নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জয় হোক মানুষের, মানবতার আর দরিদ্র শিশুটির যে জন্মে দেখছে লোভ আর লালসার পৃথিবী।

পূনেন্দু পাহাড়ি

পূনেন্দু পাহাড়ি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজার

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০২

আমি সময় পেলেই সবজির বাজারের যাই সাথে মাছের বাজার লাগানো।আমার মূল আর্কষণ মাছ বাজার। গ্রামের ছেলে। দেশি মাছ দেখলেও সাগরের মাছ খুব একটা দেখি না । তো মাছের বাজারে যাই, বিভিন্ন মাছের দাম জিঙ্গেস করি, মাছ দেখি , ভালো লাগে। তবে মাছ বাজারে আরো কিছু জিনিস দেখা যায়, মানুষের আক্ষেপ, মানুষের দীর্ঘশ্বাস, মানুষের আনন্দ। দৃশ্য ভিন্ন ভিন্ন। কখনো পুরো পরিবার এসে পড়েছে মাছের বাজারে। শিশুটিকে তার বাবা মাছ চেনাচ্ছে, নতুন ব্যচেলর পুরো বাজার চেষে বেড়াচ্ছে তার বন্ধুর সাথে কিন্তু ঠিক স্থীর করতে পারছে না।কোন মাছটা তার জন্য ভালো হবে এবং তার হিসাবের বাহিরেও হবে না। কখনো কখনো বৃদ্ধা বা তরুনীরাও এসে পড়ে, আমি দুর থেকে দেখি, মাছ বাজারে গায়ে লেগে যায় না চাইলেও, বৃদ্ধা বা তরুনী দেখলে সরে পড়ি অন্য মাছের গলিতে। আমি মূলত দেশি মাছের দিকে ঝুকি, দাম প্রশ্ন করি, তার পর হিসাবে না বনলে আলতো ভাবে হেটে যাই। যেখানে জটলা বা বহু লোক থাকে সেখানে মাথা ঢুকিয়ে দেই। আলোচনা শুনি, - ভাই, দাম কত? বলে আরেক ক্রেতাকে প্রশ্ন করি? ( আমি জানি সে মাছটি কেনেনি, আমার মতো সেও দর্শক) সে কথা বলে, আর মাছ কাটা দেখে। বড় মাছ, মাছওয়ালা খুব আর্ট দেখিয়ে মাছ কাটে, যে কিনছে সে সুখি বাকি সবাই ক্রেতাকে মাপতে শুরু করে। চোর, দালাল, খুষখোর, নাকি বড় কেউ, আড়ো চোখে মেপে নেয়, আমি উপভোগ করি। মানুষ মানুষ মাপে তার মাপকাঠিতে। লোকটা বড় ব্যাগ এগিয়ে দেয়, আর্টম্যান মাছ ওয়ালা সুচারো ভাবে টুকরো করা মাছের পিস গুলো পলিথিন এ ভরে ব্যাগ এ দেয়, সবা্ই বুঝে মেলা শেষ আমি দেখি অন্য কোথাও কি আয়োজন । রুই, কাতল, কালি বাউস, টেংরা - পুটি, বাগাড়, তেলাপিয়া, পাংগাস, চিংড়ি, গুইলসা টেংরা, চাষের পাবদা নানান মাছ থাকে। সাগরের মাছের নাম জানিনা কিন্তু দেখি। আরেকটা বিষয়, যারা তেলাপিয়া, পাংগাস, স্বরপুঠি কেনে তাদের দেখি। শ্রমের হাত দেখলেও বোঝা যায়, দশবার দাম কমানোর কথা বলে। পুরো বাজার চক্কর দেয়। আবার এসে ( আমি এ কাজটা করি, দারুন লাগে ) দাম কমানোর চেষ্টা। মাছওয়ালাদের চোখ তখন যে কি? বলার অপেক্ষা রাখে না। দু েএক কথা শুনিয়েই দেয়। লোকেরা শুনে, আমি কান পেতে থাকি, কাকে কি কথা বলছে। বাজারের ব্যাগ ভর্তি ভদ্র মহাশয়, খুব বেশি ঘুরতে পারবে না, এক লাইনের যে কয়েকটা দোকান আছে বাজার টেনেটুনে নিয়ে দাম জিঙ্ণাসা করে, তারপর পাংশু মুখে কোন একটা মাছ কিনে নিয়ে বাজারকে বিদায় জানায়। ইলিশের দিকে চোখ যায়, দাড়ান কবিতা আকিঁ
-সব হারা প্রেমিকার চোখের মতো ইলিশের চোখ, নিথর নিস্থব্ধ,
মরা দেহ নিয়ে পড়ে থাকে ঠান্ডা হিমগৃহে।
ইলিশ, বাঙালির প্রিয় খাবার, আমার প্রিয় খাবার, কতদিন পর কখন ৪০০ গ্রামের ইলিশ ৪০০ টাকা কেজি হয় তো সাহস করি। বুকে এক খন্ড পাথর পুরে কিনে ফেলি, দু এক কেজি।(আমি ব্যচেলর, রুজি খারাপ না, তবে ইলিশ কিনতে সে সাহসের প্রয়োজন তা আমার নেই।) আমিও আড়চোখে ইলিশের ভালোবাসা নেই। প্রেম জাগে কিন্তু সাহস জাগে না। দাম যখন ৯০০ টাকা কেজি, আমি তখন পাবদা প্রেমে এ সাজি। কেন জানি মনে হয়, মাছ বাজারে মানুষ সত্যি সুখি হয়, আবার সত্যি দীর্ঘশাস ছাড়ে, এখানের বাতাসে জমা থাকে মানুষের কথা।
পূনশ্চ: ফরমালিন বিষয়ে কিছু লিখলাম না, এটা লিখে কেউ শেখাবে বলে আমি মনে করি না, নিজে দেখুন, নিজেই বুজতে পারবেন, নাহলে পাশের জনই শিখিয়ে দেবে, পাপ কি আর পূর্ন্য কি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.