![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেকার প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য সুখবর, বিয়েশাদী নিয়ে দেশে একটা নতুন আইন জারি করা হয়েছে, সেটা নিয়ে দেশের সব বেকার প্রেমিক মহলে আবেগে কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেল।
আমি তো নিউজের হেডলাইন পড়ে আবেগে অনেক্ষণ কান্দা দিলাম।
-আইনটা হল; "যদি কোনো প্রাপ্তবয়ষ্ক ছেলে-মেয়ে একজন আরেকজনকে পছন্দ করে তারা বিবাহ করতে চায়, কিন্তু ছেলেটা বেকার থাকায় বিয়ে করতে পারছেনা, কন্যার বাবাও বেকার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি না, ছেলেটাও বেকার অবস্থায় বিয়ে করতে সাহস পাচ্ছে না, বাথরুমে যেয়ে শরীরে সাবান লাগানোর পর পানি চলে গেলে যেমন বিপদ, তারা এরকম বিপদে আছে , এমতাবস্থায় তাদের জন্য দেশে আইন জারি করা হয়েছে, যদি কোনো ছেলে এই অবস্থায় বিয়ে করতে চায়, তাহলে কন্যার বাবা ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে বাধ্য থাকিবেন, এবং বিয়ের পর ছেলেটা যতদিন পর্যন্ত বেকার থাকিবে ততোদিন মেয়ে তার বাবার বাড়ি অবস্থান করিবে, কিন্তু ছেলে যখন ইচ্ছে সেখানে গিয়ে তার বউয়ের সাথে দেখা সাক্ষাৎ বা তাদের যা ইচ্ছে করিতে পারিবে, এতে যদি মেয়ের পরিবার বা ছেলের পরিবার কোনো বাধাবিপত্তি করেন তাহলে উপযুক্ত সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হইবে।"
নিউজটা প্রচার হবার পর চারদিকে শুধু কান্নার আওয়াজ, পার্কে- রেস্তোরাঁয় বেকার প্রেমিক - প্রেমিকারা একজন আরেকজনকে জরিয়ে ধরে আবেগে কান্দা দিচ্ছে, আমি চোখ মুছতে মুছতে পত্রিকা হাতে নিয়ে সোজা নাদিয়ার বাসায় গেলাম, গিয়ে দেখি নাদিয়া ফুল গাছে পানি দিচ্ছে, আর গুনগুন করে গান গাচ্ছে, আমি ওর পেছন দিকে গিয়ে আচমকা জরিয়ে ধরে উরাধুরা চুম্মা দিতে লাগলাম, নাদিয়া অবাক হয়ে বলছে আরে কি করছো হাবিব ? বাসায় সবাই আছেন, কেউ দেখে ফেলবে তো, তুমি এখানে কেন আসছো !?
আমি পত্রিকার লেখাটা দেখানোর সাথে সাথে নাদিয়া আবেগে কাদতে কাদতে আমাকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগল, আমার হাবিব, জান, বাবুসোনা , আর কেউ আমাদের বিয়ে আটকাতে পারবেনা, তুমি তারাতারি বিয়ের আলাপ পাঠাও, কালই আমাদের বিয়ে, শরমে আমার মুখ লাল হয়ে আসছে, আব্বু-আম্মুকে গিয়ে কিভাবে বলব, "আজই নাদিয়ার বাসায় বিয়ের আলাপ নিয়ে যাও কাল আমার বিয়ে"।
কিন্তু শরম করলে তো আর গরম ভাত জোটবে না।
বাসায় গিয়ে আব্বু - আম্মুর পায়ে লম্বা হয়ে পড়ে বললাম, " আম্মু বাথরুমে গেলে বদনায় পানি থাকা যতটা জরুরী, আমার বিয়ে করা ঠিক ততোটাই জরুরী, তোমরা আমার আপন মা-বাপ তোমরা না বুঝলে বুঝবে আমার বিপদের কথা ?"
নিজের মা-বাপ বলে কথা, আমার বিপদের কথা সহজেই বুঝে নিলেন, কিন্তু নাদিয়ার ঘাড়ত্যাড়া পরিবার খুব সহজে মেনে নেইনি, থানা-পুলিশ করার পর মেনেছে।
বিয়ে শেষ, বিয়ের প্রথম তিনদিন নাদিয়া আমাদের বাসায় থাকবে, তারপর আবার আমার শশুড় বাড়ি চলে যাবে ।
আমার ভাবতেই কেমন জানি খুশি খুশি লাগছে, আজ আমার পাশে আস্তা একটা জিন্দা মেয়ে ঘুমোবে। কিছুটা লজ্জাও লাগছে, কিন্তু লজ্জার মাইরে বাপ, বিয়ে করলে দু'দিন পরেই আমি হবো লজ্জাতুন্নেসার বাপ।
বউ আমার ঘোমটা পড়ে বিছানায় বসা, আমি তাড়াতাড়ি করে বিয়ের পোশাক খোলে বিছানায় চলে গেলাম।
নাদিয়ার কপালে চুমু একে একশনে নামবো এমন সময় ফোনের রিং বেজে উঠলো।
- হ্যালো, কে ?
- আরে, কে মানে ? আমি নাদিয়া, তুমি এখনও ঘুমে নাকি ?
- নাম্বার না দেখেই কল ধরেছি, ঘুমে ছিলাম।
- এখনো ঘুমে মানে ? তোর না আজকে চাকুরীর ইন্টারভিউ-তে যাবার কথা, চাকুরী কি শপ্নে এসে দিবে নাকি ? শালা যতোসব ফালতু ছেলের সাথে আমি প্রেম করেছি, কাল আমাকে বরপক্ষ দেখতে আসছে, এবার কিন্তু বিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া আমার দ্বারা সম্ভব না।
লেখকঃ jobrul islam habib
©somewhere in net ltd.