নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দংশিত

মানুষ হয়ে বাচঁতে চাই, মানুষের মত ভাবতে চাই

সৈয়দ সাব

সৈয়দ সাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

শংসয়

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৪৪

গত দুদিন থেকে ফেইস বুকে আর সংবাদ পত্রে একটি ব্যাপার আমাকে নাড়া দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িক দাংগা নাকি মহল বিশেষ দ্বারা সংগঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেটা নিয়ে আমার বলার অনেক কিছু থাকলেও আমাদের বর্তমান দেশীয় অবস্থায় সেটা বলতে রুচি হচ্ছেনা।

তাই এখানে আমি আপানদের জন্য একটা ঘটনা তুলে ধরছি।

ঘটনা দুর্ঘটনের কাল আজ থেকে কুড়ি বছর আগে ১৯৯২ সাল। বাকিটুকু ------

"‘১৯৯২ সালের প্রথম সপ্তাহ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সার্কের চেয়ারম্যান। সার্কভুক্ত সাতটি রাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলন ঢাকায়। ......... সার্কভুক্ত কোন কোন রাষ্ট্রের সরকার প্রধানগণ আসতেও শুরু করেছেন। ভারতের নরসীমা রাও এখনও ঢাকায় পোঁছাননি। এরই মধ্যে ভারতে বাবরী মসজিদে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা হিন্দু মুসলিম রায়ট শুরু হল। সংগে সংগে বিরোধী দলীয় নেত্রী আওয়ামিলীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জরুরী ভিত্তিতে মটর সাইকেল আরোহীকে ডাকলেন । ......... মটর সাইকেল আরোহী বত্রিশে পৌছালে সংগে সংগে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে বঙ্গবন্ধু ভবনের লাইব্রেরী রুমে ডেকে বললেন, সারা বাংলাদেশে হিন্দু মুসলিম রায়ট ( সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা) লাগিয়ে দাও।



মটর সাইকেল আরোহী বলে, এটা কি ঠিক হবে?



নেত্রী বলেন, ঠিক বেঠিক তোমার বুজতে হবেনা, রায়ট লাগাতে বলেছি, তুমি লাগাও।



মটর সাইকেল আরোহী বলে, আপনি এটা বলেন কি? আমি আরো রাত দিন পরিশ্রম করে পাড়ায় মহল্লায় যুবকদের সতর্ক রেখেছি যাতে করে হিন্দুদের উপর কোন প্রকার আক্রমণ না হয়। আর আপনি বলছেন রায়ট লাগিয়ে দিতে।

হ্যাঁ, আমি বলছি, তুমি রায়ট লাগাও।

মটর সাইকেল আরোহী বলে, না নেত্রী, এটা নীতিবিরোদ্ধ কাজ।



নেত্রী রাগান্বিত হয়ে বললেন, রাখ তোমার নীতি ফিতি। আমি যা বলছি তাই করো। আমি তোমার নেত্রী না তুমি আমার নেতা? আমাকে যদি নেত্রী মান তাহলে আমি যা বলবো তাই করতে হবে।



মটর সাইকেল আরোহী বলে, আপনিই তো আমাদের নেত্রী, আপনি যা বলবেন তাই শিরোধার্য। তবে হিন্দুদের উপর আক্রমণ করলে হিন্দুরা আএ এদেশে থাকবে না। সবাই চলে যাবে। আর এই হিন্দুরা তো আমাদেরই লোক। আমাদেরই রিজার্ভ ভোটার।



নেত্রী বলেন, রাখ, যাবে কোথায়? যাবার যায়গা নেই। তুমি রায়ট লাগাও।



মটর সাইকেল আরোহী বলে, হিন্দুরা ভারতে চলে গেলে ভারত থেকে মুসলমান আসবে, সে মুসলমান সবাই হবে ধানের শীষ মানে বি, এন, পি। এটা কি ভেবে দেখেছেন নেত্রী?



নেত্রী বলেন, আরে বোকা সার্ক সম্মেলন পণ্ড করতে হবেনা। কয়েক দিন পরেই সার্ক সম্মেলন। খালেদা জিয়া সার্ক সম্মেলন উদ্ধোধন করবে। ইন্ডিয়ার প্রাইম মিনিষ্টার নরসীমা রাও এখনো আসে নাই। এই সুযোগে রায়ট লাগিয়ে দিলে সার্ক সম্মেলন পণ্ড হয়ে যাবে। তাছাড়া জাহানারা ইমাম যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তাকেওতো সাইজ করতে হবে। জাহানারা ইমাম আমার নেতৃত্বের প্রতি হুমকি।। যেভাবে সে দিনকে দিন মুক্তিযোদ্ধের ধারক ও বাহক হয়ে যাচ্ছে তা ভয়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁকে (জাহানারা ইমাম) আর ছাড় দেওয়া যায়না, এই সুযোগ। এই সুযোগেই জাহানারা ইমাম কে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে। এক ঢিলে দুই পাখি। সার্ক সম্মেলন পণ্ড, জাহানারা ইমাম সাইজ। তুমি রায়ট লাগাও। হিন্দুদের উপর হামলা কর। এদেশের সকল হিন্দুরাই এখন জাহানারা ইমামের পিছনে চলে গেছে।............"



এই হচ্ছে বিশ বছর আগে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কলঙ্কজনক অধ্যায়।



আমি এখানে যা উল্লেখ করেছি সবই ঐতিহাসিক সত্য। ১৯৯২ সালের বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এই কালো অধ্যায় এর পিছনের কথা যদি জানতেন তবে তসলিমা নাসরিন তাঁর ‘লজ্জা’ অন্যরকম ভাবে লিখতেন। যদিও আমরা জেনেছি ১৯৯৯ সালে।



এই লেখার বর্নিত ‘মোটর সাইকেল আরোহী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমান প্রধান মন্ত্রীর সেই ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফেরার পরদিন থেকে ১৯৯৭ সালের ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ষোল বৎসর যে মানুষটি উনার প্রতিটি সেকেন্ড মিনিটের সাক্ষী, সেই মহান মুক্তিযোদ্ধা যিনি জীবন কে বাজি রেখে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের হুলিয়া নিয়ে এই বই জাতীর বিবেকর কাছে তুলে গিয়েছেন, সেই মহাপুরুষ মুক্তিযুদ্ধা মতিয়ুর রহমান রেন্টু’র ‘আমার ফাঁসি চাই’ বইয়ের ১১৫ – ১১৯ পৃষ্টা থেকে উল্লেকযোগ্য কিছু অংশ।



আমি আমার অন্য একটা লেখায় এই বিষয়টি বলতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম আমি শংকিত। বলেছিলাম বর্তমান সরকারের যুদ্ধাপরাধীর বিচারের আন্তরিকতা নিয়ে। শাহবাগ নিয়ে আমার প্রথম দিন থেকেই সন্দেহ ছিল।এই সন্দেহ তাঁদের প্রতি নয় যারা মনের টানে, প্রানের টানে, দেশের সম্মনের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে এসেছিলেন। আমার সন্দেহ ছিল এর পিছনে কলকাটি নাড়ানো ব্যাক্তিদের উদ্দেশ্য আর অভিপ্রায় নিয়ে।



বর্তমান প্রজন্ম জানেনা অনেক কিছুই, জানে তারা ততটুকুই যতটুকু জানলে পড়ে প্রগতিশীল হওয়া যায়। যতটূকু জানলে পড়ে মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।

আজ ভারতের প্রেসিডেন্ট আসছেন । আমার ভীত মন আজ আরেকটু বেশি ভীত। সেই কালো অধ্যায়গুলো যারা দেখেছেন তারাই জানেন।

এই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী কোন সাম্প্রদায়িক দাংগা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ এখানকার মানুষকে একে অন্যকে মানুষ হিসেবে দেখতে শিখিয়েছে, সাম্প্রদায়িকতা এখানে নেই বললেই চলে। তবে কেন ১৯৯২ হল ? আর যে কারনে ১৯৯২ সালে হল তারচেয়েও বড় কারন ছিল ২০০২ সালে সংগঠিত গুজরাটে ইতিহাসের অন্যতম হত্যাকান্ড । তখন কেন হলনা? পাশর্বর্তী বার্মায় মুসলিম নিধন হল- এখানে বাংলাদেশে হল না!!!

তাই আমি হিসেব মিলাতে পারি না। আপনারা কি কেউ পারবেন আমাকে হিসাবটা মিলিয়ে দিতে??

আমি অধির আগ্রহে এবং স্রষ্টার কাছে কায় মনো বাক্যে প্রার্থনা করছি, হায় আল্লাহ, আমদের আরো একজন মতিয়ুর রহমান রেন্টু পাওয়ার সৌভাগ্য দাও।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.