| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
৭ই নভেম্বরঃ সৈনিক-জনতার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতির দিন
বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে ৭ই নভেম্বর একটি অবিস্মরণীয় দিন- একটি দিন, যা স্বাধীনতা-পরবর্তী রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার অন্ধকারে আলোর দিশা দেখিয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছিলাম, কিন্তু সেই স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রকৃত সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার মহান সংহতি ও জাতীয় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে। এই দিনই জাতি প্রত্যক্ষ করেছিল দেশপ্রেমিক সৈনিক ও মুক্তিকামী জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলচেতনা ও জাতীয় সত্তাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল।
স্বাধীনতা থেকে সার্বভৌমত্বঃ এক ধারাবাহিক যাত্রা-
১৯৭১ সালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল- কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী সময়টিতে রাষ্ট্রযন্ত্র ক্রমে বিচ্যুত হচ্ছিল জনগণের অধিকার ও সার্বভৌমত্ব থেকে। প্রশাসন ও রাজনীতির শিকড়ে প্রবেশ করেছিল অবিশ্বাস, ষড়যন্ত্র ও দমননীতি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেই বিচ্যুত রাষ্ট্রকে জনগণের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনার দিন। সৈনিক-জনতার সেই অভ্যুত্থান ছিল স্বাধীনতার দ্বিতীয় অধ্যায়- সার্বভৌমত্ব পুনর্দখলের বিপ্লব।
সৈনিক–জনতার বিপ্লবী মৈত্রীর প্রতীকঃ
৭ নভেম্বরের এই বিপ্লব কোনো একক ব্যক্তি বা দলের ঘটনা ছিল না। এটি ছিল বাংলার মাটি ও মানুষের সম্মিলিত চেতনার প্রকাশ- দেশপ্রেমিক সৈনিক ও সাধারণ মানুষের বিপ্লবী মৈত্রীর ফল। সৈনিকের বন্দুক আর জনতার কণ্ঠ যখন এক সুরে গর্জে উঠেছিল, তখনই সৃষ্টি হয়েছিল সেই সংহতির যে শক্তি পরবর্তীতে জাতির দিকনির্দেশক হয়ে দাঁড়ায়। এই সংহতিই ছিল আমাদের জাতীয় মুক্তি ও রাষ্ট্রীয় পুনর্জাগরণের সূত্র।
২০২৪ সালের -জনতার অভ্যুত্থানঃ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।
দীর্ঘ ৪৯ বছর পর ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আবারও প্রমাণ করেছে- বাংলাদেশের জনগণ কখনোই ফ্যাসিবাদী শাসনের কাছে মাথা নত করে না। ছাত্র–জনতা যখন আবার রাস্তায় নেমেছিল, তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল দেশপ্রেমিক সশস্ত্রবাহিনী। এই ঐক্যই ফ্যাসিবাদী রেজিমের পতন ঘটিয়েছে এবং স্বাধীনতার হৃত মূল্যবোধকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে। ইতিহাস যেন নিজেই ৭ নভেম্বরের চেতনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বানঃ
বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা নিয়োজিত, তাদের প্রতি আহ্বান- ৭ই নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করা হোক। কারণ এই দিনটি শুধু একটি ঐতিহাসিক তারিখ নয়; এটি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়, স্বাধীনতার পুনর্জন্ম ও সার্বভৌম আত্মমর্যাদার প্রতীক।
৭ নভেম্বরের চেতনাঃ বিজয়ের পথনির্দেশ।
সৈনিক-জনতার এই বিপ্লবী মৈত্রীই আমাদের জাতীয় শক্তির উৎস। যতদিন আমরা এই সূত্র ধারণ করব, ততদিন বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য থাকবে। কিন্তু যদি আমরা এই ঐক্য ভুলে যাই- যদি বিভাজন, বিদেশি প্রভাব বা রাজনৈতিক স্বার্থে নিজেদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করি- তবে ইতিহাস আমাদের কঠিন মূল্য দিতে বাধ্য করবে।
উপসংহারঃ
★৭ নভেম্বর মানে- স্বাধীনতার পূর্ণতা,
★ সৈনিক-জনতার চেতনার বিজয়,
★ বাংলাদেশী জাতিসত্তার পুনর্জন্ম!
৭ই নভেম্বর কেবল একটি দিন নয়, এটি এক অঙ্গীকার- যে অঙ্গীকার বলে, এই মাটির মানুষ কখনো পরাধীন থাকবে না। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনমুক্তির এই চেতনা সৈনিক-জনতার ঐক্যের মধ্যেই নিহিত। আজ যখন বাংলাদেশ আবার এক নতুন সূচনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তখন আমাদের অঙ্গীকার হোক-
“৭ নভেম্বরের চেতনা ধারণ করব, সৈনিক–জনতার সংহতি অটুট রাখব, এবং এই দেশকে আবারও একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও মর্যাদাসম্পন্ন বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।”
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
©somewhere in net ltd.