নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
What do you want your story to be? And then go write your masterpiece.
ঝরা পাতায় ধূসর জায়গাটা ছেয়ে আছে শতাব্দীর সমস্ত একাকিত্ব বুকে নিয়ে ঠিক যেমনটি করে কোনো নাবিক আটকে পড়া দ্বীপে অপেক্ষা করে কোনো জাহাজের। ফানুস আর তারা বাতির আলোয় কিছুক্ষণের জন্য রাত তার নির্জনতা ভেঙে হেসে উঠেছে বালিকা বধূর মত। দূরে কোথাও ডাহুক ডাকছে। দীর্ঘ রাত ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ক্ষীণ ধারায় বয়ে যাওয়া কাকচক্ষু জলের নদীটির দিকে তাকিয়ে মনে হলো বুকের অলিন্দে যেন ডাহুক পাখির মত কেউ পৃথিবীর সমস্ত বিষণ্ণতা জড়ো করে ডাকছে। অতীত নাকি স্মৃতি? জীবনের হিসেবখাতায় কিছু কিছু মুহূর্ত বন্দী হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। আর সেগুলো টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে স্মৃতির অলিন্দে। তার মধ্যে থেকে কিছু কিছু চিরস্থায়ী হয়ে যায় বুকের গহীনে। এক জীবনে মানুষ বোধহয় সবথেকে বেশী কাছে যেতে পারে স্মৃতির আলোছায়ায় , যেখানে যখন ইচ্ছে ঘাস ফড়িংয়ের মত খেলা করা যায়।
ঘড়ির কাঁটার সাথে সমান্তরালে চলতে চলতে এক সময় হয়তো জীবন বিশাল একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায়। যেখানে কিছু প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে পাই, কিছু হয়তো আপনা আপনি ভুলে যাই, আবার কিছু প্রশ্নের উত্তর হয়তো আমরা এক জীবনে কখনো খুঁজে পাই না। কিছু কিছু হয়তো এমন সময়ে খুঁজে পাই তখন তার আর কোন অর্থবোধকতা থাকে না।
বাইরে খোড়াখুড়ি করা রাস্তায় ঝলমলে আলোতে শেষ পথচারীটি পদচিহ্ন এঁকে ফেলে যাচ্ছে টিনের বাক্স ভর্তি একটা পারিবারিক গল্প। মাঝ রাত্তিরে চিঠি ছিড়ে ফেলা হাহাকার নিয়ে গীর্জার বয়ষ্ক ঘড়িটি ছুঁয়ে দিল রাত দু'টোর কাঁটা। বহু পুরোনো ভুলের শোক ভুলে ল্যাম্পপোস্ট গুলো দাঁড়িয়ে থাকে তলপেটে তীব্র ব্যথার মতন একান্তই ব্যক্তিগত দুঃখবোধ নিয়ে। মন্দির চূড়ার ঘন্টার মত একাকী থমকে দাঁড়িয়ে আমি সেই নিঃসঙ্গ পথটির অপরূপ নির্জনতা দেখে যাই।
দূরে কোথাও মর্সিয়ার মত একটানা ভায়োলিন এর সুর বেজে চলেছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে গেছে। সেই একই ভালোবাসা, মায়া, কাম, শোক, অনুশোচনা, অভিমান আর অভিযোগ নিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা যে পথে হেঁটে গেছে, যে পথে হেঁটে যাবে আমাদের উত্তরসূরিরা, সেই একই পথে হেঁটে চলেছি আমরা গোধূলির কন্যাসুন্দর আলোয় সমস্ত বিষণ্ণতা বুকে নিয়ে। কখনো আবার ভোরের স্নিগ্ধ আলোয় শুদ্ধতম ভালোবাসাটুকু নিয়ে, যেখানে মিশে থাকে অভিমান আর না বলা অনেক কথা। চাইলে কি কখনো ঘড়ির কাঁটার উলটো দিকে হেঁটে যাওয়া যায়? হয়তো যায়।
শান্ত কাকচক্ষু জলের নদীটির দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে আমরা যখন নিশ্চুপ বয়ে চলি কোনো প্রকার বিভেদ ছাড়াই, নদীটি ও ঠিক তেমনি বয়ে চলেছে সমস্ত নিঃসঙ্গতা বুকে নিয়ে সহস্রকাল। পাথরের টুকরো গুলো এক জীবনে কত মানুষের রাজ্যহারা অভিমান আর নিশ্বাসের সারমর্ম নিয়ে গুপ্ত দীর্ঘশ্বাসে বয়ে বেড়ায় বিয়োগান্ত কাহিনী হায়ারোগ্লিফিক্সের কোনো পাতায় তো সেটা লিপিবদ্ধ হয় না। জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যায় গত এক শতাব্দীর পুঞ্জীভূত দীর্ঘশ্বাস কিংবা অসংখ্য ব্যর্থ সন্ধ্যা।
ক্রমশ গভীর হওয়া রাতের হিমেল হাওয়ায় পৃথিবী কাঁপে না। অক্সিজেন স্বল্পতা তো নেই তবু ও দীর্ঘশ্বাস নিতে ইচ্ছে হয় না। মাঝে মাঝে মানুষের ভুমিকম্প হয়, এলোমেলো হয়ে যায় কবিতার পান্ডুলিপির মতো থরে থরে সাজানো স্পর্শ, অনুভূতি। শিশিরের ফোটার মত জমতে থাকে একাকিত্বের দারুণ গহনে। শুকনো পাতার ভাঙা নিশ্বাসের মত শব্দরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। কথারা কখনো কখনো ঝরে পড়ে শীতের মেহগনি পাতার মত মেরুণ বর্ণ নিয়ে। আমার অনেক কথা ছিল। তোমার শার্টের বোতাম ঘিরে অনেক কথা ছিল। পাহাড়ের প্রান্তে দাঁড়ানো শতবর্ষী বৃক্ষটার নিচে ছড়ানো হলদে পাতাগুলোর মত অনেক কথা ছিল। যা কখনো চারকোণা খামে বন্দী হয়নি। নদীর তীরে ছড়িয়ে থাকা কুর্চি ফুলের মত ভেসে যাওয়া অনুভূতিরা তবুও অপেক্ষায় থাকে, যদিও কেউ কখনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। যেখানে আকাশ ছুঁয়েছে প্রান্ত সেখানেও কেউ না কেউ এসেছিল পৃথিবীর সমস্ত প্রজ্ঞা কিংবা প্রেম নিয়ে। কেউ কেউ হয়তো ফিরে গিয়েছে, আবার কেউ কেউ হয়তো অপেক্ষা করেছে সমস্ত ভালোবাসা নিয়ে, যদিও কেউ প্রতিশ্রুতি দেয়নি। সহস্র যুগ আগে যেমনটি করে কর্ণেল অরেলিয়ানো বুয়েন্দিয়া অপেক্ষা করেছিল এক জীবনে কোনোদিন কাওকে ভালো না বেসে। তবু ও অপেক্ষা করেছিল মৃত্যু প্রতিশ্রুতি দেয়নি বলে।
ঝিম ধরা মাঝ রাত্তির হাজার বছরের পুরোনো নিস্তব্ধতা আর নিঃসঙ্গতা নিয়ে বয়ে চলে ভোরের দিকে। পৃথিবীর সমস্ত কোলাহলের অলক্ষ্যে টুপ ঝরে পড়ে ক্যামেলিয়া কিংবা কয়েকটি নক্ষত্র। কেউ তা জানে না, কেউ তা খুঁজে ও না।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:২৬
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:০৭
জনারণ্যে একজন বলেছেন: বাহ, বেশ ভালো লেখেন তো আপনি।
একটু দুর্বোধ্য, তবে হয়তো তা আমার বোধগোম্যহীনতার কারণে। ভালো থাকবেন আপনি, আর চমৎকার সব লেখা শেয়ার করবেন নতুন বছরে, প্রত্যাশা রইলো।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:২৯
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: ধন্যবাদ জনারণ্যে। লেখাটা যেভাবে লিখতে চেয়েছি সেভাবে লিখতে পারিনি। বাক্য গঠনে একটু সমস্যা হয়েছে, সেজন্য দুর্বোধ্য লাগছে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো।
৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৩৫
মিরোরডডল বলেছেন:
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ, প্রথমেই বলতে হয় নিকটা খুব সুন্দর।
আর লেখায় মুগ্ধতা। কি চমৎকার বর্ণনা আর অনুভূতি!
শিরোনাম, ছবি সব ভালো লেগেছে।
যা ভালো লাগেনি সেটা হচ্ছে, এমন একটা পোষ্টে মন্তব্য নেই
ভালো থাকবে ঝিঁঝিঁ।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানবেন।