নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন.....

১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৪১

ধর্মীয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন.....

সনাতন ধর্মাবলম্বী আমার দুইজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছেন। একজন দেবু, আমার বাল্যবন্ধু- যার কথা বিভিন্ন সময় আমি স্যোশাল মিডিয়ার লিখেছি। আমরা স্কুল কলেজে একসাথে পড়িনি কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা সহপাঠী(সাবজেক্ট/ডিপার্টমেন্ট ভিন্ন)। বর্তমানে একটি বহুজাতিক কোম্পানির বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান পদে কর্মরত। দেবুর বাবা ছিলেন আমার বাবারও বন্ধু। আমাদের দুই পরিবারের সম্পর্ক শতবর্ষী। দ্বিতীয়জন আমাদের প্রতিবেশী একই বিল্ডিংয়ে ফ্রন্টডোড় নেইবার। বয়সে আমার থেকে অনেক ছোট। আমি যখন ঢাবি থেকে মাস্টার্স পাশ করি তখন তিনি ঢাবিতে আইন বিভাগে ভর্তি হন। পাস করেই হাইকোর্টে প্রাক্টিস শুরু করেন এবং সহকারী এটর্নি জেনারেল থেকে তরতরিয়ে বর্তমানে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল। হয়তো শীঘ্রই হাইকোর্টের বিচারপতি হবেন। ১৫ বছর আমরা প্রতিবেশী। আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। পারস্পরিক সুখ দুঃখের সহমর্মি। সম্পুর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের হয়েও আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেতে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন, যেখানে আমার দলের ব্যারিস্টার সাহেবেরা চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় আমার মামলা নেয়নি। এই দুই পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের পারস্পরিক সকল সামাজিক, ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানে পরস্পর একই পরিবার হয়ে যাই।

দেবুর স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্স-মাস্টার্স। পার্ফেক্ট গৃহীনি সে-ই সংগে কঠোর ধর্মীয় অনুশাসন পালনকারী। একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার- এককথায় নাস্তিক। দেবুও ধর্মকর্মে তেমন সিরিয়াস না। অন্যদিকে প্রতিবেশী বন্ধুর স্ত্রী ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স-মাস্টার্স। দেশ সেরা একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। দুই সন্তানের একজন সদ্য কলেজ, ছোট জন স্কুল গোয়িং। এই পরিবারের সবাই কট্টর ধর্মীয় অনুশাসন বিধিবিধান পালন করেন। আবার অন্য ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এই দুই পরিবারের সবাই হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, ইসকন এবং মোদির ইন্ডিয়াকে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী মনে করেন। সব চাইতে মজার ব্যাপার হলো- দুই বন্ধুই মনে করেন 'হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ' একটি সাম্প্রদায়িক সংগঠন এবং আমাদের দেশে যতগুলো সাম্প্রদায়িক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার বেশীরভাগের জন্যই একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থন এবং সহযোগিতা রয়েছে... (সেই দলটির নাম বলা যাবে না)
উল্লেখ্য দুটি পরিবারের পারিবারিক সামাজিক অবস্থান প্রকাশ করার কারণ হলো- এই দুটি পরিবারই অত্যন্ত আধুনিক মনস্ক হয়েও ধর্মীয় অনুশাসনে কতটা শ্রদ্ধাশীল, উচ্চ শিক্ষিত মেধাবীরই কেবল ধর্মের মাধুর্য বুঝতে পারে এবং তাদের পূর্বপুরুষের পারিবারিক কিছু ঐতিহ্য এখনো অত্যন্ত যত্নের সাথে পালন করছেন সেটা বলার জন্যই।

ছেলে বেলায় আমাদের অনেক মুসলিম পরিবারেও পিতল কাসার তৈজসপত্র ব্যবহার করতেন। আমাদের বৃহত্তর যৌথ পরিবারে প্রত্যকের জন্য আলাদা আলাদা পিতলের প্লেট, গ্লাস থাকতো। আবার সেইসব প্লেট গ্লাসে নাম খোদাই করা থাকতো। মুসলমান সম্প্রদায়ের সেই পিতল কাসার ব্যবহার হারিয়ে গিয়েছে আধুনিক সিরামিক পোরসেলিনের তৈজস পত্রের কাছে। কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বী আমার দুই বন্ধুদের বাড়িতে এখনো পিতল কাসার তৈজসপত্র ব্যবহার করা হয় প্রত্যাহিকতায় অত্যন্ত যত্নের সাথে। আরও মজার ব্যাপার ওদের ঘরে অত্যন্ত দামী ডাইনিং টেবিল থাকলেও ওরা বাড়িতে পরিবারের সবাই একত্রে খাবার খায় ফ্লোরে বসে। এমনকি এই ঢাকা শহরে কলাপাতার ব্যবহারও আছে!

কয়েক দিন আগে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও রাখীবন্ধন উপলক্ষে আমাদের দাওয়াত দিয়ে দুই বৌদি আমার হাতে রাখী পরিয়ে দিয়েছেন। প্রতিবেশী দাদার মেয়ে আমার ছেলেদের হাতে রাখী পরিয়ে দিয়েছে পরম শ্রদ্ধা ভালোবাসা সম্মান দিয়ে।


সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী। হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী পালন করেন। দ্বাপর যুগের শেষ দিকে মহাপুণ্য তিথিতে মথুরা নগরীতে অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে বন্দী দেবকী ও বাসুদেবের বেদনাহত ক্রোড়ে জন্ম নিয়েছিলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
হিন্দু পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। তাদের আরও বিশ্বাস, দুষ্টের দমন করতে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ আমাদের দাওয়াত ছিলো দেবুর বাড়িতে এবং প্রতিবেশী দাদার ফ্ল্যাটেও।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:২২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ছোটবেলায় দাদার বাড়ির কাসা/ পিতলের থালা, গ্লাস, বদনা দেখেছি।

এই উপমহাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে। ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে। ব্রিটিশরাও নাকি চেয়েছে ডিভাইড এন্ড রুল করতে। আমাদের দেশেও সাম্প্রদায়িক হামলাগুলির পিছনে প্রায়ই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। এত কিছুর পরও সাধারণ হিন্দু, মুসলমানের মধ্যে সম্প্রীতি আছে।

১৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৭:১৩

জুল ভার্ন বলেছেন: একদা অবস্থাপন্ন মুসলমান গৃহস্থ ঘরে পিতল কাসার তৈজসপত্র ব্যবহার ছিলো নৈমিত্তিক। এমনকি গরীবের সংসারেও দুই একটা গ্লাস প্লেট পিতল কাসার থাকতো। পোড়া মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার হতো হরদম। মধ্যবিত্ত পরিবারে এলোমিনিয়াম এসে সব কিছু বদলে দিয়েছে। তারপর এলো মেলামাইন যা এখন সর্বত্র। ইন্ডিয়ান ধনীদের ঘতেও মেলামাইনের তৈজসপত্র ব্যবহার হয় ব্যপকভাবে। তুলনামূলক ভাবে আমাদের দেশে সিরামিক পোরসেলিনের ব্যবহার অনেক বেশী।


আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক ঐক্য আমাদের সামাজিক ইতিহাস এবং ঐতিহ্য। যা ধ্বংসের হোতা আওয়ামী লীগের লুটেরা নেতা কর্মীরা। এই দেশে হিন্দুদের যতো সম্পত্তি গ্রাস করেছে তার প্রায় সবই আওয়ামী লীগের লোকেরা।

২| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১:২৪

অপু তানভীর বলেছেন: ধর্ম কখনই আমার এবং আমার পরিচিতদের মাঝে বাঁধা হতে পারে নি । আমার ক্যাম্পাস জীবনে আমাদের ১২/১৩ জনের একটা গ্রুপ ছিল যাদের ভেতরে তিনজন ছিল হিন্দু । এদের ভেতরে আবার এমন একজন ছিল যে কিনা মাংস খেতো না ওদের কোন একটা রীতির কারণে । এই যে ভিন্ন ধর্মের নিয়ম কিন্তু এই কারণে আমাদের বন্ধুত্বে কোন দিন কোন সমস্যা হয় নি । মাঝে মাঝে আমরা যখন ট্রিট দিতাম বিভিন্ন উপলক্ষে তখন আমার সেই বন্ধুটিও যেত আমাদের সাথে । আমরা বিরিয়ানী খেলে সে পাশের দোকান থেকে ভাত আর মাছ কিনে নিয়ে এসে আমাদের সাথে খেত । এই এক সাথে আড্ডা দেওয়া এক সাথে থাকা সেটাই ছিল সব থেকে বড় ব্যাপার ।
এমন কি আমি এখন যে পরিবারটির সাথে থাকি তারাও হিন্দু । প্রায় ১০ বছর ধরেই এদের সাথে আমি আছি । গত লকডাউনে যখন রমজান ছিল বাইরে বের হওয়া যেত না, এই পরিবারটিই প্রতিবেলা আমার জন্য ইফতার তৈরি করে দিতো !
ধর্ম কোন দিন আমাদের মাঝে আসে নি । আসবেও না !

১৯ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৭:১৬

জুল ভার্ন বলেছেন: কদাচিৎ ব্যক্তিক্রম ছাড়া আমার বন্ধুদের মধ্যে হিন্দু - খৃষ্টান ধর্মালম্বীরা অকৃত্রিম।

৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৩৮

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আমার বন্ধুটির নামও দেবু। বাসায় যাওয়া হয়নি গতকাল তবে এক সাথে হাটতে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার করে বাসায় ফিরেছি।

১৯ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আমার বন্ধুর নাম গোপেশ্বর কুমার দেবনাথ। আমরা আদর করে দেবু ডাকি।

৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:০০

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: পুরো নাম উল্লেখ করছি না তবে অমার বন্ধুর নামে "সহদেব" রয়েছে তাই আমিও আদর করেই "দেবু" ডাকি B-)

১৯ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১০:০৪

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:২৮

জটিল ভাই বলেছেন:
সম্প্রতি যতো আগাচ্ছে, সম্প্রিতি যেনো ততোই পিছিয়ে যাচ্ছে.......... :(

২১ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: এর পিছনে কলকাঠি নাড়ছে সুবিধাবাদীরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.