নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাভাবিক মানবজনম.......

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২০

স্বাভাবিক মানবজনম.......

ঘুম মানেই অন্তত কিছু সময়ের জন্য দুনিয়ার যাবতীয় সুখ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি(যদি 'সাউন্ড স্লিপ' হয়)। সেক্ষেত্রে ঘুম সাময়িক মৃত্যুও বলা যায়। আমরা যখন ঘুমের নামে মরে যাই; তখন বুঝতে পারি মৃত্যু কত শান্তির, মৃত্যু কত আরামদায়ক। চোখ বন্ধ হলেই নিষ্কৃতি পাওয়া যায় যাবতীয় দায়িত্ববোধ-আঘাত-ক্ষত-অভিমান থেকে। শুধু দু'টো খোলা চোখ থেকে দু'টো বন্ধ চোখের মাঝখানের সময়টুকু যা ছটফটানির, অস্বস্তির। তারপর একবার ঘুমিয়ে পড়লেই সব কিছু কত শান্তির। তবু আমরা রোজ সকালে মৃত্যুর কোল থেকে মাথা তুলে উঠে প্রাত্যহিকতা সেরে দৌড়াই যে যার জীবন যুদ্ধে।

একদম ছোট ছোট বাচ্চাগুলো কাঁধে প্রায় তাদের দেহের ওজনের সমান বিদ্যার বস্তা নিয়ে স্কুলে দৌড়ায়। স্কুল বাস থেকে নেমে একঝাঁক টিয়া পাখি ডানা কাটিয়ে বসে থাকা একটা খাঁচার মতো ঘরে। কাঠের সারি সারি বেঞ্চ ছাপিয়ে আওয়াজ ভেসে যায়- অ তে অজগর, আ তে আম... A for Apple, B for Ball...

আর একটু বড়ো বাচ্চা যাদেরকে আমরা তরুণ কিশোর কিশোরী বলি, যারা হাইস্কুলে পড়ে। হাইস্কুলে অব্দি উঠতে উঠতে ওদের চোখে -৪ পাওয়ারের ভারী চশমা উঠে যায়। ওদের মাথায় গিজগিজ করে নানান ধরনের ফর্মুলা। হোমওয়ার্ক, স্কুল, প্রত্যেকটা সাবজেক্টের আলাদা আলাদা টিউশন ক্লাস সব মিলিয়ে ওদের ঠিক মতো নিশ্বাস নেওয়ার সময়টুকুও নেই। একটা রেসের ঘোড়া হয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে হয়। ওদের জিততেই হবে।

ওদের থেকে বড় যারা তারা কলেজে যায়। বিরাট সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী ক্লাসরুমের বাইরে জোড়ায় জোড়ায় দেহতত্ত্ব চর্চা করে যেখানে সেখানে। পকেট ভারী থাকলে ঠিকানা হয় লিটনের ফ্ল্যাট! অবৈধ সম্ভোগে এক সময় ক্লান্তি ভর করে। একঘেয়েমি কাটাতে বহুগামিতায় জড়িয়ে পরে। তারপর কারোর ঠোঁটে সিগারেট ওঠে, কারোর হাতে ইয়াবা ফেন্সিডিল। কারোর চোখ থেকে নেমে আসে জলপ্রপাত। অথচ এটা ওদের দুঃখ পাওয়ার বয়সই নয়। সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে প্রেমিকা প্রেমিকের মজবুত কাঁধে ভরসা খুঁজে নিতে হয়..
৪/৫ জনের এক পরিবারের উপার্জনকারি একজন। রিকশা, পাঠাও, উবার, ট্রেন-বাস-ট্যাক্সি ভরে ভরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আসে অফিস চত্বরে। শুট বুট পরে সেই যন্ত্রমানবেরা ১০ ঘন্টা বসে থাকে এসি কেবিনে। Break even পয়েন্ট থেকে Marginal Utility Curve এর দূরত্ব নির্ধারণ করে। মাসের শেষে কিছু কাগজের টুকরো সেই যন্ত্রমানবদের মুখে একফোঁটা হাসি এনে দেয়। কেউ কেউ আবার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে হোটেল, ফ্ল্যাট, গাড়ি, এসি থেকে শুরু করে দুধ, মধু, মিষ্টি লুংগী গামছা ইত্যাদি। ওরা সেলসম্যান, ওরা অনলাইন বিক্রেতা। মাসের শেষে ওরা টার্গেট fulfill না করতে পারলে বসের জিভের ডগায় ওদের মায়েরা শুয়ে থাকে। কেউ রিকশা টানে, কেউ লুঙ্গি গামছা পরে মাথায় বস্তা তোলে, কেউ লোকের ঘরে ঘরে এঁটো বাসন ধোয়, কাপড় কাচে, কেউ ভিড় বাস ট্রেনে পকেট মারে, নির্জন রাস্তায় ছিনতাই করে। অথচ এইসব করার কথা ছিলোনা কারোর।

আর যারা বয়স্ক তারা ঘরের সব চাইতে মলিন রুমটায়সময় কাটিয়ে দেন ইবাদতে, প্যাথলজি সেন্টারে, কিংবা কোনো হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। কেউ কেউ বৃদ্ধাশ্রমের দেওয়ালে লিখে রাখেন তার সন্তানদের জন্ম তারিখ, কেউ ট্রেনে ট্রেনে কাঁপা কাঁপা হাতে লজেন্স বিক্রি করেন। কেউ বাটি হাতে রাস্তায় বসে রাশি রাশি চলন্ত পা ধরে বলেন 'একটু সাহায্য করেন...'! অথচ এই বয়সে তাদের সুখ-শান্তি-আরামে কাটানোর কথা ছিলো। সন্তান সন্ততিদের ভরা সংসারের দিকে চেয়ে এক গাল ফোকলা হাসি হাসার কথা ছিলো। বারান্দায় দু'ই বুড়োবুড়ির পাশাপাশি বসে, পায়ের উপর পা তুলে, গরম ধোঁয়া ওঠা চা খেতে খেতে স্মৃতি রোমন্থন করার কথা ছিলো।
মানুষের গোটা বিশ্বকে আবিষ্কার করার কথা ছিলো, রোজ মুগ্ধ হওয়ার কথা ছিল, অবাক হওয়ার কথা ছিল। গাছ-ফুলদের সাথে কথা বলার কথা ছিল মানুষের, পাখিদের সাথে গান করার কথা ছিলো, রামধনুর রঙে মিশে যাওয়ার কথা ছিলো, ফুলের গন্ধে মাতাল হওয়ার কথা ছিলো।

অথচ এমন জীবনতো আমাদের প্রাপ্য নয়। মানবজন্ম কখনোই দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা-দায়বদ্ধতার অন্য নাম হয়ে ওঠার কথা ছিলোনা। এজন্যই মৃত্যু আজ এত জনপ্রিয়। তাই জীবন আজ এত দুঃখের, এত কষ্টের। তাই মনে হয় মৃত্যুই শান্তির!

(তিন বছর আগের লেখাটা এখনও অপ্রাসংগীক নয়- তাই আবার শেয়ার করলাম)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৯

নতুন বলেছেন: অথচ এমন জীবনতো আমাদের প্রাপ্য নয়। মানবজন্ম কখনোই দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রনা-দায়বদ্ধতার অন্য নাম হয়ে ওঠার কথা ছিলোনা। এজন্যই মৃত্যু আজ এত জনপ্রিয়। তাই জীবন আজ এত দুঃখের, এত কষ্টের। তাই মনে হয় মৃত্যুই শান্তির!


আমাদের জীবন কেমন হবে সেটার কোন স্ট্রান্ডড বলে দেওয়া হয় নাই। আমাদেরই ঠিক করতে হবে আমার জীবন কিভাবে সুখের হবে।

যখন আমরা নিজের জীবন চলার জন্য একটা জীবন দর্শন তৌরি করতে পারি তখন অন্য কিছুই দুঃখ,কষ্ট দিতে পারেনা।

তাই মানুষের উচিত বেশি করে বই পড়া তখন বইয়ের জ্ঞান এবং বাস্তব জীবনের অভিঙ্গতা মিলে মানুষ তার আপন জীবন দর্শন তৈরি করতে পারে, তখন তার মানব জীবন শুরু হয়। তার আগ পযন্ত সেটা হোমো সেপিয়েন্স জীবের জীবন জাপন করে মাত্র।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১১

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনি বলেছেন- আমাদেরই ঠিক করতে হবে আমার জীবন কিভাবে সুখের হবে।
আসলেই কি আমরা চাইলেই আমাদের মতো জীবন গড়তে পারি? যদি সেটাই সম্ভব হতো তাহলে- আমাদের জীবনে এতো দুঃখ কষ্ট হতাশা থাকতোনা।

অন্যদিকে, হোমো ইরেকটাস এবং হোমো স্যাপিয়েনের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মিল এবং পার্থক্য হ'ল হোমো ইরেক্টাস এবং হোমো সেপিয়েন্স দুটি প্রজাতির মানব বংশের একটি খাঁটি লম্বা এবং একটি উন্নত পোস্টক্র্যানিয়াল কঙ্কালযুক্ত।

আপনার বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৪

সোবুজ বলেছেন: প্রতিটা মানুষকে পেনশনের আওতায় অনতে হবে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর।এটা এমন কোন অসম্ভব কাজ না।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৬

জুল ভার্ন বলেছেন: বছরে যে দুর্ণীতি হয় তার এক চতুরাংশ টাকা দিয়েই দেশের সকল বয়স্ক আর দুস্তদের ভরণ পোষণ সম্ভব।

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৬

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: খুব সুন্দর লেখেছেন দাদা আসলে বিধাতা মানুষকে সবই অনুভব করার জন্য দিয়েছেন কিন্তু আমরা অনুভব করি না
ভাল থাকবেন--------

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৭

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ লিটন।

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের জীবন টা আসলে একটা চক্রের মধ্যে আটকে গেছে। এই চক্র থেকে মানুষের বের হয়ে আসা দরকার।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৭

জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের জীবন উন্নয়নের খাচায় বন্দী!

৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫১

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি বলেছেন- আমাদেরই ঠিক করতে হবে আমার জীবন কিভাবে সুখের হবে।
আসলেই কি আমরা চাইলেই আমাদের মতো জীবন গড়তে পারি? যদি সেটাই সম্ভব হতো তাহলে- আমাদের জীবনে এতো দুঃখ কষ্ট হতাশা থাকতোনা।


Happiness is a choice.

আমার সম্পত্তির পরিমান কম বা বেশি হতে পারে কিন্তু আমার যেই টুকু আছে তাতেই যদি আমি সুখী হই তবে আমি সুখী।
বেশির ভাগ মানুষই জানেনা যে Happiness is a choice তারা মনে করে সুখ বাইরে খুজে বেড়ায় কিন্তু এটা নিজের মনের মাঝে পেতে হয়।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৮

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৪

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: সাউন্ড স্লিপ কর্মক্ষমতা বাড়ায় ....আপনি কিনা বলছেন মৃত্যুর প্রাক্টিকাল !
জীবনে কষ্ট অশান্তি যাই হোক ...বাচতে চাই ।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২৮

জুল ভার্ন বলেছেন: আমি মরার মতো বেঁচে থাকতে চাইনা।

৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:০৭

জটিল ভাই বলেছেন:
বাঁচতে বাঁচতে মরে যাওয়া হোক জীবনের লক্ষ্য :(

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:২১

জুল ভার্ন বলেছেন: এভাবে বেঁচে থাকার কোনো প্রাপ্তি নাই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.