নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিউঃ ড্যানিয়েল কাহনেম্যানের “Thinking, Fast and Slow”........

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২২

বুক রিভিউঃ ড্যানিয়েল কাহনেম্যানের “Thinking, Fast and Slow”........


ড্যানিয়েল কাহনেম্যানের “Thinking, Fast and Slow” বইটি আধুনিক মনোবিজ্ঞান ও আচরণগত অর্থনীতির এক অসাধারণ সংযোজন। কয়েক দিন আগে ব্লগে এই বইয়ের ছোট্ট একটা রিভিউ লিখে পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে ব্লগার শায়মা এবং শেরজা তপন বিস্তারিত লেখার জন্য বলেছিলেন। বিস্তারিত লেখার মতো সময় ধৈর্য্য নাই। তবুও তাদের সৌজন্যে বইয়ের প্রথম পর্বের কয়েকটি অনুচ্ছেদে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে লিখছি।


নোবেলজয়ী কাহনেম্যান মানুষের চিন্তার প্রকৃতি, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং দৈনন্দিন ভুলগুলোর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন অত্যন্ত সহজবোধ্যভাবে। বইয়ের প্রথম পর্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদের আলোকে একটি রিভিউ দিচ্ছিঃ

বইয়ের শুরুতেই কাহনেম্যান মানুষের চিন্তার ধরনকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন- System 1 & System 2.

সিস্টেম-১ঃ দ্রুত, স্বতঃস্ফূর্ত, আবেগপ্রবণ চিন্তা।
সিস্টেম-২ঃ ধীর, যৌক্তিক, বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা।

System 1 & System 2 একটার সাথে অন্যটার যোগসূত্র থাকলেও আমি সিস্টেম- ১ নিয়ে এই পর্ব লিখছি।
প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আমাদের অধিকাংশ ভাবনা এবং সিদ্ধান্ত সিস্টেম-১ দিয়ে নেওয়া হয়, যদিও আমরা মনে করি আমরা যৌক্তিকভাবে (System 2) চিন্তা করছি। এই উপলব্ধি পাঠককে নিজের চিন্তার ভেতর এক নতুন প্রতিবিম্ব, দ্বৈতসত্বা প্রমাণ করে দেয়।

(১) Heuristics and Biases- হিউরিস্টিকস এবং বায়াসঃ

কাহনেম্যান দেখিয়েছেন মানুষ প্রায়ই শর্টকাট বা হিউরিস্টিকস ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন “Availability heuristic”- কোনো ঘটনা কত সহজে মনে পড়ে যায় তার উপর ভিত্তি করেই আমরা তার সম্ভাবনা অনুমান করি।
এই অনুচ্ছেদে তিনি লিখেছেন, বিমান দুর্ঘটনার খবর প্রচুর প্রচারিত হলে মানুষ বিমান ভ্রমণকে ভয় পেতে শুরু করে, যদিও গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা বহুগুণ বেশি। এই উদাহরণ আমাদের মানসিক বায়াস সম্পর্কে সতর্ক করে।

(২) Loss Aversion- ক্ষতি ভয়ঃ

এই গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদে কাহনেম্যান বলেন, মানুষ সমান পরিমাণ লাভের আনন্দের তুলনায় ক্ষতির বেদনা অনেক বেশি অনুভব করে। যেমন ১০০ ডলার হারানোর কষ্ট ১০০ ডলার পাওয়ার আনন্দের চেয়ে বেশি। এই “Loss Aversion” অর্থনীতি, বিনিয়োগ এমনকি ব্যক্তিগত সম্পর্কে মানুষের আচরণকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

(৩) Anchoring Effect- নোঙর / স্থির প্রভাবঃ

বইয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় Anchoring Effect-এ দেখানো হয়েছে, আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় প্রথম প্রদত্ত সংখ্যা বা তথ্যকে “নোঙর” বা "স্থির" হিসেবে ধরে নিই। উদাহরণস্বরূপ, দোকানে প্রথমে যদি কোনো পণ্যের দাম ১০০০ টাকা দেখানো হয় এবং পরে বলা হয় ছাড় (ডিসকাউন্ট) দিয়ে ৬০০ টাকা, তাহলে সেটি আমাদের কাছে অনেক সস্তা মনে হয়- যদিও প্রকৃত দাম হয়তো আরও কম। কিন্তু আমরা ৪০০/- কম শুনেই ৬০০/- দামে মনস্থির এবং তৃপ্তবোধ করছি।

(৪) Overconfidence- অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসঃ


Overconfidence বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
অনুচ্ছেদে কাহনেম্যান সতর্ক করে বলেছেন- মানুষ প্রায়ই নিজের বিচারবুদ্ধি ও পূর্বাভাসকে অতিমূল্যায়ন করে। বিনিয়োগকারী, চিকিৎসক বা রাজনীতিবিদ- সবার মধ্যেই এই প্রবণতা কাজ করে। বইয়ের এই অংশ পাঠককে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও বিনয়ী ও সচেতন হতে শেখায়।

সারসংক্ষেপঃ

“Thinking, Fast and Slow” আমাদের মনে করিয়ে দেয়- মানুষ প্রকৃত অর্থে সম্পূর্ণ যৌক্তিক নয়, বরং আবেগ, বায়াস এবং মানসিক শর্টকাটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়। Thinking, Fast and Slow শুধু মনোবিজ্ঞানের বই নয়, এটি এক ধরনের মিরর, যেখানে আমরা নিজেদের মস্তিষ্কের সীমাবদ্ধতা দেখতে পাই। বইটি পড়লে বোঝা যায়- মানুষ সবসময় যৌক্তিক নয়, বরং আবেগ, বায়াস ও মানসিক শর্টকাটে পরিচালিত হয়। আর এই বোঝাপড়াই আমাদের ভবিষ্যতে আরও সচেতন ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।


এটি কেবল একটি মনোবিজ্ঞান বই নয়, বরং নিজেকে জানার, ভুল ধরার এবং উন্নত সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি পথনির্দেশক গ্রন্থ। কাহনেম্যানের ভাষা গবেষণাভিত্তিক হলেও পাঠযোগ্য ও প্রাঞ্জল।


মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩২

এইচ এন নার্গিস বলেছেন: বাহ ,চমৎকার ।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপাতত ঢুঁ মেরে গেলাম।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: বিহেভিয়ারাল ইকোনমিক্সে রেফারেন্স বুক হিসেবে আমাদের কিছু অংশ পড়তে হয়েছে। বইটি অত্যন্ত সুলিখিত। হিউম্যান বিহেভিয়ার নিয়ে যারা আগ্রহী তাদের পড়া দরকার।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০১

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন- হিউম্যান বিহেভিয়ার নিয়ে যারা আগ্রহী তাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বই- Thinking, Fast & Slow বইটি। ‘Behavioral Economics’ বিষয়ে বেশ কিছু বই আমিও পড়েছি। Thinking, Fast and Slow ছাড়াও Misbehaving: The Making of Behavioral Economics- (Richard H. Thaler), The Undoing Project: A Friendship That Changed Our Minds- (Michael Lewis) এবং The Behavioral Economics Guide, (Alain Samson) সিরিজের দুটি বই।

৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২

শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ ভাইয়া....

তবে এসবই তো আমার মনের কথা মনে হচ্ছে ..... :|

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫১

জুল ভার্ন বলেছেন: লেখকের আসল শক্তি এখানেই- আমাদের মনের এলোমেলো অনুভূতি, অগোছানো ভাবনাগুলো তিনি গুছিয়ে এমনভাবে প্রকাশ করতে পারেন, যা আমাদের হৃদয়ের কথাকেই শব্দে রূপ দেয়। অনেকেই অনুভব করি, জানি, এমনকি ভাবিও; কিন্তু ভাষায় আনতে পারি না। লেখক সেই অনুচ্চারিত অনুভূতিকে উচ্চারণ করে দেন, আর সেখানেই তাঁর সার্থকতা, তাঁর শিল্প।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫

বিজন রয় বলেছেন: এসব আমার জন্য কঠিন।
তাই কিছু বললাম না।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৮

জুল ভার্ন বলেছেন: ভরকে যাবেন না, কঠিনকে কোমল করে নিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.