নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https:/facebook.com/ar.kabir.79

কবির ইয়াহু

সদা সর্বদা সত্যের পক্ষে ।

কবির ইয়াহু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব সমাজে ধর্মের উদ্ভব।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬

প্রাচীন সমাজে ধারণা করা হত বিশ্ব সনাতন। পৃথিবী কিভাবে, কবে, সৃষ্টি হয়েছে তা তারা জানত না। এর আদি নেই অন্তও নেই, বলেই মনে করা হত। প্রাণীর সৃষ্টির রহস্য তারা জানত না। তারা মনে করত, একটা আত্মা একটা দেহ ছেড়ে চলে যাওয়া মানেই মৃত্যু। এই ধারণা সমাজের অনেকেই এখনো বিশ্বাস করে। বিশ্বাস হচ্ছে একধনের ধারণা, যা অনুমানের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে, কিন্তু তার বাস্তব ভিত্তি থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে।

সীমিত জ্ঞান নিয়ে যখন কোন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না, তখন অনেক কাল্পনিক তত্ত্ব গজিয়ে উঠে অনুমানের উপর ভিত্তি করে। একে শুদ্ধ ভাষায় বলে ভাববাদ। চাক্ষুষ ঘটনাও অনেক সময় সত্য নয়। তা মায়াও নয়। যেমন, আমরা চাক্ষুষ করি অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে অনবরত ঘুরছে। আর তার ফলেই দিন-রাত হচ্ছে। আর মনে করি, তার ফলেই দিনরাত হয় পৃথিবী নিজে ঘুরছে বলে। কিন্তু বাস্তবে পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে অনবরত ঘুরছে। এই সত্যটা জানতেই শতসহস্র বছর মানব সমাজকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্তু কোন এক সুন্দর ভোরে হঠাৎ করে এই সত্যের উপলব্ধি ঘটেনি। কোপার্নিকাস আর গ্যালিলিওর অক্লান্ত পরিশ্রমে তা সম্ভব হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এর পিছনে ছিল মানবজাতির জ্ঞান আহরণের ধারাবাহিকতা। তিলে তিলে সমাজের জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়। এর উপর নির্ভর করেই নূতন নূতন আবিস্কার সম্ভব হয়। তাঁর থেকে এই সিদ্ধান্তে আসতেই হয় যে, প্রতিটা আবিস্কারের পিছনে সমগ্র মানব জাতির অবদান থাকে এবং সেই অবদান ঐতিহাসিক। যাইহোক, পৃথিবী যে সূর্যের চারদিকে অনবরত ঘুরছে, এই সত্যটা এখনকার ছেলেমেয়েরা ছোট বয়েসেই জেনে গেলেও, বাস্তব জীবনে কতজন মেনে চলে তা সকলেরই জানা আছে। বিপরীতে অনবরত তাদের মাথায় মিথ্যা ধারণা ঢোকানো হয় নানাভাবে। স্কুল কলেজের পড়া স্মৃতি পটে রাখা হয় শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে, পাশ করে রুজি রোজগার করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে। নিজের অন্তর্জগতে তথা মননে, এসব রেখাপাত করেনা বললেই চলে। আমাদের জীবনযাত্রায়, পারিবারিক ও তার বাইরের প্রভাবটাই প্রায় সমগ্র মননকে গ্রাস করে ফেলে। সেভাবেই আমাদের মানসিকতাও তৈরী হয়ে যায়। এই প্রভাব স্কুল-কলেজের শিক্ষার কাছে নগণ্য। স্কুল-কলেজের শিক্ষা কোন ছাপই ফেলতে পারেনা, উপরন্তু ভাষা শিক্ষার বইগুলোতে কতগুলো আজগুবি ঘটনা গল্পাকারে সুসজ্জিত করে রাখা হয়, যা কুসংস্কারে ভারাক্রান্ত। এর বাইরের শিক্ষার সাথে যেসব বিষয় মিলে যায়, সেইসব অশিক্ষা বা কুশিক্ষা তখন এমন ভাবে মাথায় চেপে বসে, যার মূল উৎপাটন করা যায় না, বা করা হয় না। তা নিয়েই আমরা প্রাত্যহিক জীবনকে চালনা করি।

একদিকে আদিম মানুষ জানত না সৃষ্টির রহস্য। অপরদিকে তারা এটাও জানত না যে, এই পৃথিবীটাও একদিন ছিলনা। এসব অনেক কিছুই এখন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও জানে। ‘জানি না’ আর ‘জানা যাবে না’ কথা দুটো এক নয়। আজ যা জানি না তা কোনদিন জানা যেতেই পারে। একজন একটা কিছু না জানলেও অন্য একজন জানতেই পারে। মানুষের বাঁচার তাগিদেই, তাকে জানার কাজটি চালিয়ে যেতে হয়। এই জানার কাজটি করা হয় দুই ভাবে। একটা হচ্ছে সরাসরি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করে, যাকে চলতি কথায় বলে চাক্ষুষ জ্ঞান। একে বলা যেতে পারে ব্যবহারিক জ্ঞান। আরেকটা হচ্ছে বৈজ্ঞানিক পরিক্ষা নিরীক্ষা।

একজন যা জানে না, তা নিয়ে তাকে পরিহাস করা ঠিক নয়। আবার একজন যা জানে, তা নির্ভুল নাও হতে পারে। পরিক্ষানিরিক্ষায় যা প্রমানিত নয় তা নিয়ে, কোন প্রশ্ন না তুলে মেনে নেয়াকেই বলে বিশ্বাস। এই বিশ্বাস গড়ে উঠে অনুমানের উপর ভিত্তি করে। ভাষার মাধ্যমে একজনের বিশ্বাস অন্যের কাছে পৌছায়।

বিভিন্ন ধর্মের উদ্ভব ও বিকাশ পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, সভ্যতার বিকাশের প্রথম দিকে, প্রত্যেক ধর্মের ভূমিকাই ছিল বাঁচার তাগিদে। এটা ভুল বলা হয়ে থাকে যে, ধর্ম প্রগতিশীল। প্রাকৃতিক রহস্যের কার্যকারণ অনুসন্ধান করতে আদিম মানুষ প্রবৃত্ত হতে পারেনি তাদের ধর্মবিশ্বাসের জন্যই। এতক্ষণ যে সময়ের কথা বলা হল, তা প্রাক সামন্ততান্ত্রিক যুগের সময়ের কথা। সামন্ততান্ত্রিক যুগে ক্ষমতাসীনেরা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সূচনা করে। পরবর্তিতে রাজতন্ত্রের ব্যবস্থা সমাজে দেখা দিলে, রাজারা মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। তাদের স্ব স্ব স্বার্থে। এই ব্যবস্থা এখনো সমাজে বিদ্যমান। এর ফলাফল সবাই দেখতেই পাচ্ছে। তাই বলা চলে, ধর্ম কোনদিনই প্রগতিশীল নয়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫

জিএমফাহিম বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। লাইক। তবে আসলেই কি মানুষ মনে করতো সৃষ্টির আদি বা অন্ত নেই ? মানুষ যখন প্রকৃতির বিভিন্ন শক্তিকে উপাসনা করা তাদের সাফল্য বা টিকে থাকার পিছনে রহস্য মনে করতো তখনই ধর্মের কনসেপ্ট আমাদের মাঝে এসেছে। প্রথমে এত গভিরভাবে সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করাটা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল বলে আমার মনে হয়, যখন সূর্য, আগুন, আকাশ, গাছকে আমরা পুজা করতাম। থাকলে এই জিনিসগুলো পুজনিয় কখনোই হত না। ধীরে ধীরে যখন আমাদের যুক্তি উন্নত হয়েছে তখন আমরা সেই গাছের উৎপত্তি, সূর্যের উৎপত্তি নিয়ে চিন্তা করা শুরু করি। তখনই আমাদের মাঝে এক স্রষ্টার কনসেপ্টটা বিকাশ লাভ করে। আর স্রষ্টা মানে অবশই সকল সৃষ্টির একটা আদি আছে আবার অন্তও আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.