নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয়দেব করের লেখাজোকা

জয়দেব কর

অন্ধ আমি অন্ধকারে আলো কুড়াই,গন্ধরাজের গন্ধে মাতাল জীবন পোড়াই!

জয়দেব কর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিশোর বিদ্রোহ এবং প্রাসঙ্গিক ভাবনা//জয়দেব কর

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০৩


১।
"মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" শব্দযুগল বর্তমান শাসকদলকর্তৃক বহুলব্যবহৃত। নিজেদের তারা এই চেতনাধারী বলে প্রচার করেন। আবার তারা অনেককে এই চেতনার শত্রু বলে চিহ্নিত করে থাকেন। আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করা মানে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা, এমনটাই তাদের ভাব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী? এমন প্রশ্ন করলে কী উত্তর পাব জানা নেই। তবে আমরা যারা বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ তারা বিনাবাক্যে বলতে পারি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্য দিয়ে নাগরিকজীবনের উন্নতিবিধান। কিন্তু আজকের সময়ে এসে আমাদেরকে নাগরিক অধিকার থেকে শুধু বঞ্চিত হতে হচ্ছে না, বেঁচে থাকার অধিকারটুকুর জন্য তথাকথিত সরকারব্যবস্থার করুণাপ্রার্থীও হতে হচ্ছে। সাম্য বা সমতা রাষ্ট্রযন্ত্রের নিকট একটি হাস্যকর শব্দ যা বেড়িয়ে পড়েছে নৌমন্ত্রী শাহজান খান হয়ে।

চলমান আন্দোলন স্রেফ পরিবহনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়, গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি অনাস্থাও বটে। ২০১৮ সালের এ কিশোর বিদ্রোহ আমাদের রাজাকে উলঙ্গ বলার সাহস দেখিয়ে থেমে থাকেনি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক পোশাক পরিধানের দিকনির্দেশনাও দিচ্ছে। রাষ্ট্রনীতি এক ফিটনেসবিহীন গাড়ি, আর তাদের পরিচালকেরা রাজনৈতিক লাইসেন্সবিহীন।, এরা পিতা-স্বামীর কোটায় জামাত-হেফাজত-এরশাদসহ সকল লুটেরা (মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ) গরুদের রাখাল ছাড়া কিছু নয়।

বৃদ্ধদের অচল সমাজভাবনা ও রাষ্ট্রভাবনার গালে সজোড়ে চাপ্পড় দিয়ে এইসব অহিংসক কিশোরেরা প্রাণে শক্তিসঞ্চার ঘটালো ফের সেই সব জনতার বুকে, যারা ভাবত বাংলাদেশ বেঁচে নেই। বাংলাদেশ বেঁচে আছে বেঁচে থাকবে। কাল মিছিলে দেখা হবে। বুকে জড়িয়ে নেব একখণ্ড পবিত্র মাটি আমার সন্তানের রক্তে স্নাত_ মুষ্টিবদ্ধ হাত আর কেবল টেবিলবিপ্লবের ভ্রান্ত প্রতীক নয়_ এবার সত্যিই উঠবে স্বরে, সমস্বরে_ হৃদয়ে, হৃদয়ে _

"যদি তুমি ভয় পাও
তবে তুমি শেষ
যদি তুমি রুখে দাঁড়াও
তবে তুমি বাংলাদেশ।"

২।
সরকার মোটেই কি বুঝতে পারছে না, মানুষের ক্ষোভের জায়গা একদিনে তৈরি হয়নি! এখনও হাসিমন্ত্রী বহাল তবিয়তে আছে কী করে? এদের এত শক্তি! ক্ষোভ থেকে ব্যক্তিমানুষ ভুল করলে করতে পারে, জনগণ নয়। পৃথিবীর সকল আন্দোলনের ইতিহাস তা-ই বলে। তথাকথিত আইন মেনে নতুন কিছু আসে না। বরং আন্দোলনই নতুন নতুন আইনের জন্ম দেয়। এটা আমাদের জন্য বেশ সুখবর, আমাদের নতুন প্রজন্ম পুরাতন সকল জঞ্জালের প্রতি তাদের অনাস্থার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে। ঔপনিবেশিক আইনগুলো ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক ঔপনিবেশিক দালাল মানসিকতার দানবিক নেতৃত্বপরায়ণতা। নেতাগুলো আমিত্ব-মুক্ত ও সাম্যবাদী হোক। নেমে আসুক জনতার কাতারে। আমলা-পুলিশসহ সকল রাষ্ট্র-অঙ্গও সেবক হয়ে উঠুক।

রাষ্ট্রব্যবস্থার দুইগালে সজোড়ে কষে চড় দিয়েছে কিশোররা। না হলে উলটোপথে চলা গাড়িতে যে গণ অভ্যুত্থানের নায়ক বসা থাকতে পারেন তা কি আমরা জানতাম? জানতাম কি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ির লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স নেই অজস্র মন্ত্রী, আমলা, বিচারপতি, বিজিবি, সেনাবাহিনীর গাড়িতে! আমরা কি জানতাম, যে সার্জেন্ট গাড়ির লাইসেন্স চেক করে তার নিজেরই লাইসেন্স থাকে না! বাচ্চারা রাস্তা ও রাষ্ট্রের প্রকৃত অবস্থা কী তা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এই কিশোর বিদ্রোহের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অজুহাতে কথা বলা আমাদের নিজেদের রাজনৈতিক নৈতিকতার দুর্বলতা। বরঞ্চ এই আন্দোলন যে নাগরিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন তা বোধের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য। আমাদের দাবি তোলো উচিত চালকদের ডোপ টেস্ট করা, গাড়ির ফিটনেস টেস্ট, চালক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে লাইসেন্স প্রদান ও মন্ত্রীদের সপ্তাহে তিনদিন গণপরিবহনে চড়ে অফিস করার বিধি রেখে একটি সড়ক-পরিবহন নিরাপত্তা নীতিমালা আইন পাস হোক।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৪৫

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের মূল্য দেশ গঠনে অবদান রেখে পরিশোধ করাই হলো চেতনা; কয়েক লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের মর্মবাণী অনুধাবন করাই হলো চেতনা; মুক্তিযুদ্ধে নিহত মানুষদের নির্ভুল তালিকা করাই হচ্ছে চেতনা; মুক্তিযুদ্ধে সকল মুক্তিযোদ্ধার অবদান স্বীকার করা হলো চেতনা; বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকার করাই হলো চেতনা; মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে যারা দেশ গঠনে ও জনমত তৈরীতে অবদান রেখেছেন তাদের কথা স্বরণ রাখাই হলো চেতনা। দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। পাশাপাশি, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে বের করে তাদের বিচারের আওতায় আানাও চেতনা; যারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের টাকার বিনিময়ে তালিকাভূক্ত করতে সহযোগিতা করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়াই হচ্ছে চেতনা। আর চেতনার নামে যারা দেশকে বিভক্ত করছে, নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে তাদের পরিত্যাগ করাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

এছাড়া যারা দেশপ্রেমের নামে, চেতনার নামে ক্ষমতায় থেকে দেশ বিক্রি করে, ব্যাংকের টাকা মারে, শেয়ারবাজার হরিলুট করে, বিদেশে রেমিটেন্স পাচার করে, অবৈধভাবে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ে, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিদেশে সেকেন্ড হোম/বেগম পাড়ার বাসিন্দা হয় এরাই হচ্ছে আসল স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী, মুখোশধারী নব্য রাজাকার ও দেশদ্রোহী।

চেতনার বিপরীত শব্দ হলো- অচৈতন্য বা অজ্ঞতা। আরেকটু খোলাসা করে বল্লে মূর্খতা। এজন্য যত্র-তত্র প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে চেতনা শব্দটির ব্যবহার দেশ ও জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। বিশেষ করে কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে অথবা কোন বিশেষ দল বা শ্রেণীর মানুষকে উপযুক্ত কারণ ছাড়া জাতীয় চেতনা বিরোধী বলে আখ্যায়িত করলে জাতির মধ্যে বিভক্তি ও ঘৃণা আগ্নেয়গিরির লাভার মতো ছড়িয়ে পড়ে। মানুষকে আক্রমন করে, অপমান করে চেতনার বাণী প্রচার করা যায় না। এজন্য আগে যিনি চেতনার কথা বলবেন তাকে জাতীয় চেতনার ধারক ও বাহক হতে হবে। আর তা প্রচার করতে হবে সুন্দর করে নিজের কর্ম ও চিন্তা-চেতনা দিয়ে। কাউকে চেতনার নামে অপমান করাকে বলে মূর্খতা, আর নিজে প্রথমে চেতনা ধারণ করে তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হলো চৈতন্য।

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫০

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: ভালো বলেছেন।

রাজনীতির ব্যপারে কথা শুনলে আমি সবসময় একটা কথাই বলিঃ "আমি রাজনীতি বুঝি কিন্তু পলিটিক্স বুঝিনা।"

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৫৩

রাকু হাসান বলেছেন: আমার মনে হয় বিদ্রোহ বলার সময় এখনো আসে নি । আসলে আরেক টু সময় নিবে ।

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:৩৪

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: হুম। কোটা আন্দোলন এই আন্দোলনে বেশ প্রভাব ফেলেছে। ক্ষমতাসীন ও রাজনীতিবিদদের এটা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

অস্ত্র,প্রভাব, শক্তি খাটিয়ে আন্দোলন পণ্ড করা গেলেও আন্দোলন কারীদের অন্তরের আগুন নেভানো যায় না। আগুন নেভাতে হয় দাবী মেনে, সমঝোতারর মাধ্যমে।

ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: যে রাষ্ট্র শিশুর বাসযোগ্য নয়, সে রাষ্ট্রে গজব নামুক। যে সরকারের হাতে শিশুরা অনিরাপদ সে সরকারের উপর গজব পড়ুক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.