নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
What do you want your story to be? And then go write your masterpiece.
তির তির করে কেঁপে ওঠা মোমবাতির শিখায় সব কিছু স্পষ্ট দৃশ্যমান না হলেও আটপৌরে এই ছোট্ট ঘরটায় সব কিছু চেনা যায় অভ্যাসবশত। ক্যালেন্ডারের পাতাটা জানান দিচ্ছে এখন অক্টোবর, শিউলি ফোটার মাস। বৃষ্টি আর কুয়াশা মিলে বাইরে সব ঝাপসা হয়ে আছে। কেমন একটা ব্যথাতুর দিনের সমাপ্তি ঘটলো। ভোরের কুয়াশায় বিদ্যুৎ এর তারে বসা জবুথবু পাখিগুলোকে দেখে মনে হয় কোনো শোকসভায় অতিথি হয়ে আছে। গাঢ় বেদনায় যেন পান্ডুলিপির শেষ শব্দটির মত ভাষা হারিয়ে ফেলছে। আচ্ছা, বেদনার রঙ কি গাঢ় নীল নাকি মেরুন? হবে কিছু একটা।
শেষ রাত, পৃথিবী কি এক অপার্থিব মহিমায় নিঃশ্চুপ হয়ে আছে! সৃষ্টি আর স্রষ্টা একে অন্যকে পাওয়ার জন্য ব্যকুল হয়ে আছে। তাহাজ্জুদ নাকি জীবনে মিরাকল ঘটাতে পারে। পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার অসংখ্য আশীর্বাদের মধ্যে অন্যতম একটা আশীর্বাদ বোধহয়, জীবনে ঘরে কিংবা বাইরে অন্তত একজন মানুষ থাকুক, যে মানুষটার কাছে উইদাউট জাজমেন্ট সত্যিকার অর্থে ওপেন আপ হওয়া যায়। অন্তত একজন মানুষ থাকুক। আমরা কত সহজে মানুষকে জাজ করে ফেলি। অথচ সেই মানুষটার অতীত জানিনা, শৈশব জানিনা, টিনএজ জানিনা, তাঁর জীবনের বিগেস্ট ফিয়ার কি জানিনা, তাঁর জীবনের ট্রমা কি সেটাই জানিনা। তারপরও আমরা জাজ করি স্বভাবে কিংবা অভাবে। জীবনে ওই একটা মানুষ থাকা ভীষণ জরুরি। যদিও সৃষ্টিকর্তার কাছে বলাটা সুন্দর, একেবারে ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাওয়া যায়।
দাদাভাই'র কথা খুব মনে পড়ছে। সেই ছোট্ট ছায়াঘেরা বাড়ি, ঊঠোনের কোণে রজনীগন্ধার ঝোপ, আর একটা এলাচি লেবু গাছ। যার ঘ্রাণ সারা বাড়িময় জুড়ে থাকে। শান্ত, সৌম্য এই মানুষটা আমার ভীষণ প্রিয়। যার কাছে আমি একটা খোলা অভিধান। যে বলে দিতে পারে কোন ভাঁজে লুকিয়ে আছে অনাবিল হাসি আর কোন ভাঁজে আছে পাহাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মেঘের মত পুঞ্জীভূত বিষাদ। জীবনে ভালো থাকার সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে gratitude প্রকাশ। চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই ফেলে আসা শৈশব। দুর্দান্ত একটা শৈশব আমি কাটিয়েছি। প্রচন্ড রকম ভালোবাসা পেয়েছি, যে ভালোবাসাকে দারিদ্র্য কখনো টপকাতে পারেনি। আমার কাছে জীবন এক প্লেট সাদা ভাত আর দু'চামচ সবজির মতই সহজ ছিল। এখনো তাই। এর থেকে বেশী চাওয়া এখনো নেই। ভালোবাসার তীব্রতা এতটাই ছিল, এখনো কেউ বকা দেয়া তো দূরে থাক একটু গলার স্বর উঁচু হলেই গাল ভিজে যায়, বাচ্চাদের মত কেঁপে উঠি। জীবন বোধহয় অতটা সহজ না।
শীত তার সমস্ত আয়োজন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দাদা ভাইকে মনে পড়ছে। অন্য জগতে কি টেলিগ্রাম করা যায়? তাহলে বলে দিতাম ভেজা আকাশ মুঠোয় নিয়ে আমি ভালো নেই। গন্ধরাজ এর সুবাস আর শেষ রাতের ঝিরঝির কুয়াশায় তুমি আর লিখছোনা। পৃথিবীটা ক্রমশ ম্লান হয়ে যাচ্ছে....
২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:০২
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের লেখা লাইনগুলো সত্যি বিষাদময়। কৃষ্ণপক্ষ আমি পড়েছিলাম কিন্তু লাইনগুলো মনে ছিল না। লাইনগুলো একান্ত আপন মনে হওয়ার পেছনে হয়তো কোনো গল্প আছে, হয়তোবা নেই।
টেলিপ্যাথি বোধহয় আজকাল আর কাজ করছে না।
ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, প্রিয়জনকে ভালো রাখুন।
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২০
জুল ভার্ন বলেছেন: অসাধারণ সুন্দর আপনার লেখনী! ❤️
১১ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৫
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। আপনার বই পড়া ব্যাপারটা আমাকে মুগ্ধ করে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, একদিন টুপ করে মরে যাবো, কত কত বই পড়া বাকি থেকে যাবে। তবে বইয়ের দুনিয়া আর বাস্তবতা আকাশ পাতাল ফারাক। সুস্থ থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯
আজব লিংকন বলেছেন: শুনেছি বেদনার রঙ নীল হয়। আকাশের মত নীল। যে নীল আকাশে ডানা মেলে নীরবে ভেসে বেরায় একা একটা চিল।
শৈশবের কথায় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কৃষ্ণপক্ষ বইয়ের একটা লেখা আমার মনে পড়লো। ❝আমার ব্যালকনির জানালা বন্ধ করে রেখেছি। কারণ, কান্নার শব্দ আমার পছন্দ নয়। তবু ধূসর দেয়ালের আড়াল থেকে কান্না ছাড়া আর কোন কিছুরই শব্দ শোনা যায় না।❞ এই লাইনগুলো আমার খুব কাছের। একান্ত আপন মনে হয়।
অন্য জগতে টেলিগ্রাম নয় তবে তাদেরকে নিয়ে করা আমাদের চিন্তা ভাবনা গুলো হয়তো টেলিপ্যাথি আকারে তাদের কাছে পৌঁছে যায়।।