটা মনের মধ্যে একবার গেঁথে গেলে আর সরানোর উপায় নেই। তখন কেবলই মনের মধ্যে বাজতে থাকে ভালোবাসি ভালোবাসি।’ কণ্ঠাশিল্পী বাপ্পা মজুমদার হিন্দু পরিবারের ছেলে আর অভিনেত্রী মেহবুবা চাঁদনী হচ্ছেন মসুলমান পরিবারের মেয়ে। তারা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। প্রেমটা বেশি দিনের না। মাত্র কয়েক মাসের। এই অল্পসময়ের মধ্যেই তারা সিন্ধান্ত নেন তারা বিয়ে করবেন। আট-ঘাট বেঁধে নেমে পড়েন তারা দুইজন। ব্রত হচ্ছে সফল করবই এই প্রেম। কিন্তু প্রথমেই বাঁধা এলো বাপ্পার পরিবার থেকে। আর চাঁদনীর পরিবার বাপ্পার মসুলমান হওয়ার শর্তে রাজি হলেন। সব বাঁধা পেরিয়ে ২১ শে মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ২৭ সিয়ার্স রেস্টুরেন্টে বাপ্পা-চাঁদনীর বাগদানের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। লাল শাড়ি আর জড়োয়া গহনায় চাঁদনীর অনামিকায় বাপ্পার পরিয়ে দেওয়া আংটির বন্ধনে হয়ে গেল দুজন দুজনার। আর এতে ধর্ম কোন বাধা হতে পারল না। বাগদান অনুষ্ঠানে চাঁদনীর মা বাবা, ভাই বোন ও ভগ্নিপতিসহ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বাপ্পা মজুমদারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবরা উপস্থিত থাকলেও পরিবারের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এ সব বাধাও একদিন দুর হল। পুর্ণতা পেল প্রেম। এলো চাঁদনী বাপ্পার বিয়ের দিন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ‘বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার’ অনেক ধুম-ধাম করে বিয়ে হয় দুজনের। হয়ত হাজার ভক্তের হৃদয় ভেঙ্গেছে। কিন্তু জয় হয় প্রেমের। চাঁদনী বলেন ‘সব ভালো কাজেই শুরুতে অনেক বাঁধাই আসে। কিন্তু পরে সব ঠিক হয়ে।’ এখন চাঁদনী-বাপ্পা বাবা-মাকে নিয়ে একসঙ্গে থাকেন। সবাই এখন মেনে নিয়েছে তাদের বিয়েটা।





রঙের খেলায় খেলতে গিয়ে...

প্রাণ রায়-শাহনেওয়াজ কাকলী

আর দশজন সাধারন মানুষের প্রেমের গল্প যেমন হয় প্রাণ রায় এবং শাহনেওয়াজ কাকলী প্রেমের গল্পও ঠিক একই রকম। খানিকটা বাংলা সিনেমার মত। সংঘাতের পর প্রেম এবং অনেক চরাই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে বিয়ে। প্রাণ রায় বলেন, ‘কাকলী আমার ছিল ক্লাসমেট। আমরা একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে পড়াশনা করেছি। সে সময় আমরা এক সঙ্গে ক্লাস করতাম, ছবি আঁকতাম। ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু একদিন বুঝতে পারলাম ... প্রহর শেষে দিনের আলোই সে দিন চৈত্রমাস, আর আমি কাকলির চোখে দেখে ছিলাম আমার সর্বনাশ। কাকুলির কথা আমি জানি না জানতে চাইওনি আমি ওকে ভালোবাসি এটাই হলো বড় কথা।’ এভাবেই শুরু হয়েছিল প্রাণ রায় এবং কাকুলির প্রেম। ছবি আর ছবি আঁকাই প্রাণ রায়ের পণ। সব সময় ছবি আঁকতে পছন্দ করেন তিনি। এই পছন্দের সঙ্গে যোগ হলো নতুন এক ভালোলাগা। এই দুই ভালোলাগার সমন্বয় করতে গিয়েই সবাই জেনে গেল তাদের প্রেমের ব্যপারটা। প্রথমেই দুই পরিবার থেকে বাঁধা আসল।

তারপর একটা সময় এসে প্রেমেরই জয় হলো। তারা বিয়ে বরলেন। সুখ দুঃখকে সঙ্গী করে তারা সংসার করছেন। তাদের ঈদেও যেমন উৎসব হয় তেমনি পুঁজাতেও করা হয় উৎসবের আয়োজন।





মানুষ আপন, টাকা পর

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি- হিল্লোল

তিন্নি বলেন ‘আমার দাদু বলতেন, মানুষ আপন, টাকা পর; যত পারিস মানুষ ধর।’ তাই আমি টাকা নয়, মানুষকে ভালোবেসেছি সব সময়। এই মানুষের ভালোবাসাই পেতে চেয়েছি সব সময়। এই মানুষ ভালোবাসাই আমার সম্পিত্তি। তাদের ভালোবাসাই ভালো থাকতে চাই। হিল্ললের সঙ্গে তার প্রেমের শুরুর গল্প বলছেন তিনি, ‘খুব ছোটবেলা থেকে আমার সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। আর একটু বড় হওয়ার পরে সঙ্গীতচর্চা ছেড়ে অনেকটা হঠাৎ করেই অভিনয়ে আসি। ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার মুকুট বিজয়ের পরই সবার নজরে আসতে পড়তে শুরু করেন তিন্নি। এরপর পরিচয় হিল্লোলের সঙ্গে। একপর্যায়ে শুরু হল প্রেম। গতানুগতিন টাইপের প্রেম না। আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না এসব কিছু হয় নি। প্রথম প্রেম এবং ক্যারিয়ার গঠনের শুরুর দিকে আমার নামডাক ছডিয়ে পড়ে। এমন সময় দুই পরিবারে জানাজানি হয়ে গেল আমাদের প্রেমের ব্যপারটা। হিল্লোলের বাবা পুলিশ অফিসার। তিনি রাগি মানুষ। আমার বাবা সাচিব। তাই দুই পরিবারের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না।’

এরকমই অবস্থায় প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে তিন্নি ও হিল্লোল বিয়ে করেন। তিন্নির কাছে তখন হিল্লোল হল আপন আর কাছের মানুসেরা হয়ে গেল পর। এরপর থেকে অভিনয়শিল্পী হিল্লোল-তিন্নি দম্পতি। এখন তাদের একটি মেয়ে আছে নাম ওয়ারিশা। এই হলো তিন্নি হিল্লোলের জয়ের গল্প।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১০ রাত ২:৩০

মিটুলঅনুসন্ধানি বলেছেন: জাত গেলো জাত গেলো বোলে....



সাম্প্রদায়ীক ভাবনা নিপাত যাক।।।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:৩৭

পাখির মতো মন বলেছেন: সাম্প্রদায়ীক ভাবনা নিপাত যাক।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.