নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসিফা-আরফানের আব্বু

যুবায়ের আহমেদ

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলছি আগামীর পথে

যুবায়ের আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভুল সিদ্ধান্তে ক্রিকেটাররা নাকি দেশ বঞ্চিত হচ্ছে!

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১০



একজন ভালো ক্রিকেটার জাতীয় দলে সুযোগ না পেলে সেই ক্রিকেটার যেমন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেন, হতাশ হন, তেমনি দেশও বঞ্চিত হয় সেই ক্রিকেটার বা ক্রিকেটারদের সার্ভিস প্রাপ্তি থেকে এবং এটাই অবশ্যই অবশ্যই, এক বর্ণও ভুল ভাবনা নয়।

একটা টেস্ট ক্রিকেট দলের ৮/১০জন নিয়মিত সদস্য যখন ৩০ বা ততোর্ধ হয়, তখন দলটিকে দারুণ অভিজ্ঞ দল বলা যায়। টেস্ট ক্রিকেটটা অভিজ্ঞদেরই খেলা, তরুণরা হঠাৎ হঠাৎ পারফর্ম করে কিংবা ছোটখাটো অবদান রেখে সিনিয়রদের সহযোগিতা করে মাত্র।
আধুনিক ক্রিকেটের সব সুযোগসুবিধা থাকা/পাওয়ার আমলে বিগত ২১ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলে এখনো কেনো বাংলাদেশ দল মাঝারি মানের টেস্ট দলও হতে পারেনি, তার পেছনে বড় কারন অবশ্যই টেস্ট দলকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা না করা এবং এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যারা টেস্টে যোগ্য তাদেরকে আলাদা প্রায়োরিটি না দেওয়া এবং সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের সাময়িক অফফর্ম কিংবা ইনজুরীর কারনে বাদ পরলে আর সুযোগ না দেওয়া।

বাংলাদেশে যে টেস্ট মানের ক্রিকেটার আসেনি কিংবা একেবারেই কম তা নয় বরং একটি দলকে ভালো দল হিসেবে গড়ে তোলার মতো পর্যাপ্ত টেস্ট ক্রিকেটার ছিলো বাংলাদেশেও, কিন্তু তাদের সঠিক ব্যবহার, পরিচর্যা করা সম্ভব হয়নি। ফলে আমরা এখনো শিক্ষানবিশ দল হয়ে আছি। হঠাৎ পাওয়া সফলতাই আমাদের সম্বল হয়ে আছে।

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের মান যেমনই হোক, এই মানের মাঝেও অসংখ্য ক্রিকেটার নিজেদের প্রমাণ করেছেন, জাতীয় দলে সুযোগ করে নিয়েছেন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই অসময়ে সুযোগ পেয়েছেন নয়তো যখন সুযোগ পাওয়ার দরকার তখন পাননি কিংবা আগে ব্যর্থ হয়েছেন, আর সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না, এই থিউরিতে আটকে থাকার মানসিকতায় অনেক ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার আক্ষেপেই শেষ হচ্ছে। এই সব ক্রিকেটাররা কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটের আয় দিনে ঠিকই চলে যাচ্ছে, কিন্তু বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। টেস্ট ক্রিকেটে আরো সমৃদ্ধ/মাঝারি মানের দল হতে না পারাটাই এই বঞ্চিতের চ‚ড়ান্ত রূপ।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দেশসেরা ব্যাটার অবশ্যই একবাক্যে এবং স্মৃতিতে প্রথমেই ভেসে উঠবে তুষার ইমরানের নাম। কিন্তু ২য় কে? এমন প্রশ্নে কমবেশি সকলেই চিন্তিত হয়ে যাবে। একেক জন একে একে হয়তো এখনো জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া ফরহাদ হোসেন এর নাম বলবেন, কেউবা রাকিবুল হাসান, (তামিম, মুশফিক, রিয়াদরা ব্যতীত), মার্শাল আইয়ুব, ফজলে রাব্বি, জুনায়েদ সিদ্দিকী, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফিজ, মিজানুর রহমান, অলক কাপালিদের নাম আসবে। যারা গভীর ভাবে প্রথম শ্রেণীর খোঁজ রাখেন তাদের কাছে উল্লেখিত নামগুলো ছাড়াও উঠে আসবে নাঈম ইসলামের নাম। যিনি তর্ক সাপেক্ষে ২য় সেরা ব্যাটার হলেও রান ও সেঞ্চুরীর দিক দিয়ে ২য় দেশসেরা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার।

এই নাইম যে শুধু প্রথম শ্রেণীতেই বেস্ট তা নয়। সে ওয়ানডে-টি২০ ফরম্যাটেও দূর্দান্ত। ঘরোয়া ক্রিকেটে এক ওভারে ৬টি ছয় হাঁকিয়ে ছক্কা নাঈম উপাধি অর্জন করেছেন। হোক না সেটা অখ্যাত বোলার মার্শাল আইয়ুব। ৬ বলেই হিট করে ৬ হাঁকানোর মানসিকতাটাই তো নেই অনেক ব্যাটারের। এছাড়া জাতীয় দলের হয়েও ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচ জিতিয়েছেন। বল হাতেও জ্বলে উঠতেন। ক্রিকেটের কমপ্লিট প্যাকেজ বলা যায় নাঈম ইসলামকে।

নাঈম ইসলাম জাতীয় দলে নেই ২০১৪ সাল থেকে। ২০১৬ সালের পর থেকে নেই বিপিএলেও। পরবর্তী সময়টা ঢাকা লীগ, জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ ও ঢাকা প্রিমিয়ারের অংশ টি২০ লীগেই খেলছেন। বিশেষ করে ওয়ানডে ও চারদিনের ম্যাচেই পুরো সময় দিচ্ছেন নাঈম হাসান।

৩৫ বছর বয়সী নাঈম হাসান গতকাল বিসিএলে সেঞ্চুরী করেছেন, এটি তার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৮তম সেঞ্চুরী। রান ইতিমধ্যে ৯৪০২। তুষার ইমরানের ৩২ সেঞ্চুরী ও ১১৯৭২ রান।
কিন্তু বিপরীতে দেশসেরা দুই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চিত্রটা দেখুন।
নাঈম ইসলাম ৮ টেস্টে ১ সেঞ্চুরী ও ১ ফিফটিতে ৪১৬ রান, ৫৯ ওয়ানডেতে ৫ ফিফটিতে ৯৭৫ রান ও ৩৫ উইকেট। ১০ টি২০ ম্যাচে ১৩০ রান ও ৩ উইকেট।
তুষার ইমরান ৫ টেস্টে ৮৯ রান, ৪১ ওয়ানডেতে ২ ফিফটিতে ৫৭৪ রান।

দুই জায়গার চিত্র কতই না ভিন্ন। তুলনামূলক নাঈম ইসলাম তুষার ইমরানের চেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছেন এবং ভালোও খেলেছেন তার জায়গায়। কিন্তু দুজনেরই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আলোকিত ক্যারিয়ারের বিপরীতে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার যথেষ্ট হতাশার।
বর্তমানে ৩৮ বছর বয়সী তুষার ইমরানের জাতীয় দলের অধ্যায় শেষ করেছেন আজ থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর পূর্বে অর্থাৎ যখন তার বয়স ছিলো মাত্র ২৪ (২০০৭ সাল)। অপরদিকে ৩৫ বছর বয়সী নাঈম ইসলামের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে আজ থেকে ৭ বছর আগে অর্থাৎ যখন তার বয়স ছিলো ২৮ (২০১৪ সাল)।

যখন তাদের সেরা ক্রিকেট খেলার সময়, তখন তারা জাতীয় দলে নেই, ঘরোয়া ক্রিকেটেই সেরাটা দিয়েছেন/দিচ্ছেন। এই প্রতিভাবান/সামর্থ্যবান ক্রিকেটারদের যথাযথ মূল্যায়ণ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট। তারা হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেও নিজেদের জীবন পরিচালনার মতো আয়-রোজগার করেছেন, কিন্তু দেশ বঞ্চিত হয়েছে তাদের সার্ভিস থেকে। তারা আগে জাতীয় দলে ভালো খেলেনি, এটা চরম বাজে কথা। কেননা ক্রিকেট খেলাটা ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা। উন্নতির সুযোগ থাকে। ব্যর্থতা শেষে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে। পূর্বে খারাপ খেলেছে মানেই ভবিষ্যতে ভালো খেলবে না, এমন ধারণা মূলত ঐ ক্রিকেটারদের প্রতি নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছু নয়। আর নাঈম ইসলাম, শাহরিয়ার নাফিজ সহ বহু ক্রিকেটারকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে অজানা কারনে। পারফর্মজনিত কারনে নয়।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই উত্থান পতন ততদিন শেষ হবে না, যতদিন না ৫ পান্ডবের পরিবর্তে জাতীয় দলে ১০ পান্ডব না হবে এবং এটা করতে হবে অবশ্যই ক্রিকেটারদের গড়ে তোলে। হুট করে সুযোগ দিয়ে আবার হুট করে ছুড়ে ফেলে নয়। যা হওয়ার পূর্বেই হয়েছে, ভবিষ্যতে যেনো তেমন আর না হয়, সেদিকে মনযোগী হতে হবে এখনই। প্রতিভা কিংবা পরিশ্রম মিলিয়ে যাদেরকে সম্ভাবনাময় মনে হবে, তাদেরকেই সুযোগ দিতে হবে দীর্ঘসময় ধরে। আর পুরনোদের ফিরিয়ে আনার কথা বলাও পাপ বাংলাদেশ ক্রিকেটে। পুরনোরা কার গরম ভাতে ছাই দিয়েছে, তা আল্লাহ মালুম অথবা ওরা ক্রিকেট মূর্খ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আমি ক্রিকেট খেলা নিয়ে আর লাফালাফি করবো না। নো নেভার।

২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:০০

বিটপি বলেছেন: আমাদের ক্রিকেট দলের জন্য কোন পান্ডবের দরকার নেই। দরকার একজন দৌপদীর - আর একজন কুন্তীর।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: দেশ বঞ্চিত হচ্ছ।দেশ নিয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই ,সব পরিকল্পনা ব্যাক্তি / পরিবার নিয়ে

৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৪

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: ঘরোয়া খেলা থেকে জাতীয় দলে এনে খারাপ করলেই বিদায় না করে তাকে পরিচর্যা করার জায়গাটা তৈরী করতে হবে । বোর্ড কোচ খারাপ করলে উন্নতি করছি বলাটা জবাবদিহিতা নয় এটা বুঝতে হবে ।
অন্তত চার বছর পর বোর্ড প্রধান সহ বোর্ডের সকলের পরিবর্তন করতে হবে । ভোটিং সিস্টেম নির্বাচিত বাদ দিয়ে এখানে প্রফেশনাল আনতে হবে ।
নতুন বোর্ডপ্রধান এর নির্দিষ্ট রেজুলেশন থাকতে হবে এবং সেটা পাব্লিকলি প্রকাশ করতে হবে ।
না পারলে
টেস্ট আর টি টোয়েন্টি খেলা বাদ দিতে হবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.