নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
"এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে".........
যে কোনো বিজ্ঞপ্তির সূচনাবাক্য হিসেবে উপরের লাইনটি যে এযাবৎ লক্ষকোটিবার ব্যবহৃত হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সভা আহ্বান, জনগুরুত্বসম্পন্ন বার্তা কিংবা প্রশাসনিক ঘোষণা প্রচারের প্রয়োজন হলেই অনিবার্য এই সূচনাবাক্যটি ব্যবহার করি। এই বাক্যের অন্য কোনো বিকল্প হতে পারে কি না, এ নিয়ে কেউ কোনোদিন ভেবেছেন কিনা জানিনা। সুতরাং এ এক অনিবার্য মুখস্থ বয়ান হয়ে দাঁড়িয়েছে : "এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে"।
এভাবেই চলছে "অনাদি কাল হতে"! কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি, বাক্যের এই সূচনাংশটি দু-দুটি ভুলে আক্রান্ত। আবহমান অভ্যস্ততার স্রোতে ভেসে আমরা অবলীলায় ভুল দুটো করে চলেছি। প্রথমে "এতদ্বারা" নিয়েই কথা বলা যাক। এটি একটি ভুল শব্দ এবং ভুলটি সন্ধিসংক্রান্ত। "এতৎ" ও "দ্বারা" এ দুটি শব্দ মিলে আলোচ্য শব্দটি গঠিত হয়েছে। সন্ধিনিষ্পন্ন নির্ভুল শব্দটি হবে "এতদ্দ +দ্বারা"। "এতৎ"-এর "ৎ" (খণ্ড ত) "দ্বারা"র "দ"-র সঙ্গে মিলিত হলে "ৎ" "দ"-এ পরিণত হয়। "দ্বারা"র "দ" আর "ৎ" থেকে জাত "দ" মিলিয়ে হয় "দ্দ", আর "ব"-ফলা তো আছে আগে থেকেই। সুতরাং শব্দটি হবে "এতদ্দ+ দ্বারা"। কিন্তু অভিধানগ্রন্থ ব্যতীত "এতদ্দ+দ্বারা"র শুদ্ধ বানানের দেখা পাওয়া প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার বললেও অত্যুক্তি হবে না।
সন্ধির নিয়মটি ভাল করে খেয়াল না করার ফলেই এই ভুলটি বিরামহীনভাবে ঘটে চলেছে। সমজাতীয় আরও দুটি সন্ধির উদাহরণ দিচ্ছি। এতৎ+উদ্দেশ্যে=এতদুদ্দেশ্যে, এতৎ+দেশীয়= এতদ্দেশীয়। যদি "এতদ্বারা" শুদ্ধ হয়, তাহলে "এতউদ্দেশ্যে" ও "এতদেশীয়"কে শুদ্ধ বলে গণ্য করতে হবে এবং এই বানানেই শব্দ দুটি লিখতে হবে। সুতরাং সন্ধির সূত্র মান্য করে আমাদের লিখতে হবে "এতদ্দ+দ্বারা", "এতদুদ্দেশ্যে" এবং "এতদ্দেশীয়"।
এবার দ্বিতীয় ভুল প্রসঙ্গেঃ আমরা লিখছি, "সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে,"। এরকম বাক্যাংশ যে রীতিমতো হাস্যকর ব্যাপার, আপাত বিচারে তা আমাদের কাছে ধরা পড়ে না। "অবগতি" শব্দের মানে কী? যে কোনো অভিধানই বলবে, এর মানে হচ্ছে, "জানা"। তাহলে "সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে"-একথার মানে দাঁড়াচ্ছে "সকলের জানার জন্য জানানো যাচ্ছে"। এর অনুসরণে এমনও কি বলা হবে, "শোনার জন্য শোনানো হচ্ছে" কিংবা "দেখার জন্য দেখানো হচ্ছে"!
এখন ভেবে দেখুন, একটি বিজ্ঞপ্তি রচনা করতে গিয়ে তার সূচনাবাক্যে কী সব আজগুবি কাণ্ড আমরা ঘটাচ্ছি! আসলে ভাষাব্যবহারে বাহুল্যের প্রতি একটা দুর্মর ঝোঁক আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। তাই তো "সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে" এরকম ভুল বাক্যাংশের চিরাভ্যস্ত প্রয়োগের মধ্যে আমরা ডুবে আছি। আমরা নির্দ্বিধায় এরকম বাক্য লিখতে পারি : "সকলের অবগতির জন্য খবরটা প্রকাশ করা হল।" এরকম বাক্য রচনাতেও কোনো দোষ নেই: "আপনার অবগতির জন্য পেশ করা হল" কিংবা "আপনার অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হল।" কিন্তু "সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে" বা "জানানো হল" একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞপ্তির শুদ্ধ সূচনাবাক্যটি হবে এরকম: "এতদদ্বারা সকলকে জানানো যাচ্ছে যে"।
কতরকমের ভুল যে আমরা করি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। অনেকে লেখেন: "আপনার জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে,’। "অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে"-এই বাক্যাংশেরই সহোদর ভাই এটি। এরা একই দোষে দুষ্ট। কেবল শব্দগত তফাত এই যা। কিন্তু "অবগতির জন্য" তো স্বতন্ত্র শব্দ হিসেবে শুদ্ধ, "জ্ঞাতার্থে"র সেই শুদ্ধতাটুকুও নেই। "জ্ঞাত" মানে "অবগত" আর "অর্থে" মানে "জন্য"। সুতরাং "জ্ঞাতার্থে" শব্দের মানে দাঁড়াচ্ছে "অবগত জন্য"। নিঃসন্দেহে এটি ভুল শব্দ। "অবগতির জন্য জানানো" আর "জ্ঞাতার্থে জানানো" এ দুটিই পরিত্যাজ্য। যদি জানাতেই হয়, তাহলে সোজা লিখতে হবে, "আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে" কিংবা "আপনাকে অবগত করা হচ্ছে যে"।
আমরা যখন দরখাস্ত বা আবেদনপত্র লিখি, তখনও তাতে অনর্থক বাহুল্য ঘটাই। এর ফলে আড়ষ্ট বাক্য রচিত হয়। অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে "মহোদয়" বা "জনাব" বলে সম্বোধন করার পরই লেখা হয়, "আপনাকে অবগত করা যাচ্ছে যে, গত ১৫ মার্চ ২০২২ থেকে ১৮ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত শারীরিক অসুস্থতাহেতু আমি অফিসে উপস্থিত হতে পারি নি।" এই বাক্যের "আপনাকে অবগত করা যাচ্ছে" অংশটুকুর কোনো প্রয়োজন নেই। "মহোদয়" সম্বোধন করে সরাসরি বক্তব্য বিষয়ে প্রবেশ করাই ভাল। তাতে বাক্য অনর্থক জটিলতার কবলে পড়ে না, ভাষাভঙ্গিও সপ্রতিভ হয়।
যে কোনো ভাষায় শব্দ ও বাক্য ব্যবহারে নির্ভুল হতে হলে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। তাহলে অনেক বিভ্রান্তি সহজেই এড়ানো চলে।
অঃ টঃ-আমার বাংলা বানানে প্রচুর ভুল হয় যা আমি স্বীকার করি। তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল না, টাইপো হয়। কিন্তু শব্দ এবং বাক্য গঠনে কিম্বা ব্যকরণগত ভুলটা আমি কিছুটা হলেও বুঝতে পারি।
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলেই এগুলো এখন রীতি হয়ে গিয়েছে।
২| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:৪০
ফয়সাল রকি বলেছেন: এই মর্মে আপনার জ্ঞাতার্থে অবগতির জন্য এতদ্বারা জানানো যাচ্ছ যে, এই জাতীয় ভুলগুলো সর্বস্তরেই হয়ে আসছে! আর ওদিকে বাংলা একাডেমি ঈদকে ইদ বানানোর কাজে ব্যস্ত!
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: এগুলো এখন আমাদের জাতীয় ভুল হিসেবে মেনে নিয়েছি।
৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:৪৬
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: কখনো এসব বিষয় নিয়ে ভাবি না কারণ একটা রীতি হয়ে দাঁড়াছে যাক সুন্দর বিষয় আলোচনা করলেন দাদা
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা ভুল রীতিকেই নীতি মনে করি।
৪| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:৫৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই তো ভুলকে ভুল মনে করি না । ঈদ আর ইদ উফ কী যে জগাখিচুরী
আমি ঈদই লিখবো
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: এই ধরনের ভুলগুলো আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরাই প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। যেমন পাখি বানান যখন রবি ঠাকুর লিখেন 'পাখি' তখন সেটাই শুদ্ধ। আমরা লিখলে ভুল।
৫| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:০১
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এখন পেশ করা হলো বা উপস্থাপন করা হলো এগুলোই ব্যবহার হচ্ছে।
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: হ্যা, হরদম এই ভুল করা হয়।
৬| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:০৪
জ্যাকেল বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ ভাইসাহেব!
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: স্বাগতম।
৭| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৪১
জটিল ভাই বলেছেন:
জনাব,
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সবিনয় বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার লেখ্য পাঠপূর্বক মাথা আউলাইয়া গিয়াছে। এমনিতেই বাংলা ভাষার ভাব লইয়া বড্ড পেরেশান রহিয়াছি। তাহার মইধ্যে আপনার এইরূপ বিশ্লেষণ আউলা মাথারে আরো আউলাইয়া দিয়াছে। তাই ভবিষ্যতে এরূপ লিখার শুরুতে আমাদিকের মত নাদানদের উদ্দেশ্যে একখানা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লটকাইয়া দিবার আকুল আবেদন ব্যকুল হইয়া পেশ করিলাম। এমিতেই লেখার হাতে যে পরিমাণে হাতকড়া লাগিতেছে তাহার মইধ্যে এসকল ভাবনাচিন্তায় জর্জরিত হইয়া লেখা ও লেখক উভয়ই বিলীণ হইয়া যাইবে। পরিশেষে জানিতে চাই, এই রঙ্গে ভরা বঙ্গে যে বাংলা একাডেমি নামক একখানা বস্তু রহিয়াছে তাহার কি আদৌ কোন অস্তিত্ব বিদ্যমান রহিয়াছে? যাহা বলিলাম তাহায় ইচ্ছা অনিচ্ছায় যতো ভুল ত্রুটি বেয়াদবি প্রকাশ ঘটিয়াছে তাহা ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখিবার জইন্যে জনাব মহোদয়ের যথাযথ মর্জি কামনা করিতেছি।
উপর্যুক্ত বাক্যমালায় কতগুলো ভুল বিদ্যমান রহিয়াছে প্রিয় ভাই?
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে আমরা আমজনতা সবাই নাদান। কবি সাহিত্যিক আর বাংলা একেডেমীর কর্তারাই হইলো বাংলা ভাষার কুতুব!
৮| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:২৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: 'সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে।' - কথাটা ঠিকই আছে।
তোমাকে খাওয়ার জন্য ডাকা হচ্ছে
তোমাকে পড়ার জন্য দেয়া হলো
শুধু তোমার বোঝার জন্য বলছি
তোমার জ্ঞানের জন্য বলছি
তোমার শেখার জন্য বলছি
তোমাকে সতর্ক করার জন্য বলছি
তোমার কাজে লাগতে পারে, এজন্য জানাচ্ছি
শুধু তোমার অবগতির জন্য বলছি
কার্যক্রম গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে জানানো হলো
সুন্দর আলোচনা জুল ভার্ন ভাই। আমার মতামত দিলাম আর কী।
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় সোনা ভাই।
আপনার মতামত অবশ্যই শিরধার্য্য।
এখন ব্লগে ভালো কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনায় কেউ আগ্রহী নয়। অথচ ১০/১২ বছর আগে এই ধরনের পোস্টে শত শত মন্তব্য করতেন বন্ধুরা।
৯| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৪০
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আমার মনে হয় এতো জয়িল করার দরকার নেই। মানুষ বুঝলেই তো হলো।
পোস্ট ভালো লাগলো।
১২ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: অবশ্যই। সর্বপরি ব্লগ কোনো প্রাইমারী স্কুল নয়।
১০| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: এবার কি ঈদের আগে গাইতে হবে- ও মোর রমাদ্বানের রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ---
১২ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: তোমাদের মতো বিজ্ঞানমনস্ক গোত্রের জন্যতো ঈদ নয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:০৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর। এগুলো আমাদের প্রচলিত ভুল, যা আমরা ভুল বলে মনে করিনা। +++