নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
এক ‘অশ্লীল’ সংস্কৃতিঃ ঘেঁটু বা ঘাঁটু গান.....
"গাহিয়া ঘাটু গান নৌকা দৌড়াইতাম আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম" প্রখ্যাত বাউল শিল্পী সর্বজন শ্রদ্ধেয় শাহ আবদুল করিম এর এই বিখ্যাত গানে ঘাটু গানের কথা বলা হয়েছে সেই ঘাটু গানের এলাকা/অঞ্চল ভিত্তিক অনেক নাম আছে। অঞ্চলভেদে ‘ঘাটু’ শব্দটির উচ্চারণগত ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এই শব্দটি "ঘাঁটু", "ঘেটু", "ঘেঁটু", "ঘাডু","গাড়ু", "গাঁটু", "গাডু" প্রভৃতি বলা হয়। নেত্রকোনা অঞ্চলে এটি ‘গাডু’ নামেই পরিচিত, তবে শিক্ষিতজনরা ‘ঘাটু’ বলেন; আবার, সুনামগঞ্জ অঞ্চলে একে ‘ঘাডু’ বলে।
বাঙালির সমকামিতা ও ঘেটুপুত্রের ইতিহাসঃ
অবিভক্ত বাংলার বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, সিলেট প্রভৃতি অঞ্চলে এক ধরনের লোকগানের প্রচলন হয়েছিল, তার নাম ঘেটুগান। এই গানের দলে নদীর বুকে নৌকো নিয়ে ভাসতে ভাসতে ঘাটে ঘাটে নেমে বায়না নিয়ে নাচ দেখাত ও গান শোনাত বলেই এর নাম ‘ঘেটুগান’। ‘ঘাট’ থেকে ‘ঘেটু’। ‘ঘেটুগান’ আসলে কৃষ্ণের বিরহে রাধার গান। এই গান নেচে নেচে রাধা সেজে পরিবেশন করত কিশোরেরা। তাদের পরনে থাকত রাধার পোশাক, অলঙ্কার, পায়ে আলতা, চোখে কাজল। অভাবী ঘরের দেখতে সুন্দর কিশোরদেরই এ-সব দলে নেওয়া হত, তালিম দেওয়া হত নাচগানের। সবসময় তাদের সাজিয়ে রাখা হত মেয়ের সাজে। লোকে এদের বলত ‘ঘেটুপুত্র’। সেকালের অভিজাতশ্রেণির মানুষেরা বাড়িতে ঘেটুগানের আসর বসাতেন। রাধারূপী ঘেটুপুত্রকে মনে ধরলে, তাকে কিছুদিনের জন্য বাড়িতে রেখে দিতেন; বিশেষত পুরো বর্ষার সময়টা। এই সময়টায় তাদের নিয়মিত শয্যাসঙ্গী হতে হতো সেই অভিজাত মানুষটির। এক সময় এটাই প্রথা হয়ে দাঁড়ায়। তখন এই প্রথার বিপক্ষে সমাজ কোন প্রশ্ন তোলেনি। তুলবার সাহস করেনি। বাড়ির স্ত্রীরাও এটা মেনে নেন বা মেনে নিত বাধ্য হন। ঘেটুপুত্রদের সতীনের চোখে দেখতে থাকেন এবং ‘সতীন’ বলে ডাকতো। ষাট-সত্তর বছর আগেও এই প্রথার বেশ চল ছিল। প্রথার সঙ্গে এখন অবশ্য লুপ্ত হয়েছে এ গানের ধারাও। বাংলাদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হুমায়ুন আহমেদের শেষ পরিচালিত ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। ছবিটিতে ঘেটুগানের সূত্র ধরে বাঙালির সমকামিতার ইতিহাসের এই অধ্যায়টি তিনি তুলে ধরেছেন। ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ চলচ্চিত্রতেও ফুটে উঠেছে কিশোরদের এই যন্ত্রণাকাতর জীবনের ছবি।
নদনদীর দেশ বাংলা। নদীকে ঘিরেই এখানে গড়ে উঠেছে মানুষের আলো-আঁধারি জীবন। তখনও মানুষ নিজেদের ঘরের মধ্যে বিনোদনের হাজার উপকরণ নিয়ে হাজির হয়নি। তাই সবটাই ছিল সামাজিক। তাতে সম্প্রীতির আহ্বান যেমন ছিল, তেমনি ছিল নানান সামাজিক ব্যাধি। এদেশে তখন সদ্য ফিরিঙ্গি জাহাজ এসে ভিড়তে শুরু করেছে। তখনও বর্ষায় কূল ছাপিয়ে যখন নদীর জল হাওরে জমা হত, তখন সেই এলাকার মানুষের কাজ বলতে কিছুই থাকত না। দিন কাটত আমোদে-আনন্দে। আর সেই আনন্দকে উস্কে দিতে ঘাটে ঘাটে নৌকো ঘুরে বেড়াত। নৌকোয় থাকত একদল নারীবেশী সদ্য-কিশোর। ঘাটে ঘাটে ঘুরে বেড়াত বলে তাদের নাম হয়েছিল ঘাঁটু ছোকরা। আর এই ঘাঁটু ছোকরাদের নাচই ছিল ঘাঁটু নাচ।
বাংলা সংস্কৃতির হারিয়ে যাওয়া অনেক উপকরণের কথা বলতে গেলে ঘাঁটু গানের কথা এসেই পড়ে। কিন্তু তার ইতিহাসে ঐতিহ্যের উজ্জ্বল দিকটার তুলনায় যেন অন্ধকার দিকটাই বেশি। এই ইতিহাস মনে পড়িয়ে দেয় অসংখ্য কিশোরের উপর যৌন নির্যাতনের ছবি। তখনও চাইল্ড অ্যাবিউজ নিয়ে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি পৃথিবীর কোথাও। তাই সেই ছেলেদের কান্নার খবর যে কেউ রাখেনি, সেকথা বলাই বাহুল্য। ঘাঁটু গানের উৎপত্তি সম্পর্কে বিতর্ক আছে। তবে মোটামুটি মনে করা হয় ষোড়শ শতকের প্রথম দিকে শ্রীহট্টের কাছে আজমিরিগঞ্জ এলাকার এক বৈষ্ণব আচার্য ও তাঁর কম বয়সী শিষ্যদের রাধাভাবকে আশ্রয় করে ঘাঁটু গানের সূত্রপাত। আর তাই শেষ সময় পর্যন্ত ঘাঁটু ছোকরাদের নাচের সঙ্গে যে চটুল গান ব্যবহৃত হত, তার বিষয়বস্তুও হতো রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা, বিশেষ করে রাধাবিরহ।
তবে ক্রমশ এই ধর্মীয়-দার্শনিক সীমারেখা অতিক্রম করে ঘাঁটু গান হয়ে ওঠে এক ধরনের যৌনলিপ্সার প্রতীক। আর সেই লিপ্সার শিকার ঘাঁটু-ছোকরারাই। তাদের লম্বা চুল রাখা এবং মহিলাদের মতো সাজপোশাক করা বাধ্যতামূলক ছিল। এমনকি মহিলাদের মতো চালচলনও অভ্যেস করতে হত তাদের। আর এই নারীবেশী কিশোরদের মাঝখানে রেখে চটুল গানের তালে তালে রীতিমতো বাইজির মতো নাচতে হত। এতেই তৃপ্ত হত মানুষের আকাক্ষা।
একটি ঘাঁটু দলে একজন মূল ঘাঁটু ছোকরা ছাড়াও বেশ কয়েকজন সদস্য থাকত। তারা প্রত্যেকেই ছিল ঘাঁটু, অর্থাৎ তাদেরও মেয়ে সেজে থাকতে হত। আর থাকতেন একজন ‘সরকার’ বা ‘মরাদার’ (মহড়াদার>মরাদার)। এই সরকাররাই ঘাঁটুকে নাচে-গানে এবং তত্ত্বকথায় পারদর্শী করে তুলতেন। এছাড়া আরও যাঁরা থাকতেন তাঁরা হলেন দোহার বা পাইলদার। এঁরা ছিলেন বাদ্যযন্ত্রশিল্পী, সময় সময় গানের দোহার ধরতেন। ঘাঁটুর সঙ্গে সমস্বরে উচ্চগ্রামে সুর তুলে তাঁরা দর্শকের মন মাতিয়ে তুলতেন। তখন ঢোল, খোল, করতাল বাঁশির পাশাপাশি হারমোনিয়াম এবং দোতারাও ব্যবহার করা হত।
একটি দলের একক অনুষ্ঠানের প্রচলন যেমন ছিল, তেমনই ছিল দুটি ঘাঁটু দলের প্রতিযোগিতার প্রচলনও। তখন একটি দল গানের কথায় অপর দলকে একটি প্রশ্ন করত, আর সেই দলকে উত্তর দিতে হত গানের মাধ্যমেই। খানিকটা কবিয়ালের মতো। তবে কবিয়ালের ক্ষেত্রে দার্শনিক উপসঙ্গ প্রধান হয়ে উঠলেও এখানে সেই অবকাশ ছিল না। এখানে চটুলতাই ছিল প্রধান। স্থানে স্থানে বিপক্ষ দলকে পরাজিত করতে অশ্লীল রসিকতার আশ্রয় নিত ঘাঁটুরাও। তবে তার থেকেও অন্ধকার ভবিষ্যত অপেক্ষা করে ছিল এই গানের ধারাটির জন্য। আর সেটা এলো সতেরো-আঠেরো শতক নাগাদ। সতেরো-আঠেরো শতক নাগাদ ঘাঁটু ছোকরাদের কিনে নেওয়ার প্রচলন শুরু হয়। যাঁরা ছেলেদের কিনে নিতেন তাঁদের বলা হতো ‘সৌখিনদার’ বা ‘খলিফা’। এঁরা কিন্তু শিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন না। ঘাঁটু ছোকরাদের তাঁরা ব্যবহার করতেন উপপত্নীর মতো।
ক্রমশ বিশ শতকে এসে যখন নাচগানের থেকে এই অশ্লীল যৌনাচারের দিকটাই প্রধান হয়ে ওঠে, তখন আর এই সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার কোনো জায়গা ছিল না। ‘ঘাঁটু’ শব্দটি ক্রমশ অপভাষায় পরিণত হয়। আর সেইসঙ্গে ছোটদের নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। বৈষ্ণব সম্প্রদায়গুলির রাধাভাবের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মুক্তির কথা লুকিয়ে ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। অথচ সেই একই মূল থেকে জন্ম নিয়েছিল এমন একটি ঘৃণ্য প্রভাব। আমাদের সংস্কৃতিতে যেমন গর্ব করার মতো উপাদানেরও অভাব নেই, তেমনই ‘ঘাঁটু’ গান এক অব্ধকার ইতিহাসের কথাই মনে পড়ায়। যে ইতিহাসকে ফেলে আসতে পারা সত্যিই এক সামাজিক সাফল্য।৷
তথ্যসূত্রঃ
(১) Ghetu Gaan- Wakil Ahmed
(২) ঘেটু গানঃ উইকিপিডিয়া।
(৩) ছবিঃ হুমায়ূন আহমেদের নির্মিত ঘেটুপুত্র কমলার ছবির দৃশ্য।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০২
নতুন বলেছেন: ঘেটুপুত্র কমলা ছবিটা সিনেপ্লেক্সে দেখেছিলাম। শেষের দৃশ্যে চোখ ভিজেছিলো।
ক্ষমতাবানদের জন্য আইন. নিয়ম নিতি তেমন খাটেনা। দরিদ্ররাই বেশি ধর্মকর্ম করে, আইন মানে।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৪
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত। গরীবের ধর্মই হচ্ছে মনিবের ধর্ম পালন- হোক সেটা কর্মক্ষেত্রের কিম্বা ধর্মক্ষেত্রের মনিব।
৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৭
শেরজা তপন বলেছেন: ঘেঁটু পুত্রদের ভয়ঙ্কর কষ্টের উপখ্যান!
মানুষ সব যুগেই খারাপ। ঘেটুপুত্র না থাকায় এদের বিকৃত কাম লালসার শিকার হচ্ছে অন্য কিশোরেরা।
খুব ভাল লিখেছেন।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩০
জুল ভার্ন বলেছেন: সমকামী বিত্তবানরা বিশেষ করে জোতদার, জমিদার প্রমুখ এইসব কিশোরকে যৌনসঙ্গী হিসেবে পাবার জন্যে লালায়িত ছিলো। একসময় সামাজিকভাবে বিষয়টা স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের জমিদার ও বিত্তবান শৌখিন মানুষরা বর্ষাকালে জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্রদের নিজের কাছে রাখবেন এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। এই সময়টায় তাদের নিয়মিত শয্যাসঙ্গী হতে হতো সেই অভিজাত মানুষটির। এক সময় এটাই প্রথা হয়ে দাঁড়ায়। তখন এই প্রথার বিপক্ষে সমাজ কোনো প্রশ্ন তোলেনি কিংবা তুলবার সাহস করেনি। সমকামী বিত্তবানদের স্ত্রীরা ঘেটুপুত্রদের দেখতেন সতীনের চোখে। এমনকি সতীন বলে ডাকতেন।
৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩৯
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদের ছবিটি নির্মাণের আগে বিষয়টি নিয়ে জানা ছিলোনা কিংবা কোথাও পড়া হয় নাই এই কদর্য দিকটি সম্পর্কে। অনেক ধন্যবাদ বিষয়টি নিয়ে লিখার জন্য।
ইদানিং দেশের তৃতিয় লিঙ্গের লোকদের নিয়ে অনেক নেগেটিভ কথা-বার্তা সোনা যায়, অনেক সময় বাসে, বাসাবাড়িতে কিংবা দোকানপাটেও এদের উৎপাত বেশ লক্ষণীয়। তৃতিয় লিঙ্গের সমস্যা, সমাধান কিংবা সম্ভাবনা নিয়ে আপনার কাছ থেকে একটা লিখা আশা করছি। ধন্যবাদ।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: পোস্ট পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমি চেষ্টা করবো- তৃতীয় লিঙ্গের সমস্যা, সমাধান এবং সম্ভাবনা নিয়ে কিছু লিখতে।
৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:১০
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর অনেক কিছুই জানলাম দাদা
ভাল থাকবেন----------
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ লিটন।
৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ ঘেটুদের সামনে না আনলে হয়তো আমার মতো অনেকেরই জানা হতো না- এই ইতিহাস।
আপনি সুন্দর লিখেছেন।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: ঘেটুপূত্রদের ইতিহাস কিন্তু কয়েক শত বছরের..ছেলে বেলায় আমরা যত যাত্রাপালা দেখেছি তার সর্বত্রই নারী চরিত্রে অভিনয় করতো পুরুষ- যাদের অনেকের ভাগ্যই বঞ্চনা আর নির্যাতনের। স্কুল কলেজের নাটক থিয়েটারেও নারী চরিত্রে ছেলেরা অভিনয় করতো- যাদের সামাজিক মর্যাদা অসম্মানের ছিলনা।
৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৪৭
মিরোরডডল বলেছেন:
মুভিটা দেখেছিলাম ।
বাস্তবজীবনে যারা এই ভূমিকায় থাকে, তাদের জীবন কত ভয়াবহ আর মর্মান্তিক !!!
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও ছবিটা দেখে বেশ কিছুদিন মনোকষ্টে ভুগেছিলাম! একই অবস্থা তৃতীয় লিংজ্ঞের মানুষগুলোর!
৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ঘেঁটু গান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। হুমায়ূন আহমেদ সিনেমা নির্মাণ করলেন। কয়েকবার চেষ্টা করেও খুব বেশী দেখতে পারলাম না। যে জমিদার বাড়িটিতে সিনেমার সুটিং হয়েছে সেটি অবশ্য দেখে এসেছি আমি।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ঘেটুপুত্রদের চেহারা ছবি দেখি চমৎকার!!!
বিকৃত মানসিকতার লোকজনরে খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৪
জুল ভার্ন বলেছেন: হেঃ হেঃ হেঃ পছন্দ হইসে?
ঘেটু পূত্র কমলা সিনেমায় ঘেটু পূত্র চরিত্রে অভিনয় করেছিলো মামুন নামের কিশোর(ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে), তার জীবনে অনেক লানত সইতে হয়েছিল জনসম্মুখে.... মামুনের বন্ধুরা এবং পরিচিত সবাই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করতো....যার জন্য পরবর্তীতে অনেক সিনেমায় অভিনয়ের অফার পেয়েও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে অভিনয় থেকে!
আমাদের সমাজে অনেক বিকৃত মনের মানুষ আছে যারা আমাদের চোখে বিরাট ভদ্র সজ্জন.... কিন্তু গোপনে অন্ধকার মনের মানুষ!
শুভকামনা।
১০| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন উপস্থাপনা।
তখনো ছিলো, এখনো আছে। বদলেছে নাম। বদলেছে রুপ।
তখনো কথা বলা যেতো না। এখনো বলা যাচ্ছে কই?
ঘেটু থেকে আজকের রেইনবো আন্দোলন সেই একই অন্ধকার
ছেলেদের কিশোর কালীন যৌন নির্যাতন নিয়ে কাজ হয়নিই বলতে গেলে।
হলে হয়তো উঠে আসতো সমাজের আরেকটা বিভৎস অন্ধকার চেহারা।
পোষ্টে ++++++
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ভাইজান, আপনার মন্তব্যে দ্বিমত নাই।
১১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১৭
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: ঘেটুগানের প্রচলন এখনও আছে তবে তা সীমাবদ্ধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে । আসলে মানুষের সবচেয়ে রহস্যময় দিক হলো যৌনতা । সে কখন এর শিকার হয়ে যায় সে নিজেও জানে না । যৌনতার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত না হলে যেকোন সময় মানুষ সভ্যতার জঘন্য নিদর্শনে পরিণত হয় । কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলে আসলে সব কিছুর মধ্য দিয়ে মানুষ বিকৃতাচরণ চর্চা করে । মানুষ নিজ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় না থাকলে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয় না ।
আসলে শিল্পের দোষ নেই মানুষ নিজেই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে বিকৃত অভিলাষের মাধ্যম খুঁজে । আর এদিক থেকে শিল্প তার অবস্থা ও শিল্পী নিজের অবস্থান রাখবার জন্য অশ্লীলতাতে নিজেকে জড়িত করে । তাই মানুষকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত হতে হবে , আমাদের বিকৃত আনন্দ নয় প্রকৃত আনন্দের মধ্যেই নিজেকে জড়াতে হবে এবং যেকোন বিনোদন মাধ্যমের মধ্যে যৌনতা না খুঁজে খুঁজতে হবে এর বক্তব্য , অনুধবান করতে হবে এর শৈল্পিকতাকে তবেই আমরা সত্যিকারের মানুষ হবে কোন একদিন !!!
২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যৌন বিকৃতিকে মানসিক রোগ বা বৈকল্য হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়ে থাকে। কোন কোন যৌনক্রিয়া স্বাভাবিক (বা অস্বাভাবিক) তা নির্ধারিত হয় তিনটি পর্যায়ে। এগুলো হলো- সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি,
ধর্ম এবং স্থানীয় আইন। যেহেতু ধর্ম ব্যতীত বাকী দুটি নিয়ামক চলমান বা পরিবর্তশীল, তাই সার্বিকভাবে যৌন বিকৃতির সঙ্গার্থও পরম বা চূড়ান্ত নয়। উদাহরণস্বরূপ, সমকাম যৌন বিকৃতি হিসেবে সকল দেশের আইনে এক সময় অবৈধ ছিল। কিন্তু ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেকগুলি দেশে সমকাম একটি আইনসিদ্ধ যৌনক্রিয়া হিসেবে স্বীকৃত হয়। যদিও পায়ুকামের ফলে পায়ুপথের ব্যথা এবং ক্ষতির কারণে পায়ুকামকে 'ক্ষতিকর যৌনতা' বা 'অনিরাপদ যৌনতা' হিসেবে দেখা হয় এখনো। আসল কথা হচ্ছে- বিকৃত যৌনতা, বিকৃত মানসিকতার ফল। অন্যদিকে, বর্তমান সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ, শিল্পের নামে বিকৃত যৌনাচার।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশের মত রক্ষণশীল সমাজ প্রাচীন কাল থেকে কিছুদিন আগে পর্যন্ত কিভাবে এই ধরণের কাজ কারবারকে মেনে নিল এটাই আশ্চর্য লাগে। কবি জসীম উদ্দীন তার একটা লেখায় ঘেঁটু পুত্রদের এই আচরণ সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে লিখেছিলেন।
আরেকটা বিষয়ে বলছি, হয়তো প্রাসঙ্গিক না তারপরও বলছি। আহমদ ছফা পরিচয়ের সুত্রে তার লেখাতে দুই এক জায়গায় কবি জসীম উদ্দীনকে সমকামী বলেছেন। আমার ধারণা কথাটা সত্য না।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে কে সমকামী সেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বোঝা যাবেনা। তবে এই ধরণের বিকৃতমনা মানুষের অভাব নাই।
আহমেদ ছফা আমার অন্যতম প্রিয় লেখক, প্রিয় একজন মানুষও বটে। তিনি খুবই স্পষ্টবাদীতার জন্য বিখ্যাত এবং অনেকের কাছে অপ্রিয়ও বটে। তিনি একই কথা শিল্পী শামীম সিকদার সম্পর্কেও বলেছিলেন- যদিও তিনি শামীম সিকদারকে সাময়িক সময়ের জন্য বিয়েও করেছিলেন।
১৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:২৬
বিটপি বলেছেন: আমাদের আবহমান সংস্কৃতির নানা রং ও বৈচিত্র্য আমাদের গর্ব ও অহঙ্কারের প্রতীক। জারি, সারি, মুর্শিদী, ভাটিয়ালী ও ভাওইয়া, যাত্রা, পুঁথি - এগুলো আমাদেরকে গর্বিত করে। কিন্তু এইসবের মধ্যে একটা কলঙ্ক হল এই ঘাটু গান। এই জিনিসটা না থাকলে বাংলা সংস্কৃতি হত বিশুদ্ধ সংস্কৃতির প্রতিরূপ।
হুমায়ূন আহমেদ এই বাজে জিনিস নিয়ে সিনেমা বানিয়ে এমন কোন উপকার করেনি। এঈ জিনিস সম্পর্কে না জানলেও আমাদের চলত। হুমায়ূন আহমেদ বরং আমাদের কালচারের একটা ক্যানসারের সঙ্গে আমাদের পরিচিত করিয়ে আমাদের রুচি নষ্ট করে ফেলেছে।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশের সাথে সম্পুর্ণ একমত। কিন্তু দ্বিতীয় অংশের সাথে সম্পুর্ণ দ্বিমত পোষণ করে বলতে চাই-
সত্য তুলে ধরাই শিল্পী শাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবি এবং ঐতিহাসিকদের দ্বায়িত্ব। হুমায়ুন আহমেদ "ঘেটু পূত্র কমলা" সিনেমায় সেই সত্য তুলে ধরেছেন।
সমকামিতা যদি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হয় তাহলে ধরে নেই এই স্বাভাবিক প্রবৃত্তি দ্বারা সাড়া বিশ্বের সবাই তাড়িত তাহলে মানব জাতির বিলুপ্ত হওয়া কে আটকাবে? স্বাভাবিক প্রবৃত্তি তো বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দেবে না। সমকামিতা যদি স্বাভাবিক হত তাহলে সমকামীরা যৌনরোগ দ্বারা অধিক আক্রান্ত হত না। কারণ, লিঙ্গের গঠন কিন্তু যৌনীর উপযোগী, মলাশয়ের নয়। উন্নত প্রাণীদের মধ্যে বংশবিস্তার হয় যৌন জননের মাধ্যমে। প্রজনন কে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয় বংশবিস্তারের উপর ভিত্তি করে। প্রকৃতি তে সেসব প্রাণী টিকে আছে যারা বংশ বৃদ্ধি করেছে ও পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হয়েছে। কাজেই সমকামিতার কোন গ্রহণযোগ্যতাই নেই।
তারপরও বলবো- সমকামিতা সমকামীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক। যা সামাজিক ভাবে ,রাস্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি আদায় করতে আন্দোলন সংগ্রাম করে সমাজকে আরু যেনো অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে না দেয়।
১৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৮
বিটপি বলেছেন: সমকামিতা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি - এটা আপনাকে কে বলল? এটা একটা যৌন বিকৃতি। শিশুকাম এবং পশুকামের মতই একটা যৌন বিকৃতি। কেবল পর্ন ইন্ডাস্ট্রির বিকাশের জন্যই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমকামিতাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কারণ সমকামীরাই পর্ন ছবির সবচেয়ে বড় গ্রাহক। তারপরেও সমকামীতাকে গ্রহণযোগ্য করা হয়েছে কেবল 'মিউচুয়াল সেক্স' এর অজুহাতে। এর মধ্যে কোন জোড়াজুড়ি নেই।
ঘাটু গানের যুগে যেসব প্রভাবশালীরা ঘাটু কিশোরদেরকে নিজেদের বিকৃত যৌন লিপ্সা চারিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করত, তারা কিন্তু সমকামী ছিলনা। তাদের বউ বাচ্চা পরিবার ছিল। কেবল সাময়িক বিনোদনের উপাদান হিসেবে তারা ঘাটুদেরকে নিজেদের কাছে রাখত। এই কাজে তাদেরকে উস্কে দিত ঘাটু গানের দলের লোকেরা। বিকৃত যৌন উপাদান সরবরাহের বিপরীতে তারা মোটা অঙ্কের টাকা উসূল করত। তাই এই ঘাটু গানের দলে যারা যুক্ত ছিল এরা আসলে কোন সংস্কৃতির ধারক বাহক ছিলনা - এরা ছিল শয়তানের এজেন্ট, যারা মানুষের স্বাভাবিক যৌন জীবনকে বিকৃতি দিয়ে বদলে পয়সা উপার্জনের ধান্দায় থাকত।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি কিন্তু বলিনি- 'সমকামীতা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি'। আমি বলেছি- সমকামিতা যদি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হয় - আমার বক্তব্যে যদি প্রত্যয় যোগ করে আমি আমার সন্দেহ প্রকাশ করেছি।
সমকামীতার ব্যাখ্যা আমি দিতেও অস্বস্তিবোধ করছি- তাই সেই প্রসংগে না বলে যৌন প্রবৃত্তি কি- সেটা আপনি, আমি আমরা সবাই জানি- তারপরেও বলছি-
যৌন প্রবৃত্তি বলতে বোঝায় পুরুষ, নারী, উভয় লিঙ্গের প্রতি পারস্পরিক আবেগ, প্রণয় অথবা যৌন আকর্ষণজনিত এক স্থায়ী সম্পর্কাবস্থা। এই যৌন প্রবৃত্তির একদিকে বেশীরভাগ মানুষ শুধু মাত্র বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, আর অপর পক্ষে কেউ কেউ শুধু মাত্র সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। তবে সাধারণত যৌন প্রবৃত্তিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়ঃ বিপরীতকামিতা (বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ), সমকামিতা (সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ) এবং উভকামিতা (উভয় লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ)। প্রথমটা ছাড়া সবই বিকৃতকামী। এই বিকৃতকামীদের সমর্থন করছে তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীরা- যাদের মধ্যে অনেকেই সেই গোত্রের।
আপনার এবারের মন্তব্যে দ্বিতীয় অংশের সাথে সহমত।
আবারও চমতকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৪
রানার ব্লগ বলেছেন: ঘাঁটুর আরেক নাম ঘণ্টাকর্ণ। চর্মরোগের দেবতা।
শোনা যায় ঘাঁটু সূর্য ও ধর্মঠাকুরের লৌকিক রূপ। কারণ, সূর্য ও ধর্মঠাকুর দুজনই কুষ্ঠ ও নানারকম চর্মরোগ থেকে মুক্তি দেন।
যাইহোক, দেবকুমার থাকা অবস্থায় বড় বড় অপরাধের জন্য বিষ্ণু অভিশাপ দেন।
এতে করে জন্ম নিতে হয় পিশাচ কুলে। রাগে ফুলে থাকতেন। কোনোভাবেই যেন বিষ্ণু নাম কানে না আসে সেজন্য দুই কানে ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখার কারণে নাম হয় ঘণ্টাকর্ণ। কোনো মন্দিরে ঘাঁটু দেবতার পূজা হয় না। পূজা হয় বিল হাওড়ের পাশে রাস্তার মোড়ে।
চর্মদেবতা ঘাঁটুর নাম ও আচরণ যেমন মূর্তিটিও অদ্ভুত।
ব্যবহার হওয়া আধভাঙা মাটির হাড়ি উল্টো করে রাখা হয়, এটি আসন। এর ওপরে একদলা গোবর দিয়ে করা হয় ঘাঁটু দেবতার মুখ। চোখ তৈরি করা হয় দুটি কড়ি দিয়ে। কপালের অংশে দেয়া হয় সিঁদুরের তিলক। হাড়ির ওপরে রাখা হয় দুর্বা ঘাস ও ভাটকুল ফুল। কোনো কোনো এলাকায় ঘাঁটুর পোশাক হিসেবে হাড়িতে জড়িয়ে দেয়া হয় হলুদ ছাপানো কাপড়। আর ভাঙাহাড়ির ভেতর জ্বালানো হয় মোমবাতি। পূজা পায় চৈত্র মাসের শেষ দিন।
সুত্রঃ https://sarabangla.net/post/sb-201885/
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রিয় রানা; আপনার এই মন্তব্যের লেখাটুকু আপনার দেয়া লিংক থেকে আমিও পড়েছি।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য