নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
Lost for words....
ভৌগোলিক আয়তনে আমাদের দেশটা ছোট হলেও আমাদের দেশের অঞ্চলভিত্তিক ভাষার বিচিত্রিতা অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। আমরা অনেকেই আমাদের আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে ট্রল করি। ইদানিং আমাদের দেশের বস্তাপচা নাটক সিনেমায় আকছার এই ঘটনা ঘটাতে দেখি অর্ধশিক্ষিত পরিচালক ও শিল্পীদের মধ্যে। অথচ ঢাকা, বরিশাল, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, রংপুর ছাড়াও অনেক জেলায় নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতি এবং আঞ্চলিক ভাষার বিশেষত্বের কারণেই তাদেরকে আলাদা করে চেনা যায়।
আঞ্চলিক ভাষাই মাতৃভাষা। তাই মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। মাতৃভাষা হারিয়ে যাওয়ার মত বেদনা আর কিছুতে নেই বোধহয়। মাতৃভাষার মর্যাদা তথা অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের দেশেই। এই ভাষার বিপর্যয় নিয়েই আমাদের পাসের দেশের রাজাদিত্য বন্দোপাধ্যায়ের ছবি "লস্ট ফর ওয়ার্ডস"।
ভারত-ভুটান সীমান্তের নিকটবর্তী একটি গ্রামের প্রায় ১৫৮৫ জন মানুষের বলা ভাষার নাম 'টোটো'। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী টোটোরা তাদের নিজস্ব টোটো ভাষায় কথা বলে। ইউনেস্কো টোটো ভাষাকে বিপদের মধ্যে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গের টোটো প্রজাতির ভাষা কী ভাবে অর্থনৈতিক চাপে দিনকে দিন হারাতে বসেছে....তাই নিয়েই এই তথ্যচিত্র "লস্ট ফর ওয়ার্ডস"।
এই তথ্যচিত্রে ফুটে উঠেছে উত্তরবঙ্গের অপূর্ব প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, টোটোদের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু দৃশ্য আর তাদের লোকগান। পাহাড় জঙ্গলের গায়ে ধাক্কা খেয়ে সে গান এসে আঘাত করে দর্শকের বুকের ভেতর! বহু পরিশ্রমে নির্মিত হয়েছে ছবিটি; এ-ও যেন ভবিষ্যতের একটুকরো ইতিহাস।
ডকুমেন্টারি ফ্লিম 'লস্ট ফর ওয়ার্ডস' টোটোদের অস্পষ্ট ভাষার উৎপত্তি অনুসন্ধান করে এবং টোটো ভাষাভাসীদের সংস্কৃতির উপর প্রতিফলিত করে নির্মিত। বৃটিশ শাসন অবসানের পর ছোট ণৃ-গোষ্ঠীদের এপর্যন্ত প্রায় ১৫০ টি ভাষা উপমহাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে।
বিবিসি বাংলা চ্যানেলে একটি ডকুমেন্টারি/ফিচার ফ্লিম হিসেবে আমি সিনেমাটি দুইবার দেখেছি। প্রথমবার সিনেমার মধ্যবর্তী অংশ থেকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তারপর অনেকদিন অপেক্ষা করেছি- পূণঃপ্রচার কবে হবে সেই আশায়। অবশেষে প্রায় তিন মাস পর পূণঃপ্রচারিত ফিচার ফ্লিমটি দেখার সুযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যেই গুগল ঘেটে Lost for words এর উপর অনেক তথ্যউপাত্য সংগ্রহ করেছি। আমার মতে এটা উপমহাদেশের এবং আমাদের দেশেরও উপজাতি সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। ভাষা হল অভিব্যক্তির অন্যতম মৌলিক নির্দেশক, পরিচয়ের মানদন্ড। মানুষ সেই প্রয়োজনেই চালিত হয়, সে গুহাশিল্প বা সিম্ফনি বা দর্শন বা বিজ্ঞানের আকারেই হোক। আজ এই মৌলিক পরিচয় এই বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে। যথারীতি এর পেছনের মূল ফ্যাক্টর হচ্ছে অর্থনীতি। পরিচালক এই সমগ্র সংগ্রামের নথিভুক্ত করার একটি অসামান্য কাজ করেছেন। তথাকথিত আধুনিক সভ্যতা আর ভূমির মানুষ, আদিবাসীদের অস্তিত্বের সংগ্রাম অসাধারণ সুন্দর করে তুলে ধরেছেন।
টোটো লোকেদের জীবন ও ভাষা নিয়ে তাঁর কাজ আগামী প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্র প্রমাণ হিসেবে থাকবে।
ছবির শুরুতেই বলা হয়েছে- 'ধনিরাম টোটো প্রথম টোটো উপন্যাস রচনা করেন। এই ভাষায় কোন বর্ণমালা ছিল না। ধনিরাম টোটো "টোটো বর্ণমালা আবিষ্কার করেন ২০১৪ সালে"। তিনি ফোনেটিক্স, ভাষাতত্ত এবং প্যালেওগ্রাফি সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়েছেন।'
একদল মানুষ যখন এমন ভাষায় কথা বলে যার বর্ণমালা নেই, তখন ধনিরাম বলে, "একমাত্র তারাই বুঝবে এটা কতটা কঠিন হতে পারে। মানুষ গুলো বাঁচবে কি করে? দার্শনিকরা কি জানেন না যে ইংরেজি শিখলেও তরুণ প্রজন্মের চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না। টোটো এদের চাকরি খুঁজে দেবে কিনা জানিনা, তবে বেঁচে থাকারই ব্যাপার।"
ছবির পরিচালক ব্যাখ্যা করেন, এই চলচ্চিত্রটি টোটো ভাষার উপর নির্মিত হলেও ভাষাটি আমাদের বৈচিত্রের একটি উপস্থাপনা। এগুলো আমাদের জীবনের উদাহরণ এবং বিশ্বায়ন বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিব্বত থেকে আগত একটি ছোট্ট গ্রামের কিছু মানুষের মুখের ভাষা বিলুপ্ত করা।
জীবন জিবিকা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে, এদের কেউ কেউ মূল ভূমি ছেড়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য হয়। এই ভাষা একটি সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই ভাষাকে ক্ষুব্ধ করার হাত থেকে বিরত রাখতে ধনিরাম টোটো, সত্যজিৎ টোটো, এবং বিপ্লব নায়ক যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। মাতৃভাষাকে রক্ষা করার সংগ্রামকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য এই চলচিত্রটি।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: বিবিসি বাংলা প্রচার করেছিলো। তবে এখন ইউটিউবেও পাওয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বড় বড়ো অর্গানাইজেসনের অডিটরিয়ামে সূধী সমাবেশে ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
টোটোর মতো আমাদের দেশের অনেকগুলি ভাষাও বিপদের মধ্যে আছে, অনেকগুলি হাড়িয়ে গেছে।
আমাদের দেশে এমনকি কয়েকটি আঞ্চলিক ভাষার আলাদা বর্নমালাও ছিলো।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া ভাষার মধ্যে অন্যতম রেংমিটচা। পার্বত্য চট্টগ্রামের ম্রো সম্প্রদায়ের একটা অংশ রেংমিটচা ভাষায় কথা বলতো। বর্তমানে বাংলাদেশে এই ভাষার ৩০ থেকে ৪০ জন ভাষী বা অর্ধভাষী জীবিত আছে।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪১
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: সহমত , সুন্দর পোস্ট । ভাষা শুধু কৌতুকের জন্য নয় । প্রতিটি অঞ্চলের ভাষা স্বতন্ত্র মর্যাদার অধিকারী ।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে যে সৌন্দর্য্য আছে তা বোঝারমতো জ্ঞানের অভাবেই আমরা ভাষা নিয়ে ট্রল করি।
৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ দুপুর ১:০৫
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: সম্ভবত টাইপো মিস্টেক হয়েছে। 'মাতৃভাষার মত আঞ্চলিক ভাষারও গুরুত্ব অপরিসীম' এখানে মনে হয় টাইপিংিয়ের ভুলের কারণে মত শব্দটি এসে পড়েছে। কারণ আঞ্চলিক ভাষা ও মাতৃভাষা একই। আমি ডকোমেন্টটা দেখতে যাই!
০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো টাইপো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। একটা শব্দ আগে পিছে হয়ে যাওয়ায় পোস্টের অর্থই ভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এডিট করে দিয়েছি। আবারও ধন্যবাদ জানাই।
বাংলাভাষা আমাদের যতটা না মাতৃভাষা তার চাইতে বেশী রাস্ট্রভাষা। মানুষের মূল ভাষা হলো আঞ্চলিক ভাষা, যাকে আমরা বলি মায়ের ভাষা। বাংলা ভাষাভাষী বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা বিভিন্ন রকম হওয়ায় সবার বোঝার সুবিধার জন্য প্রমিত বাংলার ব্যবহার শুরু হয়। আমরা প্রমিত বাংলাকেই নিজের মাতৃভাষা বলে দাবি করি। প্রমিত বাংলাও কোন অঞ্চলের মাতৃভাষা। তবে তা সব অঞ্চলের মানুষের মাতৃভাষা হতে পারে না।
বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে হলে প্রথমে উপভাষা তথা আঞ্চলিক ভাষাকে রক্ষা করতে হবে। আর তা না হলে বাংলা ভাষা তার স্বাতন্ত্র্য হারাবে। তীব্র প্রতিযোগিতার এই সময়ে আমরা এরই মধ্যে বাংলা ভাষার অনেক আঞ্চলিক শব্দ হারিয়ে ফেলেছি। যা আমরা খেয়াল করারও সময় পাইনি। এভাবে এমন এক সময় আসবে, যখন পেছন ফিরে দেখারও সময় থাকবে না। থাকবে শুধু দীর্ঘশ্বাস আমরা কী হারালাম। বিগত কয়েক দশকে আমরা আমাদের আঞ্চলিক শব্দগুলো রক্ষার সমন্বিত কোনও উদ্যোগ করিনি।
একটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষা এবং উচ্চারণে পার্থক্য থাকবে এটা স্বাভাবিক। সব অঞ্চলের মানুষের ভাষার স্বাতন্ত্র্য আছে এবং থাকবে। সেগুলো যথাযথ সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রমিত বাংলাভাষার প্রয়োজন অনস্বীকার্য তবে আঞ্চলিক ভাষাকে বাদ দিয়ে নয়।
৫| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: কোনো কিছুই হারিয়ে যায় না। ফিরে ফিরে আসে।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার ভিন্ন মত। আমি বলবো, যা হারিয়ে যায়, তা কদাচিৎ ফিরে আসে।
৬| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:২৭
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আদিবাসীদের ভাষাগুলি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা উচিত।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশে যাদেরকে আমরা আদিবাসী সম্বোধন করি তারা মূলত আদিবাসী নয়। তারা উপজাতি। বাংলাদেশের আদিবাসী বাংগালীরাই।
৭| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৩:৪৩
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: প্রতি ভাষাই সুন্দর।
০৩ রা জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত। প্রতিটি ভাষারই একটা নিজস্বতা রয়েছে।
৮| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ রাত ৮:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমরা বাংলা ব্যাকরণ বইয়ে পড়েছি যে নদিয়া জেলার কথ্য ভাষাকে ভিত্তি ধরে বর্তমানের চলতি ভাষা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা এক সময় নদিয়া জেলার অংশ ছিল। কুষ্টিয়া জেলার মানুষের কথা শুনলে মনে হয় কি সুন্দর বাংলা বলছে।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:১৩
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার মানুষ শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে।
৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৪৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর বিষয় তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:০১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
পোস্ট পড়ে আগ্রহ জন্মেছে,দেখতে হবে ডকুমেন্টারি।