![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তুমি চাইলেই সব কিছু হয়, ভুলতে পারি শোক। দিতেই পারো আমার দিকে একটু মনোযোগ। আমার মতো তুমিও তবে বাসতে পারো ভালো জ্বালতে পারি দুই চোখেতে ভালোবাসার আলো। তুমি চাইলে হতে পারি এক নিমেষেই নদী সাহস করে সেই নদীতে নামতে পারো যদি।
শুনেন, আর যাই করেন প্রেম করে ফেঁসে যেয়েন না। আমার অবস্থা দেখেন না। কি ছিলাম আর কি হইছি।
ড্রেসের ডিজাইন করা তো কবেই ছেড়ে দিসি। সময় কোথায় বলেন! এখন আমার সব সময় যায় পাকের ঘরে ঘুটনি ঘুটতে ঘুটতে। হি হি হি.....
কষ্টতো একটু লাগেই। সেই স্টুডেন্ট লাইফ থেকে ড্রেসের ডিজাইন করা, এখানে ওখানে বিক্রি করা একটা নেশার মত ছিল। আমার হাতের কাজতো আর খারাপ ছিল না, তাই না? কত প্রশংসা পাইসি সবসময়। চাকরিটাও ছেড়ে দিলাম।
হায় হায় কি বলেন, না ছেড়ে উপায় আছে নাকি! ওই যে ওই ঘরে দেখলেন না, হিটলার! হিটলার! সসসসসস্ না রে বাপ, আস্তেই বলসি। তোর দাদী শুনবে না। হি হি হি......আমার ছেলে-মেয়েগুলাও এখন এমন চালাক হয়ে গেছে জানেন না। সারাক্ষণ প্যাঁচ খোঁজার ধান্ধায় থাকে। ঘরের মধ্যে প্যাঁচ দেখতে দেখতে অস্থির হয়ে গেছে তো! আমরা যখন কোথাও যাই একটু বেড়াতে আমার শ্বাশুড়িকে লুকিয়ে, ফেরার সময় গাড়িতে বসেই গবেষণা শুরু হয়ে যায় বাসায় ফিরে দাদীকে কি বলবে! উনি একদম সহ্য করতে পারেন না। কোথায় যাইতে দিবে না, কারো সাথে মিশতে দিবে না, কারো সাথে কথা বলা যাবে না, কি যে অবস্থা! চাকরি করা পছন্দ না, এরজন্য করপোরেট জব ছেড়ে দিয়ে স্কুলে ঢুকসি। তাও উনার সহ্য হয় নাই। আরে নাহ, উনি কিছু বলে নাই তো। সিচুয়েশন ক্রিয়েট করছে কেবল। আমার টুনটুনিতো তখন আরো ছোট, আমি বাসায় ফিরে দেখতাম ওকে খাইতে দেয় নাই, প্যাম্পারে পায়খানা নিয়ে মেয়ে আমার ঘুরে বেড়াচ্ছে। উনারতো কিছু করার কথা না, কাজের মেয়েই আছে। কিন্তু উনি করতেও দিবে না। সহ্য হয় বলেন! আমার সোনা-ময়নাটার কত কষ্ট হইসে! এরজন্য শেষে চাকরিই ছেড়ে দিছি। উনার কথা হইল সকাল চারটা বাজে ঘুম থেকে উঠে উনার জন্য রান্না করতে হবে। যখন যা চায় সব একবারে হাতের কাছে রেডি থাকতে হবে।
মেয়েদের আসলে নিজের কোন ঠিকানা নাই। না বাপের বাড়িতে আপন ভাবে, না শ্বশুরবাড়িতে। যতদিন বিয়ে হয় নাই, বাপ-মায়ের টেনসন ছিল কখন বিয়ে দিবে, কখন বিদায় করবে! আর বিয়ের পরেতো পড়ছি হিটলারের হাতে। একেবারে সোজা হয়ে গেছি। হি হি হি.....
হা হা হা...হা হা...ওহ স্যরি! একাই হাসতেছি। শুনেন উনার অভ্যাস হইল কাচামরিচের তরকারি খাওয়া। এক কেজি কাচামরিচ বেঁটে অর্ধেকটাই দিয়ে দিবে। কেমন কথা! আমি আজকে এমন মরিচ দিসি তরকারিতে, হি হি হি। বলতেছে কি রান্ধছো এইটা। আমার পেট জ্বলতেছে, পেট মোচড় দিয়ে দিয়ে পায়খানা হইতেছে। হি হি হি...আপনি আমাকে অনেক খারাপ ভাবতেছেন নিশ্চয়ই। শুনেন আমি কিন্তু আসলে এতটা খারাপ না। কাচামরিচের ওইরকম ঝাল তরকারি খাওয়া খুব খারাপ। উনার ক্ষতিতো হয়ই, বাচ্চাদেরও হচ্ছে। এমনিতো উনাকে মানানো যাইতো না। এখন এই শরীর খারাপ হইল, আর খাবে না।
না, আম্মু...লিপগ্লসটা রেখে দাও মা। আমার এই মেয়ে এমন ঢঙ্গী হইসে, জানেন না। আমার কোন কসমেটিকস শান্তি-মত রাখার উপায় নাই। মামণি কথা শুনো না কেন? আমার সোফায় যদি লিপগ্লস লাগে রে পাজী, নচ্ছার!
ডেকোরেসন পছন্দ হইছে? শোনেন আমার জামাই যখন এই এলাকায় আসতে চাইল, আমিতো প্রথমে রাজিই না। পরে বললাম, আমার মত করে সাজাতে দিয়ো কেবল। আর ক্রিয়েটিভিটি! সব এখন ওই রান্নার ঝোলে ঘুটাঘুটি, মাখামাখি হয়ে গেছে। হি হি হি...
হ্যাঁ, আমার সবই ভাল। শুধু ফিগারটার অবস্থা দেখেন না। আগেতো ভালই ছিলাম। হি হি, কোকাকোলার বোতল থেকে হয়ে গেছি ডেকচি। ওই যে মাঝখানে মাইল্ড এ্যাটাক হল। স্কুলের কাজের চাপ, আবার ঘরের অশান্তি-দুইটা মিলে সহ্য হয় নাই। আমিতো মাশাল্লাহ ভালই ছিলাম দেখতে-শুনতে, বিয়ে করছিলাম একটা বদখত ব্যাটারে। হা হা, নাহ ভালই ছিল তখন। এখনতো চোখে দেখে না। এই মোটা কাচের চশমা, আর চোখ এইরকম কুচকে তারপরে তাকায়। নইলে কিছুই চোখে পড়বে না। আরে না, সেই আশা কইরেন না। এমনেতো কিছু দেখে না, কিন্তু কোন মেয়ে সামনে আসলেই হল, টাঙঙঙঙঙঙঙঙঙঙঙঙ্ করে টম এন্ড জেরীর মত চোখ বের হয়ে আসবে। হা হা হা......
আমার শ্বাশুড়ী ওইদিন বলতেছে, আমার ছেলে কোনদিন কোন মেয়ের দিকে চোখ তুইলা তাকায় নাই। আমিতো কেবল ঠারে ঠারে দেখি পিছন থেকে, কিছু বলতেও পারি না। শালা, একলগে তিন-তিনটা প্রেম করছোস। আমি ক্যাঁক করে চেপে ধরসিলাম বলে...নইলেতো ঠিকই পিছলায়ে যাইতো। আবার ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দিতেছে আরেকজন।
শোনেন ওইদিন বসে বসে টিভি দেখতেছি, বড় ছেলে বলে কি মা, আব্বু চশমা পড়ে কবে থেকে? আমিতো স্বাভাবিকভাবেই বললাম, যেদিন থেকে তোর বাপের ক্যারেক্টার ঢিলা হয়ে গেছে। আমারতো আর খেয়াল নাই কি বলসি। বাপ আসার পরে ছেলে বলে, আব্বু মা যা বলল তা কি সত্যি? তুমি নাকি ক্যারেক্টার ঢিলা হওয়ার পর থেকে চশমা পরতেছো?
ছেলের বাপতো চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকায় আছে, বাচ্চাদের এইসব কি শেখাচ্ছো জায়রা? হা হা হা.......
এইতো, এইভাবেই কেটে যাচ্ছে আমার দিন-রাত্রি। অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখতাম, বুঝলেন? তার কিছুই হল না। এই শালার প্রেম করে ফেসে গেছি। আমার একমাত্র সান্ত্বনা আমার বাচ্চাগুলো। ওরাই আমার পৃথিবী। বাচ্চা খেদায়া আর রান্নাঘরে হাড়ি ঠেলে আমার দিন ভালই গুজরান হইতেছে।
আম্মুসোনা, টুনটুনি...কোলে আসো মা। বাপধন, আসেন বুকে.......
সবসময় হাসি-খুশি, প্রাণখোলা আমার জায়রা আপুটা তার রাজকন্যা-রাজপুত্রদের নিয়ে যত কষ্টই আসুক, ভাল থাকুক অনেক।
১৯ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:৪৫
জল ছাপ বলেছেন: প্লাসের জন্য ধন্যবাদ
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:০২
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: লেখা ভালো লাগলো। খুব সুন্দর।
২০ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৭
জল ছাপ বলেছেন: আপুটাও অনেক ভাল আমার।
ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ২:২০
হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা! ভালো লিখসেন। নিজের ক্ষোভ-দুঃখ গুলা খুব হালকা চালে লিখলেন যেন কিছুই না! জীবন সম্পর্কে এরকম দৃষ্টিভঙ্গী ভালো লাগে।
হ্যাপি ব্লগিং।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩০
জল ছাপ বলেছেন: কথাগুলা আসলে আমার একটা আপুর। প্রথমদিন যখন পরিচয় হল আপু ওইভাবেই বকবক করে যাচ্ছিল। এত সহজভাবে এত কঠিন সত্যগুলা বলছিল যে আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। আর মুগ্ধও। উনার কাছে শিখেছি অনেক কিছু। আবার আতঙ্কিত লাগে এটা ভেবেও যে না জানি কি আছে সামনে।
অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:২২
ভুল উচ্ছাস বলেছেন: ভালোই লিখেছেন। প্লাস।