নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

"তারা ষড়যন্ত্র করেছিল, আল্লাহ কৌশল করেছিলেন এবং আল্লাহই সর্বোত্তম কৌশলকারী।" [সূরা আনফাল, অধ্যায়ঃ৮, আয়াতঃ৩০]

শেষ প্রহরা

সত্য আর মিথ্যার মাঝে নিরপেক্ষ বলে কিছু নেই।

শেষ প্রহরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মরণ যেখানে বাসা বাঁধে তার নাম কারাগার নয় !! তার নাম দেহ, তার নাম মন!!

৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৯

আমি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি তখন আমার নানী মারা যান। সেই রাতের কথা আজও আমার মনে আছে। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাস না পাওয়ায় একটা সিএনজি নিয়েই রওনা দিই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রচন্ড বাতাস,মাঝে মাঝে বিদ্যুৎচমক। প্রায় দু তিন বার ড্রাইভার রাস্তা ভুল করেছিলো। নানীবাড়ি পৌঁছাতে মধ্যরাত হয়ে গিয়েছিলো। বাড়ির আঙিনাতে যেতেই কান্নার আওয়াজ।

সেদিন আসরের পর নানী মারা যান। কোনো অসুখ ছিলো না। আমি তখন বেশি কিছু বুঝতাম না। মনে হয় তখনই প্রথম লাশ দেখেছিলাম। একটা চৌকির ওপর নানীর লাশ সাদা কাপড়ে ঢাকা ছিলো। মাথার আর পায়ের কাছে আগরবাতি জ্বালানো। আমার মনে পড়ে আমার বড় মামী আমাকে নানীর পায়ের কাছে আগরবাতি রাখতে বলেছিলো। আগেরগুলো নিভে গিয়েছিলো তাই। ঐটাই আমার প্রথম একজন মৃতব্যক্তির এত কাছে যাওয়া।খুব ভয় পেয়েছিলাম তখন।

পরেরদিন নানীকে দুপুরের দিকে গোসল দিয়ে তারপর দাফন করা হয়। এই স্মৃতিটুকু আমার আজীবন মনে থাকবে। সেই রাত। ঝড়-বৃষ্টি। রাস্তা ভুল করা। নানীর ডেড বডি। মাঝে মাঝে অস্পষ্টভাবে হারিয়ে যাই এর মধ্যে।

আমার খালাতো বোন, মারা গিয়েছে ৬ বছর বয়সে। তিন ছেলের পর মায়ের বড় আদরের মেয়ে ছিলো। মেয়ের শোকে মা পাগলপ্রায়। খুব কষ্ট হয় উনার করুণ চোখ দেখলে। মেয়ের লাশ নিয়ে মা কাঁদছে,এর চেয়ে যন্ত্রণার দৃশ্য কি হতে পারে! আরো কত মা কাঁদে, মা হারা সন্তান কাঁদে,পরিবার কাঁদে এই মৃত্যুশোকে।

মৃত্যু এমন একটা চিরন্তন সত্য যা মানুষ মানতে পারে না। কিন্তু না মানা ছাড়া আর দ্বিতীয় পথও থাকে না। একটা মানুষ যে চোখের সামনে থাকতো, কথা বলতো, হাসতো তাকে আর দেখা যাবে না,সে কথা বলবে না,তার হাসি আর শোনা যাবে না,এইটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন। একজন যার সাথে সারাজীবন একসাথে থাকলো সে হুট করে চলে যাবে এমন এক জায়গায় যেখান থেকে আর ফিরে আসবেনা। এই সত্য খুব কঠিন। তবুও তো মেনে নিতে হবে।

একটা মানুষ কতটা অসহায় বোধ করলে এই মৃত্যুর পথে ইচ্ছাকৃত ভাবে যেতে চায়??? কতটা কষ্ট পেলে সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়??? এই উত্তর মনে হয় সে ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। কাউকে হয়তো সে বলে যেতেও পারে না সে কি অনুভব করছে। একা একা নিজের মধ্যে গুমরে মরে। মন মরে যাবার পর সে মৃত্যুকে বেছে নেয়। আসলে মৃত্যুই তাকে বেছে নেয়।

গতকালই কত ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে আত্নহত্যা করলো । কত বয়স হবে?? কিই বা বুঝেছে?? কিন্তু এইটুকু বুঝেছে যে সে পৃথিবীতে আর থাকবে না। এত কষ্ট পেয়েছে বা পাওয়ার ভয় করেছে! যেই মেয়েটা সামান্য তেলাপোকা ভয় পায়,সে কিভাবে সহ্য করলো মৃত্যু যন্ত্রণা!! যে ছেলেটা ঝাল খেতে পারতো না,সে কিভাবে সহ্য করলো এত যন্তণা! কেন কেউ পারলো না তাদের এতটুকু বাঁচার ইচ্ছা জাগাতে?? বাস্তবতার কাছে সবাই অসহায়। মরণ যেখানে বাসা বাঁধে তার নাম কারাগার নয়। হয়তো ঠিক! হয়তো তার নাম দেহ বা মন!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৫

কালের সময় বলেছেন: ধারুন লেখছেন । ভালো লাগলো ।

২| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩

জনাব মাহাবুব বলেছেন: জীবনে পরাজিত হয়ে আত্মহত্যা হলো কাপুরুষের লক্ষণ। সংগ্রাম করে বেচে থাকার নামই জীবন। :)

মৃতু্য অবধারিত। একদিন না একদিন সবাইকে মরতেই হবে। তাই বলে মরার আগে মরলে তার জন্য পরকালে আছে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা।

এই প্রেম প্রেম নামক দানবটার জন্য পৃথিবী থেকে হাজার হাজার নিষ্পাপ ছেলে-মেয়েরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। আর বাবা-মাকে দিয়ে যাচ্ছে আজীবন দুঃখ-কষ্ট।

প্রেমে ব্যর্থ হলেই জীবন ব্যর্থ হয় না, প্রেম ছাড়াও পৃথিবীতে আরো অনেক কাজ করার আছে।

৩| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কুল্লু নাফছিন জায়েকাতুল মাউত! - সকলকেই মৃত্যুর পেয়ালা পান করতে হবে।

জনাব মাহবুবের সাথে সহমত। প্রাকৃতিক স্বাভাবিক মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু জীবনের সামান্য টানাপোড়েনে আত্মহত্যা ঠিক নয়। মহা পাপ।

সংগ্রাম করে বাঁচাই জীবন।

সকল দু:খি মানুষ সূকি হোক। বেঁচে থাকার ানুপেরণায সুন্দর হোক তাদের জীবন।

৪| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩

শেষ প্রহরা বলেছেন: প্রেমে ব্যার্থ হয়ে আত্নহত্যা করে বোকারা। তারপরও যারা পরীক্ষায় ফেল করে,বা জিপিএ পেয়েও আত্নহত্যা করে তাদের কথা ভেবে কষ্ট লাগে। :-(

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: শিরোনামটা আকর্ষণীয়। বক্তব্য সাধারণ, তবে অমূলক নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.