নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসিফা-আরফানের আব্বু

যুবায়ের আহমেদ

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলছি আগামীর পথে

যুবায়ের আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেলে আসা স্মৃতি

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

আজ থেকে ১৬/১৭ বৎসর আগের কথা, যখন আমরা ছবিতে থাকা ৪জন একত্রে থাকতাম। আমাদের ছোট বড় বন্ধুত্বের সংখ্যাটা আরো দীর্ঘ, তবে আমরা এই চারজন ছিলাম সব সময়ই একসাথে। নাটের গুরু মোজাম্মেল ভাই, আমরা অপরতিনজন তার সহযোদ্ধা, সব কাজের। মোজাম্মেল ভাই আমার মামাতো ভাই, আবার আমার ফুফাতো ভাইও অর্থাৎ আমরা একে অপরের মামাতো ফুফাতো ভাই, আত্মীয়তার সম্পর্কটা ডাবল, আলাউদ্দিনও আমার মামাতো ভাই, রুবেল আমার খালাতো ভাই। রুবেল নানার দোকানে বসলেও আমরা অপর তিনজন পড়ালেখায় ছিলাম। আর দুষ্টমিতে সবাই একসাথে। মোজাম্মেল ভাই হতে পারে বয়সে ৫/৬ বৎসরের বড়। তবে আমাদের মধ্যে কোন কোন বিষয়ে গোপনতা নেই। একসাথে খেলা, নিজের মামার বাড়ী সহ বিভিন্নজনের বাড়ীতে গিয়ে রাতের বেলায় সিনেমা দেখা, বর্ষাকালে সিনেমা দেখতে অন্য বাড়ীতে যাওয়ার সময় পরনের লুঙ্গি মাথায় তুলে পানিপথ পাড়ি দেওয়া, একসাথে জমিতে গিয়ে প্রকৃতির কাজ সম্পন্ন করা, ঔরশ ও মাহফিলে একসাথে রাতের বেলায় একসাথে যাওয়া, এক বিছানায় ৫/৬ জন উল্টাপাল্টা হয়ে ঘুমানো সহ কি হয়নি আমাদের মাঝে।

কে কার সাথে প্রেম করে, কাকে পছন্দ করে, কোন মেয়েকে দেখতে কেমন লাগে সহ ভালো মন্দ কোন আলোচনাই বাদ পড়েনি আমাদের মাঝে। বাৎসরিক ধমীয় উৎসব, শবে-বরাত, শবে-মেরাজ, শবে কদর সহ অন্যান্য উৎসবগুলোতে মসজিদে গিয়ে আমাদের দুষ্টমি বেড়ে যেতে বহুগুণে। সে সময় নামাজ পড়ার থেকে দুষ্টমিতেই বেশি মনোযোগী ছিলাম। তবে নামাজ পড়তে যাইনি, এমনটা কখনো হয়নি।

মাদ্রাসা ফাঁকি দিয়ে ক্যারাম বোর্ড খেলা, ব্যাডমিন্টন খেলা, ক্রিকেট খেলা খেলে সন্ধ্যায় মাদ্রাসা টাইম শেষ হলে বাড়ীতে আসা, পরবর্তীতে নানা-নানির কাছে ধরা খাওয়ার বহু ঘটনা ঘটতো তখন। নানা-নানি নিজ সন্তানের মতোই আদর, শাসন করতো সব সময়। নানা ভাই নেই, এটা এখনো মানতে পারি না।

বাছির মামাও মাঝে মাঝে আমাদের সঙ্গীয় হয়ে যেতেন, বিশেষ করে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার সময়টায়। যদিও তিনি মোজাম্মেল ভাইয়ের চেয়েও অনেক বড় ছিলেন বয়সে।

ছবিতে না থাকলেও আরেকজন আছে, যে আমার কাছে বিশেষ কিছু, তবে দিনের আড্ডায় আমরা সবাই একসাথে থাকলেও রাতের বেলায় কিংবা আমাদের দুষ্টমির অধিকাংশ সময়ই সে ছিলো না। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে সে আমার কাছে কিংবা আমি তার কাছে অনেক কিছু। তিনি হাফেজ মোঃ আতিক। আরো আছে, সুমন ভাই, সোহেল মামা সহ অনেকে।

মোজাম্মেল ভাইয়ের সমবয়সী আমার ছোট মামা সাইফুল ইসলাম আমাকে বাড়ীতে পড়ালেখা করাতেন। কারো বাড়ীতে টিভি দেখতে গেলে এবং পরে বাড়ীতে আসার পর মোটামুটি ভালোই মারতেন তিনি। তবে নিজের পড়ালেখার জন্য বেশির সময়ই তিনিও ছিলেন গ্রামের বাহিরে। তাই আমাদের উপরের সকলের দুষ্টমিতে অংশ নেওয়ার জন্য আমার তেমন সমস্যা হয়নি।

সে সময়ে সিগারেটের প্যাকেট ও চাড়া দিয়ে তাস খেলার সুমন (সাব বাড়ীর) ভাইয়ের কাছ থেকে আমি, আলাউদ্দিন ও আতিক প্রতিদিন দৌড়ানি খেতাম নিয়মিত।

কিন্তু বিগত ৪/৫ বৎসর আগ থেকেই দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। সেই সুমন ভাইয়ের সাথে তো বটেই মোজাম্মেল ভাই, রুবেল, আলাউদ্দিন, সোহেল মামা সহ আমাদের কাছে ছোটবেলায় মূর্তিমান আতঙ্ক এমন অনেকের সাথেই তাস খেলা শুরু হয়ে গেছে, যা খুব ভালোই জমত। তবে সবার কর্মব্যবস্ততার কারনে এবং একত্রিত না হতে পারার কারনে এখন সেটা আমার দ্বারা আর সম্ভব হচ্ছে না।

আমি অনেক মিছ করি সবাইকে। কিন্তু সবার সাথে প্রতিদিন কিংবা প্রতি মাসে তেমন যোগাযোগ হয় না। রুবেলের সাথে দেখা হয় শ্রীকাইল গেলে। আলাউদ্দিনের সাথেও মাঝে মাঝে ফোনে কথা হয়। তবে আমার জীবনের অন্যতম একজন প্রিয় মানুষ মোজাম্মেল ভাইয়ের সাথে অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই যোগাযোগ হয়। যদিও তার অভিযোগ আমি আগের মতো নেই।

ফেইসবুকের কল্যাণে সবাইকে আগের মতো কাছে পেয়েছি, প্রতিদিন যোগাযোগ করার মতো একটা সুযোগ তৈরী হয়েছে। ছোট সময়ে চলাফেরা করা প্রতিটি মানুষের সাথে এখন ফেইসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ হওয়ার কারনে আমি অনেক স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ছি।

সোহেল মামার সাথে এখনো ফেইসবুকে যোগাযোগ হয়নি। আশা করি সেটা দ্রুতই সম্ভব হবে। প্রিয় মানুষগুলোর মধ্যে তিনিও অন্যতম।

আজ সবাই কর্মব্যস্ততায় একেক জায়গায় অবস্থান করছে। আলাউদ্দিন ও সোহেল মামা সম্ভবত নারায়নগঞ্জ, আতিক ঢাকা, রুবেল বাড়ীতেই, মোজাম্মেল ভাই বাংগরা বাজার ও আমি চট্টগ্রামে, তাই সবাই একত্রিত হওয়া তেমন একটা সম্ভব হয় না। হয়তো এটাই নিয়ম। এটাই বাস্তবতা। তবে ফেইসবুকের কল্যাণে যোগাযোগ করাটা সহজ হওয়ায় আমি অনেক খুশি।

আবারো পারবো সবার সাথে ফেইসবুকের মাধ্যমে আনন্দ হাসিতে মেতে উঠতে। সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করতে।

মোজাম্মেল ভাই আমার কাছে সব সময়ই স্পেশাল। আমি তার কাছ থেকে বাহ্যিক জ্ঞান লাভ করেছি প্রচুর। বয়সের ব্যবধান থাকলেও মা বাবার পরে তিনিই আমার কাছে সেরা মানুষ। সেরা ব্যক্তিত্ব।

মোজাম্মেল ভাই, রুবেল, আতিক ও আলাউদ্দিন, সোহেল ও বাছির মামা এরা সব সময়ই আমার কাছে সম্মান শ্রদ্ধার ও সেরা বন্ধুত্বের আসনেই থাকবে। সব সময়................

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২০

বর্ষন হোমস বলেছেন:

পড়ছিলাম আর একে একে আমার নিজের সৃতিরকথা মনে পড়তে লাগল।সত্যিই দিন গুলি কি মজার ছিল!!!!!!!!!!!!!আর কখনও ফিরে পাব কিনা কে জানে!!!!!!

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২৬

যুবায়ের আহমেদ বলেছেন: আমাদের আর ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, পরবর্তী প্রজন্মও আর পাবে না এমন দিন, কেননা সে পরিবেশ আর নেই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.