নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসিফা-আরফানের আব্বু

যুবায়ের আহমেদ

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলছি আগামীর পথে

যুবায়ের আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজয়ের গল্প

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২০

রাজ্জাক সাহেব একজন মুক্তিযোদ্ধা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে শেষ অবদি দেশের জন্য লড়াই করেছেন তিনি। বিজয়ের ঠিক আগ মুহুর্তেই পাকিস্তানি হানাদারের গুলিতে আহত হয়ে একটি পা হারিয়েছেন। সেই থেকে এক পায়ে ভর করে চলছেন। এ নিয়ে তার কোন আপে নেই, দেশটা স্বাধীন হয়েছে, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কিছুই নেই রাজ্জাক সাহেবের জন্য। ব্যক্তি জীবনে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক রাজ্জাক সাহেব। মেয়েকে ভালো পাত্রস্থ করেছেন। ছেলেকেও বিয়ে করিয়েছেন। ছেলের সংসারে এক ছয় বৎসর বয়সী নাতি আছে রাজ্জাক সাহেবের, যার নাম তিনি রেখেছেন বিজয়। বিজয়ের সাথে তিনি সব সময়েই মুক্তিযোদ্ধের গল্প করেন। কিভাবে পাকিস্তানিরা আমাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন ও জুলুম করেছে দিনের পর দিন, কিভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙ্গালীর উপর অন্যায় ভাবে ঝাপিয়ে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে কিভাবে নিরীহ বাঙ্গালীরা নিজ মাতৃভূমি শত্র“ মুক্ত করার জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে এবং শেষে বিজয় অর্জন করেছে, সেইসব গল্প করেন তিনি। বিজয়ও দাদা ভাইয়ের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধের বাস্তব গল্পগুলো মনযোগ সহকারে শুনেন। ছোট্ট বিজয় নিজেকেও দেশ রার একজন সৈনিক হিসেবে কল্পনা করেন। ছোট্ট বিজয়ের এ নিয়েও অনেক কৌতুহল.....
বিজয়: দাদা ভাই, আমিও দেশের জন্য যুদ্ধে যাবো
রাজ্জাক সাহেব: নানা দাদু ভাই, এখন আর সেটা সম্ভব না।
বিজয়: কেনো দাদা ভাই?
রাজ্জাক সাহেব: বাংলাদেশ এখন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এখন আর যুদ্ধ হবে না, তাই।
বিজয়: তাহলে, দেশের জন্য কি আমার কিছুই করার নেই দাদা ভাই?
রাজ্জাক সাহেব: কেনো থাকবে না, অবশ্যই আছে। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রে বসবাস করলেও প্রতিনিয়ত আমাদের মানচিত্রে আঘাত আসছে বিভিন্ন ভাবে। তাছাড়া দেশের মানুষকে ভালোবাসা, বিপদে আপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো। দেশের ভালো হয়, এমন যেকোন কাজ করার মাধ্যমেই তুমি নিজেকে একজন আদর্শ দেশ প্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারো।
বিজয়: আমি তো এখন অনেক ছোট, আমি কি ভাবে এগুলো করবো?
রাজ্জাক সাহেব: হ্যাঁ তোমাকে আগে বড় হতে হবে, লেখা পড়া করতে হবে, মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। তখনই তুমি সবকিছু ঠিকমতো করতে পারবে। তাছাড়া এখন থেকেই তুমি বড়দের সম্মান করবে, অন্ধকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেবে, কারো সাথে মিথ্যা বলবে না। সাহায্য প্রার্থীকে সাধ্যমত সহযোগিতা করবে। নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ছাড়া রাস্তাঘাটে ময়লা আবর্জনা ফেলবে না। কারো কোন তি করবে না। এইভাবে তুমি ধীরে ধীরে নিজেকে একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারো।
বিজয়: আমি সবসময় চেষ্টা করবো দাদা ভাই।
রাজ্জাক সাহেব: আমিও তোমার জন্য দোয়া করবো সব সময়, অস্ত্র হাতে না হলেও দেশ ও দেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু করে একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক হতে পারো।

মায়ের ডাকে চলে যায় বিজয়। রাজ্জাক সাহেব ভাবতে থাকেন। স্বাধীনতার ৪৫ বৎসরেও আমরা পুরোপুরি স্বাধীন নই। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, মানচিত্র পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি। কিন্তু পাইনি শান্তিতে বেঁচে থাকার মতো নিশ্চয়তা। নিশ্চিত হয়নি পাঁচটি মৌলিক অধিকার। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও দেশ স্বাধীনের জন্য আমরা যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়েছি দল, মত, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে। আজ নেই সেই ভ্রাতৃত্ববোধ, একতা। যার কারনে যারা ভালো আছে, আছেই। অন্যরা সীমাহীন দূর্ভোগে দিনযাপন করছে।

তবুও আশাহত হন না রাজ্জাক সাহেব। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন। দীর্ঘ ৪৫ বৎসরেও প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাননি কি হয়েছে, বিজয়ের মতো কোটি কোটি শিশুদের হাত ধরেই হয়তো এ দেশের কোটি কোটি মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। মানুষে মানুষে একতা তৈরী হবে। জাতি ধর্ম নিয়ে হানাহানি ভেদাবেদ বন্ধ হবে, সর্বোপরি বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে একটি আদর্শ বাংলাদেশ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩১

রুহুলআমিন চৌধুরি বলেছেন: স্বাধীনতার ৪৫ বৎসরেও আমরা পুরোপুরি স্বাধীন নই। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, মানচিত্র পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি। কিন্তু পাইনি শান্তিতে বেঁচে থাকার মতো নিশ্চয়তা। নিশ্চিত হয়নি পাঁচটি মৌলিক অধিকার। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও দেশ স্বাধীনের জন্য আমরা যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়েছি দল, মত, জাতি ধর্ম নির্বিশেষে। আজ নেই সেই ভ্রাতৃত্ববোধ, একতা। যার কারনে যারা ভালো আছে, আছেই। অন্যরা সীমাহীন দূর্ভোগে দিনযাপন করছে।

তবুও আশাহত হন না স্বাধিনতার পক্ষের দেশপ্রেমিক মানুষেরা । দীর্ঘ ৯ মাস রক্তয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন যে সব মুক্তিকামি মানুষেরা। দীর্ঘ ৪৫ বৎসরেও প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পান নি কি হয়েছে, ? বিজয়ের মতো কোটি কোটি শিশুদের হাত ধরেই হয়তো এ দেশের কোটি কোটি মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। মানুষে মানুষে একতা তৈরী হবে। জাতি ধর্ম নিয়ে হানাহানি ভেদাবেদ বন্ধ হবে, সর্বোপরি বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে একটি আদর্শ বাংলাদেশ।

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩

যুবায়ের আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য...

বিজয়ের মতো কোটি কোটি শিশুদের হাত ধরেই হয়তো এ দেশের কোটি কোটি মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। মানুষে মানুষে একতা তৈরী হবে। জাতি ধর্ম নিয়ে হানাহানি ভেদাবেদ বন্ধ হবে, সর্বোপরি বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে একটি আদর্শ বাংলাদেশ।

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


স্বাধীনতা যাঁরা এনেছিলেন, আর যারা দেশ চালায়েছে, এরা আলাদা গ্রুপের লোকজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.