![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অসম্ভব কল্পনাপ্রবণ একজন ছেলে। বিদ্রোহী হতে ভালোবাসি, বিদ্রোহীদের ভালোবাসি। আর দশজনের মত ধরাবাঁধা নিয়ম নীতি থেকে যতদুর সম্ভব দূরে থাকতে ভালোবাসি। প্রচন্ড কৌতুহল আমার মনে। সব কিছু নিয়ে জানবার ইচ্ছা প্রবল। তাই দূর আকাশ নিয়ে রচিত বই থেকে প্রাণের সৃষ্টির রহস্য প্রকৃতি এমনকি পৃথিবীর জাতীসমুহের ইতিহাস সব ধরণের বই খাদক। আর ফেলুদা-মাসুদ রানা পেলে তা না পড়ে অন্য কাজে সময় ব্যয়ের ক্ষমতা আমার নেই। মাঝে মাঝে আমি কল্পনার রাজ্যে পারি দেই, নিজেকে ভাবি বইয়ের কোন চরিত্র। এসব কিছু নিয়েই আমি, বিশ্বের কাছে একজন ছাত্র, যার শখ নিজের যতটুকু ক্ষমতা আছে, তা দিয়ে লিখে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া।
গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কের ঘটনার এই ছবিটি গত দশকের অন্যতম সেরা মুহুর্তের একটি। এখানে দেখা যাচ্ছে লিজেন্ড জিদান দুর্দান্ত এক ভলি করছেন। উল্লেখ্য এই ভলিই সেই চ্যাম্পিয়নস লীগ ২০০২ ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ করে। রবার্তো কার্লোসের ক্রসে অপ্রতিরোধ্য ভলিতে গোল করেন জিদান।
শটের সময় জিদানের বালেন্স আর শট পাওয়ারও ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু ছবিটি দেখতে বলেছি জিদানের জন্য নয়, জিদানের সাথে আরেকজনকে দেখা যাচ্ছে এখানে তার জন্য।
জিদানের থেকে দুই ধাপ দুরে দাড়িয়ে থাকা মানুষটির 'O' আকৃতির মুখ দেখে আন্দাজ করা যায়, তার পৌঁছাতে যে দেরি হয়ে গিয়েছে একটু এটা তিনি বুঝতে পেরেছেন।
মাইকেল বালাক, জিদানের শটের সময় বলের কাছে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি। প্রাণপনেই হয়ত দৌড়েছিলেন, কিন্তু বলের কাছে পৌঁছেছিলেন দ্বিতীয় জন হিসেবে। আর যখন পৌঁছেছেন, ইতিমধ্যে জিদান বাঁ পায়ে দুর্দান্ত শট নিয়ে ফেলেছেন। এখান থেকেই শুরু ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে দুর্ভাগা ফুটবলারের দ্বিতীয় হওয়ার চক্র।
বালাক কেমন প্লেয়ার ছিলেন?
৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা মানুষটি বাঁ পায়ে যেমন খেলতেন, ঠিক তেমনি চলত তার ডান পাও। ছিলেন একজন ধারাবাহিক গোল স্কোরার, তার ট্যাকল ছিল পার্ফেক্ট, সাথে এরিয়েলে ছিলেন বিপক্ষ দলের জন্য হুমকি। মুল কথা, মিডফিল্ডের ফুল প্যাকেজ। তাকে আপনি চাইলে এটাকিং মিডফিল্ডে খেলাতে পারেন, সেন্টার তার ন্যাচারাল পজিশন আবার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডেও অসাধারণ। সবচেয়ে বড় কথা মাইকেল বালাক আজীবন খেলে গেছেন দলের জন্য, যখন যেভাবে প্রয়োজন সার্ভিস দিয়েছেন। একজন আদর্শ লিডার, যিনি ক্যারিয়ারের শুরুর লগ্নেই খ্যাতি পেয়েছিলেন 'ছোট কাইজার(রাজা)' নামে, যিনি দলের ড্রেসিংরুমকে সদা হাস্যোজ্বল রাখতেন, তাকে মানুষের ভালো না লেগে কিভাবে পারে? শুধু মাত্র বিপক্ষ দলের প্লেয়ার বলে? নাকি তার খেলায় হিংসা করে?
ছিলেন একজন মিডফিল্ডার তবুও জাতীয় দলের হয়ে ৯৮ ম্যাচে তার গোল ৪২ টি। আবার বায়ার্ন মিউনিখ এর হয়ে ১০৭ ম্যাচ খেলে গোল ৪৪ টি।
২০০১-০২ সিজনে লিভারকুসেনের হয়ে জিততে পারতেন ট্রেবল। কিন্তু ভাগ্যের কাছেই হারতে হয় বালাককে। লীগ জিততে শেষ ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্টের দরকার ছিল, কিন্তু বালাকের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পরা লেভারকুসেন সেই ম্যাচে ২-০ তে হারে। চ্যাম্পিয়নস লীগ হারে মাদ্রিদের কাছে আর ডিভিবি পোকালে ফাইনাল ম্যাচে হেরে রানার্স আপ হতে হতে হয় শালকের কাছে।
২০০২ বিশ্বকাপে জার্মানরা যেন নতুন রুপকথা লিখতে যাচ্ছিল। সাধারণ গড়পড়তা দল নিয়ে ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল গোলবারের অলিভার কান আর মিডফিল্ডে তরুণ বালাকের জন্যই।
দুর্ভাগ্য যে নিশ্চিত গোল বাঁচাতে ট্যাকল করতে গিয়ে হলুদ কার্ড পান বালাক। তখন ১৯৯০ বিশ্বকাপের পল গ্যাসকোয়েন এর দ্বিতীয় পর্ব দেখবেন ভেবেছিলেন হয়ত অনেকই। অনেকটা একই কারণে কার্ড পেয়ে ফাইনালে খেলতে পারবেন না জেনে ভেঙ্গে পরা গ্যাসকোয়েন দলকে ফাইনালে নিতে পারেন নি, হেরে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু মাইকেল বালাক হারেন নি। বরং দলের হয়ে উইনিং গোল করে নিয়ে যান ফাইনালে।
সেই দিনই জার্মানির কোচ রুডি ভোলার নাকি তাকে "ঈশ্বরের লীলা " বলে শান্তনা দিয়েছিলেন। আশার বাণী শুনিয়েছিলেন যে, ভবিষ্যতে এই ত্যাগের জন্য ঈশ্বর তাকে ভালো কিছু উপহার দেবেন।
কিন্তু ঈশ্বরের কি মহিমা কে জানে? ২০০৮ সালে সেই ২০০২ সালেরই পুনরাবৃত্তি। চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনালে চেলসি বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে ম্যাচ পেনাল্টিতে। কিন্তু পেনাল্টি কিকের সময় দুর্ভাগ্য জনিত জন টেরি স্লিপ করেন, গোল মিস হয়। রানার্স আপ হয়ে বিদায় নেয় চেলসি, আবারও দ্বিতীয় হয়ে বিদায় নেয় বালাক।
আবার সেই বছরেই ইউরো ০৮ এ জার্মানিকে গোল করে, গোল করিয়ে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু দ্বিতীয় হবার পালা যে তার তখনো শেষ হয়নি, তরেসের গোলে স্পেনের কাছে হেরে যায় জার্মানি। আবারো বালাকের স্বপ্ন ভঙ্গ, বড় আসরের ট্রফি তার অধরাই থেকে যায়।
বালাকের শেষটা অনেকটা দুঃখজনক, এফ এ কাপের ফাইনালে প্রিন্স বোয়েটেং এর করা ট্যাকল তার ক্যারিয়ারই শেষ করে দেয়। যেখানে ১০ বিশ্বকাপে দলের ক্যাপ্টেন হওয়ার কথা ছিল তার, সেখানে দর্শক হয়ে দেখলেন তরুন জার্মানির তৃতীয় হওয়া। পরে কোচ ইউয়াখিম ল্যোভ তাকে জাতীয় দলের হয়ে দুটি ফেয়ার ওয়েল ম্যাচ খেলে ১০০ টি ম্যাচ পূর্ণ করার জন্য আহবান জানালেও বালাক তা গ্রহণ করেনি। হয়ত দরকার ছিল না তার কোন ফেয়ারওয়েল ম্যাচের। কারণ বালাক নিজেও জানেন, এমন অনেকেই আছেন যাদের জন্য বালাক অনেক কিছু, আর তারা তাকে এমনিই মনে রাখবে তাদের অন্তরে। আর যাদের জন্য বালাক একজন আনফুলফিল্ড পার্সন, আজীবন দ্বিতীয় হওয়া লুজার, তারা তাকে কখনোয় ভালো ভাববে না।
আর এজন্যই ক্যারিয়ার শেষে বলেছেন,"Titles are sometimes overrated. Of course Lothar Matthäus is always going to be associated with the 1990 World Cup. But does everyone immediately remember what titles Günter Netzer, Johan Cruyff or Luís Figo won? Or do they also think about how those players played their football and how they led their teams? I hope that people will remember me as a special footballer."
২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৩
ভাম_বেড়াল বলেছেন: জিদান একজন আলজিরীয়ান মুসলমান বলে তার উপর তীব্র ইসলামোফোবিক রাস্ট্র ফ্রান্স অনেক অবিচার করেছে।
৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫
কামিল আল আশিক বলেছেন: প্রথমত আমি নতুন এখানে, তেমন কিছুই জানিনা নিয়ম। চাঁদগাজী ভাই, আপনার কথা টা বুঝি নাই। স্পোর্টস নিয়ে লিখা কি ব্লগে দেওয়া যাবে না? আর ভাম বিড়াল ভাইয়া, আমার লিখার বিষয় বালাক ছিল। জিদান যে অনেক ক্রিটিসমের স্বীকার হয়েছে জানতাম না।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
খেলার উপর লেখাটি পেছানো হয়েছে, সোজা হয়ে যান, সোাজা করে লিখেন।