![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা মূলত রেজাল্টনির্ভর—আরও স্পষ্ট করে বললে, ‘প্লাস’ নির্ভর। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার ভিত্তিতে একজন শিক্ষার্থীর যোগ্যতা, মেধা এবং ভবিষ্যৎ বিচার করা হয়। ফলে সমাজে এমন একটি মানসিকতা গড়ে উঠেছে যে, “প্লাস পেলেই জীবনের সাফল্য নিশ্চিত।” অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
একজন শিক্ষার্থী যখন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা শুরু করে, তখন তার মনে থাকে আকাশছোঁয়া স্বপ্ন। সে নিজের কল্পনার ভেতর একটি জগত তৈরি করে, যেখানে সে ভবিষ্যতে একজন বড় কিছু হয়ে উঠছে—ডাক্তার, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা কিংবা সমাজের প্রভাবশালী কেউ। কিন্তু এই স্বপ্নভবন ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে, যখন সে বাস্তবতার কঠোর মুখোমুখি হয় উচ্চশিক্ষায় পদার্পণের পর।
অনেকে হয়তো উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়, কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষতা ও প্রস্তুতির ঘাটতিতে তারা পিছিয়ে পড়ে। একটি সুসংহত ক্যারিয়ার গঠন করতে গিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এই পরিস্থিতির পেছনে দায়ী একাধিক কাঠামোগত ও মনস্তাত্ত্বিক কারণ—
১. প্লাসনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা: শেখার গুণগত মান নয়, মূল্যায়নের একমাত্র সূচক হয়ে দাঁড়িয়েছে রেজাল্ট।
২. সৃজনশীল প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল না হওয়া: সৃজনশীলতার চর্চা না করে, কেবল মুখস্থ করে উত্তর লেখা হয়।
৩. প্রকৃত শিক্ষা বাদ দিয়ে শুধু প্রথম হওয়ার প্রতিযোগিতা: এতে আত্মশিক্ষা ও বিশ্লেষণী দক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৪. শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ: শিক্ষা এখন অনেকাংশেই হয়ে উঠেছে লাভকেন্দ্রিক পণ্য।
৫. পাঠ্যবইয়ের খুঁটিনাটি অধ্যয়নে অনীহা: পরীক্ষায় না এলে গুরুত্ব নেই—এই মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
৬. অন্যান্য বই না পড়ার প্রবণতা: সাধারণ জ্ঞান, নৈতিকতা, চিন্তাশক্তি এসব বিষয়ে জড়তা তৈরি করে।
৭. পরীক্ষার পাশাপাশি প্রাকটিক্যাল শিক্ষার অভাব: বাস্তব জীবনে প্রয়োগযোগ্য জ্ঞান শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারে না।
৮. দক্ষ শিক্ষকের অভাব: যোগ্য শিক্ষকের অভাবে শিক্ষার্থীর সম্ভাবনা পূর্ণভাবে বিকশিত হয় না।
৯. পিতামাতার নিজের ইচ্ছা সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া: এতে শিক্ষার্থীর নিজস্ব স্বপ্ন ও ঝোঁক উপেক্ষিত হয়।
১০. জ্ঞান অর্জনের পর তা ব্যবহার করতে না পারা: কেবল তথ্য মুখস্থ করলেও যদি প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে তা কোনো কাজে আসে না।
এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রয়োজন যুগোপযোগী পরিবর্তন। শিক্ষা হতে হবে জ্ঞান ও দক্ষতা নির্ভর, সৃজনশীলতামূলক ও মূল্যবোধভিত্তিক। শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে কেবল কী পড়বে তা নয়—কেন পড়বে, কীভাবে বাস্তবে প্রয়োগ করবে, এবং কীভাবে নিজের স্বপ্নকে সঠিক পথে বাস্তবায়ন করবে।
শুধু ‘প্লাস’ নয়—প্রয়োজন চিন্তা, চরিত্র ও চর্চা—এই তিনের সমন্বয়ে গড়ে উঠুক একটি মানবিক, দক্ষ এবং সৃজনশীল প্রজন্ম।
২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১০:১৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের চায়নার মতো ফলো করতে হবে। জেনারেল এডুকেশন বাদ দিতে হবে ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: শিক্ষার্থিরা প্রশ্ন করতে শিখে না।তাদের এমন শিক্ষা দেওয়া হয় না যাতে তাদের মনে প্রশ্নের জন্ম হয়।তারা ঘটনার বিশ্লেষণ করতে পারে না।উদ্ভাবনি ক্ষমতার জন্ম নেয় না।তারা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেয়।