নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোনঠাসা মানুষের সারাদিন

joos

অনুভূতির চূড়ান্ত সীমায় না পৌঁছালে কিছু লিখতে পারিনা

joos › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসংখ্য ছোট ছোট গল্পের বিষ্ময়ের জন্ম দিয়েই আমরা আঁকছি আমাদের মহাবিস্ময়- শাবিপ্রবি'তে দেশের সবচেয়ে বড় আলপনা।

০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

দুইদিন আগেও যে মেয়েটাকে টং এ দেখলে ছেলেটা টিটকারি করত, উড়ো-কমেন্টে পেইন দিত, সেই মেয়েটার জন্য আজকে ছেলেটা খালিপায়ে আধা কিলো হেঁটে খাওয়ার পানি এনে দিচ্ছে, সারা হাত-জামা রঙ মাখিয়ে রঙের তুলি ধুয়ে দিচ্ছে, তুলি ধুতে গিয়ে পা পিছলে খালে পড়ে হাঁটু পর্যন্ত কাদা ভরাচ্ছে, মেয়েটা রঙ করার আগে রাস্তা ব্রাশ করে ধুলো সরাতে গিয়ে আঙ্গুলের চামড়া তুলে ফেলছে। এভাবেই ছোট-ছোট অসংখ্য গল্প জুড়ে দিয়ে আমরা তৈরি করছি মহাকাব্য- আমাদের ক্যাম্পাসে বিশ্বের দীর্ঘতম রোডপেইন্টিং এর কাজ। এই ঘটনাটাগুলোকে নাটক-সিনেমা-উপন্যাসে তুলে ধরা ক্যাম্পাস লাইফের মিষ্টি প্রেমের গল্প ভাবলে ভুল করবেন। হ্যাঁ, ছেলেটা আর মেয়েটার মধ্যে প্রেম অবশ্যই কাজ করছে, সেটা দেশপ্রেম। তাদের মধ্যে চাওয়া-পাওয়ারও কোন সম্পর্ক নেই। তারা একটা জিনিসই চায়- রবিবারের মধ্যেই আল্পনার কাজ শেষ করে বিশ্ববাসীকে জানানো আমরা আমাদের দেশের ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কতটা একাত্ম।



আমাদের ভার্সিটির পাশেই পিডিবি'র পাওয়ারপ্ল্যান্টে কিছু কোরিয়ান প্রকৌশলী আর শ্রমিক কাজ করে। প্রায় সন্ধ্যায়ই হাঁটতে এসে তারা আমাদের পাগলামী দেখে বিশাল মজা পায়, আমাদের প্রতিবাদের ভাষা দেখে অবাক হয়। যখন দেখে আমরা ডিপার্টমেন্টাল র‍্যাগ ডে'তে ফানুস উড়াচ্ছি, তারাও আমাদের সাথে ফানুস উড়ায়। যেদিন সাঈদীর ফাঁসীর রায়ের পর আমরা মুক্তমঞ্চে সমাবেশ করেছিলাম, বন্ধু প্রতীকের পুঁথিপাঠের সময় তারা আমাদের সাথে গলা মিলিয়ে কোরাস গেয়েছে "তুই রাজাকার, তুই রাজাকার" বলে। প্রতিটা গানের শেষে চিৎকার করেছে জয় বাংলা স্লোগানে।তবে কালকেই এই কোরিয়ানরা মনেহয় সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছে যখন দেখেছে দুপুরে কাজ শুরু করে সন্ধ্যার মধ্যেই আমরা এক কিলোর এক পাশ চক দিয়ে দাগিয়ে তার অর্ধেক আবার রং-ও করে ফেলেছি। দুই-একজন এসে আমাদের সাথে আল্পনাতে তুলির আঁচড়ও বুলিয়ে গেছে। এদের মত বাইরের কেউ যখন জানবে আমাদের এখানে ২কিলোমিটার লম্বা আল্পনা এঁকেছি আমরা, কিন্তু দেখতে এসে অবাক হয়ে যাবে যখন বুঝবে রাস্তার দু'পাশ মিলিয়ে এ আলপনা আসলে প্রায় তিন কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ, তখন তার মুখের অভিব্যাক্তিটা কি হবে ভেবেই আনন্দ পাচ্ছি।



আশা করি এভাবেই অনেক নাটিকার জন্ম দিয়ে রোববার দুপুরের মধ্যেই শেষ হবে আমাদের মহাযজ্ঞ, সন্ধ্যায় মশাল জ্বালিয়ে হবে আনন্দ-উৎসব। সব অতীত, তিক্ততা, দ্বিধা আমার দেখা ছেলেটা আর মেয়েটার মতই ভুলে গিয়ে একসাথে কাজ করে আমরা জন্ম দিবো সুন্দরের, পিছনে পড়ে থাকবে সব অন্ধকার অধ্যায়। এই পেইন্টিং এর কাজটা সেই আশাই দেখাচ্ছে আমাদেরকে।



আমাদের আল্পনার ফেসবুক ইভেন্ট লিংক

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

অজানাবন্ধু বলেছেন: সাথে আছি বন্ধু
জয় আমাদের হবেই ইনশাল্লাহ
জয় বাংলা।

০৯ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৮

joos বলেছেন: জয় আমাদের হবেই ইনশাল্লাহ
জয় বাংলা।

২| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

জনৈক গণ্ডমূর্খ বলেছেন: সত্যিই একজন সাস্টিয়ান হিসেবে গর্ব হয়!!!!

২১ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৮

joos বলেছেন: সাস্টিয়ান হতে পেরে গর্বিত!

৩| ০৯ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪২

ঝড়ের শিশু বলেছেন: পরীক্ষার লাইগা মিস করতাসি.. :(

২১ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

joos বলেছেন: বড় মিস কইরা ফেলছেন।।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:৪৫

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: সুন্দর লিখা, সুন্দর উদ্যগ। সফলতা কামনা করছি

২১ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

joos বলেছেন: ধন্যবাদ এবং ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.