![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চট্টগ্রাম: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশের পর চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সহিংস তান্ডবের অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে দিয়েছিল জামায়াত-শিবির। ওই তান্ডবে জামায়াত-শিবির তাদের কর্মী, সমর্থকসহ প্রায় তিন থেকে চার হাজার লোককে ব্যবহার করে। আর পুরো তান্ডবের পরিকল্পনায় ছিলেন নগর জামায়াতের আমির সাংসদ আ ন ম শামসুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী এবং দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এসব কথা জানিয়েছেন লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির শামসুল আলম হেলালি। তাকে গত ১৮ মার্চ গ্রেপ্তার করে লোহাগাড়া থানা পুলিশ।
জবানবন্দিতে জামায়াত নেতা হেলালি অকপটে লোহাগাড়া থানার কনস্টেবল মো.তারেককে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া পূর্ব পরিকল্পনামত জামায়াতের তান্ডবের বিষয়েও নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছেন এই নেতা।
সংশ্লিষ্ট আদালতসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জবানবন্দিতে হেলালির দেয়া তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
লোহাগাড়া থানার ওসি মো.শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, ‘হেলালি লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির। তাকে আমরা গত ১৮ মার্চ গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। এরপর তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৩টায় জবানবন্দি দেয়া শুরু করেন শামসুল আলম হেলালি। প্রায় এক ঘণ্টায় আট পৃষ্ঠার এ জবানবন্দি রেকর্ড শেষে হেলালিকে আবারও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশের পর সাতকানিয়া, লোহাগাড় ও বাঁশখালী জুড়ে ব্যাপক সহিংস তান্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। তারা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করায় টানা কয়েকদিন বান্দরবান ও কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে।
সহিংসতায় বাধা দিতে গিয়ে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন লোহাগাড়া থানার কনস্টেবল মো.তারেক।
আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে হেলালি জানান, সাঈদীর রায় ঘোষণার অনেক আগেই সাংসদ আ ন ম শামসুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক বৈঠক করে রায় ঘোষণার পর করণীয় নির্ধারণ করেন। এসব বৈঠকে তারা সাঈদীর রায় ঘোষণার পর লোহাগাড়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পনা করেন।
তিন নেতা লোহাগাড়ায় ধ্বংসযজ্ঞের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন উপজেলা জামায়াতের আমিরকে। রায় ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে উপজেলা জামায়াতের আমির লোহাগাড়ার প্রত্যেক ইউনিয়ন জামায়াতের আমিরদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেন।
রায় ঘোষণার পর লোহাগাড়ার প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে আমিরদের নেতৃত্বে শিবিরের কর্মী, সমর্থকরা লোহাগাড়া উপজেলা সদর আমিরাবাদে আসেন। তাদের নিয়ে আসা হয় সিএনজি অটোরিক্সা এবং জিপে (চাঁদের গাড়ি) করে।
জবানবন্দিতে হেলালি জানান, আমিরাবাদে উপজেলা আমিরের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। তাদের সবার হাতে ছিল লাঠিসোঠা, ইট আর লোহার রডসহ ধারালো অস্ত্র। মিছিলের শুরুতেই তারা দোকানপাট, ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর শুরু করে। মিছিল কিছুদূর যাবার পর পুলিশ ভাংচুরে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এসময় তারা পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশ প্রাণভয়ে আমিরাবাদ এলাকায় একটি মার্কেটের ভেতরে আশ্রয় নেন। এসময় হেলালির নেতৃত্বে তান্ডবে অংশগ্রহণকারীরা ওই মার্কেট ঘিরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বের হয়ে আসার সময় তারা কনস্টেবল তারেককে আটকে কুপিয়ে খুন করেন।
হেলালি জানান, জবানবন্দিতে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে জেলা আমিরের পক্ষ থেকে এক হাজার টাকা করে দেয়া হয়। জেলা আমিরের পক্ষ থেকে উপজেলা আমির সেই টাকা ইউনিয়নের আমিরদের মাঝে বন্টন করেন। আর ইউনিয়ন আমির তান্ডবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সরাসরি সেই টাকা বিতরণ করেন।
হেলালি নিজে তান্ডবে অংশগ্রহণকারী তার ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক লোকের মাঝে টাকা বিতরণ করেন বলে জবানবন্দিতে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ঘণ্টা, এপ্রিল০৪, ২০১৩
আরডিজি/টিসি
Click This Link
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩
রমনা টেক বলেছেন: