![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একটি ভালবাসার কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম- অথচ কলম হতে ঝরে পড়ে অনল।
আমি একটি ভালোবাসার কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম—
কলম হতে ঝরে পড়ে অনল!
ভালোবাসা কি আগুনে পোড়াবো আমি?
তবে তাই হোক
কবি কিনে নিক প্রেমিকের সকল শোক
—————————————————————————
জীবনের সকল আশা অন্ধ হয়ে গেলে, যখন আপনি দাঁড়াবেন আত্মহত্যার দরোজায়; আপানাকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে একটি মৃত্যুকালীন কবিতা যা আপনি পড়েছিলেন প্রথম প্রেমে পড়ার দু’রাত পূর্বে। এটা এমন এক গান যার সুর কখনো থেমে যায় না, এমন এক ছবি যা সমস্ত হাওয়ায় আঁকা থাকে, এমন এক আলো যা সূর্যের বুকে মাথা রেখে ঘুমায়।
তখন কবিতাই হয়ে ওঠে ঈশ্বর। কবিতা স্বতন্ত্র; নিজেই নিজের স্রষ্টা। কবিতা নিজেই একটি ধর্ম। সে সাম্প্রদায়িকতা বোঝে না, লেখক বোঝেন; লেখক অশ্লীল হয়, কবিতা কখনো নয়।
ইতিহাসের চেয়ে কবিতা বড় দর্শন। Percy Bysshe Shelley বলেছিলেন—
A poet is a nightingale, who sits in darkness and sings to cheer its own solitude with sweet sounds. কবি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দার্শনিক।
‘কবিতা আমার নিয়তি। কবিতা ভিন্ন আমার দ্বিতীয় কোনো জীবন নেই’— চিরকাল এই পঙক্তিটিই আবৃত্তি করে যাবো জীবনের ঠোঁটে মুখ রেখে। কবিতা আমার প্রথম প্রেম এবং শেষ। পৃথিবীর যে কোনো শ্রেষ্ঠ রমণীর চেয়ে সে রূপবতী, মেধাবী এবং বিশুদ্ধ— পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিল্প। কবিতা আমার প্রার্থনা, কবিতা আমার উপাসনালয়।
আমি কবিতা লিখতে ভালোবাসি। বলতে ভালোবাসি— আমি একজন কবি। আমি চাই কবিতা লিখতে লিখতে আমার মৃত্যু হোক। আমি চাই মৃত্যুকালীন সময়ে আমার পাশে পড়া হোক কবিতা। আমার এপিটাফে লেখা হোক কবিতা।—
‘কবিকে ব’লো না ফিরে যেতে
সে কোনো উপদেশ মানবে না
আদেশ তো নয়ই;
করা যেতে পারে অনুরোধ
যেন পাহাড়ের সম্মুখে রয়েছো দাঁড়ায়ে
তাঁকে ব’লো না ফিরে আসার সঠিক সময়
সে জানে, কখন আসতে হয়’
—(কবি/ এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
চেশোয়াভ মিউশ বলেছিলেন—
What is poetry which does not save
Nations or people?
‘এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ’ বইটিতে আমিও এই গান গাইতে চেয়েছি। যতটুকু পারিনি— সে অক্ষমতা কেবলই আমার আর যতটা পেরেছি— সে কেবল কবিতার ক্ষমতা। কবিতা চিরকাল মহৎ। মানুষ চাইলেই যদিও কবি হতে পারে না কিন্তু কবিতা হতে পারে— কবিতার মতো সুন্দর।
আমার কবিতায় আছে ধর্ম। আমার কবিতায় ধর্ম নেই—
‘মানুষের বিশ্বস্ত দেয়ালে যেখানে ঈশ্বর ও শয়তানের ছবি থাকে
সেখানে রেখেছি একজন মানুষ ও একজন না-মানুষের ভাস্কর্য
মানুষের চেয়ে হিংস্র কোনো শয়তান আজো আমি দেখিনি
মানুষের চেয়ে মহৎ কোনো দেবতা আমি আজো দেখিনি
মহান জিউস কিংবা জুপিটার কোনদিন আমার ঘরে এসে দাঁড়াননি’
— (পোট্রেইট/ এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
আমার কবিতায় আছে প্রেম। আমার কবিতায় প্রেম নেই—
‘আমার প্রেমিকার বর্তমান বিশ্বস্ত প্রেমিক
আমাকে উজ্জ্বল দৃষ্টি মেলে দ্যাখে, দাঁড়ায়; উড়ে যায়।
আমি একটি পাহাড়? আমি কি মানুষের অধিক
গাছ এক? আমার রক্তে যে গান গায়,
আঘাত করে, কামনা জাগায় আমার শরীরে;
তাকে চিনি আমি? তার নাম অন্ধকার?
স্বর্গ আর শীত ঘাসের পার্থক্য মনে করার চেষ্টা করে
ব্যর্থ হ’লে— যে চলে গেছে ভুলে যাবো প্রেম তার?’
— (বিদায়ের গান ৪২/ এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
আমার কবিতায় আছে দুঃখ। আমার কবিতায় দুঃখ নেই।
‘সমুদ্রকে বিদায় না ব’লেই তুমি চলে যাচ্ছ! হাহাকার
ক’রে ভেঙে পড়ছে দশ দিক।
আমি শুনছি সে শব্দ। তবু বেঁচে আছি কী চমৎকার;
পৃথিবীতে এইরূপ জীবন নিয়ম স্বাভাবিক!’
—(বিদায়ের গান ১/ এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
আমার কবিতায় আছে মৃত্যু। আমার কবিতায় মৃত্যু নেই।
‘কয়েকটি উজ্জ্বল মাছি
ওড়ে অস্থির, আমার পিতার স্থির শবে;
ফরাসি বারবনিতা’র বুকের উৎসবে
আমার শরীর; বেঁচে আছি।’
— (পিতা/ এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
আমার কবিতায় আমি আছি। আমার কবিতায় আমি নেই। খুঁজবেন না। ব্যর্থ হবেন। আপনার ব্যর্থতা নিয়ে আমি কবিতা লিখবো—
‘সফলতা না পেলে আমি ব্যর্থ হতে ভালোবাসি
একলা হলে ভালোবাসি নির্জনতা
হাওয়াকে বলি তোমার কথা
তোমার কাছে যাই ঘৃণা করি অন্ধকার ভালোবাসি’
আমার কবিতায় আছে কেবল কবিতা। আছে চিৎকার। গান। রক্ত। উৎসব। মিছিল—
‘সত্য উচ্চারণে কবির যদি ফাঁসি হয়
... হোক
...
জেনে রাখো, আমার উত্তরাধিকার আরো বেশি
চিৎকার নিয়ে আসবে।
যুদ্ধের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলবে—
পৃথিবীতে পৃথক দেশ ব’লে কিছু নেই।
পৃথক ধর্ম ব’লে কিছু নেই।
ব্যক্তিগত জীবন ব’লে কিছু নেই।’
—(স্বাধীনতা নিষিদ্ধ হোক/এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ)
কবিতা, প্রেম ও জগতের যাবতীয় দুঃখে মাঝে মাঝে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু প্রিয় বন্ধু রবার্ট ফ্রস্ট আমার হাত টেনে ধরেন।—
But I have promise to keep
And miles to go before I sleep
তবু যদি ব্যর্থ হই। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে কবিতার হাতে চুমু খেয়ে বলবো—
আমি চিরকাল কেবল একজন কবি হতেই চেয়েছিলাম।
——————————————————————————
আমার প্রথম বই— এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ
প্রকাশ হতে যাচ্ছে মহান একুশে বইমেলায়
পাওয়া যাবে কুঁড়েঘর প্রকাশনী, ২৫০ নং স্টলে।
যারা ভালোবাসা নিয়ে আমার পাশে ছিলেন, সবার প্রতি আমার চির কৃতজ্ঞতা। দ্যাখা হবে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৪
কালপুরুষ পোয়েট্রি বলেছেন: ধন্যবাদ সুপ্ত আহমেদ
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: কবিতার প্রতি তোমার ভালোবাসা, কবিতা নিয়ে তোমার আবেগ আর ভাবনা যদিও আমার আগেই জানা ছিল, তবুও এই পোস্টের কল্যাণে বাড়তি কিছু সেই জানার সাথে সংযোজিত হল। তোমার বই পাঠক কীভাবে নেবে আমি জানি না, তবে সমালোচকদের হাতে তোমার বইটি পড়লে তুমি অবশ্যই মুল্যায়িত হবে। সহজ কথায় জীবন, মূল্যবোধ, নৈতিকতাবোধ, মানবতাবোধ প্রেম,ইত্যাদি নিয়ে তুমি আমাদের গভীর ভাবনার সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারো। বিবেকের দরজায় তোমার কবিতা দৃঢ়ভাবে কড়া নাড়াতে সক্ষম হয়।
তোমার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইলো হৃদয়। নিশ্চয়ই তোমার বইটি পাঠক সমাদৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস। প্রচ্ছদ সুন্দর হয়েছে। নামকরণটা ব্যতিক্রম হলেও আমার খুব পছন্দ হয়েছে। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪৭
কালপুরুষ পোয়েট্রি বলেছেন: ঘাসফুল? প্রিয়, আপনাকে ফেসবুকে ট্যাগ করেছিলাম এই পোস্ট আপনার মন্তব্য এত চমৎকার যে আমি কী বলবো, কীভাবে মূল্যায়ন করবো বুঝতে পারছি না। ভালোবাসা জানবেন। কবে আসবেন?
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৩
পোয়েট ট্রি বলেছেন: বিদেশিরা ানেকেই ানেক বলেছিলো;
এই কবিকে গ্রহণ করতে হয়েছে দেশিদেরই রসদ এবং দেশে াবিখ্যাতদের
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৭
পোয়েট ট্রি বলেছেন: কার্পণ্য শিল্পকে কিছুই দেয় না; কবিতাকে দেয় তারও চে কম। অবনত মস্তকে যে কোনও ঋণস্বীকার.... জীবনকে মহত্ব দিতে পারে;
অনেক ানেক বছর পর........... কিছু কথা বোধগম্য
২৫ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
কালপুরুষ পোয়েট্রি বলেছেন: "কার্পণ্য শিল্পকে কিছুই দেয় না; কবিতাকে দেয় তারও চে কম"
চমৎকার বলেছেন। আন্তরিক ধন্যবাদ।
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৭
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: একটি প্রিয় বই,যখন প্রথম পড়া শুরু করি তখন থেকেই মুগ্ধ।নিরন্তর শুভকামনা কবি
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪২
সুপ্ত আহমেদ বলেছেন: অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো ভাইয়া !!