নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্রিকেট-ফুটবল কিংবা আন্তর্জাতিক স্পোর্টসই টাকার খেলা। ক্রিকেট ফুটবলে সব সময়েই টাকা বেশি। তবে যেকোন খেলাতেই জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করাটা সম্মানের, সেখানে হয়তো টাকার হিসাবটা শুরুতেই আসে না। প্রতিনিধিত্ব করাটাই বড় ব্যাপার, আয় রোজগার যাই হউক হবে আরকি, এমনটাই ভাবনা থাকে সবার।
কিন্তু টি২০ ক্রিকেট!!! পুরোটাই বানিজ্যিক, কোন সন্দেহ নেই। তবে হ্যাঁ জাতীয় দলের হয়ে টি২০ কিছুটা ব্যতিক্রম, এখানে সবার আগে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটাই আসল বিষয়। কিন্তু আইপিএল-বিপিএল-বিগ ব্যাশ, সিপিএল, পিএসএল সহ এই ধরণের যত লীগ আছে, সেখানে আবেগ বিবেকের কোন দাম নেই, বানিজ্যিক চিন্তা ভাবনাই আসল।
টি২০ লীগের ফাঁদে পড়ে ইতিমধ্যে অনেক ক্রিকেটারই তাদের সুন্দর ক্যারিয়ার নষ্ট করে ফেলেছেন, ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তান সহ অনেক দেশের ক্রিকেটাররাই ফিক্সিং কেলেংকারীতে জড়িয়ে টেস্ট, ওয়ানডে সর্বোপরি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছেন, যা কখনোই কাম্য ছিলো না।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ বিপিএলে কিংবা বিশ্বের প্রতিটি দেশের টি২০ লীগেই তাদের জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার দল পাননা, যা বেদনাদায়কই বটে। যারা দেশের হয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা রাখেন, তারা দেশের ঘরোয়া একটা টি২০ লীগে খেলার সুযোগ পান না শুধুমাত্র ব্যবসায়িক মনমানসিকতার কারনে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ নিয়েই আলোচনা করবো, তাই বাহিরের দেশের উদাহরণ টানা বাদ দিলাম। বিপিএল এর শুরু থেকেই জাবেদ ওমর, রাজিন সালেহ, তুষার ইমরান সহ কিছু ক্রিকেটার দল পাননি। তবে ওদের দল না পাওয়া নিয়ে, ওদের হতাশা থাকলেও সারা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা হতাশ হননি, ওরা লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেটার বলেই হয়তো কারো মধ্যে হতাশা নেই বিপিএলে দল না পাওয়ায়।
গত বছর টি২০ ক্রিকেটের দূর্দান্ত ব্যাটসম্যান এবং জাতীয় দলের হয়েও টি২০ ক্রিকেটে দূর্দান্ত ইনিংস খেলা জুনায়েদ সিদ্দিকী দল পাননি, যা হাস্যকর বিষয় এবং যথেষ্ট হতাশার, সিদ্দিকী ছাড়াও গতবার দল পাননি জুবায়ের হোসেন সহ আরো কিছু ক্রিকেটার। অবশ্য বিপিএলের মাঝখানে জুনায়েদ দল পেয়েছিলেন, খেলেছেন মোটামুটি, খুব বেশি ভালো করতে পারেননি। সম্ভবত সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এক ম্যাচে।
বিপিএল ২০১৭ তে আবারো দল পাননি জুনায়েদ সিদ্দিকী, জুবায়ের হোসেন লিখন, শাহাদাত হোসাইন, নাজমুল হোসেনের মতো ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলে না খেললেও নাজমুল হাসান মিলন ছক্কা মিলন হিসেবেই পরিচিত, কিন্তু তিনিও দল পাননি এবার, যা চূড়ান্ত হতাশার বিষয়। এনামুল জুনিয়র, সামসুর রহমান, সোহরাওয়ার্দীরাও শুরুতে দল পাননি, পরে দলভুক্ত হয়েছেন।
দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা এ ক্রিকেটারা ঘরোয়া ক্রিকেটের একটা আসরে সুযোগ পাচ্ছেন না, তা কষ্টকরই বটে। জাতীয় দলের ক্রিকেটার হিসেবে তাদের জন্য এটা অপমানেরও। অনেকেই হয়তো আমার সাথে দ্বিমত হতে পারেন, যুক্তি দেখাতে পারেন ওরা তেমন ভালো করতে পারেনি, তাই কেউ আগ্রহ দেখায়নি কিংবা ক্রিকেটে এমনটা হতেই পারে।
কিন্তু আমার যুক্তিটা হলো, ওরা জাতীয় দলের ক্রিকেটার, পরিচিত মুখ এবং লঙ্গার ভার্সনের স্পেশালিষ্ট ক্রিকেটার নয়, শুধু এতোটুকুই। সবাই টি২০ ক্রিকেটেও নিজেদের প্রমাণ করেছেন, তাছাড়া জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটার হিসেবে ওরা দল পাওয়াটা লজ্জাজনক, অপমানজনক এবং হতাশার, এই আসল কথা।
জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন, এমন কোন ক্রিকেটার যদি দল না পায়, তা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু যারা বর্তমান জাতীয় দলে না থাকলেও নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে, তারা দল না পেলে বিষয়টা দৃষ্টিকটুই দেখায়। জুনায়েদ সিদ্দিকীরও টি২০ ক্রিকেটে এবং বিপিএলে অনেক ভালো ইনিংস আছে, তিনিও দল পাচ্ছেন না, গতবার সহ প্রতিবার বিপিএল খেলা শাহাদাত হোসাইন টি২০ ম্যাচে খরুচে বোলার হলেও দেশের অন্যতম সেরা এই ফাস্ট বোলার দলই পাবেন না, তাও মেনে নেওয়া যায় না। জুবায়ের হোসেন লিখনের মতো তরুন উদীয়মান স্পিনার দল পাবেন না, তাও মেনে নেওয়া যায় না। তার একই ধরনের রশিদ খান পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়ে টি২০ লীগ মাতাচ্চেন সব জায়গায়। খারাপ খেলতেই পারে, তার কারনে হয়তো একাদশে সুযোগ পাবেন না, কিন্তু দলেই সুযোগ না পাওয়া বিব্রতকর বিষয় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য। তাছাড়া বিপিএলের প্রতিটি দলে সুযোগ পাওয়া সব ক্রিকেটারই সফল হয় না, ব্যর্থতার পাল্লাই বেশি। ভালো করে হাতগুণা কয়েকজন মাত্র।
পাঁচ বিদেশী খেলানোর কারনে দেশীয় ক্রিকেটাররা একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না, পাশাপাশি বিদেশীরা টপ অর্ডার ব্যাটিং দখল করে রাখায় দেশীয় ক্রিকেটারদের অনেকেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাচ্ছে না কিংবা ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদেশীদের আগেই ব্যাটিং দিতে হচ্ছে। আর কোন কোন দেশী ক্রিকেটার সুযোগ পেলেও ভালো করতে পারছেন না, সব মিলিয়ে নিজ দেশেও পরবাসী ক্রিকেটাররা।
বিপিএলের দলগুলোর মালিকরা না হয় বানিজ্য করতে এসেছে, টোটাল ক্রিকেট নিয়ে তাদের ভাবনা নাইবা থাকতে পারে, কিন্তু আয়োজক ও সমন্বয়ক হিসেবে বিসিবির আরো শক্ত ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। ৫ বিদেশী এবং ব্যাটিং বোলিংয়ে বিদেশীদের কর্তৃত্বের কারনে দেশী ক্রিকেটাররা পারফর্ম করার সুযোগই পাচ্ছে না। রাহি কিংবা আরিফুল দুজনেই খুলনার এবং নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করছেন, এছাড়া আর কোন দলেই তরুন ক্রিকেটার এ পর্যন্ত পারফর্ম করতে পারেননি। বিপিএলের শুরুতেই যখন এই অবস্থা, তখন লীগ আরো জমে উঠলে দেশী ক্রিকেটাররা আরো চাপে পড়বে, তা নিঃসন্দেহেই বলা যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছুতেই ব্যবসা।
লেখা পড়ায় ব্যবসা। খেলাধূলায়ও ব্যবসা।