![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে মাস্টার্স করছি। জানার জন্য পড়ি। পজেটিভ সমালোচনা করা পছন্দ করি।
আমাদের দেশের মেয়েদের খুব বেশি বেশি বলতে শোনা যায় যে, মেয়েদের পোশাক কোন ব্যাপার না ছেলেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। এবং উদাহরন হিসেবে উন্নত বিশ্বের সমাজকে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। আমি তাদের এই উদাহরন মেনে নিলাম কিন্তু এখানে একটা ব্যাপার কিন্তু মনে হয় আমার বোনেরা ভুলে যাচ্ছেন। তাদের সদয় অবগতির জন্য আমার কিছু ব্যক্তিগত ধারনা থেকে কয়েকটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে চাই। আমার মতামত কাউকে জোর করে মেনে নিতে হবে তা বলছি না।
উন্নত বিশ্বের সাথে তুলনা করাটা অনেক ভাল একটা ব্যাপার। তাদের দৃষ্টি ভঙ্গি আমাদের অনুসরন করা উচিত, খুব ভাল কথা। কিন্তু আপুরা বা ঐ সব ভাইয়েরা যারা এমন মতামত পোষণ করেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, পাশ্চাত্য সমাজের বা উন্নত বিশ্বের সামাজিক নিয়ম কানুন বা তাদের সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কে আপনাদের ধারনা থাকাটা দরকার। প্রথমেই একটা উদাহরন দিয়ে শুরু করতে চাই। আমি প্রায়শই একটা আমেরিকান রেডিও শুনে থাকি। সেখানে সেদিন রাতে একটা প্রোগ্রাম চলছিল, বিষয়টা ছিল এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেকেই মা বাবার কাছে থাকতে পছন্দ করছে। বিষয়টা খেয়াল করেছেন? জী ভাল করে দেখুন। আমরা যেখানে প্রোগ্রাম করি ছেলেমেয়েরা বাবামায়ের সাথে সম্পর্ক খারাপ হলে সেখানে তারা সন্তান কেন বাবামায়ের সাথে থাকতে চায় সেটা নিয়ে চিন্তিত। এক মা ফোন করে বলল আমার মেয়ে অনেক দিন যাবত আমার কাছে থাকছে, বুঝতে পারছিনা কতদিন থাকবে। ও কি যাবে না?
আমেরিকায় সামাজিক নিয়মটা এমন যে টিনেজাররা থাকবে আলাদা, তারা নিজের উপার্জিত টাকায় নিজের থাকা খাওয়া বা ভরন পোষণ করবে। ইচ্ছে মত গার্লফ্রেন্ড থাকবে, বিয়ে করবে, তালাক দেবে অথবা লিভ টুগেদার করবে। মাবাবা কখনও জানতেই চাইবে না। আমেরিকাতে প্রথম বিবাহে শতকরা ৪৫% থেকে ৫০%, দ্বিতীয় বিবাহে শতকরা ৬০% থেকে ৬৭% এবং তৃতীয় বিবাহে শতকরা ৭০% থেকে ৭৩% ডিভোর্স হয়। ৮.১ মিলিয়ন জুটি বিবাহ ছাড়া একত্রে বসবাস করে (২০১১)। অর্থাৎ তাদের কোন বৈবাহিক নিশ্চয়তা বা পরিচয় নেই। ইচ্ছে হলে তোমার সাথে থাকলাম আর ইচ্ছে হলেই চলে গেলাম। এখানেই শেষ নয়, আমেরিকাতে অবস্থাটা এমন যে আপনি যখন একরাতের জন্য হোটেলে অবস্থান করছেন, পাশের কক্ষে থাকা মেয়েটা আপনার সাথে এসে রাত কাটাবে এবং চলেও যাবে এমনকি আপনার নামটা জানার প্রয়োজন বোধ করবে না। সেখানে শতকরা ৯৭% টিনেজার সেক্স এর সাধ নিয়েছে এবং শতকরা ৩% টিনেজার ভার্জিন যাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর। ৭৮% টিনেজাররা গতবছর সেক্স করেছে (৮৬% ছেলে এবং ৭০% মেয়ে) এবং ৬৪% টিনেজাররা বর্তমানে যৌন সম্পর্কে জরিত আছে। (২০১৪) এবার বলি সবচেয়ে খারাপ তথ্যটা, আমেরিকাতে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভের প্রতি ১০টার ৪ টা ফেলে দেয়া হয়। ২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে মোট গর্ভের ২১% গর্ভপাতের মাধ্যমে শেষ হয়। রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী ৯ লাখ ৭৪ হাজার গর্ভপাত ঘটে। যা ২০১৩ সাথে ছিল ৯ লাখ ৮৩ হাজার। আর বাংলাদেশে এই হার হাজারে ১৮ জন।
অনেক তো পরিসংখ্যান দেখালাম এখন আসি আসল কথায়। এই সকল তথ্যের মাধ্যমে আমি দেখাতে চেয়েছি বাংলাদেশের সাথে তাদের বিশাল পার্থক্য। এই পার্থক্য সব ক্ষেত্রে। আমাদের ভাল ভাবে বুঝতে হবে তাদের যৌন জীবন আর আমাদের যৌন জীবন এক নয়। আমি যদি পরিষ্কার ভাবে বোঝাতে চাই তবে এভাবে বলতে হয় যে তারা যখন এত যৌনতার মধ্যে থাকে তখন রাস্তায় হাটা একটা মেয়ের দিকে তাকাতে একটা ছেলে কতটা আগ্রহী হবে সেটা আর বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আর আমাদের দেশের মত একটা ইসলামিক সমাজে আপনি যদি ছেলেদের এমন উন্মুক্ত মনভাব আশা করেন সেটা নিজের দোষ ঢাকার ইচ্ছা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পরিষ্কার ভাবে এটাই বোঝাতে চাচ্ছি যে আপনি যখন দেশের ছেলেদের মধ্যে এই মনভাব আশা করেন তখন সাথে সাথে আপনাকে এমন একটা পরিসংখ্যানও আশা করতে হবে। আপনি যখন দেখতেই পাচ্ছেন যে বারবার আমার বোনেরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে তখন তো আর ছেলেদের দোষ দিয়ে পার পাওয়া যায়না। আমি কিন্তু সাধারন ধর্ষণের কথা বলছি, প্রতিশোধ বা পূর্ব আক্রোশ এর কেস ভিন্ন।
বাংলাদেশের ছেলেদের দৃষ্টিভঙ্গিতেই যখন সমস্যা তখন শেষ তথ্যটা দেই। ২০১১ সালে আমেরিকার বিভিন্ন জেলে, তরুন নিরাময় কেন্দ্রে এবং হাজতে মোট ২১৬,৬০০ ধর্ষণ হয়। সারা দেশে ১৯৯৩ থেকে ২০১৩ সালে মোট ২০ বছরে ৩১,৩০২ জন ছাত্র ছাত্রী এবং ৬৪,৬৬৮ সাধারন মানুষ ধর্ষণের স্বীকার হয়। তাহলে এখন কি বলবেন?
আসল কথাটা হল দৃষ্টিভঙ্গির অজুহাতটা ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতে বাসে ধর্ষণের আসামীদের ফাঁসির আগে জিজ্ঞেস করা হল আপনি কি লজ্জিত ? ধর্ষকের জবাবটা ছিল এরকম “আমি মোটেও লজ্জিত নই। একটা মেয়ে আজে বাজে পোশাক পরে রাত এগারটায় একা রাস্তায় হাঁটবে তখন আমরা কি করব?” আমার লেখা পরে আপনি ভাববেন না আমি ধর্ষকের পক্ষে কারন এমন অবস্থা যে মেয়েদের বিপক্ষে বললেই ধরে নেয়া হয় ধর্ষকের পক্ষে। জংগলে শুয়োর আর হায়না থাকবেই। সমাজেও এমন কুকুর আছে অনেক। কুকুরে মল খায়, এখানে আপনি কুকুরের দোষ দিবেন কেন? যদি ছেলেদের দৃষ্টিভঙ্গি খারাপ হয় তবে আমার বন্ধু মহলে একটাওতো ছেলে নেই যে কোনদিন রাস্তায় হাটা কোন খারাপ পোশাক পরা মেয়েদেরকেও খারাপ শব্দ করে বিরক্ত করেছে। অতএব আমার কথা হচ্ছে কুকুর থাকবেই, সে কুকুর অত সামাজিকতা বা মনুষ্যত্বের ধার ধারে না। তাই আপনাকেই সাবধান হতে হবে। আজকাল ফেসবুকে ঢুকলে মডেলিংএর নাম করে যে উলঙ্গপনা আর অশ্লীলতা দেখা যায় তাকে আপনি কোন দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় ফেলবেন? আমি এখানে শুধুই পোশাককে দায়ী করছিনা। আমি একতরফা ভাবে দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করার বিরোধিতা করার রাস্তা খুঁজেছি মাত্র।
সবকিছুর পরেও যখন আপনি শ্লীলতাকে মেনে নেবেন না, তখন আমার অনুরোধ এই দেশের সংস্কৃতি, রীতিনীতিকে ধ্বংস করবেন না। আমরা বাংলাদেশি মানুষ, আমাদের নিজস্ব পরিচয় আছে যেমন আছে জাপানীদের, ভারতীয়দের, মিশরীয়দের কিংবা আফ্রিকানদের। প্রত্যেকটা দেশের মানুষ তার নিজের দেশের পরিচয় সংস্কৃতি আর জাতীয়তাকে বহন করে। আমাদেরও উচিত নিজেদের পরিচয়কে বহন করা, পাশ্চাত্যকে নকল করা নয়। কারন ওরা কিন্তু আমাদের সংস্কৃতিকে সম্মান করে কিন্তু নকল করে না।
আমার প্রথম লেখায় ভুল ত্রুটি মাফ করবেন। ভাল লাগলে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
মোঃ নুরউদ্দিন কবির
ঢাকা।
১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৬
মোঃ নুরউদ্দিন কবির বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ
২| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩০
মোস্তফা ভাই বলেছেন: পাশ্চাত্য সম্পর্কে আপনার ধারণা ঠিক না।
১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
মোঃ নুরউদ্দিন কবির বলেছেন: কেন ভাই? আমি তো সব তথ্য দিয়াই দিলাম। আর এটা হচ্ছে সেক্সুয়াল পরিসংখ্যান। সামগ্রিক না। সবার আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। আপনার মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ
৩| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: কিছুই করার নেই।
৪| ১৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৩
মোস্তফা ভাই বলেছেন: পোষাক ও লাইফ স্টাইল যদি ধর্ষণের কারন হয়ে থাকে তবে শিশু ধর্ষণ কেনো হয়? বাচ্চা শিশু যখন ধর্ষণ হ্য় তখন কি বাচ্চার ছোট পোষাককে দায়ী করবেন? শিশু ধর্ষণের সংখ্যা তো নারী ধর্ষনের চেয়ে কম না। আমাদের দেশে কয়জন সিনেমার নায়িকা, মডেল, গায়িকা, উচু সোসাইটির মেয়ে ( যারা কিন সত্যিই উত্তেজক পোষাক পড়ে) ধর্ষিত হয়? বেশীর ভাগ ধর্ষণ তো হয় কাজের মেয়ে, কর্মজীবি মেয়ে, সাধারণ ঘরের মা বোনেরা। তারা কি মিনিস্কার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়? তাই পোষাক সমস্যা নয়, সমস্যা মানুষের বিকৃত মন মানসিকতায়। ধন্যবাদ ভাই।
১৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৮
মোঃ নুরউদ্দিন কবির বলেছেন: ভাইয়া, আমি শুধু পোশাককেই দোষারুপ করিনি। শিশু ধর্ষণ, ঐ যে বললাম সমাজে কতগুলা কুত্তা হায়না আছে। আমি শুধু দৃষ্টিভঙ্গিকে একতরফা দোষ দেয়াটাকে বিরোধিতা করার রাস্তা খুঁজেছি মাত্র।
৫| ১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: ভাইয়ের লেখাটা ধরি মাছ না ছুঁই পানি টাইপের...!!!
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৪
বিবেক ও সত্য বলেছেন: আপনার মত প্রকাশের পদ্ধতি নিঃসন্দেহ প্রশংসনীয় । আমি আপনার সাথে ভিন্নমত পোষন করি, তারপরও আপনাকে ভালবাসি । মানুষ যখন এভাবে সুন্দরভাবে মত প্রকাশ করবে তা জ্ঞানের বিকাশে সাহায্য করবে । আমি আপনার লেখার বিপরীতে আরেকটি পোষ্ট করার আশা রাখলাম ।