নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসিফা-আরফানের আব্বু

যুবায়ের আহমেদ

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলছি আগামীর পথে

যুবায়ের আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কু-শিক্ষার অহংকার “আমরা চাষাভূষা নই”

২২ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:২০

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আলোন্দন এখন দেশের আলোচিত ঘটনা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের বর্ণনাতীত হামলার মাধ্যমে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণের পর শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের দাবী জানায়। শিক্ষার্থীদের উক্তরূপ আন্দোলনের মাঝে শিক্ষকদের জন্য অপমানজনক ¯েøাগান দেয়ার অভিযোগ তোলে শিক্ষকরা ভিক্ষোক কর্মসূচী পালনের সময় অধ্যাপক লায়লা আশরাফুন বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, “আমরা কোনো চাষাভূষা নই যে আমাদের যা খুশি তাই বলবে”। শাবি অধ্যাপকের উক্তরূপ মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে দেশব্যাপী। একজন অধ্যাপক কৃষক শ্রেণীকে ছোট করে দেখে যে শ্রেণীবিভাজন করেছেন, তা কখনোই কাম্য নয়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় তিনি কৃষকদের নি¤œশ্রেণী কিংবা ছোট করার পর আরো বলেছেন যে, “বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। সেই বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমরা ২০২২ সালে এসে কেন এই অপমানের শিকার হবো। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই”। তিনি স্বাধীনতার প্রসঙ্গ এনে নিজেদের অধিকার কিংবা সম্মানের চিন্তা করলেও তিনি হয়তো জানেন না ১৯৭১ সালে কারা দেশ স্বাধীনে বড় ভূমিকা রেখেছে, কারা লুঙ্গি পরে গামছা কাঁধে নিয়ে দেশ মাতৃকাকে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে রক্ষার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি হয়তো জানেন না পূর্ব পাকিস্তান কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মূল পেশা কৃষি। কৃষক পিতা ও কৃষি পরিবার থেকেই আমাদের উত্থান।

শাবিপ্রবির অধ্যাপিকা এবং তার সহকর্মীরা যদি শিক্ষার্থীদের কোন মন্তব্যে আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রতিবাদ করতেই পারেন, তবে তা কখনোই নিজেদের শিক্ষার দাম্ভিকতা দেখিয়ে নয়। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে পুলিশী হামলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে পরিস্থিতি আরো জটিল করে দেয়ার ফলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হওয়ার পাশাপাশি হতাশও। এই অবস্থায় তাদের কোন মন্তব্য শিক্ষকদের জন্য বিব্রতকর হলেও তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও ভিসির কারনেই হচ্ছে। এই বাস্তবতাটি উপলব্ধি করতে পারেননি শাবিপ্রবির শিক্ষক সমাজ। তারা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের মাঝে প্রতিবাদ বিক্ষোভের নামে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা এবং কৃষকদের অপমান করে নিজেদের কু-শিক্ষার চিত্রটি সামনে এনেছেন। নিজেদের অপমানের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দেশ মাতৃকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অপমান করেছেন, যা কোন সুশিক্ষিত মানুষের কাজ হতে পারে না। অধ্যাপিকার দাম্ভিক মন্তব্যেই প্রতীয়মান হয় যে, সুশিক্ষা ও সার্টিফিকেটের শিক্ষা এক নয়। সার্টিফিকেটের শিক্ষা মানুষকে দাম্ভিক বানিয়ে দেয়। শিক্ষক হয়েও তিনি নৈতিক শিক্ষা থেকে অনেক দূরে আছেন।

বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষকদের অধিকারের কথা বলেছেন সারা জীবন। তিনি বলেছিলেন, “আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে ওই গরীব কৃষক, তাদের সম্মান দিয়ে কথা বলুন। বঙ্গবন্ধুর বলে যাওয়া কথার সাথে আমরাও তাল মিলিয়ে শাবিপ্রবির অধ্যাপিকা সহ শিক্ষা নিয়ে দাম্ভিকতা প্রকাশ করে কৃষকদের অপমান করা সকলকে বলতি পারি, আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে ওই গরীব কৃষক, তাদের সম্মান দিয়ে কথা বলুন কিংবা আপনার মাঝে শিক্ষা নিয়ে (প্রকৃত পক্ষে কু-শিক্ষা) যদি গৌরব কিংবা দাম্ভিকতা থাকেও তা প্রকাশ্যে না দেখিয়ে মনের মধ্যে লালন করেন। আমাদের শেকড় নিয়ে তাচ্ছিল্য করে কথা বলার অধিকার আপনার কিংবা আপনাদের মতো কুশিক্ষিতদের নেই। সব সাধকের সব সাধক আমার দেশের চাষা। কৃষি ও কৃষক আমাদের গৌরব ও অহংকারের জায়গা।

শাবিপ্রবিতে আন্দোলনের সূত্রপাত যেভাবে-আন্দোলনের কারন সম্পর্কে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায় “ছাত্রীরা ডাইনিং এর খাবারের মান বাড়ানো, ক্যান্টিন এর খাবারের দাম কমানো, ওয়াইফাই স্পিড বৃদ্ধি, সুপেয় পানির মান বৃদ্ধি, ছাত্রী অসুস্থ হলের ছাত্রীর গার্জিয়ান/মাকে হলে প্রবেশের অনুমতি, হলের টয়লেট ও গোসলখানা যথাযোগ্য ভাবে পরিষ্কার, চারজনের থাকার জন্য নির্মিত সকল কক্ষে জোড়পূর্বক পাঁচজন কে থাকতে বাধ্য না করা নিয়ে প্রভোস্ট এর সাথে আলোচনায় বসতে চাইলে তিনি জঘন্যতম আচরণ শুরু করেন ফোনালাপে। তিনি আসতে অসম্মতি জানিয়ে " বের হয়ে গেলে বের হয়ে যাও। আমি আসতে পারব না। কেউ কি মারা গেসে? মারা গেলে তখন দেখা যাবে", "আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই" ইত্যাদি অসম্মানজনক, আপত্তিকর ও ক্ষোভ উদ্রেককারী মন্তব্য করেন। প্রভোস্ট না এলে হলের ছাত্রীরা ত্রিশ মিনিটের মধ্যে হল ছেড়ে বেরিয়ে যাবে বললে তিনি বলেন," বের হয়ে যাও। লজ্জা থাকলে রুমে ঢুকবা না।" তখন মেয়েরা রাতে ৯টার পর হল থেকে বের হয়ে প্রভোস্টের পদত্যাগ সহ ৩ দফা দাবীতে মানে ভিসি ভবনের বাইরে গিয়ে বসে জড়ো হয়ে ¯েøাগান দেয়ার মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করে। একই দিনে রাত ৩ টার পর ভিসি তার ভবন থেকে বের হয়ে বলেন পরের দিন সকাল ১১টায় তাকে যেন শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ জানায়। মেয়েরা লিখিত অভিযোগ করলে তখন ভিসি বলেন, প্রভোস্ট এর পদত্যাগ এর দাবী মানা যাবেনা। এছাড়া হলের অন্যান্য সমস্যা এক মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিবো। মেয়েরা তা কিছুতেই মানেনা এবং আন্দোলন চালু করে। বর্তমানে ভিসির পদত্যাগের দাবীতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে অনশন করছেন অনেক শিক্ষার্থী।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.